আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩০৮৪: এক তালাক দেওয়ার পর ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি কী

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩০৮৪: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। একজন সৈনিক ফোন করে জানতে চাইল স্ত্রীর সাথে ঋগড়া চলাকালে তাকে একতালাক দিয়েছি। এখন তার করনীয় কি? মুহতারাম মুফতিগণ সমাধান দিয়ে বাধিত করবেন।

তারিখ:৩০/০৯/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা মাসউদুর রহমান চাঁদপুর থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, এক তালাক এর কয়েকটি সুরত হতে পারে। 


প্রথমত: যদি শুধু এক তালাক দেয়। বায়ান শব্দ উল্লেখ না করে। এবং তালাকের পর স্ত্রীর তিন হায়েজ বা পিরিয়ড অতিক্রম না করে থাকে। এটাকে তালাকে রজয়ি বলে।

 এক/দুই তালাকে রজয়ি দেওয়ার পর তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই রজাআত করে (তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম, স্ত্রী সহবাস অথবা শরীরে স্পর্শ করলে), তাহলে বিবাহের প্রয়োজন নেই। দলিল- 

وَبُعُولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فِي ذَلِكَ إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا

আর যদি সদ্ভাব রেখে চলতে চায়, তাহলে তাদেরকে ফিরিয়ে নেবার অধিকার তাদের স্বামীরা সংরক্ষণ করে। (সূরা বাকারা ২২৮)


দ্বিতীয়ত: এক তালাক দেওয়ার পর তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হয়ে যায়, এর মধ্যে রজাআত বা ফিরিয়ে না নেয় এবং এক/দুই তালাকে বায়ান দিয়ে থাকেন। তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে। নতুন করে মোহরানা নির্ধারণ করে বিয়ে পড়াতে হবে।

 

فإن طلقها ولم يراجعها، بل تركها حتى انقضت عدتها بانت (بدائع الصنائع-3/283)

নতুন করে মহর ধার্য করে বিবাহ পড়াতে হবে। সূত্র: বাদাউস সানায়িআ-৩/২৮৩


রাজআত দু’ভাবে হতে পারে–

১. কথার মাধ্যমে ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো। যেমন সরাসরি অথবা ফোনে অথবা কোনো প্রতিনিধির মাধ্যমে একথা বলা যে, ‘তোমাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলাম’। একথার মাধ্যমে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃবহাল হয়ে যাবে।

২. কর্মের মাধ্যমে ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো। অর্থাৎ স্ত্রীর সঙ্গে এমন কোনো আচরণ দেখানো যা একজন স্বামী একজন স্ত্রীর সঙ্গেই দেখাতে পারে। যেমন তাকে চুমো দেয়া কিংবা তার সঙ্গে সহবাস করে নেয়া ইত্যাদি। এজাতীয় কর্মের মাধ্যমেও তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনঃবহাল হয়ে যাবে।


সারকথা হলো, যদি সে শুধু এক তালাক দেয়, বায়ান শব্দ উল্লেখ না করে এবং তিন হায়েজ বা পিরিয়ড অতিক্রম না করে থাকে, তাহলে এখনই তাকে ফিরিয়ে আনতে পারবে।

আর যদি এক তালাকে বয়ান বা স্বাভাবিক তালাক দেওয়ার পর তিন হায়েজ অতিক্রম করে থাকে; তাহলে নতুন করে মোহরানা নির্ধারণ করে বিয়ে পড়াতে হবে।


  والله اعلم بالصواب

জিজ্ঞাসা-১২৩০৩: বক্তব্যের মাঝে আয়াত পাঠ করলে আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ বলার বিধান কি?

No Comments

 



জিজ্ঞাসা -১২৩০৩

আসসালামুয়ালাইকুম। একজন জানতে চেয়েছেনজুম্মার দিন বাংলা আলোচনার সময়অথবা যে কোন বক্তব্যের মাঝে কোরানের আয়াত উল্লেখ করলে প্রতিবারেই কি بسم الله বলতে হবে?

فَإِذَا قَرَأْتَ ٱلْقُرْءَانَ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ

এই আয়াতের আলোকে প্রতিবারেই কি تعوذ পাঠ করতে হবে❓

উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক ক্বারীদেরকে দেখা যায় প্রথম তেলাওয়াতের সময়تعوذ، تسمية দুইটাই পড়েমাঝে কথা বলার পরে আবার শুরু করলে শুধু تعوذ পাঠ করেন! ২/১০/২০২২

 

মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহমান বগুড়া থেকে ----

 

জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 


তাসলিম ও হামদ-সানার পর  কথা হলোআপনার প্রশ্ন জবাবের আগে একটি বিষয় আগে পরিস্কার হতে হবেসেটা হলো তেলাওয়াত ও বক্তব্যর মাঝে আয়াতের উদ্ধৃতি এক নয়। সুতরাং হুকুমও ভিন্ন ভিন্ন।

 

আপনি যে আয়াতটি উল্লেখ করেছেন,

لمن أراد أن يقرأ، لقوله تعالى: (فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ) [النحل:98]. وأما عن حكم

البسملة، فقد تقدم برقم: 5566্র

অর্থ: সুতরাং আপনি যখন কুরআন পড়বেতখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করবেন। সূরা নাহল-৫৪


ব্যাখ্যা:

هذا أمر من الله تعالى لعباده على لسان نبيه - صلى الله عليه وسلم - : إذا أرادوا قراءة القرآن أن يستعيذوا بالله من الشيطان الرجيم .

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা তার নবীর জবানে বান্দাদেরকে আদেশ দিচ্ছেন যখন তোমরা কোরআন তেলাওয়াতের ইচ্ছা করো তখন বিতাড়িত শয়তানকে আশ্রয় প্রার্থনা করো। সূত্র: তাফসীরে ইবনে কাসির

 

অর্থাৎ অধিকাংশ তাফসীরকারকগণ! বলেছেন যখন কোরআন পাঠ করার ইচ্ছা করো (অর্থাৎ তেলাওয়াতের সময়)তখন শয়তান হইতে পানাহ চাও।

  আপনি যে প্রশ্নে উল্লেখ করেছেনআন্তর্জাতিক ক্বারীদেরকে দেখা যায় প্রথম তেলাওয়াতের সময়تعوذ، تسمية দুইটাই পড়েমাঝে কথা বলার পরে আবার শুরু করলে শুধু تعوذ পাঠ করেন! এটাই সঠিক পদ্ধতি।


প্রশ্ন: ক। জুম্মার দিন বাংলা আলোচনার সময়অথবা যে কোন বক্তব্যের মাঝে কোরানের আয়াত উল্লেখ করলে প্রতিবারেই কি بسم الله বলতে হবে?


 উত্তর: ক।  নাবক্তব্যর মধ্যে (যে ভাষায় হোক না কেন) আয়াত উদ্ধৃতি দিলে বা দলিল পেশ করলেশুরুতে তাউস বা তাসমিয়া কোনটাই পড়া জরুরি নয়। হাদিস ও আসারে তার প্রমাণ বহন করে।  দলিল:

 

হাদিস নং-০১

مَنْ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا، فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ، ثُمَّ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ -يَعْنِي بِشِدْقَيْهِ- ثُمَّ يَقُولُ أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ، ثُمَّ تَلاَ : "لَا يَحْسِبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ... " الآيَةَ.

অর্থ: রাসূল () বলেন,  যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেনসে তার যাকাত আদায় করল নাতার সম্পদকে তার জন্যে বিষধর সাপে রূপান্তরিত করা হবে। সাপটার চোখের উপর থাকবে দুটি কালো বিন্দু। কেয়ামত দিবসে সাপটি তার গলা পেঁচিয়ে ধরবে। তারপর দুই চোয়ালে তাকে চেপে ধরে বলতে থাকবে- আমি তোমার সম্পদ। আমি তোমার সঞ্চিত ধনভান্ডার। অতপর হযরত রাসূলে কারীম () এই আয়াত তিলাওয়াত করেন-

 

وَ لَا یَحْسَبَنَّ الَّذِیْنَ یَبْخَلُوْنَ بِمَاۤ اٰتٰىهُمُ اللهُ مِنْ فَضْلِهٖ هُوَ خَیْرًا لَّهُمْ  بَلْ هُوَ شَرٌّ لَّهُمْ  سَیُطَوَّقُوْنَ مَا بَخِلُوْا بِهٖ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ ؕ وَ لِلهِ مِیْرَاثُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ ؕ وَ اللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِیْرٌ۠

আর আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদের দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তা তাদের জন্য মঙ্গল এ যেন কিছুতেই মনে না করে। না এ তাদের জন্য অমঙ্গল। যাতে তারা কৃপণতা করেছে কিয়ামতের দিন তা-ই তাদের গলার বেড়ি হবে। আসমান ও যমীনের স্বত্ত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহরই। তোমরা যা কর আল্লাহ তা বিশেষভাবে অবহিত। (সূরা আলে ইমরান-১৮০) তাখরিজ: বুখারি-১৪০৩

 

হাদিস নং-০২

عن بُريدةَ ، قالَ : خطبَنا رسولُ اللَّهِ صلَّى اللهُ عليْهِ وسلَّمَ ، فأقبلَ الحسنُ ، والحسينُ رضيَ اللَّهُ عنْهما ، عليْهما قَميصانِ أحمرانِ يعثُرانِ ويقومانِ ، فنزلَ فأخذَهما ، فصعِدَ بِهما المنبرَ ، ثمَّ قالَ : صدقَ اللَّهُ : أَنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلَادُكُمْ فِتْنَةٌ ، رأيتُ هذينِ فلم أصبِرْ ، ثمَّ أخذَ في الخطبةِ

الراوي : بريدة بن الحصيب الأسلمي | المحدث : الألباني | المصدر : صحيح أبي داود

الصفحة أو الرقم: 1109 | خلاصة حكم المحدث : صحيح

অর্থ: একদিন মহানবী () খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় হযরত হাসান ও হুসাইন (রাঃ) পড়ে-উঠে তাঁর সামনে আসতে লাগলে তিনি মিম্বর থেকে নিচে নেমে তাঁদেরকে উপরে তুলে নিলেন। অতঃপর তিনি বললেনআল্লাহ তাআলা সত্যই বলেছেন,

(إنَّمَا أَمْوَالُكُمْ وَأَوْلاَدُكُمْ فِتْنَةٌ)

(অর্থাৎতোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের জন্য ফিতনাই তো।) আমি এদেরকে পড়ে-উঠে চলে আসতে দেখে ধৈর্য রাখতে পারলাম না। বরং খুতবা বন্ধ করে এদেরকে তুলে নিলাম। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ-১১০৯

 

আসার নং-০১

روى الطبري في "التفسير" (8 / 467)، قال: حَدَّثَنِي يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: حدثنا هُشَيْمٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَبِي سُلَيْمٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ عَلْقَمَةَ وَمَسْرُوقٍ: أَنَّهُمَا سَأَلَا ابْنَ مَسْعُودٍ عَنِ الرِّشْوَةِ، فَقَالَ: مِنَ السُّحْتِ. قَالَ: فَقَالَا: أَفِي الْحُكْمِ؟ قَالَ: ذَاكَ الْكُفْرُ. ثُمَّ تَلَا هَذِهِ الْآيَةَ:  وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ   ".

وهذا إسناد رواته ثقات، وصححه الشيخ سعد الحميد في تحقيق "سنن سعيد بن منصور" (4 / 1472).

অর্থাৎ তিনি বললেনঃ এটা কুফরী। তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেন এবং যে না করে। আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা বিচার করুনতারাই অবিশ্বাসী। তাখরিজ: সুনানে সাদ ইব মানছুর-৪/১৪৭২; তাফসিরে তাবারি-৮/৪৬৭


প্রিয় পাঠক আমি উপরে দুটি হাদিস একটি আসার উল্লেখ করলাম দেখুন সাধারণ নছিহত ও খুতবাকালে আয়াত পাঠকালে তাউস-তাসমিয়া পড়া হয়নি।

 

সারকথা হলো, তেলাওয়াত ও উদ্ধৃতি এক নয়। সুতরাং বক্তব্যের মাঝে বা কখনও দলিল হিসেবে আয়াত পেশ করলে তাউস-তাসমিয়া (আউজু-বিসমিল্লাহ) পড়া লাগবে না, সুন্নাহ নয়। তবে আমার জানামতে জুমুআ/ঈদের প্রথম খুতবার শেষে যে আয়াত পাঠ করা হয়, তখন শুধু তাউস (আউজুবিল্লাহ) পড়তে হবে, কেননা এটা তেলাওয়াত হিসেবে পাঠ করা হয়।  

 

 والله اعلم بالصواب


দাম্পত্য পরামর্শ-১৬: স্ত্রীর সাথে ব্যবহারের সুন্নাতগুলো কী কী

No Comments

 



পুরুষের ৪ বিয়ের সুন্নাত এইটা তো সবাই জানেন কিন্তু বাকিগুলা কী জানেন..?


১. বয়স্ক মহিলাকে বিবাহ করা সুন্নাত।

২. ডিভোর্সী নারীকে বিবাহ করা সুন্নাত।

৩. বিধবা নারীকে বিবাহ করা সুন্নাত।

৪. স্ত্রীর সাথে রান্না করার কাজে, পরিস্কারের কাজে, ধোয়া-মোছার কাজে সহায়তা করা সুন্নাত।

৫. ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে স্ত্রীকে মুখে খাবার তুলে খাওয়ানো সুন্নাত।

৬. স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা প্রকাশ করা সুন্নাত।

৭. স্ত্রীর ভুল ক্ষমা করা সুন্নাত।

৮. স্ত্রীর জন্য নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা সুন্নাত।

৯. স্ত্রীর অনুভূতিগুলো জানার চেষ্টা করা এবং তাকে যখন প্রয়োজন হয় স্বান্তনা দেওয়া সুন্নাত।

১০. স্ত্রীর সাথে খেলা করা, গল্প করা, ঘুরতে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত।

১১. স্ত্রীর কোলে আবদ্ধ হওয়া এবং শিথিল করা সুন্নাত।

১২. স্ত্রীকে সুন্দর নাম নিয়ে ডাকা সুন্নাত।

১৩. পরিবারের ব্যক্তিগত সদস্য এবং বন্ধুদের কাছে তার ব্যক্তিগত কথা প্রকাশ না করা সুন্নাত।

১৪. স্ত্রীর পিতা-মাতাকে ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা করা সুন্নাত।

১৫. স্ত্রীর এটো খাবার খাওয়া সুন্নাত।

১৬. স্ত্রীর অভিমান ভাঙ্গানো সুন্নাত।

১৭. স্ত্রীর কোলে শুয়ে কুর'আন তিলাওয়াত করা সুন্নাত।

১৮. স্ত্রীকে সালাম দেওয়া সুন্নাত।


অনেক পুরুষই আছেন, যারা এগুলোর একটা সুন্নাতও পালন করতে রাজি হন না।


কিন্ত ৪ বিয়ের সুন্নাতটা পালন করতে তারা সদা প্রস্তুত।

বাকিগুলা জেনে তারপরে ৪টা বিয়া কইরেন..আর সব স্ত্রীকে আলাদা বাসস্থান, সমান অধিকার না দিলে কেয়ামতের ময়দানে শুয়ে শুয়ে খোড়ায়ে যেতে হবে রবের সামনে, পারবেন তো?


স্ত্রীর অধিকারগুলা ভালোভাবে আদায় করেন,

দুনিয়াটা জান্নাত হবে পরকালটাতেও রবের সান্নিধ্য পাবেন ইনশাআল্লাহ...


আল্লাহ তাআ'লা আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক আমিন।

জিজ্ঞাসা-১৩০৮৩: সালামের জওয়াব কি শুনিয়ে দেওয়া জরুরি

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৮৩: 

আসসালামু আলাইকুম। সালামের জবাব কি আওয়াজ করে দিতে হবে নাকি মনে মনে দিলেই চলবে?

তারিখ:২৯/০৯/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা আলী আকবর বি. বাড়িয়া থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, সালামের জওয়াব সালামদাতাকে শুনিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। শুধু মনে মনে উত্তর দেওয়া বা নিম্নস্বরে দেওয়া যথেষ্ট নয়।


অবশ্য সালামদাতা যদি এতটা দূরে থাকে যে, তাকে উত্তর শুনিয়ে দেওয়া কষ্টসাধ্য হয় সেক্ষেত্রে শুনিয়ে দেওয়া জরুরি নয়। এক্ষেত্রে মৌখিক উত্তরের পাশাপাশি সম্ভব হলে হাত দ্বারা ইশারাও করবে। যেন সালামদাতা বুঝতে পারে যে, তার সালামের উত্তর নেওয়া হয়েছে। দলিল- 

حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، وَأَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ السَّرْخَسِيُّ، أَنَّ أَبَا عَامِرٍ، أَخْبَرَهُمْ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ هِلاَلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَحِلُّ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَهْجُرَ مُؤْمِنًا فَوْقَ ثَلاَثٍ فَإِنْ مَرَّتْ بِهِ ثَلاَثٌ فَلْيَلْقَهُ فَلْيُسَلِّمْ عَلَيْهِ فَإِنْ رَدَّ عَلَيْهِ السَّلاَمَ فَقَدِ اشْتَرَكَا فِي الأَجْرِ وَإِنْ لَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ فَقَدْ بَاءَ بِالإِثْمِ " . زَادَ أَحْمَدُ " وَخَرَجَ الْمُسَلِّمُ مِنَ الْهِجْرَةِ " .

৪৮৩২. উবাইদুল্লাহ ইবনে উমর (রাহঃ) .... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী করীম (ﷺ) বলেছেনঃ কোন মু’মিন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে, সে তিন দিনের অধিক সময় তার ভাইকে পরিত্যাগ করে। এমতাবস্থায় যদি তিন দিন অতিবাহিত হয়ে যায়, তবে তার সাথে দেখা করে সালাম করা উচিত। আর সে ব্যক্তি যদি সালামের জবাব দেয়, তখন উভয়ই সাওয়াবের অংশীদার হবে। আর যদি সে সালামের জবাব না দেয়, তবে সে ব্যক্তি সমস্ত গুনাহের ভাগী হবে।

মুসলিম (রাহঃ) বর্ণিত রাবী আহমদ (রাহঃ)-এর বর্ণনায় এরূপ অতিরিক্ত আছেঃ সালাম দানকারী ব্যক্তি সালাম না দেয়ার গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে।


Narrated AbuHurayrah:

The Prophet (ﷺ) said: It is not allowable for a believer to keep from a believer for more than three days. If three days pass, he should meet him and give him a salutation, and if he replies to it they will both have shared in the reward; but if he does not reply he will bear his sin (according to Ahmad’s version) and the one who gives the salutation will have come forth from the sin of keeping apart.

—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৮৩২ (আন্তর্জাতিক নং ৪৯১২)


ورد السلام بصوت غير مسموع لا يتأدى به الفرض، فقد جاء في عمدة القاري شرح صحيح البخاري: ولا يصح الرد حتى يسمعه المسلم إلا أن يكون أصم فينبغي أن يرد عليه بتحريك شفتيه.

অর্থাৎ, কারো সালামের জওয়াবে অনুচ্চস্বরে উত্তর দিলে এতে করে ফরজ ( ওয়াজিব) আদায় হবে না। সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ঊমদাতুল কারীতে এসেছে, "সালাম প্রদানকারীকে না শুনিয়ে সালামের জবাব দিলে তা স্বীকৃত জওয়াব হিসাবে বিবেচিত হবে না। তবে যদি সালাম প্রদানকারী বধির হয়ে থাকে, তখন সেক্ষেত্রে তার অনুধাবনের সুবিধার্থে ঠোঁট নাড়িয়ে সালামের জওয়াব দেওয়া লাগবে ।


সারকথা হলো,  সালামের জবাব কি আওয়াজ/শুনিয়ে  দিতে হবে, মনে মনে দিলেই চলবে না।

কেননা নীরবে জবাব প্রদান করার দ্বারা কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তা এমন- যেমন অনেকেই সালামের উত্তর মনে মনে (নীরবে) দিয়ে থাকে। এমনভাবে সালামের উত্তর দেয় যে, এর মাধ্যমে ভালোবাসা সৃষ্টির পরিবর্তে মনের মধ্যে বিদ্বেষ জন্ম নেয়ার অবস্থা তৈরি হয়।



কেউ কাউকে আগ্রহ নিয়ে সালাম দিল, কিন্তু আগ্রহের সঙ্গে উত্তর না পেলে কিংবা খুব নিম্ন স্বরে বা নীরবে উত্তর এলে তাতে সালাম দেয়া ব্যক্তির মনে সন্দেহ বা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, মনোক্ষুণ্ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কিংবা ওই ব্যক্তির মাঝে হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়।



  والله اعلم بالصواب

পিডিএফ ডাউনলোড-০৮: রিয়াদুস সালেহীন ১ম খণ্ড

No Comments

 



কিতাবটি ডাউনলোড করতে ডাউনলোড করুন লেখায় ক্লিক করুন-


ডাউনলোড করুন


নোট: প্রথমে ক্লিকে ডাউনলোড হবে না, এডমিনের কাছে একটি রিকুয়েস্ট আসবে সেটা ওকে করার পর দ্বিতীয়বার ক্লিক করে ডাউনলোড করতে পারবেন। সুতরাং একটু ধৈর্য দারুন করতে হবে।

বিজ্ঞবচন-১৭: অন্তরের জং' হল, গুনাহের পর গুনাহ ।

No Comments

 




(পূর্বের) নেককারগণ একে অপরকে তিনটি কাজের উপদেশ দিতেন; জিহ্বাকে বন্দি রাখতে, বেশি বেশি ইস্তেগফার করতে এবং একাকী থাকতে। 

▪️হযরত মালেক বিন দীনার রহ.


তোমরা কি জানো 'অন্তরের জং' কী? 'অন্তরের জং' হল, গুনাহের পর গুনাহ । গুনাহের পর গুনাহ। যার ফলে এক সময় অন্তর মরে যায়। 

▪️ইমাম হাসান বসরী রহ.

জিজ্ঞাসা-১২৩০২: যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যার বিধান কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৩০২:

আসসালামু আলাইকুম।

মুহতারাম! অনুগ্রহ পূর্বক যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যার বিধান সম্পর্কে জানালে ভালো হয়।

جزاكم الله خيرا


হাফেজ মাওলানা  সাইফুল ইসলাম নোয়াখালী থেকে-----


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  কথা হলো আমরা জানি আত্মহত্যা মহাপপপ।  ইসলাম কোনো অবস্থায় আত্মহত্যা অনুমোদন করেননি। দলিল:

 

আয়াত নং-০১

: وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا

 তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর করুণাময়। সুরা নিসা-২৯

 

আয়াত নং-০২

وَلَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّہۡلُکَۃِ ۚۖۛ

তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ফেলো না। সুরা বাকারা-১৯৫

 

হাদিস নং-০১

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: شَهِدْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لِرَجُلٍ مِمَّنْ يَدَّعِي الإِسْلاَمَ: «هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ»، فَلَمَّا حَضَرَ القِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ قِتَالًا شَدِيدًا فَأَصَابَتْهُ جِرَاحَةٌ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، الَّذِي قُلْتَ لَهُ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَإِنَّهُ قَدْ قَاتَلَ اليَوْمَ قِتَالًا شَدِيدًا وَقَدْ مَاتَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِلَى النَّارِ»، قَالَ: فَكَادَ بَعْضُ النَّاسِ أَنْ يَرْتَابَ، فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ، إِذْ قِيلَ: إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ، وَلَكِنَّ بِهِ جِرَاحًا شَدِيدًا، فَلَمَّا كَانَ مِنَ اللَّيْلِ لَمْ يَصْبِرْ عَلَى الجِرَاحِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِذَلِكَ، فَقَالَ: «اللَّهُ أَكْبَرُ، أَشْهَدُ أَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ»، ثُمَّ أَمَرَ بِلاَلًا فَنَادَى بِالنَّاسِ: «إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ، وَإِنَّ اللَّهَ لَيُؤَيِّدُ هَذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الفَاجِرِ

অর্থহজরত আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনআমরা আল্লাহর রাসূল ()-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেনএ ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হলতখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত হল। তখন বলা হলহে আল্লাহর রাসূল! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন সে লোকটি জাহান্নামীআজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। নাবী () বললেনসে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেনএকথার উপর কারো কারো অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেনএ সময় খবর এল যেলোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হলসে আঘাতের কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন নাবী ()-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হলতিনি বলে উঠলেনআল্লাহ্ আকবার! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যেআমি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার বান্দা এবং তাঁর রাসুল। অতঃপর নাবী () বিলাল (রাঃ)-কে আদেশ করলেনতখন তিনি লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যেমুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ তাআলা এই দ্বীনকে মন্দ লোকের দ্বারা সাহায্য করেন। তাখরিজবুখারি-৩০৬২

 

হাদিস নং-০২

كما قال النبي صلى الله عليه وسلم للرجل الذي قال: (يا رسول الله! الرجل يأتيني يريد مالي؟ فقال: لا تعطه مالك، قال: فإن قاتلني؟ قال: قاتله، قال: فإن قتلته، قال: هو في النار، قال: فإن قتلني؟ قال: فأنت شهيد) فدل على أن من يقتل مظلوماً دون ماله أو نفسه أو نسائه فهو شهيد.

 

অর্থাৎ কেউ তাকে হত্যা করলে হত্যাকারী জাহান্নামি হবে আর সে হবে শহিদ ( সুতরাং আত্মহত্যা করার সুযোগ নেই) । তাখরিজ:  মুসলিম -১৪০

 

তবে জীবনের ঝুকি নিয়ে আক্রমণ জায়েজ। অর্থাৎ ফিদায়ী আক্রমণের বা আত্মোৎসর্গমূলক অপারেশন বলতে এমন অপারেশন বুঝায় যেখানে এক বা একাধিক ব্যক্তি তাদেরথেকে অস্ত্রশস্ত্রে এবং সংখ্যাধিক্যে প্রবল শত্রুর বিরূদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করেযদিও তারা জানে যে এতে নিশ্চিতভাবে তাদের মৃত্যু ঘটবে। দলিল:

 

إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا ُ

অর্থ: মুমিনদের থেকে তাদের জান এবং মাল জান্নাতের বিনিময়ে ত্রুয় করে নিয়েছেনতারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেহত্যা করে এবং নিহত হয়। সূরা তওবা-১১১

 

সারকথা কথা হলো, যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যা করা জায়েজ হবে না, হারাম। এ সম্পর্কে ইমাম বায (রহ.) জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন,


أسرى المسلمين إذا خَشَوا أن يُؤتى المسلمين من ناحيتهم، إذ يخافون إفشاء معلومات، هل يقتلون أنفسهم؟

الجواب:

لا، ما يجوز، لا يقتلون أنفسهم، يجتهدون في السلامة، والحمد لله، ولا يقتلون أنفسهم.

 অর্থাৎ নাএটা জায়েজ নয়তারা নিজেদের হত্যা করে নাতারা নিরাপত্তার জন্য চেষ্টা করেআল্লাহর প্রশংসাএবং তারা নিজেদের হত্যা করে না। সূত্র: তাতলিকু মাউসুআতুল ফাতওয়াতিল বাযিয়্যা ( ইবনে বায এর ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত)

 

 والله اعلم بالصواب


জিজ্ঞাসা-১৩০৮২: স্ত্রী স্বামীর থেকে তিন তালাক চেয়ে নিলে আবার সংসার করতে পারবে কি

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৮২: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছে তালাক তালাশ নেওয়ার জন্য জোরাজুরি করে। স্বামী তখন তাকে বলে এক তালাক দুই তালাক আরো কতবার তোমার তালাক লাগবে বল, তোমার আশা পূরণ হয়েছে, এবার যাও তোমাকে তালাক দিয়ে দিলাম।

এখন তারা আবার একসাথে সংসার করতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে শরয়ি সমাধান কী?

তারিখ:২৭/০৯/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা শহীদ কক্সবাজার   থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলোআপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক প্রথমে দুই তালাক এবং শেষে তোমাকে তালাক দিলাম এর দ্বারা মোট তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে। 


ফকিহ সাহাবি, (যেমন, হযরত উমর, আলী, ‘উসমান, ইবনে মাসউদ, ইবনে উমর, ইবনে আমর, উবাদাহ বিন সামিত, আবূ হুরাইরা, ইবনে আব্বাস, ইবনে যুবায়ের, আসেম বিন উমর ও হযরত আয়িশা রা.) আয়িম্মায়ে আরবা (ইমাম আবূ হানীফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ) ইমাম বুখারী রহ.-সহ অধিকাংশ তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈদের মতামত হলো: এক মাজলিসে বা একসাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক হয়ে যাবে এবং অন্যত্র বিবাহের পর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে মেলামেশা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম স্বামীর জন্য উক্ত স্ত্রী হালাল হবে না।


আয়াত নং-০১

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠]

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কতৃ নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। সূরা বাকারা-২৩০


হাদিস নং-০১

وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে ‎তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,‎তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। ‎কারণ,রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। ‎যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। তাখরিজ: সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩



সারকথা হলো,  আপনার প্রশ্নের সিয়াক-সাবাক দ্বারা প্রমাণিত হয় তিন তালাকে মুগাল্লাজা পতিত হয়েছে, সুতরাং হিল্লা বিয়ে ছাড়া প্রথম স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে আল-বুরহানে জিজ্ঞাসা-২৩৩ শিরোনামে মাসয়ালাটি আলোচিত হয়েছে। লিংকটি নিচে:

https://al-burhanbd.blogspot.com/2023/10/blog-post_53.html


  والله اعلم بالصواب

Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর