জান্নাত পাওয়ার সহজ ৬ টি আমল !!
১. প্রতিবার ওযূর পর কালিমা শাহাদাত পড়া। এতে জান্নাতের ৮ টি দরজার যে কোনটি দিয়ে তাকে প্রবেশ করতে বলা হবে। উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন,
"যে ব্যাক্তি উত্তমরূপে উযূ (ওযু) করে আর (কালিমা শাহাদাত) বলে তার জন্য বেহেশতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হবে। সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করবে।" [সূনান নাসাঈ (ই.ফা.) ১৪৮, ইবনু মাজাহ ৪৭০]
কালিমা শাহাদাত:
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ٠
২. প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় একবার করে সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার পড়া। 'সকালে পড়ে সন্ধ্যার আগে মারা গেলে' অথবা 'সন্ধ্যায় পড়ে রাতের মধ্যে (সূর্য উদয় হবার আগে) মারা গেলে' সে ব্যাক্তি জান্নাতি হিসাবে গণ্য হবে। (বুখারী-৬৩০৬, তিরমিযী-৩৩৯৩, মিশকাত-২৩৩৫)
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي، لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي، وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ، وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ٠
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী, লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা খলাকতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা, ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্ব‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা সনা‘তু, আবূউলাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা’।
৩. প্রতিবার ফরয সালাতের পর একবার আয়াতুল কুরসি পড়া।
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"যে কেউ আয়াতুল কুরসী প্রত্যেক ফরয সালাতের পরে পাঠ করলে তার মৃত্যুই তার জন্য জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য বাধা হয়ে আছে। অর্থাৎ সে মারা গেলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (নাসাঈ ৯৯২৮,বুলুগুল মারাম ৩২৬)
(আয়াতুল কুরসী -Ayatul Kursi)
اللَّهُ لا إِلهَ إِلّا هُوَ الحَيُّ القَيّومُ، لا تَأخُذُهُ سِنَةٌ وَلا نَومٌ، لَهُ ما فِي السَّماواتِ وَما فِي الأَرضِ، مَن ذَا الَّذي يَشفَعُ عِندَهُ إِلّا بِإِذنِهِ، يَعلَمُ ما بَينَ أَيديهِم وَما خَلفَهُم، وَلا يُحيطونَ بِشَيءٍ مِن عِلمِهِ إِلّا بِما شاءَ، وَسِعَ كُرسِيُّهُ السَّماواتِ وَالأَرضَ، وَلا يَئودُهُ حِفظُهُما وَهُوَ العَلِيُّ العَظيمُ٠
৪. মনোযোগ সহকারে, আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে আযানের উত্তর দেওয়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে আযানের উত্তর দিবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়।" (আবূ দাউদ-৫২৭, মিশকাত-৬৫৮)
জবাব: আযানের সময় মুয়াজ্জিন যা যা বলে, তার সাথে তাই বলতে হবে। শুধুমাত্র মুয়াজ্জিন যখন “হাইয়্যা আ’লাস সালাহ্” ও “হাইয়্যা আ’লাল ফালাহ্” বলবে, তখন তার উত্তরে সেটা না বলে বলতে হবে “লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ”।
৫. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"কোন ব্যক্তি আল্লাহ তা'য়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে চল্লিশ দিন তাকবীরে উলার (প্রথম তাকবীর) সাথে জামা'আতে নামায আদায় করতে পারলে তাকে দুটি নাজাতের ছাড়পত্র দেওয়া হয়ঃ জাহান্নাম হতে নাজাত এবং মুনাফিকী হতে মুক্তি।" (সূনান আত-তিরমিযী-২৪১)
৬. আবূ উমামা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
"যে ব্যক্তি ন্যায়সঙ্গত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের যিম্মাদার; আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের যিম্মাদার আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের যিম্মাদার।" (সূনান আবূ দাউদ-৪৮০০)
সম্ভব হলে উপরের সবগুলো আমল করার চেষ্টা করি। এ আমলগুলো তেমন কঠিন নয়। আর না হলে অন্তত যে কোন একটি আমল নিয়মিত করার চেষ্টা করতে পারি। ইনশাআল্লাহ
আল্লাহ্ পাক সবাইকে সেই সামর্থ্য দান করুন, আমীন।
صَلَّى ٱللَّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ﷺ)