প্রশ্ন-১৩০৭৯:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। সম্মানিত মুফতি সাহেব আমার দুটি প্রশ্ন।
১। মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সাথে সহুসিজদা করা সত্তেও তার শেষ রাকাতেও আবার সহুসিজদা করতে হবে কী?
২। কোন ব্যক্তি নিজ ঘরে সুন্নত সলাত আদায় করে মসজিদে গিয়ে দেখে আজান হয়নি তাহলে কী সে আজান দিতে পারবে হোক সে ইমাম অথবা মুয়াজ্জিন অথবা সাধারণ মুসল্লী।
তারিখ :২৩ /০৯/ ২৪ ঈসায়ী / ইংরেজি
মাওলানা আনোয়ারুল আম্বিয়া সিলেট থেকে।
ব্যক্তি : ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাত নেটওয়ার্ক। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলীল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ - সানার পর প্রথম কথা , আপনার প্রশ্নের বর্ণনা আলোকে ভাগে ভাগে উত্তর দেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন: ০১। মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সাথে সহু সিদা করা সত্তেও তার শেষ রাকাতেও আবার সহু সিজাদা কি করতে হবে?
উত্তর: ০২। মুক্তিদির কোন ভুলের কারণে ইমামের উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। ইমামের সাহু সিজাদাই মুক্তির জন্য যথেষ্ট। দলিল-
لما روي عن عمر رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: (ليس على من خلف الإمام سهو، فإن سها الإمام فعليه وعلى من خلفه السهو، وإن سها من خلف الإمام فليس عليه سهو والإمام كافيه) الدارقطني: ج ١/ ص ٣٧٧ .
ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে দলটি করা হয়েছে, পাটকেল কেন্দ্র কেন্দ্র ওয়াসাল্লাম লেখক: ইমামের উত্তর কোন সাহু সিজাদা নেই। যদি ইমাম সাহু সিজদা করে এবং তার পরেও স্থায়ী হয় এবং যদি ইমামের উত্তরাধিকার সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় তবে তার কোন সাহু সিজদা নেই এবং ইমামই যথেষ্ট। তাখরিজঃ দারে কুতনি-১/৩৭৭
তাই মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সাথে সাহু সিজাদা করার পর তার শেষ রাকাতেও আবার সাহু সিজাদা করতে হবে না। তবে মাসবুক ব্যক্তি তার ছুটে যেতে রাতকে পড়ার সময় যদি কোন কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে।
প্রশ্ন: ০২। কোন ব্যক্তি নিজ ঘরে সুন্নত সলাত আদায় করে মসজিদে গিয়ে দেখে আজান হয়নি তাহলে কী সে আজান দিতে পারবে হোক সে ইমাম অথবা মুয়াজ্জিন অথবা সাধারণ মুসল্লী।
উত্তর: ০২। আজান হলো শিআরে ইসলাম, ইসলামের নিদর্শন।
কোন কোন ইমামের আজানফা দেওয়া ফরজে কিয়া; চ্যানেল সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। দলিল-
حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ غَيْلاَنَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ، عَنْ أَبِي قِلاَبَالِكِيْنَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَالِفِي قَالَ قَدِمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَابْنُ عَمٍّ لِي فَقَالَ لَنَا " إِذَا سَافَرْتُمَا فَأَذِّنَا وَأَلَى رَسُولِ صلى الله عليه وسلم এ " قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ। وَالْعَمَلُ عَلَيْهِ عِنْدَ أَكْثَرِ أَهْلِ الْعِلْمِ اخْتَارُوا الأَذَانَ فِي السَّفَرِ। وَقَالَ بَعْضُهُمْ تُجْزِئُ الإِقَامَةُ إِنَّمَا الأَذَانُ عَلَى مَنْ يُرِيدُ أَنْ يَجْمَعَ النَّاسَ . وَالْقَوْلُ الأَوَّلُ أَصَحُّ। وَبِهِ يَقُولُ أَحْمَدُ وَإِسْحَاقُ।
২০৫। মাহমুদ ইবনে গায় (রাহঃ) ..... বর্ণনা ইবনুল হুওয়ায়রিছ (রাযিঃ) তিনি বলেন, একবার আমি এক চাচাত ভাই সহ বর্ণনার কাছে এলে তিনি আমাদের বলেছিলেন তখন তোমরা সফরে থাকবে আযান ও ইক মতবাদ। আর তোমাদের মধ্যে যে বড় সে ইমামত করবে।
—জামে' তিরমিযী, সদস্য নং ২০৫ (আন্তর্জাতিক নং ২০৫)
তাই ফকিহগণ বলেছেন, আজান ছাড়া জামায়াতে নামাজ পড়া মাকরুহ। তাই মসজিদে আজান দেওয়া জরুরি। কোন কারণে মুয়াজ্জিন দিতে না পারলে উপস্থিত মুসল্লি আজান দিবে। এ ক্ষেত্রে ধনী-গরিব, আলেম-গয়রে আলেম, ইমাম-মুসল্লি কোন ভেদাভেদ নেই। দলিল-
٢٠٠٢ - وَأَخْبَرَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ بْنُ بِشْرَانَ ثنا أَبُو عَمْرِو بْنُ السَّمَّاكِ ثنا حَنْبَلُ بْنُ إِسْحَاقَ ثِنْبَلُ بْنُ إِسْحَاقَ ثِنْ إِبْرَاهُ اَبُو إِسْمَاعِيلَ الْمُؤَدِّبُ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ قَالَ: قَدِمْنَا عَلَیْمَ الَخَلَ «مَنْ مُؤَذِّنُكُمْ فَقُلْنَا عَبِيدُنَا وَمَوَالِينَا فَقَالَ بِيَدِهِ هَكَذَا يُقَلِّبُهَا عَبِيدُنَا وَمَوَالِينَا: إِنَّ ذَلِكُمْ بِكُمْ لَنَقْصٌ مَا شَدِيدٌ لَوْ أَطَقْصَفَأَفَانَ لَوْ أَطَقْتِ الْعَلَيْتُ َذَّنْتُ»
السنن الكبرى - البيهقي - ط العلمية ١/٦٢٧ — أبو بكر البيهقي (ت ٤٥٨)
বিখ্যাত তাবেয়ি হজরত কায়েস বিন হাজেম (রহ.) বর্ণনা করেন, ওমর ফারুক (রা.) এর খেলাফতে আমরা তার কাছে গেলাম। হজরত ওমর (রা.) আমাদের বললেন, ‘তোমাদের জনপদে কোন শ্রেণির মানুষ মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে?’ আমি বললাম, ‘সাধারণত গোলাম অথবা আজাদ করা গোলামই এ পেশায় নিয়োগ হয়।’
এ কথা শুনে হযরত ওমর (রা.) খুব দুঃখ পেলেন।
তিনি বললেন, ‘এটা তোমাদের চরম উদাসীনতার পরিচয়! আজান দেয়া অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ আমল। আমার ওপর যদি খেলাফতের দায়িত্ব না থাকত, তবে আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য নিজেই আজান দিতাম। (সুনানে বায়হাকি: ২০০২)।
সুতরাং কোন ব্যক্তি নিজ ঘরে সুন্নত সলাত আদায় করে মসজিদে গিয়ে দেখে আজান হয়নি তাহলে কী সে আজান দিতে পারবে হোক সে ইমাম অথবা মুয়াজ্জিন অথবা সাধারণ মুসল্লী। উল্লেখ্য যে, সুন্নাত পূর্বে আদায় করে আজান দিতে অসুবিধা নেই।
والله اعلم بالصواب