আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৩০২: যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যার বিধান কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৩০২:

আসসালামু আলাইকুম।

মুহতারাম! অনুগ্রহ পূর্বক যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যার বিধান সম্পর্কে জানালে ভালো হয়।

جزاكم الله خيرا


হাফেজ মাওলানা  সাইফুল ইসলাম নোয়াখালী থেকে-----


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  কথা হলো আমরা জানি আত্মহত্যা মহাপপপ।  ইসলাম কোনো অবস্থায় আত্মহত্যা অনুমোদন করেননি। দলিল:

 

আয়াত নং-০১

: وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا

 তোমরা তোমাদের নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর করুণাময়। সুরা নিসা-২৯

 

আয়াত নং-০২

وَلَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّہۡلُکَۃِ ۚۖۛ

তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ফেলো না। সুরা বাকারা-১৯৫

 

হাদিস নং-০১

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: شَهِدْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لِرَجُلٍ مِمَّنْ يَدَّعِي الإِسْلاَمَ: «هَذَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ»، فَلَمَّا حَضَرَ القِتَالُ قَاتَلَ الرَّجُلُ قِتَالًا شَدِيدًا فَأَصَابَتْهُ جِرَاحَةٌ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، الَّذِي قُلْتَ لَهُ إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ، فَإِنَّهُ قَدْ قَاتَلَ اليَوْمَ قِتَالًا شَدِيدًا وَقَدْ مَاتَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِلَى النَّارِ»، قَالَ: فَكَادَ بَعْضُ النَّاسِ أَنْ يَرْتَابَ، فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ، إِذْ قِيلَ: إِنَّهُ لَمْ يَمُتْ، وَلَكِنَّ بِهِ جِرَاحًا شَدِيدًا، فَلَمَّا كَانَ مِنَ اللَّيْلِ لَمْ يَصْبِرْ عَلَى الجِرَاحِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ، فَأُخْبِرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِذَلِكَ، فَقَالَ: «اللَّهُ أَكْبَرُ، أَشْهَدُ أَنِّي عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ»، ثُمَّ أَمَرَ بِلاَلًا فَنَادَى بِالنَّاسِ: «إِنَّهُ لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ، وَإِنَّ اللَّهَ لَيُؤَيِّدُ هَذَا الدِّينَ بِالرَّجُلِ الفَاجِرِ

অর্থহজরত আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনআমরা আল্লাহর রাসূল ()-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেনএ ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হলতখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত হল। তখন বলা হলহে আল্লাহর রাসূল! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন সে লোকটি জাহান্নামীআজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। নাবী () বললেনসে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেনএকথার উপর কারো কারো অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেনএ সময় খবর এল যেলোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হলসে আঘাতের কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন নাবী ()-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হলতিনি বলে উঠলেনআল্লাহ্ আকবার! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যেআমি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার বান্দা এবং তাঁর রাসুল। অতঃপর নাবী () বিলাল (রাঃ)-কে আদেশ করলেনতখন তিনি লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যেমুসলিম ব্যতীত কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ তাআলা এই দ্বীনকে মন্দ লোকের দ্বারা সাহায্য করেন। তাখরিজবুখারি-৩০৬২

 

হাদিস নং-০২

كما قال النبي صلى الله عليه وسلم للرجل الذي قال: (يا رسول الله! الرجل يأتيني يريد مالي؟ فقال: لا تعطه مالك، قال: فإن قاتلني؟ قال: قاتله، قال: فإن قتلته، قال: هو في النار، قال: فإن قتلني؟ قال: فأنت شهيد) فدل على أن من يقتل مظلوماً دون ماله أو نفسه أو نسائه فهو شهيد.

 

অর্থাৎ কেউ তাকে হত্যা করলে হত্যাকারী জাহান্নামি হবে আর সে হবে শহিদ ( সুতরাং আত্মহত্যা করার সুযোগ নেই) । তাখরিজ:  মুসলিম -১৪০

 

তবে জীবনের ঝুকি নিয়ে আক্রমণ জায়েজ। অর্থাৎ ফিদায়ী আক্রমণের বা আত্মোৎসর্গমূলক অপারেশন বলতে এমন অপারেশন বুঝায় যেখানে এক বা একাধিক ব্যক্তি তাদেরথেকে অস্ত্রশস্ত্রে এবং সংখ্যাধিক্যে প্রবল শত্রুর বিরূদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করেযদিও তারা জানে যে এতে নিশ্চিতভাবে তাদের মৃত্যু ঘটবে। দলিল:

 

إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَى مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنْفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُمْ بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا ُ

অর্থ: মুমিনদের থেকে তাদের জান এবং মাল জান্নাতের বিনিময়ে ত্রুয় করে নিয়েছেনতারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করেহত্যা করে এবং নিহত হয়। সূরা তওবা-১১১

 

সারকথা কথা হলো, যুদ্ধবন্দী হওয়ার পূর্বে তথ্যের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যুদ্ধ ক্ষেত্রে আত্নহত্যা করা জায়েজ হবে না, হারাম। এ সম্পর্কে ইমাম বায (রহ.) জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন,


أسرى المسلمين إذا خَشَوا أن يُؤتى المسلمين من ناحيتهم، إذ يخافون إفشاء معلومات، هل يقتلون أنفسهم؟

الجواب:

لا، ما يجوز، لا يقتلون أنفسهم، يجتهدون في السلامة، والحمد لله، ولا يقتلون أنفسهم.

 অর্থাৎ নাএটা জায়েজ নয়তারা নিজেদের হত্যা করে নাতারা নিরাপত্তার জন্য চেষ্টা করেআল্লাহর প্রশংসাএবং তারা নিজেদের হত্যা করে না। সূত্র: তাতলিকু মাউসুআতুল ফাতওয়াতিল বাযিয়্যা ( ইবনে বায এর ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত)

 

 والله اعلم بالصواب