আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

স্বাস্থ্য পরামর্শ- পর্ব ২৫: শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার ক্ষতিসমূহঃ

No Comments

 



স্বাস্থ্য পরামর্শঃ পর্ব ২৬ 🌹

*শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার ক্ষতিসমূহঃ-*


মোটা মানুষকে দেখতে অসুন্দর লাগে।

শরীরের ফিটনেস থাকে না। গায়ের শক্তি কমে যায়।

ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপার টেনশন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

পুরুষত্ব কমতে থাকে। পুরুষত্ব নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে তার লজ্জিত হওয়া লাগতে পারে স্ত্রীর নিকট। অতঃপর স্ত্রী পরকীয়ার দিকে হাঁটতে পারে।

আর যদি স্ত্রী মোটা হয়, স্ত্রীর ওজন বেশি থাকে, তাহলে সে তার স্বামীকে খুশি করতে পারবে না। প্রয়োজন পুরা করতে পারবে না। স্বামী পরকিয়ার দিকে যেতে পারে। নাউজুবিল্লাহ


যাদের ওজন বেশি তারা আজ এখনই পাক্কা এরাদা করুন ওজনকে কন্ট্রোলে নিয়ে আসার জন্য, নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য।



অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য করণীয় সম্পর্কে ৩ নং পর্বে আলোচনা করা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।




ডাঃ মুহাম্মাদ রবিউল আকরাম

আমল ও দুআ-১৩৭: সাতবার পাঠের জিকির

No Comments

 



সাতবার পাঠের জিকির


জিকির নং -১০

 اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ .

সনদসহ মতন:

হাদিস নং-০১

3467 - إذا صليت الصبح فقل قبل أن تكلم أحدا من الناس : اللهم أجرني من النار سبع مرات ، فانك أن مت من يومك ذلك كتب الله لك جوارا من النار ، وإذا صليت المغرب فقل قبل ان تكلم أحدا من الناس : اللهم أجرني من النار سبع مرات ، فانك ان مت من ليلتك كتب الله لك جوارا من النار.

(حم د ت عن الحارث التيمي).


3467: جب آدمی اپنی نماز سے فارغ ہوجائے تو کہے " رضیت باللہ ربا وبالاسلام دینا وبالقرآن اماما " یعنی میں راضی ہوں اس پر کہ اللہ ہمارا رب ہے، اسلام ہمارا دین اور قرآن ہمارا امام۔ پس اللہ پر بھی لازم ہوگا کہ وہ اس کے قائل کو راضی کرے۔ (الابانہ للسجزی عن الزبیر)

کلام : ضعیف الجامع 606 ۔ الضعیفۃ 970)

—কানযুল উম্মাল (উর্দু), হাদীস নং ৩৪৬৭

হাদিস নং -০২

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَبُو النَّضْرِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ الْفِلَسْطِينِيُّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حَسَّانَ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مُسْلِمٍ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ، مُسْلِمِ بْنِ الْحَارِثِ التَّمِيمِيِّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ أَسَرَّ إِلَيْهِ فَقَالَ " إِذَا انْصَرَفْتَ مِنْ صَلاَةِ الْمَغْرِبِ فَقُلِ اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ . سَبْعَ مَرَّاتٍ فَإِنَّكَ إِذَا قُلْتَ ذَلِكَ ثُمَّ مِتَّ فِي لَيْلَتِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا وَإِذَا صَلَّيْتَ الصُّبْحَ فَقُلْ كَذَلِكَ فَإِنَّكَ إِنْ مِتَّ فِي يَوْمِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا " . أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ عَنِ الْحَارِثِ أَنَّهُ قَالَ أَسَرَّهَا إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَنَحْنُ نَخُصُّ بِهَا إِخْوَانَنَا .

৪৯৯৪. ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ..... মুসলিম ইবনে হারিছ তামিমী (রাযিঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ একদা নবী (ﷺ) গোপনে তাকে বলেন যে, যখন তুমি মাগরিবের নামায শেষ করবে, তখন সাতবার এ দুআ পাঠ করবেঃ হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে পানাহ দিন। কেননা, সন্ধ্যায় যদি তুমি এ দুআ পাঠ কর এবং সে রাতে মারা যাও, তবে তুমি জাহান্নাম থেকে নাজাত পাবে। আর ফজরের নামায আদায়ের পর যদি তুমি এরূপ বল, আর তুমি যদি সেদিন মারা যাও, তবে তুমি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে।


আবু সাঈদ (রাহঃ) বলেন যে, হারিছ ইবনে মুসলিম (রাহঃ) বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) গোপনে আমার কাছে এজন্য এ দুআ প্রকাশ করেন, যাতে আমি আমার ভাইদের কাছে এটা বিশেষ ভাবে প্রচার করি।

—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯৯৪ (আন্তর্জাতিক নং ৫০৭৯)

বর্ণনাকারী: বিবিধ



জিকির নং -১১

حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

সনদসহ মতন:

حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ بْنُ مُسْلِمٍ الدِّمَشْقِيُّ، - وَكَانَ مِنْ ثِقَاتِ الْمُسْلِمِينَ مِنَ الْمُتَعَبِّدِينَ - قَالَ حَدَّثَنَا مُدْرِكُ بْنُ سَعْدٍ - قَالَ يَزِيدُ شَيْخٌ ثِقَةٌ - عَنْ يُونُسَ بْنِ مَيْسَرَةَ بْنِ حَلْبَسٍ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رضى الله عنه قَالَ مَنْ قَالَ إِذَا أَصْبَحَ وَإِذَا أَمْسَى حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ سَبْعَ مَرَّاتٍ كَفَاهُ اللَّهُ مَا أَهَمَّهُ صَادِقًا كَانَ بِهَا أَوْ كَاذِبًا ‏.‏

৪৯৯৫. ইয়াযিদ ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) .... আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সাতবার বলেঃ ’’আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট। তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমি তাঁর উপর ভরসা করি এবং তিনি মহান আরশের রব’’ আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট হবেন যা তাকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে তার বিরুদ্ধে চাই সে সত্যিকারভাবে অথবা কৃত্রিমভাবে বলুক না কেন।

—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯৯৫ (আন্তর্জাতিক নং ৫০৮০-৫০৮১)



*সংগ্রহে, রিলিজিয়ন কাউন্সেলিং অফিসার মোঃ আবিদ আলী হাফিজাহুল্লাহু*

জিজ্ঞাসা -১২৩৩৫: নামাজের মধ্যে কথা বলা প্রসঙ্গে

No Comments

 



জিজ্ঞাসা -১২৩৩৫:

আসসালামু আলাইকুম 

 আমার প্রশ্ন হলো -জোহর নামাযের জামাতে ইমাম সাহেব তিন রাকাত শেষ করে চার রাকাতের জন্য দাঁড়ানোর মুহূর্তে মুয়াজ্জিন লোকমা দিলে ইমাম সাহেব বসে গেলেন এবং যথারীতি সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করলেন। সালাম ফিরানোর পর মুসল্লিরা সবাই বলতে শুরু করলো নামাজ তিন রাকাত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাকি এক রাকাত নামাজ পড়লে হবে নাকি সম্পূর্ণ চার রাকাত নামাজ আবার পুনরায় পড়তে হবে? এ ব্যাপারে শরিয়তের হুকুম কি ? তারিখ: ১০/১১/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি



জনৈক মাওলানা টাঙ্গাইল থেকে।

 


জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته


 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم


তাসলিম ও হামদ-দরুদ পর প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নে বর্ণনানুসারে যেহেতু মুসল্লিটটটটনসরা সবাই (অধিকাংশ) কথা বলেছেন, ফোকাহায়ে আহনাফের মতে সবারই নামাজ ফাসেদ বা বাতিল হয়ে গিয়েছে। দলিল:


হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، عَنْ وَلاَ شَتَمَنِي قَالَ " إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَصْلُحُ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ "------


আবূ জাফার মুহাম্মাদ ইবনুস্ সাব্বাহ ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ (রহঃ) ..... মু'আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস সুলামী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সময় -------


আল্লাহর শপথ করে বলছি, তিনি আমাকে ধমকালেন না বা মারলেন না কিংবা বকাঝকাও করলেন না। বরং বললেনঃ সলাতের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশতঃ তাসবীহ, তাকবীর বা কুরআন পাঠ করতে হবে। তাখরিজ: মুসলিম শরীফ ১০৮৬.


 


হাদিস নং-০২


حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ أَبِيْ عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ يُكَلِّمُ أَحَدُنَا أَخَاهُ فِيْ حَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ} فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوْتِ


অর্থ: হজরত যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা সালাতের মধ্যে কথাবার্তা বলতাম আর আমাদের কেউ অন্য ভাইয়ের প্রয়োজন নিয়ে কথা বলতেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ তখন আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। তাখরিজ: বুখারী- ৪৫৩৪.১২০০




হাদিস নং-০৩

عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا، فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا وَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغْلاً ‏"‏‏.‏


অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) এর নামায পড়া অবস্থায় আমরা তাঁকে সালাম দিতাম এবং তিনি সালামের উত্তরও দিতেন। অতঃপর যখন নাজাশীর নিকট থেকে ফিরে এলাম, তখন সালাম দিলে তিনি উত্তর দিলেন না। পরে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “নামাযে মগ্নতা আছে।” তাখরিজ: বুখারী-১১




সারকথা কথা হলো, নামাজের প্রয়োজনে কথা বললে নামাজ ভাঙ্গে না হাদীসটি সহিহ হলেও পরবর্তী সূরা বাকারার-২৩৮ আয়াত দ্বারা মানসুখ হয়ে যাওয়া। সুতরাং উক্ত যোহরের নামাজ পুনরায় পড়তে হবে।



উল্লেখযোগ্য যে, এ সংক্রান্ত একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা-২৭৪ শিরোনামে আলোচিত হয়েছে। হোম পেজে সার্চ দিলে পাওয়া যাবে ইনশাল্লাহ।


উত্তর লিখেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক বগুড়া

দ্বীনি সচেতনতা-৫৭: প্রতিটি দিনই আমাদের নববর্ষ*

No Comments

 



*প্রতিটি দিনই আমাদের নববর্ষ*

ইমাম আবু

হানীফা রাহ.-এর আব্বার নাম

ছাবিত। দাদার নাম যূতাহ। প্রথমে

তিনি (দাদা) ইসলাম গ্রহণ

করেছিলেন। তাঁরা পারস্যের

ছিলেন। অগ্নি পূজক ছিলেন। তাঁর

সন্তান হলেন ছাবিত, ছাবিতের

সন্তান হলেন ইমাম আবু হানীফা

রাহ.। ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর

পিতা ছাবিতকে তার আব্বা নিয়ে

গিয়েছিলেন আলী রা.-এর কাছে।

কুফাতে থাকতেন তাঁরা। আলী

রা.ও তাঁর খেলাফতের সময় কুফায়

ছিলেন। 


তিনি ছাবিতকে আলী

রা.-এর কাছে নিয়ে বললেন - এ

আমার ছেলে। ছাবিত রাহ.-এর জন্য

দুআ করে দিয়েছেন আলী রা.। দুআর

সময় শুধু ছাবিতের জন্য দুআ করেন

নি; ছাবিত এবং তার বংশধরের

জন্য করেছেন। ওই দুআর সবচেয়ে

বেশি ভাগ পেয়েছেন ইমাম আবু

হানীফা রাহ.। যেহেতু আলী রা.-

এর সাথে ইমাম আবু হানীফা

রাহ.-এর দাদার সম্পর্ক ছিল, তাই

বিভিন্ন উপলক্ষে যাতায়াত ছিল।

তাঁরা যেহেতু পারস্য থেকে

এসেছেন, নতুন নতুন ইসলাম গ্রহণ

করেছেন, এখনও ইসলামের সব

বিধিবিধান আয়ত্তে আসেনি।

তাই আগের তালে তালে মনে হল

যে, আজকে তো আমাদের নওরোয,

এটা একটা সুযোগ, তিনি আলী রা.-

এর জন্য কিছু হাদিয়া নিলেন।

হাদিয়া নিলেন নববর্ষ উপলক্ষে।

আলী রা. জিজ্ঞেস করলেন, এটা

কী? 

তিনি বললেন, আজকে তো

আমাদের ওখানো (পারস্যে)

নওরোয, সে হিসেবে কিছু হাদিয়া

আনলাম। এ কথা শুনে আলী রা.

বললেন, ‘নওরোযুনা কুল্লা

ইয়াওম’ (প্রতিটি দিনই আমাদের

নববর্ষ)। তুমি তো মুসলিম, ইসলাম

গ্রহণ করেছ; জান মুসলিমের নওরোয

কী? প্রতিটি দিনই মুসলিমের

নওরোয। এটা বছরে একবার আসে

না, প্রতিদিন আসে।

এখন আমরা সেই ইসলামী শিক্ষা

ভুলে গিয়েছি। 

(এই ঘটনাটি আল কাউসার হতে সংগৃহীত)


হিজরি নববর্ষ একেবারেই নিকটবর্তী। ইসলামী শরীয়তে নববর্ষ উদযাপনের কোনো সুযোগ নাই; সেটা ইংরেজি নববর্ষ হোক অথবা বাংলা নববর্ষ হোক অথবা আরবি নববর্ষ হোক। তো এজন্য আমরা কাউকে আরবি নববর্ষ উপলক্ষে কোনো মেসেজ পাঠাবো না, কোনো শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাবো না। কেউ যদি আমাদের নিকট শুভেচ্ছা বার্তা পাঠায় আমরা তাকে দুই কথা বুঝিয়ে বলার জন্য চেষ্টা করব।


হিজরী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট করা থেকে নিজেকে বিরত রাখি। সাহাবায়ে কেরাম একে অপরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতেন না।



দ্বীনি সচেতনতা-৫৬: থার্টি ফার্স্ট নাইট আপনাকে ছোবল থেকে বাঁচা থেকে বাঁচাই এবং নিজের অধীনদের বাঁচাই-*

No Comments


 



* থার্টি  ফার্স্ট নাইট আপনাকে ছোবল থেকে বাঁচা থেকে বাঁচাই এবং নিজের অধীনদের বাঁচাই-*


"থার্টি ফার্স্ট নাইট উদপন" এই কাজটি খারাপ মনে করা চাই। আফসোসের বিষয়বস্তু অনেক এই কাজটা খারাপ মনে করে না। অনেক তারা এই রাত লাইন উল্লাসের সাথে উদযাপন করে। নাউজুবিল্লাহ

আমরা নিজেরা ব্যবহার করব না। অধীনস্থ স্ত্রী-সন্তান যাতে নিজের অবস্থানে অংশগ্রহণ না করে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

আমরা অনলাইনে হেপি নিউ ইয়ার অথবা নববর্ষ ইত্যাদি কোনো ধরনের পোস্ট দিব না।

পালকে পরকে শুভ নববর্ষ বা হাল নিউ ইয়ার এর স্বাচ্ছন্দ্য থেকে থাকেব। নববর্ষের বিষ্ময়ক মেসেজ বোতল না।

নববর্ষের সুখে কেউ যদি আমার মেসেজ জানায় তাহলে আমি তাকে বলবো না আমি দুই কথা বলতে বলতে, এমন কাজ না করা উচিত।

এই রাত বেশি বেশি ইস্তেগফার করতে চাই। কারণ এই রাত্রে পৃথিবীর দুনিয়া গোনাহর সয়লাব হয়ে যায়। এক রাতই এত বেশি গুণাহ হয়, যেটা অন্য সাধারণ রাত্রির চাইতে অনেক বেশি।

অনেক অফিসের অফিস প্রধান মহতী হয়। তাই সে থেকে সহযোগিতা নিয়ে এই ধরনের প্লাটফর্ম নিজের মত করে থাকে। সেখানে গান-বাজনা ফুর্তি-দাওয়া হাসি তাসার পরিবেশ করে। এই ধরনের শরীয়ত গর্হিত সংযোগ যোগ করে সব লোক যে লোকটি পবিত্র গুনাহ কামাই করে, অফিসের প্রধান নেতা নিজেই সেই পরিমান গুনাহ কামাই করে; তাকে উদ্যোক্তা এবং আয়োজক। 

এ প্লাস্টিক ধরনের থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। প্রয়োজনে কোনো কৌশল অবলম্বন করা।

29.12.2020


রবিউল আকরাম

জিজ্ঞাসা-২৭৪: নামাজের মধ্যে কোন কথা বললে নামাজ বাতিল হবে কি ?

No Comments

 












জিজ্ঞাসা-৭৪:

আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

প্রশ্ন : জনৈক ইমাম মাগরিবের নামাজ দুই রাকাতের বৈঠক শেষে উভয় দিকে সালাম ফিরিয়ে নিলে মুসল্লিদের কেউ বললসালাত দুই রাকাত হয়েছে।

 

এবার ইমাম নিশ্চিত হতে জিজ্ঞেস করলেন, "সালাত কি দুই রাকাতই হয়েছে? .. আচ্ছা ঠিক আছেতাহলে আমরা আর এক রাকাত পড়ে নেই।"

এই বলে তিনি এক রাকাত নামাজ পড়ে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করলেন।

এরপর দাঁড়িয়ে নিম্মের হাদীস দিয়ে দলীল দিয়ে বললেনএভাবে কথা বললেও নামাজ সঠিক হয়।

حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ أَوِ الْعَصْرَ فَسَلَّمَ، فَقَالَ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ الصَّلاَةُ يَا رَسُولَ اللَّهَ أَنَقَصَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لأَصْحَابِهِ ‏ "‏ أَحَقٌّ مَا يَقُولُ ‏"‏‏.‏ قَالُوا نَعَمْ‏.‏ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ أُخْرَيَيْنِ ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ‏.‏ قَالَ سَعْدٌ وَرَأَيْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ صَلَّى مِنَ الْمَغْرِبِ رَكْعَتَيْنِ فَسَلَّمَ وَتَكَلَّمَ ثُمَّ صَلَّى مَا بَقِيَ وَسَجَدَ سَجْدَتَيْنِ وَقَالَ هَكَذَا فَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

 

আবূ  হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেননবী () আমাদের নিয়ে যুহর বা আসরের সালাত আদায় করলেন এবং সালাম ফিরালেন। তখন যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনইয়া আল্লাহ্‌র রাসূল! সালাত কি কম হয়ে গেলনবী () তাঁর সাহাবীগণকে জিজ্ঞেস করলেনসে যা বলছেতা কি ঠিকতাঁরা বললেন,‌ হাঁ। তখন তিনি আরও দুরাকআত সালাত আদায় করলেন। পরে দুটি সিজদা‌  করলেন। সাদ (রহঃ) বলেনআমি উরওয়াহ ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ)-কে দেখেছিতিনি মাগরিবের দুরাকআত সালাত আদায় করে সালাম ফিরালেন এবং কথা বললেন। পরে অবশিষ্ট সালাত আদায় করে দুটি সিজদা করলেন এবং বললেননবী () এ রকম করেছেন। সহিহ বুখারীহাদিস নং ১২২৭

 

সাথে সাথে তিনি কুরআনের আয়াত (ولا تبطلوا أعمالكم)

দিয়ে দলীল দিলেন।

 

----

উপস্থিত একজন ব্যক্তি সাথে সাথে অন্য একজন মুফতি সাহেবের কাছে ফোন করে জানতে চাইলে উক্ত মুফতি সাহেব বললেনসালাত নষ্ট হয়ে গেছেসালাতটি পুনরায় আদায় করতে হবে। তিনি নামাজে কথা বলা যায় না মর্মে নিন্মের হাদীসটি উল্লেখ করেন -

حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ بَيْنَا أَنَا أُصَلِّي، مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ ‏.‏ فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ فَقُلْتُ وَاثُكْلَ أُمِّيَاهْ مَا شَأْنُكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ ‏.‏ فَجَعَلُوا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُصَمِّتُونَنِي لَكِنِّي سَكَتُّ فَلَمَّا صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَبِأَبِي هُوَ وَأُمِّي مَا رَأَيْتُ مُعَلِّمًا قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ أَحْسَنَ تَعْلِيمًا مِنْهُ فَوَاللَّهِ مَا كَهَرَنِي وَلاَ ضَرَبَنِي وَلاَ شَتَمَنِي قَالَ ‏"‏ إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَصْلُحُ فِيهَا شَىْءٌ ------

মুআবিয়াহ্ ইবনুল হাকাম আস্ সুলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেনকোন এক সময় আমি রসূলুল্লাহ () এর সাথে সলাত আদায় করছিলাম। ইতোমধ্যে (সলাত আদায়কারীদের মধ্যে) কোন একজন লোক হাঁচি দিলে (জবাবে) আমি ইয়ার্হামুকাল্ল-হ” (অর্থাৎ- আল্লাহ তোমার প্রতি রহম করুন) বললাম। এতে সবাই রুষ্ট দৃষ্টিতে আমার প্রতি তাকাতে থাকল। তা দেখে আমি বললামঃ আমার মা আমার বিয়োগ ব্যথায় কাতর হোক। (অর্থাৎ-এভাবে আমি নিজেকে ভৎসনা করলাম)। কি ব্যাপার! তোমরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ যেতখন তারা নিজ নিজ উরুতে হাত চাপড়াতে থাকল। (আমার খুব রাগ হওয়া সত্ত্বেও) আমি যখন দেখলাম যেতারা আমাকে চুপ করাতে চায় তখন আমি চুপ করে রইলাম। পরে রসূলুল্লাহ () সলাত শেষ করলে আমি তাঁকে সবকিছু বললাম। আমার পিতা ও মাতা তাঁর জন্য কুরবান হোক। আমি ইতোপূর্বে বা এর পরে আর কখনো অন্য কোন শিক্ষককে তাঁর চেয়ে উত্তম পন্থায় শিক্ষা দিতে দেখিনি। আল্লাহর শপথ করে বলছিতিনি আমাকে ধমকালেন না বা মারলেন না কিংবা বকাঝকাও করলেন না। বরং বললেনঃ সলাতের মধ্যে কথাবার্তা ধরণের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশতঃ তাসবীহতাকবীর বা কুরআন পাঠ করতে হবে অথবা রসূলুল্লাহ () যেরূপ বলেছেন। আমি বললামহে আল্লাহর রসূল () ! আমি সবেমাত্র জাহিলিয়াত বর্জন করেছি এবং এরপর আল্লাহ আমাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা গণকদের কথায় বিশ্বাস করে। তিনি () (এ কথা শুনে) বললেনঃ তুমি গণকদের কাছে যেয়ো না। সে বললঃ আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা শুভ অশুভ লক্ষণ নির্ধারণ করে থাকে। তিনি বললেনঃ এটা তাদের হৃদয়ের বদ্ধমূল বিশ্বাস। এটি তাদেরকে (ভাল কাজ করতে) বাধা না দেয়। হাদীস বর্ণনাকারী সাববাহ বলেছেনতা যেন তোমাকে বাধা না দেয়। লোকটি বর্ণনা করেছেন- আমি আবারও বললামঃ আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা রেখা টেনে শুভ-অশুভ নির্ধারণ করে থাকে। রসূলুল্লাহ () বললেনঃ একজন নবী এভাবে রেখা টানতেন। সুতরাং কারো রেখা যদি (নাবীর রেখা) অনুরূপ হয় তাহলে তা ঠিক হবে।[৪]

 

বর্ণনাকারী মুআবিয়াহ্ বলেনআমার এক দাসী ছিল সে উহুদ ও জাও্ওয়ানিয়্যাহ্ এলাকায় আমার বকরীপাল চরাত। একদিন আমি হঠাৎ সেখানে গিয়ে দেখলাম তার বকরীপাল থেকে বাঘে একটি বকরী নিয়ে গিয়েছে। আমি তো অন্যান্য আদম সন্তানের মত একজন মানুষ। তাদের মত আমিও ক্ষোভ ও চপেটাঘাত করলাম। এরপর আমি রসূলুল্লাহ () -এর কাছে আসলাম (এবং সব কথা বললাম) কেননা বিষয়টি আমার কাছে খুবই গুরুতর মনে হলো। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রসূল! আমি কি তাকে (দাসী) মুক্ত করে দিবতিনি বললেনঃ তাকে আমার কাছে নিয়ে আসো। সুতরাং আমি তাকে এনে রসূলুল্লাহ () -এর কাছে হাজির করলাম। তিনি তাঁকে (দাসীকে) জিজ্ঞেস করলেনঃ (বলো তো) আল্লাহ কোথায়সে বলল- আকাশে। নবী () বললেন, (বলো তো) আমি কেসে বললঃ আপনি আল্লাহর রসূল। তখন রসূলুল্লাহ () আমাকে বললেনঃ তুমি তাকে মুক্ত করে দাওসে একজন মুমিনাহ্ নারী। (ই.ফা. ১০৮০ই.সে. ১০৮৮)

 

জানার বিষয় হলো এখানে সঠিক কোনটি ? তারিখ-/০৯/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

 

হাফেজ মাওলানা সাজ্জাদ  বগুড়া থেকে---

 

জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলোولا خلاف بين أهل العلم أن من تكلم في صلاته عامدا عالما فسدت صلاته، قال ابن المنذر: أجمع أهل العلم على أن من تكلم في صلاته عامدا

অর্থাৎ আহলে এলেমদের মধ্যে এ বিষয়ে কোন মতভেদ নেই যে, নামাজের মধ্যে ইচ্ছাপূর্বক জ্ঞাতসারে কথা বললে নামাজ ফাসেদ হবে। ইবনে মুনজির রহ. বলেন, আহলে এলেমদের মধ্যে ইজমা হয়েছে যে, নামাজে মধ্যে ইচ্ছা করে কথা বললে নামাজ নষ্ট হবে।


দ্বিতীয় কথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণিত ছুরতে নামাজের প্রয়োজনে/সংশোধনে কথা বললে নামাজ বাতিল হবে কিনা, এ বিষয়ে আহলে হাদিস এবং ফোকাহায়ে আহনাফের মতভেদ রয়েছে। 


আহলে হাদিসদের মতে,  জামাআতের লোক ভুল করে চার রাকআতের জায়গায় তিন রাকআত পড়ে সালাম ফিরার পর মুক্তাদীদের কেউ এই ভুল সম্বন্ধে স্মরণ দিলে এবং ইমামও নিশ্চিত হওয়ার জন্য অন্যান্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সংশোধনের উদ্দেশ্যে আরো এক রাকআত নামায অবশ্যই পড়বে এবং সহু সিজদাহ করবে। আর এর মাঝে ইমাম-মুক্তাদীর ঐ কথোপকথন নামাযের জন্য ক্ষতিকর হবে না। দলিল: 

 

আপনার উল্লেখিত প্রথম হাদিসটি (অর্থাৎ حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ صَلَّى بِنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الظُّهْرَ أَوِ الْعَصْرَ فَسَلَّمَ، فَقَالَ لَهُ ذُو الْيَدَيْنِ الصَّلاَةُ يَا رَسُولَ اللَّهَ أَنَقَصَتْ------ আবূ  হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

তিনি বলেননবী () আমাদের নিয়ে যুহর বা আসরের সালাত আদায় করলেন এবং সালাম ফিরালেন। তখন যুল-ইয়াদাইন (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনইয়া আল্লাহ্‌র রাসূল! সালাত কি কম হয়ে গেলনবী () তাঁর সাহাবীগণকে জিজ্ঞেস করলেনসে যা বলছেতা কি ঠিকতাঁরা বললেন,‌ হাঁ। তখন তিনি আরও দুরাকআত সালাত আদায় করলেন। পরে দুটি সিজদা‌  করলেন-----। সহিহ বুখারী-১২২৭

 

ফোকাহায়ে আহনাফের মতামত:  নামাজের মধ্যে কথা যে কারণেই হোক ফিকহি হানাফি কোন পার্থক্য করেননি।  নামাজে এমন কোনো অর্থবোধক শব্দ করাযা সাধারণ কথার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। (হোক সেটা এক অক্ষর বা দুই অক্ষরে ঘটিত) তাহলে নামাজ ভেঙে যাবে। ফাতাওয়ায়ে শামী ১/৬১৩আল বাহরুর রায়েক : ২/২

দলিল: আপনার উল্লেখিত হাদিস সমুহ।

حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، عَنْ وَلاَ شَتَمَنِي قَالَ " إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَصْلُحُ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ "------

আবূ জাফার মুহাম্মাদ ইবনুস্ সাব্বাহ ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ (রহঃ) ..... মু'আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস সুলামী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনকোন এক সময় -------

আল্লাহর শপথ করে বলছিতিনি আমাকে ধমকালেন না বা মারলেন না কিংবা বকাঝকাও করলেন না। বরং বললেনঃ সলাতের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশতঃ তাসবীহতাকবীর বা কুরআন পাঠ করতে হবে। তাখরিজ: মুসলিম শরীফ ১০৮৬.

 

বিশুদ্ধ/সতর্কপূর্ণ মতামত: 

  হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণিত হাদিসটি নিম্নে বর্ণিত হাদিস দ্বারা রহিত হয়ে গেছেন।

হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ أَبِيْ عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ يُكَلِّمُ أَحَدُنَا أَخَاهُ فِيْ حَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ} فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوْتِ

অর্থ: হজরত যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনআমরা সালাতের মধ্যে কথাবার্তা বলতাম আর আমাদের কেউ অন্য ভাইয়ের প্রয়োজন নিয়ে কথা বলতেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ তখন আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। তাখরিজ: বুখারী- ৪৫৩৪.১২০০


হাদিস নং-০২

عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا، فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا وَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغْلاً ‏"‏‏.‏

অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেননবী () এর নামায পড়া অবস্থায় আমরা তাঁকে সালাম দিতাম এবং তিনি সালামের উত্তরও দিতেন। অতঃপর যখন নাজাশীর নিকট থেকে ফিরে এলামতখন সালাম দিলে তিনি উত্তর দিলেন না। পরে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “নামাযে মগ্নতা আছে।” তাখরিজ:  বুখারী-১১



সারকথা কথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে,  নামাজের প্রয়োজনে কথা বললে নামাজ ভাঙ্গে না হাদীসটি সহিহ হলেও পরবর্তী সূরা বাকারার-২৩৮ আয়াত দ্বারা মানসুখ হয়ে যাওয়া। সুতরাং উক্ত মাগরিব নামাজটি পুনরায় পড়া উচিত।

 

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক 

 

আমল ও দুআ-১৩৬: ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি আপনার খাস রহমত, যা দ্বারা আপনি আমার অন্তরকে পথ দেখাবেন।

No Comments

 



দু‘আ-১৩৭

اَللّٰهُمَّ إِنِّيْۤ أَسْأَلُكَ رَحْمَةً مِّنْ عِنْدِكَ تَهْدِيْ بِهَا قَلْبِيْ، وَتَجْمَعُ بِهَاۤ أَمْرِيْ، وَتَلُمُّ بِهَا شَعَثِيْ، وَتُصْلِحُ بِهَا دِيْنِيْ، وَتَقْضِيْ بِهَا دَيْنِيْ، وَتَحْفَظُ بِهَا غَائِـبِيْ، وَتَرْفَعُ بِهَا شَاهِدِيْ، وَتُبَيِّضُ بِهَا وَجْهِيْ، وَتُزَكِّيْ بِهَا عَمَلِيْ، وَتُلْهِمُنِيْ بِهَا رَشَدِىْ، وَتَرُدُّ بِهَا أُلْفَتِيْ، وَتَعْصِمُنِيْ بِهَا مِنْ كُلِّ سُوْٓءٍ.


ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি আপনার খাস রহমত, যা দ্বারা আপনি আমার অন্তরকে পথ দেখাবেন, আমার কর্মে শৃঙ্খলা দান করবেন, আমার বিক্ষিপ্ততা দূর করবেন, আমার দ্বীনদারীকে শুদ্ধতা ও সৌন্দর্য দান করবেন, আমার ঋণ পরিশোধ করবেন, আমার অপ্রকাশ্য অবস্থার সংরক্ষণ করবেন, আমার প্রকাশ্য অবস্থাকে উচ্চতা দান করবেন, আমার মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করবেন, আমার কর্মকে পবিত্র করবেন, আমার অন্তরে হেদায়েত নাযিল করবেন, আমার পরিণত অবস্থা ফিরিয়ে দিবেন এবং ঐ রহমত দ্বারা আমাকে সকল অনিষ্ট থেকে রক্ষা করবেন। তাখরিজ: তিরমিজি-৩৪১৯; কানযুল উম্মাল



সনদসহ মতন: 


روى الترمذي (3419) ، وابن خزيمة في "صحيحه" (1119) ، والطبراني في "المعجم الكبير" (10668) ، وأبو نعيم في "حلية الأولياء" (3/ 210)، والبيهقي في "الأسماء والصفات" (105)، من طريق ابنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ دَاوُدَ بْنِ عَلِيٍّ ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَيْلَةً حِينَ فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ:


 اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ رَحْمَةً مِنْ عِنْدِكَ تَهْدِي بِهَا قَلْبِي، وَتَجْمَعُ بِهَا أَمْرِي، وَتَلُمُّ بِهَا شَعَثِي، وَتُصْلِحُ بِهَا غَائِبِي، وَتَرْفَعُ بِهَا شَاهِدِي، وَتُزَكِّي بِهَا عَمَلِي، وَتُلْهِمُنِي بِهَا رُشْدِي، وَتَرُدُّ بِهَا أُلْفَتِي، وَتَعْصِمُنِي بِهَا مِنْ كُلِّ سُوءٍ .



ফায়দা: শুরুতে এক বিশেষ রহমতের প্রার্থনা ছিল। পরের সবগুলো কথা তারই ব্যাখ্যা ও সম্প্রসারণ।

تَهْدِيْ بِهَا قَلْبِيْ 

অর্থাৎ যে রহমত দ্বারা আমার অন্তর হেদায়েত লাভ করে।

وَتَجْمَعُ بِهَا أَمْرِيْ 

যে রহমত দ্বারা আমার সকল কাজ সুসম্পন্ন হয়।

وَتُلِمُّ بِهَا شَعَثِيْ 

যে রহমত দ্বারা আমার সকল বিক্ষিপ্ততা (পেরেশানী)র সমাধান হয়।

وَتَرُدُّ بِهَا أُلْفَتِي 

(আমার পরিণত অবস্থা ফিরিয়ে দিবেন)। এ বাক্যের আরেক অর্থ এ-ও হতে পারে যে, যে রহমত দ্বারা আমার ভালবাসা - যা আল্লাহর প্রতি প্রত্যেক বান্দার স্বভাবগতভাবেই হয়ে থাকে - নতুন করে জীবন্ত হয়ে ওঠে।

وَتَعْصِمُنِي بِهَا مِنْ كُلِّ سُوءٍ (এক প্রশস্ত প্রার্থনা)। অর্থাৎ যে রহমত আমাকে সকল অনিষ্ট ও অকল্যাণ থেকে রক্ষা করে।

দাম্পত্য জীবন-১৩: মহিলাদের কিছু বর্জনীয় অভ্যাস-মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.

No Comments

 



*মহিলাদের কিছু বর্জনীয় অভ্যাস-* 🌹


মুফতী মনসূরুল হক দা.বা.

প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস, 

জামি'আ রাহমানিয়া মাদরাসা,ঢাকা।



১. জরুরী আকায়িদ, ইবাদত, সহীহ কুরআন তিলাওয়াত, পিতা-মাতা, স্বামীর হক ও সন্তানের হক সম্পর্কে ইলম হাসিল করে না অথচ জরুরত পরিমাণ ইলম অর্জন করা ফরয। অনেক পিতা-মাতাও এ ব্যাপারে উদাসীন। কিছু দুনিয়াবী ইলম শিক্ষা দেওয়াকে যথেষ্ট মনে করে। (সুনানে ইবনে মাজাহ ,হাদীস নং ২২৪)


২. সময়ের পাবন্দি করে না। নামায-ইবাদত, খানা, গোসল ইত্যাদি সকল কাজে তারা দেরি করে; এতে সংশ্লিষ্ট লোকেরা পেরেশান হয়ে যায় এবং অনেক জরুরী কাজ নষ্ট হয়ে যায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৪১২)


৩. দুই তিন জন একত্রিত হলে অন্যের দোষ চর্চায় লিপ্ত হয়। অথচ অন্যের দোষ চর্চা করা কবীরা গুনাহ। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “(হে মুমিনগণ!) তোমরা কারো দোষ অনুসন্ধান, করো না। আর একে অন্যের গীবত (অগোচরে দুর্নাম) করো না; তোমাদের কেউ কী স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? এটা তো তোমরা অবশ্যই ঘৃণা করে থাকো! আর আল্লাহ কে ভয় করো, নিঃসন্দেহে আল্লাহ বড় তাওবা কবূলকারী, দয়ালু”। (সূরায়ে হুজুরাতঃ ১২)


৪. আপোষে সালাম দেয়ার অভ্যাস খুবই কম। নিজ বাবা-মা, ভাই-বোন, স্বামী-সন্তানকেও তারা সালাম করতে অভ্যস্ত নয়, এমনকি কেউ তাদেরকে সালাম দিলে উত্তর দেয় না বা শুনিয়ে দেয় না। অথচ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরস্পরে সালাম আদান প্রদান করতে বলেছেন। (সহীহ বুখারী, হা. নং ২৮) 


৫. চোগলখুরি তথা একের কথা অন্যের কাছে লাগানো অনেক মেয়েদের একটা বদ অভ্যাস। এ ধরণের অন্যায় কাজ থেকে বেঁচে থাকা খুবই জরুরী । হাদীসে এসেছে যে, এ গুনাহ কবরে আযাব বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। (সহীহ বুখারী হাদীস, নং ১৩৭৮)


৬. সাধারণত মেয়েদের মধ্যে নিজেকে প্রদর্শনের মানসিকতা অধিক লক্ষ্য করা যায়। যদি তারা সাজ-সজ্জা করে তাহলে তা একান্তই পরপুরুষ বা অন্য কোন নারীকে দেখানোর জন্য করে যা একেবারেই অনুচিত। মেয়েদের উচিত হলো যথাসম্ভব ঘরে বসে স্বামীকে খুশি করার জন্য বেশি বেশি সাজ-সজ্জা করা , স্বামীর মনকে খুশী করা, এবং তার দৃষ্টি হিফাযতের ব্যাপারে সহায়তা করা , এর জন্য মহিলারা আল্লাহর দরবারে অনেক সাওয়াব পাবে। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ১১৬১)


৭. বর্তমান মেয়েরা সাজ-সজ্জার নামে অনেক নাজায়িয ও হারাম কাজ করে থাকে। যেমন, বিধর্মী ও অসভ্য মেয়েদের মত স্টাইল করে চুল কাটা , ভ্রূ’প্লাক করা, বিউটি পার্লারে গিয়ে গোপন স্থানের লোম পরিষ্কার করানো ইত্যাদি। (সুনানে আবু দাউদ হা. নং ৪০৩১)


৮. মেয়েদের জন্য সমস্ত শরীর আবৃতকারী মোটা কাপড়ের এমন ঢিলেঢালা পোশাক পরা জরুরী যাতে করে শরীরের রং, ভাজ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার আকৃতি বোঝা না যায় । কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে আজকের মেয়েরা অনেকে বোরকা তো চেনেই না আর ঢিলেঢালা পোশাক পরতেও ভুলে গেছে, যার কারণে সমাজে নারী নির্যাতনের মত জঘন্য অপরাধ অপ্রতিরোধ্য গতিতে বেড়ে চলছে। (সূরা নূর: ৩১) 


৯. অনেক মেয়েরা বাইরে পর্দা করে বের হলেও পারিবারিক জীবনে পর্দার ধার ধারে না। দেবর, ভাশুরদের সাথে পর্দার কথা চিন্তাও করে না। অথচ এদের সাথে পর্দা করার কথা হাদীসে খুবই গুরুত্বের সাথে এসেছে। দেবরকে মৃত্যু সমতুল্য বলা হয়েছে। (জামে তিরমিযী হা. নং ১১৭১)


১০. অনেকে বোরকা পরিধান করে কিন্তু চেহারা খোলা রাখে অথচ চেহারা সকল সৌন্দর্যের সমষ্টি; চেহারা আবৃত করা জরুরী। চেহারা, মাথা, চুল বা উভয় চোখ খোলা থাকলে বোরকা অর্থহীন হয়ে পড়ে, এমন পর্দা শরীআতে গ্রহণযোগ্য নয় । এতে তারা ফরয তরক করার গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে। আর অনেকে এমন নকশী বোরকা পরে যে তাতে পুরুষদের আকর্ষণ আরো বেড়ে যায় এবং বোরকার মূল উদ্দেশ্য ভূলুন্ঠিত হয়। বোরকা মূল উদ্দেশ্য হলো, যাতে তার দিকে কারো আকর্ষণ সৃষ্টি না হয়। (সূরায়ে নূর: ৩১)

 

১১. কোথাও কোন প্রয়োজনে যেতে হলে, অযথা ঘোরাঘুরি করে যাত্রা বিলম্ব করে । শেষে গন্তব্যস্থানে অসময়ে এবং দুর্যোগ পোহায়ে পৌঁছতে হয়। অথচ অযথা বিলম্ব না করে একটু আগে বের হলেই পথের অনেক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। (জামে তিরমিযী হাদীস নং ২৩২৩)


১২. কোন স্থানে সফরে যাওয়ার সময় প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামানপত্র নিয়ে বিরাট বোঝার সৃষ্টি করে, যা বহন করতে সঙ্গী পুরুষদের অনেক কষ্ট স্বীকার করতে হয়। বোঝা বহনের দায়-দায়িত্ব পুরুষদের মাথায় চাপিয়ে নিজেরা দিব্যি আরামে সফর করে থাকে। এমনটা করা একেবারেই অনুচিত। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং ৪৯৯৬)


১৩. হাতে টাকা থাকুক বা না থাকুক, কোন কিছু পছন্দ হলে তা অপ্রয়োজনীয় হলেও কিনতে হবে। এর জন্য ঋণ করতেও কোন দ্বিধা করে না। যদি ঋণ নাও করতে হয় তবু নিজ টাকা অপ্রয়োজনে খরচ করা বোকামি ও গুনাহের কাজ। যথা সম্ভব ঋণ করা থেকে বেঁচে থাকা উচিত । এতে যদি কষ্ট হয় হোক। হ্যাঁ, নিজের পছন্দের কোন জিনিস যদি স্বামীর নিকটও পছন্দনীয় হয় তাহলে ভবিষ্যতে যখন ঐ জিনিষের প্রয়োজন পড়বে তখন কিনবে। (সূরা আনআম আয়াত: ১৪১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪০৮)


১৪. কেউ কোন উপকার করলে তার শুকরিয়া আদায় করে না। বিশেষত: ঘরের বউ-ঝিরা প্রশংসার যোগ্য কোন কাজ করলেও শাশুড়ি কিংবা ননদরা তার শুকরিয়া আদায় করে না। এটা বড়ই সংকীর্ণমনা হওয়ার পরিচায়ক । হাদীসে এসেছে, যে ব্যাক্তি মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না সে আল্লাহর শুকরিয়াও আদায় করে না অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা তার শুকরিয়া কবুল করেন না। তাই কেউ কোন প্রশংসাযোগ্য কাজ করলে তার শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আর এর জন্য জাযাকাল্লাহ খাইরান বলবে। এতে যার প্রশংসা করা হয় তার মধ্যে কাজের উৎসাহ উদ্দীপনা বহুগুণে বেড়ে যায় এবং আল্লাহ তা‘আলাও খুশি হন। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ২৯,জামে তিরমিযী ,হাদীস নং ১৯৫৫)


১৫. শাশুড়িরা অনেক সময় পুত্রবধূদের কাজের মেয়ের মত মনে করে, কখনোই নিজের মেয়ের মত মনে করতে পারে না। যার কারণে অধিকাংশ যৌথ পরিবারে পুত্রবধূরা শাশুড়ি কর্তৃক নির্যাতিতা হয় এবং সংসারে কলহের আগুন লেগেই থাকে। সুতরাং পুত্রবধূকে নিজের মেয়ের সমান মর্যাদা দিতে না পারলে যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে পৃথক করে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ করে দেয়া জরুরী। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ২৪৪৭, ফাতাওয়ায়ে শামী ৫/৩৬০)

 

১৬. পুত্রবধূরাও শাশুড়িদেরকে নিজ মায়ের মত ভাবতে পারে না। শাশুড়িকে তার প্রাপ্য অধিকার ও সম্মান থেকে বঞ্চিত করে। স্বামীকে নিজের একক সম্পদ মনে করতে চায় । যার কারণে সংসারে অনেক কলহের সৃষ্টি হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৮) 


১৭. স্ত্রীরা স্বামীর ইহসান তথা দয়া ও অনুগ্রহ স্বীকার করতে চায় না। কেউ জীবনভর স্ত্রীর সব চাহিদা পূরণ করে এসেছে হঠাৎ একদিন তার কোন চাহিদা পূরণ করা হলো না তখন সে বলে ফেলে তোমার সংসারে এসে জীবনে সুখের মুখ দেখলাম না। এমনটা করা বড়ই অন্যায় ও না শোকরী এতে স্বামীর মন ভেঙ্গে যায়। এটা মহিলাদের দোযখে যাওয়ার অন্যতম কারণ। আরেকটি বড় কারণ হলো, কথায় কথায় লানত ও বদ দু‘আ করা। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯)


১৮. স্বামী স্ত্রীর জন্য পছন্দ করে কোন জিনিস আনলো, কিন্তু ঘটনাক্রমে স্ত্রীর তা পছন্দ হলো না, তখন স্ত্রী স্বামীর মুখের উপর বলে দেয় আমার এটা পছন্দ হয়নি; আমি এটা পরবও না ছুইবও না। এটা অমানবিক। স্বামী কিছু আনলে পছন্দ না হলেও খুশি মনে গ্রহণ করা উচিত কারণ স্বামীকে খুশি করাই স্ত্রীর জন্য ইবাদত। (সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৯)


১৯. অনেক সময় টাকা, গহনা ইত্যাদি মূল্যবান জিনিস বালিশের নিচে বা খোলা যায়গায় রেখে দেয়, পরে হারিয়ে গেলে পরিবারের নিরপরাধ লোকদের দোষারোপ করতে থাকে। যা মারাত্মক গুনাহ। এগুলো সব সময় হেফাজতের সাথে নিরাপদ স্থানে রাখবে। (সূরায়ে হুজুরাত ১২, সহীহ বুখারী হাদীস নং ২৪০৮) 


২০. মহিলাদের মধ্যে কর্মতৎপরতা ও দূরদর্শিতার বেশ অভাব রয়েছে ; ব্যস্ততার সময়ে কোন কাজ তারা ঝটপট করতে পারে না; গতিমন্থরতা যেন তাদের একটা অংশ। এতে অনেক সময় সুযোগ নষ্ট হওয়ার কারণে আসল কাজ পণ্ড হয়ে যায়। অথচ একটু খেয়াল করলেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। সুতরাং অতি দ্রুত বা অতি ধীরে কাজ করবে না বরং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করবে। (জামে তিরমিযী,হাদীস নং ২০১২) 


২১. দুই ব্যক্তি কোন বিষয়ে আলাপ করতে থাকলে অনেক মহিলা অযাচিতভাবে সেই কথায় অংশগ্রহণ করে এবং পরামর্শ দিতে থাকে। এটা বড়ই অভদ্রোচিত আচরণ। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ কোন পরামর্শ না চায় ততক্ষণ পর্যন্ত একেবারে বোবা ও বধির হয়ে থাকা চাই। তেমনি ভাবে কোথাও দু’জন কথা বার্তা বলতে থাকলে আড়াল থেকে তা শ্রবণ করার চেষ্টা করবে না। কারণ এটা নাজায়িয। (সূরায়ে হুজরাত:১২,সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৭০৪২,৬৩৩৭)


২২. কোন কোন মহিলা মেয়েমহল থেকে এসে অন্য মহিলাদের অলংকার, শারীরিক গঠন, রূপ, পোশাক ইত্যাদির বর্ণনা নিজ স্বামীর কাছে করে থাকে। এর দ্বারা স্বামীর মন অন্য মহিলার দিকে আকৃষ্ট হলে যে নিজের কত বড় ক্ষতি হবে সে দিকে বিলকুল খেয়াল করে না। অতএব অন্য মেয়েলোকের রূপের প্রশংসা স্বামীর কাছে কক্ষনো করবে না; এটা নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার ন্যায় অপরাধ। (মুসনাদে আহমদ ,হাদীস নং ৩৬০৮)


২৩. কারো সাথে কথা বলার প্রয়োজন হলে সে যত জরুরী কথা বা কাজেই লিপ্ত থাকুক না কেন সে দিকে খেয়াল না করে সে নিজের কথা বলবেই, ঐ ব্যক্তির কাজ বা কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে না। কিংবা অনুমতি নেওয়ার ও প্রয়োজন মনে করে না। এটা নিতান্তই বোকামি। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৬৩৩৭) 


২৪. কেউ কিছু বললে পূর্ণ মনোযোগ সহকারে কথাগুলো শোনে না; এর মাঝে অন্য কাজ করতে থাকে বা ফাঁকে ফাঁকে কারো কথার উত্তর দিতে থাকে। ফলে বক্তা মনে কষ্ট পায় এবং সে যে জরুরী কথাগুলো বলতে এসেছে তার অনেকটাই শুনাতে ব্যর্থ হয়। এমনকি পরে কৈফিয়ত চাইলে বলে যে, এ কথা তো আপনি আমাকে বলেননি। অথচ বলা হয়েছে সে মনোযোগ দিয়ে শোনেনি। (সুনানে নাসাঈ, হাদীস নং ৪৯৯৬) 


২৫. নিজের ভুল-ত্রুটি স্বীকার করতে চায় না। বরং যথাসম্ভব কথার ফুলঝুরি দিয়ে দোষ চাপা দিতে চায়; চাই তার কথার মধ্যে যুক্তি থাক বা না থাক। এটা খুবই গর্হিত কাজ; ভুল হলে তা সাথে সাথে স্বীকার করে নিবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুলের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আশ্বাস দিবে। কারো হক নষ্ট করে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার থেকে মাফ চেয়ে নিতে দ্বিধা করবে না, কারণ অহংকার মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৪৫৮)


২৬. কোন কথা বা সংবাদ বলতে গেলে অসম্পূর্ণ বলে থাকে, যদ্দরুন ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয় এবং আসল কাজ ব্যাহত হয়। সুতরাং কথা বলার সময় বুঝিয়ে সম্পূর্ণ কথা বা ঘটনা খুলে বলবে যেন কোন সন্দেহের অবকাশ না থাকে। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং৪৯৯৬) 


২৭. এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার বা আসার সময় অনেক মহিলা অবশ্যই একটু কাঁদবে। কান্না না আসলেও কান্নার ভান করবে, অন্যথায় লোকেরা বলতে পারে যে মেয়েটার মনে একটুও মায়া নেই, কত পাষাণ। এই খোটা থেকে বাঁচার জন্য কৃত্রিম কান্না হলেও তাদের কাঁদা চাই। অথচ এটা ভুল প্রথা। (সূরা সদঃ ৮৬)


২৮. অলসতাবশতঃ ফরয গোসল করতে দেরি করা মেয়েদের একটা চিরাচরিত অভ্যাস। আজকে বিকালে কারো মাসিক বন্ধ হলো, তা সত্ত্বেও সে অবশ্যই পরদিন দুপুরে গোসল করবে। আর এদিকে তিন চার ওয়াক্ত নামায স্বেচ্ছায় কাযা করে ফেলবে। অবশ্য অধিকাংশ মেয়েরা একথা জানে না যে, মাসিক যখনই বন্ধ হয়, তখনই গোসল করে নামায পড়া শুরু করতে হয়। চাই মাসিক সন্ধ্যার আগে বন্ধ হোক বা ফজরের আগে বন্ধ হোক। কোন ওয়াক্তের শেষের দিকে মাসিক বন্ধ হলেও ঐ ওয়াক্তের নামায তার জিম্মায় ফরয হয়ে যায়। ওয়াক্তের মধ্যে সময় না পেলে কাযা পড়া জরুরী। (জামে তিরমিযী, হাদীস নং ২৬২৩, ফাতাওয়ায়ে শামী, খ.১ পৃ. ৩৩৪ রশীদিয়্যাহ ) 


২৯. বর্তমান আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতা মেয়েরা উযূ গোসল সম্পর্কীয় মাসআলা মাসায়েল ও জানে না। গোসল কখন ফরয হয়, ফরয গোসল কিভাবে করতে হয়, এধরনের অতীব জরুরী কিন্তু সহজ মাসআলা সর্ম্পকেও তারা অজ্ঞ। মুসলমানের সন্তান হয়েও যারা এতটুকু জানে না তাদের জন্য বড় বিস্ময় !! তবে এর জন্য শুধু তারা নয় তাদের বাবা মা ও দায়ী হবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ২২৪) 


৩০. অনেক বোকা মহিলা স্বামী কর্মস্থান থেকে ফেরার সাথে সাথে তাকে শান্তি পৌঁছানোর পরিবর্তে, তার কানে সংসারের কলহ বিবাদের কথা পৌঁছায়। যদ্দরুন অল্পতেই স্বামীর মেজাজ বিগড়ে সামান্য বিষয়ে অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তাই তেমন কিছু হয়ে থাকলে স্বামীর শরীর ও মন স্বাভাবিক ও শান্ত হওয়ার পর বলা এবং সঠিক সংবাদ বলা যাতে স্বামী বিষয়টা তদন্ত করলে মিথ্যুক সাব্যস্ত হতে না হয়। (সহীহ বুখারী,হাদীস নং ৩০৪) 


৩১. অনেক ননদ ভাই বৌদের সহ্য করতে পারে না, এমনিভাবে অনেক ভাই বৌ ননদদের সহ্য করতে পারে না। এই মনোভাব সংসারকে অশান্তি ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। সবার সাথে সুসম্পর্ক-সদ্ভাব বজায় রাখা এবং মিল মুহাব্বতের সাথে থাকা শরীআতে কাম্য। (সহীহ বুখারী ,হাদীস নং ৫৯৮৬, মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ২২৯০৬) 


৩২. অনেক মেয়েলোক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে উদাসীন থাকে। অথচ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সুতরাং নিজের শরীর, পোশাক, ঘর-দুয়ার পরিষ্কার ও পরিপাটি রাখবে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৩)


৩৩. কোন সন্তানকে হয়ত বেশী মুহাব্বত করে তার জন্য অনেক কিছু করে, এমনকি তার দোষ স্বীকার করতে চায় না। এটা ঠিক নয়। যোগ্যতার কারণে কারো প্রতি মুহাব্বত বেশী থাকতে পারে কিন্তু দেয়া নেয়ার ব্যাপারে সব সন্তানকে একই নজরে দেখা ইনসাফের দাবী। এর ব্যতিক্রম করলে অন্যদের উপর জুলুম করা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৮৭)


৩৪. অনেক মহিলা রোগ শোক চাপা দিয়ে রাখে, কাউকে বলে না। অনেক জিজ্ঞাসার পরে বললেও ডাক্তার এর কাছে যেতে চায় না। ঔষধ এনে দিলে তাও ঠিকমত খায় না। এতে অনেক পেরেশানি হয়। রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে চিকিৎসার অযোগ্য হয়ে যায়। এটা বড়ই বোকামি। শরীর স্বাস্থ্য আল্লাহর তা’আলার অনেক বড় নিয়ামত। এটাকে সুস্থ রাখা জরুরী যাতে করে এ শরীর দিয়ে দ্বীন দুনিয়ার ভালো কাজ আনজাম দেয়া যায়। (সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ৩৮৫৫)


৩৫. অনেক শিক্ষিতা মহিলা স্বামীর ঘরে আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করার চেয়ে বাইরে গিয়ে চাকুরী করাকে বেশি পছন্দ করে। অথচ সংসারের ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর দায়িত্ব। তার দায়িত্ব হলো সন্তান ও সংসার সামলানো। (সূরা নিসা:৩৪)

Stylo

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। পোষ্ট গুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর কোন পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে করে যোগাযোগ করুন। জাযাকাল্লাহু খাইর