আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

কবিতা-১৩: পান্থাপাড়া গ্রাম -জসিম বিন আখতার

No Comments

 



পান্থাপাড়া গ্রাম 

-জসিম বিন আখতার


কুষ্টিয়াতে ই.বি থানার পান্থাপাড়া গ্রামে 

শাকসব্জি চাষ করতে লোকে

আঁকড়া নিয়ে নামে ।


দুইশ বছর আগেও যেথা হয়নি বসত ঘর 

লোকমুখে শুনছি সে টা 

কুমার নদীর চর ।


কচুরী পানার মরা নদী তিন দিকে তার ঘেরা

গাছগাছালী পাখপাখালীর 

গ্রামটি পান্থাপাড়া ।


গ্রামের নামে নাতিদীর্ঘ ইতিহাস এক আছে 

ধৈর্য্য ধরে শুনছি যাহা

মোল্লা সাবের কাছে ।


বেলায়েত আলী মোল্লা নামে জন্ম বাংলাদেশী 

বললেন আমায় বয়সটা তার 

আশির চেয়েও বেশী ।


মুখে দাড়ি পরনে তার থাকতো লম্বা জামা

নামাজ রোযায় খুবই পাকা

ডাকতাম আমি মামা ।



বললেন আমায় আপনি কবি করছি আস্ফালন

বলছি শুনেন আমাদের এই 

গ্রামের নাম করণ ।


শুনছি আমার দাদার থেকে এই ঘটনাটাই

হুবহু বলছি যে তা 

তাই তো দ্বিধা নাই ।


নদীর চরে বাস করত ভয়ংকর এক বাঘ 

মানুষ ধরে পান্তা খেতো

হলেই কভু রাগ ।


অনতি দূরের বাসিন্দাদের মাছ ধরাটাই পেশা

ভাজা মাছ আর পান্তা ভাতেই

ছিল তাদের নেশা ।


কিন্তু তারা থাকতো ভীতু সেই বাঘেরই ভয়ে 

যুগে যুগে বাঘের ছোবল 

যাচ্ছে তারা সয়ে ।


কথিত এক বীর পালোয়ান বাঘটি হত্যা করে

মৃত বাঘের হুংকারে সে 

অজ্ঞান হয়ে পড়ে ।


গ্রামবাসী তার করতো সেবা থাকতো যে তার পাশে 

ঘন্টা কয়েক সেবার পরে 

জ্ঞানটি ফিরে আসে ।


কাজ কর্ম করতো না সে খাদ্য চেয়ে খেতো 

লোকজনে তাই বায়না ধরে 

পান্তা ভাতই দিতো ।


বছর কয়েক পান্তা খেয়ে নিত্য অবিরাম 

ঘৃণা ভরে নাম দিল তাই 

পান্থাপাড়া গ্রাম !


সেদিন থেকেই পরিচিত পান্থাপাড়া নামে 

যদিও এখন খায় না সবাই

পান্তাভাত এই গ্রামে ।


এখন শুনেন গ্রামবাসীদের বর্ণণাটা দেই 

দেশবিদেশে চাকুরীজীবি

তেমন বেশী নেই ।


জনগণের বিরাট অংশ কৃষি নির্ভর করে 

তবু দেখেন থাকছে তারা 

দালান কোঠার ঘরে ।


 রওশন আলী ইমারতরা গাঁয়ের বড় চাষী

চাষীর ছেলে আমিও তাই

তাদের ভালবাসি ।


ছেলে মেয়ের অনেকেরই পড়ালেখা নেই 

কী করে আজ কাটায় সময় 

তার বিবরণ দেই ।


লেখা পড়া করছে যারা তাদের বেশীর ভাগ

পরীক্ষাতে ফেল করেও 

হয় না যে সজাগ ।


ভাল কাজের ধার ধারে না খারাপ কাজেই পটু

কুরআন থেকে দূরে থাকা 

এটাই তাদের মটো ।


সরওয়ার ও শরীফুলরা সাত সকালে গিয়ে

নিত্য দিনে চষছেরে ভূঁই 

পাওয়ার টিলার দিয়ে ।


জমি যখন হয়রে চষা তুলতুলে হয় মাটি 

শস্য দানা বুনছে সেথা

করছে পরিপাটি ।


পানের বরেজ আছে কারও আছে কলার চাষ 

কেউ বা আবার ধনচে বুনে 

বেচবে বার মাস ।


পেয়াজ রসূন হলুদ মরিচ কেউ বা কপি করে

সীম আর ওল প্রধান ফসল 

সবার ঘরে ঘরে ।


হাঁস মুরগী পশু পালন সেথায় রাশি রাশি 

হরেক রকম ফসল তাদের 

ফুটায় মুখে হাসি ।


সকল দিকেই ভাল কিন্তু আল্লাহ ভীরু কম

তাই তো বলি এসব লোকই

সন্ত্রাসবাদের জম ।


এসো সবাই প্রত্যয়ী হই কুরআন হাদীস পড়ি

আল্লাহর হুকুম পালন করে

সুখের জীবন গড়ি ।


      পান্থাপাড়া – ই.বি,কুষ্টিয়া

                                                           তারিখ ০৭/০১/২০০৫