পান্থাপাড়া গ্রাম
-জসিম বিন আখতার
কুষ্টিয়াতে ই.বি থানার পান্থাপাড়া গ্রামে
শাকসব্জি চাষ করতে লোকে
আঁকড়া নিয়ে নামে ।
দুইশ বছর আগেও যেথা হয়নি বসত ঘর
লোকমুখে শুনছি সে টা
কুমার নদীর চর ।
কচুরী পানার মরা নদী তিন দিকে তার ঘেরা
গাছগাছালী পাখপাখালীর
গ্রামটি পান্থাপাড়া ।
গ্রামের নামে নাতিদীর্ঘ ইতিহাস এক আছে
ধৈর্য্য ধরে শুনছি যাহা
মোল্লা সাবের কাছে ।
বেলায়েত আলী মোল্লা নামে জন্ম বাংলাদেশী
বললেন আমায় বয়সটা তার
আশির চেয়েও বেশী ।
মুখে দাড়ি পরনে তার থাকতো লম্বা জামা
নামাজ রোযায় খুবই পাকা
ডাকতাম আমি মামা ।
বললেন আমায় আপনি কবি করছি আস্ফালন
বলছি শুনেন আমাদের এই
গ্রামের নাম করণ ।
শুনছি আমার দাদার থেকে এই ঘটনাটাই
হুবহু বলছি যে তা
তাই তো দ্বিধা নাই ।
নদীর চরে বাস করত ভয়ংকর এক বাঘ
মানুষ ধরে পান্তা খেতো
হলেই কভু রাগ ।
অনতি দূরের বাসিন্দাদের মাছ ধরাটাই পেশা
ভাজা মাছ আর পান্তা ভাতেই
ছিল তাদের নেশা ।
কিন্তু তারা থাকতো ভীতু সেই বাঘেরই ভয়ে
যুগে যুগে বাঘের ছোবল
যাচ্ছে তারা সয়ে ।
কথিত এক বীর পালোয়ান বাঘটি হত্যা করে
মৃত বাঘের হুংকারে সে
অজ্ঞান হয়ে পড়ে ।
গ্রামবাসী তার করতো সেবা থাকতো যে তার পাশে
ঘন্টা কয়েক সেবার পরে
জ্ঞানটি ফিরে আসে ।
কাজ কর্ম করতো না সে খাদ্য চেয়ে খেতো
লোকজনে তাই বায়না ধরে
পান্তা ভাতই দিতো ।
বছর কয়েক পান্তা খেয়ে নিত্য অবিরাম
ঘৃণা ভরে নাম দিল তাই
পান্থাপাড়া গ্রাম !
সেদিন থেকেই পরিচিত পান্থাপাড়া নামে
যদিও এখন খায় না সবাই
পান্তাভাত এই গ্রামে ।
এখন শুনেন গ্রামবাসীদের বর্ণণাটা দেই
দেশবিদেশে চাকুরীজীবি
তেমন বেশী নেই ।
জনগণের বিরাট অংশ কৃষি নির্ভর করে
তবু দেখেন থাকছে তারা
দালান কোঠার ঘরে ।
রওশন আলী ইমারতরা গাঁয়ের বড় চাষী
চাষীর ছেলে আমিও তাই
তাদের ভালবাসি ।
ছেলে মেয়ের অনেকেরই পড়ালেখা নেই
কী করে আজ কাটায় সময়
তার বিবরণ দেই ।
লেখা পড়া করছে যারা তাদের বেশীর ভাগ
পরীক্ষাতে ফেল করেও
হয় না যে সজাগ ।
ভাল কাজের ধার ধারে না খারাপ কাজেই পটু
কুরআন থেকে দূরে থাকা
এটাই তাদের মটো ।
সরওয়ার ও শরীফুলরা সাত সকালে গিয়ে
নিত্য দিনে চষছেরে ভূঁই
পাওয়ার টিলার দিয়ে ।
জমি যখন হয়রে চষা তুলতুলে হয় মাটি
শস্য দানা বুনছে সেথা
করছে পরিপাটি ।
পানের বরেজ আছে কারও আছে কলার চাষ
কেউ বা আবার ধনচে বুনে
বেচবে বার মাস ।
পেয়াজ রসূন হলুদ মরিচ কেউ বা কপি করে
সীম আর ওল প্রধান ফসল
সবার ঘরে ঘরে ।
হাঁস মুরগী পশু পালন সেথায় রাশি রাশি
হরেক রকম ফসল তাদের
ফুটায় মুখে হাসি ।
সকল দিকেই ভাল কিন্তু আল্লাহ ভীরু কম
তাই তো বলি এসব লোকই
সন্ত্রাসবাদের জম ।
এসো সবাই প্রত্যয়ী হই কুরআন হাদীস পড়ি
আল্লাহর হুকুম পালন করে
সুখের জীবন গড়ি ।
পান্থাপাড়া – ই.বি,কুষ্টিয়া
তারিখ ০৭/০১/২০০৫