আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৩৩৫: নামাজের মধ্যে কথা বলা প্রসঙ্গে

No Comments

 



জিজ্ঞাসা -১২৩৩৫:

আসসালামু আলাইকুম 

 আমার প্রশ্ন হলো -জোহর নামাযের জামাতে ইমাম সাহেব তিন রাকাত শেষ করে চার রাকাতের জন্য দাঁড়ানোর মুহূর্তে মুয়াজ্জিন লোকমা দিলে ইমাম সাহেব বসে গেলেন এবং যথারীতি সাহু সিজদা দিয়ে নামাজ শেষ করলেন। সালাম ফিরানোর পর মুসল্লিরা সবাই বলতে শুরু করলো নামাজ তিন রাকাত হয়েছে। এই মুহূর্তে বাকি এক রাকাত নামাজ পড়লে হবে নাকি সম্পূর্ণ চার রাকাত নামাজ আবার পুনরায় পড়তে হবে? এ ব্যাপারে শরিয়তের হুকুম কি ? তারিখ: ১০/১১/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি



জনৈক মাওলানা টাঙ্গাইল থেকে।

 


জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته


 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم


তাসলিম ও হামদ-দরুদ পর প্রথম কথা হলো, আপনার প্রশ্নে বর্ণনানুসারে যেহেতু মুসল্লিটটটটনসরা সবাই (অধিকাংশ) কথা বলেছেন, ফোকাহায়ে আহনাফের মতে সবারই নামাজ ফাসেদ বা বাতিল হয়ে গিয়েছে। দলিল:


হাদিস নং-০১

حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الصَّبَّاحِ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ - وَتَقَارَبَا فِي لَفْظِ الْحَدِيثِ - قَالاَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حَجَّاجٍ الصَّوَّافِ، عَنْ وَلاَ شَتَمَنِي قَالَ " إِنَّ هَذِهِ الصَّلاَةَ لاَ يَصْلُحُ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ "------


আবূ জাফার মুহাম্মাদ ইবনুস্ সাব্বাহ ও আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বাহ (রহঃ) ..... মু'আবিয়াহ ইবনুল হাকাম আস সুলামী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সময় -------


আল্লাহর শপথ করে বলছি, তিনি আমাকে ধমকালেন না বা মারলেন না কিংবা বকাঝকাও করলেন না। বরং বললেনঃ সলাতের মধ্যে কথাবার্তা ধরনের কিছু বলা যথোচিত নয়। বরং প্রয়োজনবশতঃ তাসবীহ, তাকবীর বা কুরআন পাঠ করতে হবে। তাখরিজ: মুসলিম শরীফ ১০৮৬.


 


হাদিস নং-০২


حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ شُبَيْلٍ عَنْ أَبِيْ عَمْرٍو الشَّيْبَانِيِّ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَرْقَمَ قَالَ كُنَّا نَتَكَلَّمُ فِي الصَّلَاةِ يُكَلِّمُ أَحَدُنَا أَخَاهُ فِيْ حَاجَتِهِ حَتَّى نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطٰى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ} فَأُمِرْنَا بِالسُّكُوْتِ


অর্থ: হজরত যায়েদ ইবনু আরকাম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা সালাতের মধ্যে কথাবার্তা বলতাম আর আমাদের কেউ অন্য ভাইয়ের প্রয়োজন নিয়ে কথা বলতেন। তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ حَافِظُوْا عَلَى الصَّلَوَاتِ وَالصَّلَاةِ الْوُسْطَى وَقُوْمُوْا لِلهِ قَانِتِيْنَ তখন আমাদেরকে চুপ থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। তাখরিজ: বুখারী- ৪৫৩৪.১২০০




হাদিস নং-০৩

عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي الصَّلاَةِ فَيَرُدُّ عَلَيْنَا، فَلَمَّا رَجَعْنَا مِنْ عِنْدِ النَّجَاشِيِّ سَلَّمْنَا عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْنَا وَقَالَ ‏ "‏ إِنَّ فِي الصَّلاَةِ شُغْلاً ‏"‏‏.‏


অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, নবী (ﷺ) এর নামায পড়া অবস্থায় আমরা তাঁকে সালাম দিতাম এবং তিনি সালামের উত্তরও দিতেন। অতঃপর যখন নাজাশীর নিকট থেকে ফিরে এলাম, তখন সালাম দিলে তিনি উত্তর দিলেন না। পরে কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, “নামাযে মগ্নতা আছে।” তাখরিজ: বুখারী-১১




সারকথা কথা হলো, নামাজের প্রয়োজনে কথা বললে নামাজ ভাঙ্গে না হাদীসটি সহিহ হলেও পরবর্তী সূরা বাকারার-২৩৮ আয়াত দ্বারা মানসুখ হয়ে যাওয়া। সুতরাং উক্ত যোহরের নামাজ পুনরায় পড়তে হবে।



উল্লেখযোগ্য যে, এ সংক্রান্ত একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা-২৭৪ শিরোনামে আলোচিত হয়েছে। হোম পেজে সার্চ দিলে পাওয়া যাবে ইনশাল্লাহ।


উত্তর লিখেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক বগুড়া