আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

আমল ও দুআ-১২৩: রাসূলুল্লাহ ﷺ কে স্বপ্নে দেখার আমল সম্পর্কে জানতে চাই।*

No Comments


 


*প্রশ্ন : রাসূলুল্লাহ ﷺ কে স্বপ্নে দেখার আমল সম্পর্কে জানতে চাই।*


*উত্তর:-*

রাসূলুল্লাহ ﷺ কে স্বপ্নে দেখার আমল সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। এ ব্যাপারে আমি নিজের থেকে কি বলবো ? এক বুজুর্গের এক কথা খেয়াল হয়ে গেল। তো সেটাই আমি বলতেছি। 


এক লোক এক বুজুর্গকে প্রশ্ন করেছিলেন যে, কি আমল করলে স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে দেখা যাবে ? এই প্রশ্ন শুনে সেই বুজুর্গ একদম ভিন্ন রকম হয়ে গেছিলেন। তিনি তখন জবাবে বলতেছিলেন, এত সাহস কেমনে হয় ? আল্লাহর রাসূল ﷺ কে স্বপ্নে দেখা, এত বড় হিম্মত কেমনে হয় ?  


তার কারন আমাদের যে হালত আমল-আখলাকের, ইবাদত-বন্দেগির। তো নিজের এই হালত কেমনে দেখানো রাসূলুল্লাহ ﷺ কে ? এত দুঃসাহস কোত্থেকে হয় ? 

এটাই ছিল উদ্দেশ্য সেই বুযুর্গের। যাইহোক আল্লাহর রাসূল ﷺ কে স্বপ্নে দেখার তামান্না তো দিলে থাকা উচিত, ভালো, ঠিক আছে। তো এটা একটা গায়রে এখতেয়ারি বিষয়। স্বপ্নে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে দেখতে পারা, এটা একটা গায়রে এখতেয়ারি বিষয়। 


প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হাকীমুল উম্মত হযরত শাহ আশরাফ আলী থানভী রহ. বলেন, গায়রে এখতেয়ারি বিষয় যেগুলো আছে; যেগুলো নিজের ইচ্ছার ভিতরে না; এসকল বিষয়ের পিছনে না পড়া। এসকল বিষয়ের পিছনে পড়লে দিল অস্থির হয়। দেখা যাবে যে, একজন সাত মাস যাবৎ আমল করতেছে রাসূলুল্লাহ ﷺ কে স্বপ্নে দেখার জন্য। কিন্তু তার দেখা মিলতেছে না। সে তো অস্থির হয়ে যাবে। কি ব্যাপার! আমি এত আমল করতেছি। কেন দেখা মিলতেছে না ? তো এজন্য নিজের ভিতর অস্থিরতা আসে, এরকম কোনো কিছু না করা চাই।


আসল বিষয় হলো ২৪ ঘন্টার জিন্দেগীতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর তালিমকে সামনে রাখা এবং সেটাকে নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করা; এটা হল মূল জিনিস। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নতকে কেউ মজবুতভাবে ধরল, এটার উপরই তার জিন্দেগী; এটাই তার জিন্দেগীর মূল মিশন ও মাকসাদ। এইভাবে সে ৭০ বছর জিন্দেগী কাটাইল; লম্বা জিন্দেগী কাটাইল ; এরপর তার মওত হয়ে গেল; সে আল্লাহর কাছে চলে গেল। আল্লাহ পাক তার যিন্দেগীকে কবূল করে নিলেন। এটা হল কাম্য বিষয়। এটা হল মূল বিষয়।


আর স্বপ্নে দেখা হল রাসূলুল্লাহ ﷺ কে কিন্তু নিজের জিন্দেগীর ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল ﷺ এর সুন্নতের অনুসরণের ব্যাপারে অতটা অগ্রগামী না; তো এটার তুলনায় প্রথম যেটা বলা হল যে, ৭০ বছরের লম্বা জিন্দেগী পাইল এবং তার জিন্দেগির প্রতি পরতে পরতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর তালিমের নিশানা লাগানো আছে ; সেই মোমেনের প্রত্যেক আমলের মধ্যে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর তালিমের নিশানা লাগানো আছে, দাগ লাগানো আছে। আমল দেখেই বুঝা যায় যে হ্যা, এটাই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আমল ছিল। এই লোকটা যেভাবে এই আমলটা করল এইভাবেই তো রাসূলুল্লাহ ﷺ আমল করতে বলেছেন। এটাই তো সুন্নাত। এটা হইমল মূল বিষয়।


আসল বিষয় তো হল যখন বান্দা দুনিয়ার হালতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহ মুতাবেক চলবে; এইভাবে তার জিন্দেগীটা গড়বে; এরপর তার ইনতেকাল হয়ে যাবে; হাশরের ময়দান কায়েম হয়ে যাবে। তো রাসূলুল্লাহ ﷺ হাউজে কাউসারে থাকবেন। সেখানে মোমেন গিয়ে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাক্ষাত লাভে ধন্য হবে; তাকে হাউজে কাউসার হতে পান করানো হবে। কতই না মজাদার এক মুহূর্ত হবে ! কতই না আনন্দঘন এক পরিবেশ হবে ! তো সেই দিকেই তাকিয়ে থাকা চাই। আল্লাহ তা'আলা আমাদের আমলের তৌফিক দান করেন।


বাহার হাল পেরেশানির কিছু নাই। হৃদয়ে এই তামান্না থাকা তো ভালো যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাক্ষাত যদি আমি স্বপ্নে পাইতাম। এইরূপ তামান্না থাকা তো ভাল। এরকম খেয়াল যদি অনিচ্ছাকৃত আসে যে, যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাক্ষাত স্বপ্নে পাইতাম। মাশাআল্লাহ, খুব ভালো হালত প্রশংসনীয় হালত। ঠিক আছে, মাশাআল্লাহ।


তো মোটকথা হচ্ছে আমি বলতে চাচ্ছি যে, আমাদের কাজ হচ্ছে প্রত্যেক কাজকর্মে ২৪ ঘন্টার জিন্দেগীতে তালাশ করা যে, এই কাজটা রাসূলুল্লাহ ﷺ কেমনে করতেন ? সেই কাজটা দ্বীনি কাজ হোক বা জাগতিক কাজ হোক। যদি নিজের জানা না থাকে, তাহলে কোন বিজ্ঞ আল্লাহ্ওয়ালা আলেমের নিকট থেকে জিজ্ঞাসা করে নেওয়া। এভাবে চলতে থাকা।


একটা কিতাবের কথা খেয়াল হল। মাওলানা মুহিউদ্দীন সাহেব রহ. এর সংকলিত কিতাব "স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ ﷺ"(এ কিতাবটিতে দরুদ শরীফ সংক্ষেপে লেখা আছে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, পরবর্তী সংস্করণে আপনারা পূর্ণ দরুদ শরীফ লিখে দিবেন। ইনশাআল্লাহ বহুত কল্যাণ অর্জিত হবে)। এখানে বহু আল্লাহ্ওয়ালাদের বিভিন্ন স্বপ্নের কথা বলা হইছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তাঁরা স্বপ্নে দেখেছেন। সম্ভবত এটা মদীনা পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত। কিতাবটার নাম হচ্ছে "স্বপ্নযোগে রাসূলুল্লাহ ﷺ"। তো এই কিতাবটা মাঝেমধ্যে পড়া। ইনশাআল্লাহ তা'আলা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সঙ্গে মহব্বত আরো বাড়বে। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাহর উপর চলা আরো বেশি সহজ হবে ইনশাআল্লাহ তা'আলা।


আল্লাহ্ পাক আমাকে এবং আপনাকে আমলের বহুত তৌফিক দান করেন।

২৬/০৬/২০২০


মদীনা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে সংগৃহীত