জিজ্ঞাসা-১২৯৩৮:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার জানার বিষয় হল, স্ত্রীর কিছু স্বর্ণের অলংকার আছে যা নিসাব পরিমাণ নয়। এক্ষেত্রে তার ওপর যাকাত ফরজ হবে কিনা ? অর্থাৎ স্বামীর সম্পদের সাথে যোগ করে তার মূল্য হিসাব করে যাকাত দিতে হবে কিনা?
তারিখ: ২৯/০৩/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আশরাফুল ইসলাম কুমিল্লা থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, হলো, যদি সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
দ্বিতীয় কথা হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর যুগে ৫২.৫ তলা রুপা এবং ৭.৫ ভরি সোনা মূল্য সমান সমান ছিল।
কিন্তু বর্তমানে সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ফোকাহায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, রুপার নিসাব অনুসারে যাকাত দিতে হবে।
দলিল:
١٠٧٣١ - حدثنا جرير عن عبد الحميد عن ليث عن عطاء أن عمر كان يأخذ العروض في الصدقة من الورق.
হযরত ওমর (রাযিঃ) যাকাতের নিসাব নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সকল পণ্যসামগ্রীর মূল্যমানকে রৌপ্যমূল্য হতে ধার্য করতেন। অর্থাৎ রুপাকে সকল প্রকার পণ্যসামগ্রীর প্রকৃত মূল্য নির্ধারণের মূল মানদণ্ড / নির্ণায়ক হিসেবে বিবেচনা করেই যাকাতের নিসাব ধার্য করতেন। তাখরিজ: মুসন্নাফে ইবনে আবি শাইবা- ১০৭৩১
তৃতীয় কথা হলো, যৌথ মালিকানায় কখনও জাকাত ফরজ হয় না, একক মালিকানায় হতে হবে। দলিল -
وهي واجبة على كل بالغ عاقل بلغ فائض أمواله النصاب وحال عليها الحول، أو مرّ عليها عام كامل، وتعطي الآية أعلاه مثالاً للمزارع الواجب عليه إخراج زكاة الزروع، حيث يجب إخراج هذه الزكاة في نفس يوم حصاد المحصول.
অর্থাৎ প্রত্যেক বিবেকবান প্রাপ্তবয়স্ক যার উদ্বৃত্ত সম্পদ নিসাবে পৌঁছেছে এবং এক বছর অতিবাহিত হয়েছে বা পুরো এক বছর অতিবাহিত হয়েছে তার জন্য এটি (জাকাত ) ওয়াজিব। সূত্র: হাসিবাতুয যাকাত-২৮/২০২২
সারকথা হলো, আপনার স্ত্রীর স্বর্ণের অলংকার রুপা , নগদ টাকা সব মিলিয়ে যদি রুপার নিসাব পরিমাণ হয় , তাহলে জাকাত দিতে হবে, নাহলে দিতে হবে না। আর স্বামীর সম্পদের সাথে যোগ করে তার মূল্য হিসাব করে যাকাত দিতে হবে না।
والله اعلم بالصواب