জিজ্ঞাসা-১২৯২৬:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মহিলা তার আপন বোনের স্বামীর সাথে হজ্জ/ওমরায় যেতে পারবে কী না? উল্লেখ্য যে মহিলার সাথে অন্য কোন মাহরাম পুরুষ যাবে না।
তারিখ: ১৯/০৩/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা শাকুর হাসান, খোলাহাটি দিনাজপুর থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, কোন মহিলার আপন বোনের স্বামী গয়রে মাহরুমের অন্তর্ভুক্ত, সুতরাং তার সাথে হজ বা ওমরায় যাওয়া জায়েজ নেই। দলিল -
-حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًاতোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজিদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সঙ্গে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোনো পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র (বিয়ে) করা (তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ সূরা নিসা : আয়াত ২৩
এ আয়াতে নারী-পুরুষের সঙ্গে হারাম হওয়ার ব্যাপারে কোরআনুল কারিম সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
زوج الأخت ليس محرمًا لها، ليس محرمًا لأخت زوجته، زوج الأخت ونحوه، وكذلك العمة التي يحرم عليه نكاحها مع البنت، لا يجمع بينهما، وهكذا خالتها، لأن هذا تحريم مؤقت، فلا يكون محرمًا، زوج أختها، وهكذا زوج عمتها، وهكذا زوج خالتها، وهكذا
অর্থাৎ বোনের স্বামী তার জন্য মাহরাম নয়, সে তার স্ত্রীর বোন, বোনের স্বামী ইত্যাদির জন্য মাহরাম নয়। সূত্র: তাতবিকু মাউসুআতিল ফাতায়িল বাজিয়া, শায়েখ ইবনে বাজ এর ওয়েবসাইট থেকে
দ্বিতীয় কথা হলো, মহিলাদের জন্য মাহরাম পুরুষ ব্যতীত সফরসম দূরত্বে বের হওয়া জায়েয নয়। এছাড়া হাদীস শরীফে মহিলাদেরকে মাহরাম ব্যতীত হজের সফরে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে।
হাদিস নং -০১
لاَ يَخْلُوَنّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنّ امْرَأَةٌ إِلّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا، وَخَرَجَت امْرَأَتِي حَاجَّةً، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجّ مَعَ امْرَأَتِكَ.
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
কোনো পুরুষ যেন অপর মহিলার সঙ্গে একাকী অবস্থান না করে। আর কোনো মহিলা যেন তার মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি। আর আমার স্ত্রী হজ¦যাত্রী। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ¦ করতে যাও। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৩০০৬)
হাদিস নং -০২
لَا تَحُجّنّ امْرَأَةٌ إِلّا وَمَعَهَا ذُو محْرمٍ.
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-কোনো মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত হজ না করে। (সুনানে দারাকুতনী, হাদীস ২৪৪০)
সারকথা হলো, কোন মহিলা তার আপন বোনের স্বামীর সাথে হজ্জ/ওমরায় যেতে পারবে না, হারাম।
والله اعلم بالصواب