আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৯৩২: ইমামকে মুক্তাদি বারবার আদেশ/উপদেশ দেয়া সূরা-দোয়া পড়া নিয়ে এটা কতটুকু জায়েজ।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৯০০: 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারাম মসজিদে ইমামকে মুক্তাদি বারবার আদেশ/উপদেশ দেয়া সূরা-দোয়া পড়া নিয়ে এটা কতটুকু জায়েজ দয়া করে জানাবেন


তারিখ:  ২৩/০৩/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  মিজানুর রহমান কুমিল্লা থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, মুক্তাদী দুই ধরনের হতে পারে।

১. আলেম।

২. গয়রে আলেম তথা সাধারণ মুসলমান।

যদি মুক্তাদী আলেম হয়ে থাকেন, তাহলে ইমামকে ভদ্রতার সাথে বিভিন্ন নসিহা-উপদেশ দিতে পারেন। 


আর যদি মুক্তাদি সাধারণ মুসলমান হয়, তাহলে ইমামের সাথে সর্বোচ্চ সম্মান বাজায় রাখতে হবে। নামাজের/দ্বীনের জরুরি কোন বিষয়ে ইমামকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু নফল কোন ইবাদত বা বিষয়ে সম্পর্কে ইমামকে বারবার তাগিদ দেওয়া ইমামকে উচিত নয়। মনে রাখতে হবে, মুয়াজ্জিন হলো হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু এর প্রতিনিধি আর ইমাম হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর প্রতিনিধি।


ইসলামের শিক্ষা হলো মানুষের মর্যাদা বুঝে সম্মান করা। আর ইমাম বা আলেম হলো সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী। দলিল -

Surah Al-Mujadila, Verse 11:

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قِيلَ لَكُمْ تَفَسَّحُوا فِي الْمَجَالِسِ فَافْسَحُوا يَفْسَحِ اللَّهُ لَكُمْ وَإِذَا قِيلَ انشُزُوا فَانشُزُوا يَرْفَعِ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَالَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

 তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার এবং যারা জ্ঞানপ্রাপ্ত, আল্লাহ তাদের মর্যাদা উচ্চ করে দিবেন। আল্লাহ খবর রাখেন যা কিছু তোমরা কর। সূরা মুজাদালা-১১


হাদিস নং-০১ 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدُ بْنُ مُسَرْهَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دَاوُدَ، سَمِعْتُ عَاصِمَ بْنَ رَجَاءِ بْنِ حَيْوَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ دَاوُدَ بْنِ جَمِيلٍ، عَنْ كَثِيرِ بْنِ قَيْسٍ، قَالَ كُنْتُ جَالِسًا مَعَ أَبِي الدَّرْدَاءِ فِي مَسْجِدِ دِمَشْقَ فَجَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا أَبَا الدَّرْدَاءِ إِنِّي جِئْتُكَ مِنْ مَدِينَةِ الرَّسُولِ صلى الله عليه وسلم لِحَدِيثٍ بَلَغَنِي أَنَّكَ تُحَدِّثُهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا جِئْتُ لِحَاجَةٍ . قَالَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَطْلُبُ فِيهِ عِلْمًا سَلَكَ اللَّهُ بِهِ طَرِيقًا مِنْ طُرُقِ الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلاَئِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ الْعِلْمِ وَإِنَّ الْعَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ وَالْحِيتَانُ فِي جَوْفِ الْمَاءِ وَإِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ وَإِنَّ الأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلاَ دِرْهَمًا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ " .

৩৬০২. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ..... কাছীর ইবনে কায়স (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি দামেশকের মসজিদে আবু দারদা (রাযিঃ) এর নিকট বসে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলেঃ হে আবু দারদা! আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর শহর মদীনা থেকে আপনার নিকট একটা হাদীস শোনার জন্য এসেছি। আমি জানতে পেরেছি যে, আপনি উক্ত হাদীসটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন। এছাড়া আর কোন কারণে আমি এখানে আসিনি।


তখন আবু দারদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি ইলম (কুরআন ও হাদীসের জ্ঞান) হাসিলের জন্য কোন রাস্তা অতিক্রম করে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের রাস্তাসমূহের মধ্যে একটি রাস্তা অতিক্রম করান। আর ফিরিশতারা তালেবে-ইলম বা জ্ঞান অন্বেষণকারীর জন্য তাদের ডানা বিছিয়ে দেন এবং আলিমের জন্য আসমান ও যমীনের সব কিছুই মাগফিরাত কামনা করে, এমনকি পানিতে বসবাসকারী মাছও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে।


আর আবিদের উপর আলিমের ফযীলত এরূপ, যেরূপ পূর্ণিমার রাতে চাঁদের ফযীলত সমস্ত তারকারাজির উপর। আর আলিমগণ হলেন, নবীদের ওয়ারিছ, এবং নবীগণ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) ও দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা) মীরাছ হিসাবে রেখে যান না, বরং তাঁরা রেখে যান-ইলম। কাজেই যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করলো, সে প্রচুর সম্পদের মালিক হলো।


Narrated Kathir ibn Qays:

Kathir ibn Qays said: I was sitting with AbudDarda’ in the mosque of Damascus.

A man came to him and said: AbudDarda, I have come to you from the town of the Messenger of Allah (ﷺ) for a tradition that I have heard you relate from the Messenger of Allah (ﷺ). I have come for no other purpose.

He said: I heard the Messenger of Allah (ﷺ) say: If anyone travels on a road in search of knowledge, Allah will cause him to travel on one of the roads of Paradise. The angels will lower their wings in their great pleasure with one who seeks knowledge, the inhabitants of the heavens and the Earth and the fish in the deep waters will ask forgiveness for the learned man. The superiority of the learned man over the devout is like that of the moon, on the night when it is full, over the rest of the stars. The learned are the heirs of the Prophets, and the Prophets leave neither dinar nor dirham, leaving only knowledge, and he who takes it takes an abundant portion.তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ-৩৬৪১; তিরমিজি-২৬৮২; ইবনে মাজাহ-২২৩


হাদিস নং-০২

حدثنا أبو العباس محمد بن يعقوب ، أنبأ محمد بن عبد الله بن عبد الحكم ، أنبأ ابن وهب ، أخبرني مالك بن خير الزيادي ، عن أبي قبيل ، عن عبادة بن الصامت ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم ، قال : " ليس منا من لم يجل كبيرنا ، ويرحم صغيرنا ، ويعرف لعالمنا " .

অর্থাৎ যে আমাদের বড়দের সম্মান করে না এবং ছোটদের প্রতি দয়া করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়! আর আমাদের আলেম তার অধিকার জানে না। তাখরিজ: হাকেম-৪২৯


সারকথা হলো,  ইমামকে নসিহত করতে পারবে না বিষয়টা এমন নয়, ইমামের সম্মান বজায় রেখে, লোকজনের সামনে নয়,  আদবের সাথে দ্বীনি কোন বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন। নফল কোন বিষয়ে ইমামকে বারবার আদেশ/উপদেশ দেওয়া আদবের খেলাফ।  

মুক্তাদী যদি ইমামের কর্তৃপক্ষ না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি ইমামকে আদেশ দিতে পারে না, তবে অনুরোধ করতে পারেন।


  والله اعلم بالصواب