জিজ্ঞাসা-১৭৪: আসসালামু আলাইকুম। নামাজে কেরাত পাঠের (সুরা) তারতীব কতটা জরুরী। দলীল সহ জানালে উপকৃত হব। তারিখ-১৬/০৬/২০২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা নুরুল হক, সাউথ সুদান থেকে
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
সালাতে কিরাআতের ক্ষেত্রে কুরআনে বিদ্যমান ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তিলাওয়াত করা বাঞ্চনীয়। এই ধারাবাহিকতা লঙ্ঘন করাকে ইলমে ফিকহ এর পরিভাষায় تَنْكِيْسْ (তানকীস) বলে। ইচ্ছাকৃতভাবে এর ব্যত্যয় ঘটালে তা মাকরূহ হবে। "তানকিস" এর ব্যখ্যা করতে গিয়ে আবু উবায়দা (রাযি.) বলেন,
أنه يقرأ سورة، ثم يقرأ بعدها أخرى هي قبلها في النظم.
অর্থাৎ, প্রথম রাকায়াতে একটি সূরা পাঠ করার পর দ্বিতীয় রাকায়াতে তার পূর্ববর্তী অন্য কোন একটি সূরা পাঠ করা।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাযি.) এর কাছে এজাতীয় ব্যক্তির প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন,
ذلك منكوس القلب
অর্থাৎ, সে হলো বিকৃত হৃদয়ের অধিকারী। এটা বিগড়ে যাওয়া মানসিকতার লক্ষণ। (মু'জামে ত্ববরানী-৮৮৬৪)
ফাতাওয়ায়ে শামী'তে বলা হয়েছে,
يجب الترتيب في سور القرآن، فلو قرأ منكوساً أثم، لكن لا يلزمه سجود السهو؛ لأن ذلك من واجبات القراءة لا من واجبات الصلاة، (الدر المختار وحاشية ابن عابدين ١/ ٤٥٧)
অর্থাৎ, কুরআনের সূরাগুলোর মাঝে তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। যদি সেটা না করে আগপিছ করা হয়, তাহলে তিলাওয়াতকারী গোনাহগার হবে। তবে এর দ্বারা সিজদায়ে সাহূ আবশ্যক হবেনা। কারণ নামাজের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত সালাত সংশ্লিষ্ট ওয়াজিব তরক করলে সিজদায়ে সাহু দেয়া লাগে। কিন্তু সূরার ধারাবাহিকতা সরাসরি নামাজ সংশ্লিষ্ট বিষয় নয়। বরং তা কিরাআতের সাথে সম্পর্কিত তিলাওয়াতের আবশ্যিক বিষয়
সারকথা হলো,
প্রথম রা'কাতে যে সূরা তেলাওয়াত করা হয়েছে,দ্বিতীয় রা'কাতে এর পূর্বের সূরা তেলাওয়াত করা মাকরুহ। ফরয নফল সকল নামাযের ক্ষেত্রে বিধান সমান নয়। বরং ফরয নামাযের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। কিন্তু নফল নামাযের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব নয়।
ইচ্ছাকৃত ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে ক্বেরাত পড়া মাকরুহ। অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না। ফাতাওয়ায়ে উসমানি-১/৪৩২ কিতাবুল ফাতাওয়া-২/২০৫
উত্তর দিচ্ছেনে, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক