জিজ্ঞাসা-১৭০: কিছু লোক শুধু কুরআন ও হাদীসকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করে অন্য কিছু মানতে চায় না। বিশেষ করে কিয়াসকে দলিল হিসেবে গ্রহণ করে না। কিয়াস শরীয়তের দলিল কিনা, এর পক্ষে নস আছে কি? তারিখ-১৫/০৬/২০২২ ইংরেজি
মাওলানা মোহাম্মাদ আব্দুর রহমান বগুড়া থেকে---
উত্তর: جزاك الله خيرا احسن جزاء । আল্লাহ আপনাকে নিরাপদে ও শান্তিতে রাখুন। স্নেহের ভাই আব্দুর রহমান সাহেবকে যিনি সাম্প্রতিক সময়ে সহিহ হাদিসের নামে স্লোগান তুলে কতিপয় মানুষ মুসলিম সমাজকে বিভ্রান্ত করছেন। আল্লাহ তাদেকে সহিহ বুঝ দান করুন।
মুহতারাম, আপনি কিয়াস সম্পর্কে শরীয়তের নস তালাশ করেছেন, ইনশাল্লাহ এর জবাব দিব, তার আগে আমি কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম/রাখলাম। যারা কিয়াসকে মানেন না। (তাদেরকে প্রশ্ন করা যেতে পারে)
প্রশ্ন: ০১। রোজাবস্থায় ইনজেকশন/করোনার টিকা নিলে, অন্যকে রক্ত দান করলে রোজা ভঙ্গ হবে কি না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০২। পুরুষ লোক মারা গেলে কাপড় হলো তিনটি ও মহিলার জন্য পাঁচটি যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত; কিন্তু খুনসা অর্থাৎ হিজরা মারা গেলে কাপড় কয়টি? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৩। যানবাহনে, বিমানে, জাহাজ-নৌকাতে কিভাবে নামাজ পড়বো/হবে কিনা, কারণ নবির যুগে এগুলো ছিল না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৪। ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা জায়েজ কিনা কিংবা এর পদ্ধতি কি? কারণ নবির যুগে এগুলো ছিল না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৫। কুকুর কোনো পাত্রে মুখ দিলে পবিত্রতার পদ্ধতি সাত পাত্রটি ধোয়া কিন্তু শুকুর মুখ দিলে কতবার ধুতে হবে? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৬। মদ হারাম কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। কিন্তু হিরোয়িন, আফিম,বাবা আধুনিক বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য এগুলো নামে সরাসরি হারাম হওয়ার নস নেই। কারণ নবির যুগে এগুলো ছিল না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৭। মোবাইলে কুরআন তেলাওয়াত করা জায়েজ কিনা? কারণ নবির যুগে এগুলো ছিল না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রশ্ন: ০৮। মাইকে আজান দেওয়া যাবে কিনা? কারণ নবির যুগে এগুলো ছিল না? কুরআন-সহিহ হাদিস থেকে দলিল দিন, কিয়াস ব্যতিত।
প্রিয় পাঠক! এরকম হাজরো মাসয়ালার ক্ষেত্রে কিয়াস ব্যতিত আমল করা সম্ভব হবে কি? যারা মানেন না; তাদেরকে উপরোক্ত প্রশ্নগলোর উত্তর দেওয়ার জন্য কিয়ামত সময় দিলেও কি এই আসমানের নিচে জমিনের ওপরে কোনো আলেম আছে কি কিয়াসের সাহায্য ছাড়া জবাব দিতে পারবে?
এখন কিয়াসের পক্ষে নস পেশ করছি। শুরুতে যৎকিঞ্চিৎ কিয়াসের পরিচয় জেনে নেয়। কিয়াসঃ কিয়াস (قياس) আরবি শব্দ যার অর্থ হল অনুমান করা, পরিমান করা, তুলনা করা, ওজন করা, নমুনা, সাদৃশ্য করা ইত্যাদি। ফিকহের পরিভাষায়- মূল আইন হতে ইল্লাতের যুক্তিভত্তিক সিদ্বান্ত হল কিয়াস।
v কুরআনুল কারিম থেকে দলিল:
আয়াত নং-০১
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَى أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا
আর যখন তাদের কাছে শান্তি-সংক্রান্ত কিংবা ভয়ের কোন সংবাদ পৌঁছে তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। যদি সেগুলো রসূলুল্লাহ (ﷺ) কিংবা তাদের দায়িত্বশীলদের নিকটে পৌঁছে দিত তাহলে তাদের মধ্যে অনুসন্ধানকারীগণ (সংবাদের যথার্থতা) জেনে নিতে পারত। বস্তুত আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা বিদ্যমান না থাকলে তোমাদের অল্প কিছু লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে। সূরা নিসা: ৮৩
এ আয়াতের ব্যাখ্যা
وَفِي هَذِهِ الْآيَةِ دَلَالَةٌ عَلَى وُجُوبِ الْقَوْلِ بِالْقِيَاسِ وَاجْتِهَادِ الرَّأْيِ فِي أَحْكَامِ الْحَوَادِثِ وَذَلِكَ لِأَنَّهُ أَمْرٌ بِرَدِّ الْحَوَادِثِ إلَى الرَّسُولِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَيَاتِهِ إذَا كَانُوا بِحَضْرَتِهِ وَإِلَى الْعُلَمَاءِ بَعْدَ وَفَاتِهِ وَالْغَيْبَةِ عَنْ حَضْرَتِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهَذَا لَا مَحَالَةَ فِيمَا لَا نَصَّ فِيهِ لِأَنَّ الْمَنْصُوصَ عَلَيْهِ لَا يَحْتَاجُ إلَى اسْتِنْبَاطِهِ
অর্থাৎ এ আয়াত দ্বারা নবসৃষ্ট কোন বিষয়ের বিধান নির্ধারণে ইজতিহাদ ও কিয়াসের আবশ্যকতা প্রমাণিত হয়। আর তা এভাবে প্রমাণিত হয় যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন জীবিত ছিলেন এবং সাহাবায়ে কিরামের সামনে থাকতেন তখন নবসৃষ্ট যে কোন বিষয় রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকটে পেশ করার আদেশ দেয়া হয়েছে আর রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর মৃত্যুর পরে বা জীবিত থেকেও তাঁর অনুপস্থিতিতে উলামায়ে কিরামের নিকটে পেশ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এটা অবশ্যই সে সব ক্ষেত্রে, যেখানে কুরআন-হাদীসের কোন স্পষ্ট নির্দেশ বর্ণিত নেই। কেননা, কুরআন-হাদীসের সিদ্ধান্ত বিদ্যমান থাকতে গবেষণার কোন প্রয়োজন নেই। সত্র: আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস
وَالِاسْتِنْبَاطُ مَأْخُوذٌ مِنَ اسْتَنْبَطْتُ الْمَاءَ إِذَا اسْتَخْرَجْتُهُ.وَالنَّبَطُ الْمَاءُ الْمُسْتَنْبَطُ أَوَّلَ مَا يَخْرُجُ مِنْ مَاءِ الْبِئْرِ أَوَّلَ ما تحفر وسمي النبط نبطا لأنهم يَسْتَخْرِجُونَ مَا فِي الْأَرْضِ وَالِاسْتِنْبَاطُ فِي اللُّغَةِ الِاسْتِخْرَاجُ وَهُوَ يَدُلُّ عَلَى الِاجْتِهَادِ إِذَا عُدِمَ النص والإجماع كما تقدم
অর্থ: لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنْبِطُونَهُ مِنْهُمْ এ বাক্যের মধ্যে الِاسْتِنْبَاطُ শব্দটি গ্রহণ করা হয়েছে اسْتَنْبَطْتُ الْمَاءَ শব্দ থেকে। আর এর ক্রিয়ামূল النَّبَطُ এর অর্থ হলো কূপ খননের পর কূপ থেকে বের হওয়া প্রথম পানি। আর যমীন থেকে ফসল বের করে আনার কারণে কৃষককে النَّبَطُ বলা হয়। الِاسْتِنْبَاطُ শব্দটির আভিধানিক অর্থ বের করে আনা। এ আয়াত থেকে কুরআন-হাদীস এবং ইজমার সিদ্ধান্ত না পাওয়া গেলে গবেষণা করা প্রমাণিত হয়। তাফসীরে কুরতুবী
আয়াত নং-০২
هُوَ الَّذِي أَخْرَجَ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ مِنْ دِيَارِهِمْ لِأَوَّلِ الْحَشْرِ مَا ظَنَنْتُمْ أَنْ يَخْرُجُوا وَظَنُّوا أَنَّهُمْ مَانِعَتُهُمْ حُصُونُهُمْ مِنَ اللَّهِ فَأَتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوا وَقَذَفَ فِي قُلُوبِهِمُ الرُّعْبَ يُخْرِبُونَ بُيُوتَهُمْ بِأَيْدِيهِمْ وَأَيْدِي الْمُؤْمِنِينَ فَاعْتَبِرُوا يَا أُولِي الْأَبْصَارِ
অর্থ: তিনি ওই স্বত্বা যিনি আহলে কিতাবের কাফেরদেরকে প্রথমবার একত্রিত করার জন্য তাদের বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। তোমরা কল্পনাও করনি যে, তারা বের হয়ে যাবে। আর তারা ভেবেছিলো তাদের দুর্গ তাদেরকে আল্লাহর কবল থেকে রক্ষা করবে। অতঃপর তাদের ওপর আল্লাহর আজাব এমন জায়গা থেকে এসে পড়লো যা তারা কল্পনাও করেনি। আল্লাহ তাআলা তাদের ওপর ভীতি সৃষ্টি করে দিলেন। তারা নিজ হাতে এবং মুমিনদের হাতে তাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস করছিলো। অতএব, হে চক্ষুষ্মান ব্যক্তিগণ! তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা হাশর: ২)
আয়াতের ব্যাখ্যা
قوله تعالى فَاعْتَبِرُوا يا أُولِي الْأَبْصارِ[المسألة الأولى]اعْلَمْ أَنَّا قَدْ تَمَسَّكْنَا بِهَذِهِ الْآيَةِ فِي كِتَابِ الْمَحْصُولُ مِنْ أُصُولِ الْفِقْهِ عَلَى أَنَّ القياس حجة…قَالَ الْمُفَسِّرُونَ الِاعْتِبَارُ هُوَ النَّظَرُ فِي حَقَائِقِ الْأَشْيَاءِ وَجِهَاتِ دَلَالَتِهَا لِيُعْرَفَ بِالنَّظَرِ فِيهَا شيء آخر من جنسها
অর্থ: আল্লাহর বাণী فَاعْتَبِرُوا يا أُولِي الْأَبْصارِ বাক্য থেকে আহরিত প্রথম মাসআলা। জেনে রাখ, «الْمَحْصُولُ مِنْ أُصُولِ الْفِقْهِ»নামক কিতাবে আমরা এ আয়াত থেকে প্রমাণ গ্রহণ করেছি যে, কিয়াস শরীআতের দলীল। মুফাসসিরগণ বলেন: فَاعْتَبِرُوا শব্দের ক্রিয়ামূল الِاعْتِبَارُ এর অর্থ হলো: কোন বস্তুর মূল উৎস এবং (তার বিধান) প্রমাণের ধরণের প্রতি লক্ষ্য করে অনুরূপ আরও বিধান বের করা। তাফসীরে কাবীর
খ্যাতনামা মুফাসসিরগণের তাফসীরের ভিত্তিতে বলা যায় যে, সূরা হাশরের ২ নম্বর আয়াত থেকে প্রমাণিত যে, কুরআন-হাদীস ও ইজমা দ্বারা কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত পাওয়া না গেলে ইজতিহাদ বা কিয়াসই
তখন শরীআতের দলীল হিসেবে স্বীকৃত।
আয়াত নং-০৩
وَدَاوُودَ وَسُلَيْمَانَ إِذْ يَحْكُمَانِ فِي الْحَرْثِ إِذْ نَفَشَتْ فِيهِ غَنَمُ الْقَوْمِ وَكُنَّا لِحُكْمِهِمْ شَاهِدِينَ – فَفَهَّمْنَاهَا سُلَيْمَانَ ۚ وَكُلًّا آتَيْنَا حُكْمًا وَعِلْمًا
‘(আর স্মরণ করো) দাউদ এবং সুলাইমান (-এর সেই ঘটনার কথা) যখন উভয়ে ক্ষেতের মামলার ব্যাপারে বিচার করে দিচ্ছিল। সেসময় (ঘটনাটি এই ঘটেছিল যে) রাতের বেলা তাতে একটি কওমের মেষ ছড়িয়ে পড়েছিল। আর আমি তাদের বিচারকার্য পর্যবেক্ষন করছিলাম (যে তাঁরা দুজনে কিভাবে বিচার করে)। তখন আমরা সুলায়মানকে তা (অর্থাৎ সঠিক ফয়সালা কী হওয়া উচিৎ তা) বুঝিয়ে দিলাম। আর (তাছাড়া) আমরা (তাঁদের দুজনের) প্রত্যেককেই দান করেছিলাম হিকমাহ ও ইলম। সূরা আম্বিয়া ৭৮, ৭৯
ইমাম হাসান বাসরী রহ. একবার উপরোক্ত আয়াতটি তিলাওয়াত করে বললেন: فحَمَد سليمان، ولم يَلُم داود، ولولا ما ذكر الله من أمر هذين، لرأيت أنَّ القضاة هلكوا، فإنَّه أثنى على هذا بعلمه، وعذر هذا باجتهاده এখানে (উত্তম রায়ের জন্য) হযরত সুলায়মান আ.-এর প্রশংসা করা হয়েছে, কিন্তু হযরত দাউদ আ.-এর কোনো ক্রুটি ধরা হয়নি। আর আল্লাহ তাআলা যদি এই দুই নবীর উক্ত ঘটনা উল্লেখ না করতেন, তাহলে আমার মতে বিচারকরা নির্ঘাত ধ্বংস হয়ে যেত। বস্তুতঃ আল্লাহ তাআলা হযরত সুলায়মান আ.-এর রায়কে তার ইলমের কারণে প্রশংসা করেছেন, আর হযরত দাউদ আ.কে (ক্রুটি ধরা) থেকে মুক্তি দিয়েছেন তার ইসতিহাদের (কিয়াসের) কারণে। [সহিহ বুখারী- ৮/১১১; শারহুস সুন্নাহ, ইমাম বাগাভী- ১০/১১৬]
v হাদিসে নবিব থেকে দলিল:
হাদিস নং-০১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي عَوْنٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ عَمْرِو ابْنِ أَخِي الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، عَنْ نَاسٍ مِنْ أَصْحَابِ مُعَاذٍ مِنْ أَهْلِ حِمْصٍ، عَنْ مُعَاذٍ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ بَعَثَهُ إِلَى الْيَمَنِ، فَقَالَ: ” كَيْفَ تَصْنَعُ إِنْ عَرَضَ لَكَ قَضَاءٌ؟ ” قَالَ: أَقْضِي بِمَا فِي كِتَابِ اللهِ. قَالَ: ” فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِي كِتَابِ اللهِ؟ ” قَالَ: فَبِسُنَّةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالَ: ” فَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِي سُنَّةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ ” قَالَ: أَجْتَهِدُ رَأْيِي، لَا آلُو. قَالَ: فَضَرَبَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدْرِي، ثُمَّ قَالَ: الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي وَفَّقَ رَسُولَ رَسُولِ اللهِ لِمَا يُرْضِي رَسُولَ اللهِ.
অর্থ: হযরত মুআজ রা. থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন তাঁকে ইয়ামান প্রেরণ করেন তখন বললেন: তোমার সামনে কোন বিচার এলে তুমি কীভাবে তার সমাধান করবে? তিনি বললেন: আল্লাহর কিতাবে যা আছে আমি সে অনুযায়ী ফায়সালা করব। রসূলুল্লাহ (ﷺ) পুনরায় বললেন: যদি তুমি আল্লাহর কিতাবে তা না পাও? হযরত মুআজ রা. বললেন: তাহলে রসূলুল্লাহ (ﷺ)--এর সুন্নাত দ্বারা ফায়সালা করব। তিনি আবার বললেন: যদি তুমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সুন্নাতে না পাও? হযরত মুআজ রা. বললেন: তাহলে আমি আমার বিবেচনা দ্বারা গবেষণা করব। আর এ ব্যাপারে আমার চেষ্টায় কোন ত্রুটি করব না। হযরত মুআজ রা. বলেন: এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ (ﷺ) আমার সিনা চাপড়ে বললেন: সব প্রশংসা সেই আল্লাহ তাআলার যিনি তাঁর রসূলের প্রেরিত দূতকে এমন (বিচারিক যোগ্যতার) তাওফীক দিয়েছেন যে ব্যাপারে আল্লাহর রসূল সন্তুষ্ট। মুসনাদে আহমাদ: ২২০০৭, আবু দাউদ: ৩৫৫৩, ৩৫৫৪, তিরমিজী: ১৩৩১, ১৩৩২
নোট: হাদিসটি সনদ সম্পর্কে আবু বকর রাযী, আবু বকর ইবনে আরাবী, খতীবে বাগদাদী ও ইবনুল কায়্যিম আল জাওযিয়া-এর মতে সহিহ। সূত্র: আল ইলালুল মুতানাহিয়া: বিচার-ফায়সালা অধ্যায়
হাদিস নং-০২
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، أَخْبَرَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، أَخْبَرَنَا أَبِي قَالَ: سَمِعْتُ يَحْيَى بْنَ أَيُّوبَ يُحَدِّثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ أَبِي أَنَسٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ الْمِصْرِيِّ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: احْتَلَمْتُ فِي لَيْلَةٍ بَارِدَةٍ فِي غَزْوَةِ ذَاتِ السُّلَاسِلِ فَأَشْفَقْتُ إِنِ اغْتَسَلْتُ أَنْ أَهْلِكَ فَتَيَمَّمْتُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ بِأَصْحَابِي الصُّبْحَ فَذَكَرُوا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «يَا عَمْرُو صَلَّيْتَ بِأَصْحَابِكَ وَأَنْتَ جُنُبٌ؟» فَأَخْبَرْتُهُ بِالَّذِي مَنَعَنِي مِنَ الِاغْتِسَالِ وَقُلْتُ إِنِّي سَمِعْتُ اللَّهَ يَقُولُ: {وَلَا تَقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِكُمْ رَحِيمًا} فَضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا قَالَ(رَوَاه ابُوْ دَاود فِىْ بَابِ إِذَا خَافَ الْجُنُبُ الْبَرْدَ أَيَتَيَمَّمُ)
হযরত আমর ইবনুল আছ রা. বলেন: জাতুস সালাসিল যুদ্ধে শীতের রাতে আমার সপ্নদোষ হয়ে গেল। আমি আশঙ্কা করলাম যে, গোসল করলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারি। তাই তায়াম্মুম করলাম এবং সাথীদের ফজরের নামায পড়ালাম। সাথীগণ এ ঘটনা রসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জানিয়ে দিলে তিনি আমাকে বললেন: হে আমর! তুমি জুনুবী অবস্থায় সাথীদের নামায পড়িয়েছ? আমি তাঁকে গোসল না করার কারণ বর্ণনা করলাম এবং আরও বললাম যে, আমি আল্লাহর বাণী শুনেছি: তোমরা নিজেদেরকে হত্যা করো না, আল্লাহ তোমাদের প্রতি মেহেরবান। (সূরা নিসা: ২৯) রসূলুল্লাহ (ﷺ) এ কথা শুনে হাসলেন এবং তাঁকে কিছুই বললেন না। আবু দাউদ: ৩৩৪
নোট: শায়খ শুআইব আরনাউত মুসনাদে আহমাদ ১৭৮১২ নম্বর হাদীসের তাহকীকে বলেন: حديث صحيح، “হাদীসটির সনদ সহীহ”।
দেখুন, হযরত আমর ইবনুল আছ রা. ফরয গোসলের স্থলে তায়াম্মুমের আমল কুরআন-হাদীসের কোন দলীলের ভিত্তিতে করেননি এবং এ মর্মে কোন দলীলও তিনি পেশ করেননি; বরং কুরআনের আয়াতের আলোকে তিনি নিজে গবেষণা করে এ আমল করেছিলেন। রসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর এ গবেষণালব্ধ দলীল শুনে হাসলেন। আর এটা রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর পক্ষ থেকে গবেষণা নামক দলীলের স্বীকৃতির বহিঃপ্রকাশ। ফিকাহের পলিভাষায় তাকে কিয়াস বলে।
হাদিস নং-০৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ، قَالَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ«لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ العَصْرَ إِلَّا فِي بَنِي قُرَيْظَةَ» فَأَدْرَكَ بَعْضَهُمُ العَصْرُ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا وَقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذَلِكَ، فَذُكِرَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ (رَوَاه الْبُخَارِىُّ فِىْ بَابُ صَلاَةِ الطَّالِبِ وَالمَطْلُوبِ رَاكِبًا وَإِيمَاءً)
হযরত ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) খন্দকের যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে বললেন: সবাই আছরের নামায পড়বে বনী কুরাইযায় গিয়ে। পথিমধ্যে কারও কারও আছরের ওয়াক্ত হয়ে গেলো। কেউ কেউ বললো: আমরা বনী কুরাইযায় না গিয়ে নামায পড়ব না। আবার অন্যরা বললো: আমরা বরং নামায পড়ব। আমাদের দ্বারা ওটা উদ্দেশ্য নয় (যে, আমরা নামায ছেড়ে দিব)। অতঃপর এ মতবিরোধের ঘটনা নবী কারীম (ﷺ) -এর নিকটে বলা হলে তিনি তাদের কাউকে তিরস্কার করলেন না। বুখারী: ৮৯৯
সম্মানিত পাঠক! লক্ষ্য করুন, উনারা কথায় কথায় বুখারি উদ্ধৃতি দেন, আর সেই বুখারির হাদিসের বৈধতা পাওয়া যাচ্ছে। কেননা, রসূরে নির্দেশ অমান্য করে সলাত করলেও; এতদসত্ত্বেও রসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদেরকে তিরস্কার না করা বা কিছুই না বলা এটাই প্রমাণ করে যে, ইজতিহাদ বা গবেষণাও শরীআতের দলীল।
হাদিস নং-০৪
ইমাম ত্বাবরানী (মৃ: ৩৬০ হি:) রহ. উত্তম সনদে হযরত আলী রা. থেকে একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন, হযরত আলী রা. বলেন- قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنْ نَزَلَ بِنَا أَمْرٌ لَيْسَ فِيهِ بَيَانٌ : أَمْرٌ وَلا نَهْيٌ ، فَمَا تَأْمُرُنَا ؟ قَالَ : ” تُشَاوِرُونَ الْفُقَهَاءَ وَالْعَابِدِينَ ، وَلا تُمْضُوا فِيهِ رَأْيَ خَاصَّةٍ – رواه الطبـراني فــي الأوســط: رقم الحديث ١٦٤٧, قال الهيثمي فـي مــجمـع الزوائد:١٠/١٧٨ رجاله موثقون من أهل الصحيح, الهندي في كنز العمال رقم ٤١٨٨، وقال عنه حسن صحيح, و خليفة بن خياط فـي مسنده, رقم الحديث ٤٦ – আমি বললাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ ! আমাদের কাছে যদি এমন কোনো ব্যাপার সামনে আসে যে সম্পর্কে (কুরআন ও সুন্নাহ’র কোথায়ও পরিষ্কার করে কিছু) বলা নেই, আবার (সে সম্পর্কে) কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই, সেক্ষেত্রে আপনি আমাদেরকে কি করার নির্দেশ দেন? রাসুলুল্লাহ (ﷺ) -. এরশাদ করলেন: تُشَاوِرُونَ الْفُقَهَاءَ وَالْعَابِدِينَ ، وَلا تُمْضُوا فِيهِ رَأْيَ خَاصَّةٍ –(তখন) তোমরা ফকিহ ও আবেদ (আলেম)গণের সাথে পরামর্শ করো এবং সে ব্যাপারে কোনো একক (ব্যাক্তির) মতামতকে গ্রহন করো না। আল-মু’জামুল আউসাত, ত্বাবরানী-১৬৪৭; মাজমাউয যাওয়ায়িদ, হাইছামী-১০/১৭৮; কাঞ্জুল উম্মাল, মুত্তাকী-৪১৮৮; মুসনাদে খালিফাহ- ৪৬
হাদিস নং-০৫
হযরত আমর ইবনুল আস রা.-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) - এরশাদ করেন– إذا حكم الحاكم فاجتهد ثم أصاب فله أجران وإذا حكم فاجتهد ثم أخطأ فله أجر – যখন কোনো হাকিম (বিচারক) ইসতিহাদ করে ফয়সালা দেন ও ফয়সালাটি সঠিক হয়, তখন তিনি (আমলনামায়) দুটি পুরষ্কার পান। আর তিনি যখন ইসতিহাদ করে ফয়সালা দেন কিন্তু ফয়সালাটা ভুল হয়ে যায়, তখন তিনি একটি পুরষ্কার পান। সহীহ বুখার, হাদিস ৭৩৫২; সহীহ মুসলীম-১৭১৬; সুনানে আবু দাউদ-৩৫৭৪; মুসনাদে আহমাদ-৪/১৯৮
এই হাদিসটি ইসতিহাদ ও কিয়াসের পক্ষে একটি শক্তিশালী দলিল।
হাদিস নং-০৬
সহীহ হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) - এরশাদ করেন– إني إنما أقضي بينكما برأي فيما لم ينزل علي فيه – ‘যে ব্যাপারে (সরাসরি কোনো ফয়সালা সহকারে) আমার উপর (কোনো ওহী) নাজিল হয় না, শুধু সেক্ষেত্রে আমি (আমার উপর বিগত নাজিল হওয়া ওহীর আলোকে ইসতেহাদ করি এবং একটি সিদ্ধান্তে উপণীত হই এবং) তোমাদের দুজনের মাঝে আমার সিদ্ধান্ত অনুসারে ফয়সালা করে দেই। সহীহ বুখারী-৫/২১২; সহীহ মুসলীম-৩/১৩৩৭; সুনানে আবু দাউদ-৩৫৮৫; সুনানে নাসায়ী-৮/২৩৩; তাফসিরে ইবনে কাসির-৪/২৬০
আকলি দলিল:
ইসলামের শুরু হতে কিয়ামত পর্যন্ত আগম সমস্ত মানুষের নাম উল্লেখ করে, সব সমাধান যদি কুরআনুল কারিমে নাজিল হতো, তাহলে কুরআন ত্রিশ (৩০) পারা থাকতো। না কোটি কাটি পাড়া হতো। হাদিসও সেম হতো তাহলে হাদিসও কোটি কোটি হত। সেখান থেকে বাছাই করে আমর করা কত কঠিন হতো। একথা কি আমরা একবারই ভেবে দেখেছি।
তাছাড়া রসূল (ﷺ) কে جَوَامِعَ الكَلِم জামেউল কালিম (অর্থাৎ কথার সমষ্টি দান) করেছেন। দলিল:
রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: بُعِثْتُ بِجَوَامِعِ الكَلِمِ، আমাকে বিশদ অর্থবহ সংক্ষিপ্ত কথা বলার বৈশিষ্ট দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। ইমাম বুখারী রহ. এ কথার ব্যাখ্যায় বলেন: وَبَلَغَنِي أَنَّ جَوَامِعَ الكَلِمِ: أَنَّ اللَّهَ يَجْمَعُ الأُمُورَ الكَثِيرَةَ، الَّتِي كَانَتْ تُكْتَبُ فِي الكُتُبِ قَبْلَهُ، فِي الأَمْرِ الوَاحِدِ، وَالأَمْرَيْنِ، أَوْ نَحْوَ ذَلِكَ ” আমার নিকটে পৌঁছেছে যে, جَوَامِعَ الكَلِمِ এর ব্যাখ্যা হলো: আল্লাহ তাআলা রসূলুল্লাহ স.-এর এক/দুই কথার মধ্যে এত কিছু একত্রিত করে দিয়েছেন, ইতিপূর্বে যা বর্ণনা করতে কিতাবে লিখতে হতো বা অনুরূপ কোন ব্যবস্থা নিতে হতো। বুখারী: ৬৫৪১)
যদি রসূলুল্লাহ স.-এর কিছু কিছু (অনেক) কথা দশটি বিধান বের করা না যায় তাহলে রসূলুল্লাহ স.-এর এ বৈশিষ্টের সার্থকতা কোথায়?
প্রশ্ন: ক। একটি সংশয়।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন,
أَفَغَيۡرَ ٱللَّهِ أَبۡتَغِى حَكَمً۬ا وَهُوَ ٱلَّذِىٓ أَنزَلَ إِلَيۡڪُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ مُفَصَّلاً۬ۚ
অর্থঃ এমতাবস্থায় আমি কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মীমাংসাকারীর সন্ধান করবো? অথচ তিনি পূর্ণ বিস্তারিত বিবরণসহ তোমাদের কিতাব নাযিল করেছেন। সুরা আনআম-১১৪
এ আয়াত দ্বারা বলেন, কুরআনে সকল বিষয় বিস্তারিত বর্ণিত তার পরও কি কিয়াস দরকার? ( দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ। সূরা মায়েদা-০৩)
উত্তর: ক। তার জবাব,
কুরআন সকল বিষয়ে বর্ণনা এসেছে অর্থ সকল বিষয়ে মূলনীতি এসেছে। কুরআনে যে সব কিছুই আছে, এ বিয়য়ে ইমাম শাফিকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জবাবে এ আয়াত দ্বারা দলিল দেন।
وَ مَاۤ اٰتٰىکُمُ الرَّسُوۡلُ فَخُذُوۡهُ ٭ وَ مَا نَهٰىکُمۡ عَنۡهُ فَانۡتَهُوۡا ۚ
অর্থ: রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্ৰহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক। সূরা হাশর-০৭
কুরআনে নামাজ কায়েম করতে বলা হয়েছে, কিন্তু বিস্তারিত বলা হয়নি, হাদিস থেকে আমরা বিস্তারিত পদ্ধতি জানতে পারি। পবিত্রতা সম্পর্কে কুরআনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা এসেছে, কিন্তু বিস্তারিত আলোচনা আসেনি। এরকম অগণিত বিষয়। সুতরাং প্রমাণিত হলো, কুরআন সকল বিষয়ে বর্ণনা এসেছে অর্থ সকল বিষয়ে মূলনীতি বর্ণিত হয়েছে।
والله اعلم بالصواب
আল্লাহপাকই সকল বিষয়ে সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।