আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

প্রবন্ধ-৬৩: সৃষ্টির আনুগত্যে স্রষ্টার অবাধ্যতা বৈধ নয়।

No Comments

 



সৃষ্টির আনুগত্যে স্রষ্টার অবাধ্যতা বৈধ নয়।


মানব জাতি জাগতিক কর্ম ক্ষেত্রে একজন আরেকজনের  অধিনস্ত । যেমন ছাত্র শিক্ষকের অধীনে , মুরীদ মুরশিদের, মা'মুর আমীরের , প্রজা রাজার, গোলাম মনিবের অধিনে থাকে।  তাই অধীনস্থ ব্যক্তির কর্তব্য, সে যেন তার উপরের লোকটির শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ,প্রীতি ও সম্মান করার সময়, আপন স্রষ্টার অস্তিত্ব ভুলে, অবাধ্যতা ও নাফরমানীতে লিপ্ত না হয়ে যায়।

কেননা, হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: সৃষ্টি জিবের আনুগত্য করা সৃষ্টিকর্তার অবাধ্য হয়ে  বৈধ নয়। 

عن علي ،عن النبي صلى الله عليه وسلم قال:" لا طاعة لمخلوق في معصية الله عز و جل" (مسند أحمد؛ ١٠٩٥)


বুখারী শরীফের এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত আলী বলেন: নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  আনসার গোত্রের একজন ব্যক্তিকে  একদল সাহাবাদের আমির নিযুক্ত করে পাঠালেন। এবং তাঁদের হুকুম দিলেন তাঁরা যেন আমিরের আনুগত্য করে। আমির সফরকালে কোন কারণবশত রাগান্বিত হয়ে যায়। তখন তিনি আপন সঙ্গীদের বললেন, হুজুর কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্যের হুকুম দেননি? সকলেই বললেন ,অবশ্যই  দিয়েছেন। 

আমির তখন হুকুম দিলেন যে, তোমরা  এখন আমার জন্য কাঠ একত্রিত কর ।হুকুমের আনুগত্য শিকার করে সকলেই কাঠ একত্রিত করলেন। তারপর কাঠে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুকুম দিলেন। সকলে মিলে আগুন জ্বালিয়ে দিলেন। 

আমির সাহেব হুকুম দিলেন যে , এখন তোমরা সকলেই এই আগুনের মধ্যে প্রবেশ করো। এমন কি! কিছু মানুষ আগুনে প্রবেশ করার মনস্থির ও করে নিয়েছেন। তারপর তাদের মধ্য থেকে একজন আরেকজনকে বাধা দিতে শুরু করে, আর বলতে লাগে যে, আমরা তো হুজুরের কাছে আগুন থেকে বাঁচার জন্যই পালিয়ে এসেছিলাম। এই অস্থিরতা এবং চিন্তায় থাকতে থাকতে আগুন নিভে যায়। এদিকে আমির সাহেবের রাগ ও তখন হালকা হয়ে যায়। 

পরে যখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সাহাবাগণ এই বার্তা পৌঁছে দেন ,তখন হুজুর আঃ সালাম এরশাদ করলেন, যদি তারা আমির সাহেবের আদেশের অনুগামী হয়ে আগুনে প্রবেশ হয়ে যেত ,তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত কখনো বাহির হতো না। কেননা الطاعة في المعروف. আমিরের আনুগত্য শুধুমাত্র নেক কাজে করতে হয়।

عن علي رضي الله عنه، انه قال: بعث النبي صلى الله عليه وسلم سرية، فاستعمل عليها رجلا من الانصار، وامرهم ان يطيعوه، فغضب، فقال اليس أمركم النبي صلى الله عليه وسلم ان تطيعوني؟ قالوا: بلى! قال: فأجمعوا لي حطبا، فجمعوا ،فقال أوقدوا نارا، فأوقدوها، فقال: ادخلوها ،فهموا وجعل بعضهم يمسك بعضا ، ويقولون فررنا الى النبي -صلى الله عليه وسلم -من النار، فما زالوا حتى خمدت النار فسكن غضبه، فبلغ النبي صلى الله عليه وسلم، فقال: لو دخلوها ما خرجوا منها الى يوم القيامه الطاعه في المعروف. ( الصحيح البخاري،باب سريه عبد الله بن حذافه السهمي وعلقمة بن مجزز المدلجي، المغازي ٤٠٨٥)

শিক্ষা: পৃথিবীর কোন প্রান্তরে কারো তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় যদি কোন শরীয়ত পরিপন্থী  কাজের হুকুম দেওয়া হয়, সে কাজ প্রত্যাখ্যান করা জরুরী। শরীয়ত পরিপন্থী কাজ অর্থাৎ নাজায়েজ কাজ, যা মহান আল্লাহ তায়ালার অপছন্দ,উহা বান্দার পক্ষ থেকে হয়ে যাওয়াটাই অবাধ্যতা।

বুখারী শরীফের আর এক হাদিসের মধ্যে এসেছে ।

عن عبد الله رضي الله عنه، عن النبي صلى الله عليه وسلم، قال:" السمع والطاعة على المرء المسلم فيما أحب وكره, ما لم يؤمر بمعصية , فإذا أمر بمعصية فلا سمع ولا طاعة."(الصحيح البخاري، كتاب الاحكام، باب السمع والطاعة،٧١٤٤)

অর্থ: মুমিন বান্দার জন্য তার পছন্দ ও অপছন্দের বিষয়ে শ্রবণ ও আনুগত্য করা আবশ্যক, যতক্ষণ না তাকে অবাধ্যতা করার আদেশ দেওয়া হয়, যখন নাফরমানী করার আদেশ করা হবে  তখন না কোন শ্রবণ করা জরুরী আর না কোন আনুগত্য আবশ্যক” 


🖋️✒️ মুফতি বদরুল ইসলাম কাসেমী 

শায়খুল হাদীস জলিলিয়া ইসলামিয়া দারুল হুদা মাদ্রাসা,বেলডাঙ্গা মুর্শিদাবাদ