আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৩৮৯: কসর ও মুসাফির সংক্রান্ত মাসয়ালা

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১২৩৮৯:

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। সম্মানিত শাইখের নিকট সালাতুল কসর এর একটি বিধান জানতে চাই। বিষয়টি হলো আমরা যখন এক্সারসাইজে গমন করি তখন যদি কেউ 16 দিনের নিয়তে বের হয় এমত অবস্থায় সে ছয় দিন এমন জায়গায় অবস্থান করল যার দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার এরপর আবার সে তার নির্দিষ্ট স্থান ত্যাগ  করে ৮০ কিলোমিটার অতিক্রান্ত করলো সেখানে কিছুদিন থাকলো আবার সে আরেক জায়গায় চলে গেল সেখানেও কিছুদিন থাকলো সে ক্ষেত্রে মুসাফিরের কসরের বিধান কি হবে বা মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে কিনা  । জাযাকাল্লাহ। তারিখ১/১২/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি

 

মাওলানা আবুল ফজল সাভার থেকে।

 

জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর   প্রথম কথা হলো, আলহামদুল্লিাহ কসর সালাত ও  ‍মুসাফির সম্পর্কে আল-বুরহানে ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসা-১২৮, ১৭৫ ও ১২৩৪৮ শিরোনামে আলোচিত হয়েছে।

দ্বিতীয় কথা হলো, হানাফি মাজহাবের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তি  ৪৮ মাইল (৭৭.২৪৬৪কিলোমিটার) বা এর বেশি সফর করার নিয়তে কেউ যদি নিজ গ্রাম বা শহরের সীমানা অতিক্রম করে এবং সফর অবস্থায় কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করা পর্যন্ত মুসাফির থাকবে। কোনো স্থানে একসাথে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করলে মুকীম গণ্য হবে এবং পূর্ণ নামায পড়তে হবে। সূত্র: শরহুল মুনয়াহ-৫৩৫  আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

 

ফিকহি হানাফির দলিল:

 

হাদিস/আসার নং-০

 وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ، وَابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ، يَقْصُرَانِ، وَيُفْطِرَانِ فِي أَرْبَعَةِ بُرُدٍ وَهِيَ سِتَّةَ عَشَرَ فَرْسَخًا

ইবনে উমর রাযি এবং ইবনে আব্বাস রাযি চার বারীদ সফরের সময় কসর পড়া এবং রোযা ভাঙ্গার কথা বলেছেন। আর সেটি হল১৬ ফরসখ। তাখরিজ: বুখারি-১০৮৬নামায কসর করা অধ্যায়

 

ব্যাখ্যা:

এক ফরসখ তিন মাইল হয়ে থাকে। সুতরাং প্রত্যেক বারীদ হয় ১২ মাইল। আর চার বারীদকে ১২ দিয়ে গুণ দিলে কিংবা ষোল ফরসখকে তিন দিয়ে গুণ দিলে হয় ৪৮ মাইল। অতএবসফরের দূরত্ব দাঁড়াচ্ছে ৪৮ মাইল। সূত্র: কামুসুল ফিকহ ২/৩১৪ আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু ১/৭৫

 

হাদিস/আসার নং-০

عن عمر رضي الله عنه قال: تقصر الصلاة في مسيرة ثلاث ليال

উমার রা. বলেনতিন রাতের দূরত্বে সালাত সংক্ষিপ্ত করা হবে। তাখরিজ: ফিকহুস সুনানহাদীস নং ৯৩৩

 

নোট:

মুহাম্মাদ কিতাবুল হাজ্জ-এ সহীহ সনদে সুওয়াইদ ইবন গাফলাহ থেকে অনুরূপ মতামত সঙ্কলিত করেছেন)। [তাবারিতাহযীবুল আসারহাদীস-১২৫৯মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহাদীস-৮১৩০]

ব্যাখ্যা: একজন ব্যক্তি সাধারণত একদিনে ১৬ মাইল হাঁটতে পারে। তিন দিয়ে গুণ করলে ৪৮ মাইল হয়।

 

হাদিস/আসার নং-০

عن ابن عمر رضي الله عنهما: إذا كنت مسافراً فوطنت نفسك على إقامة خمسة عشر يوماً فأتمم الصلاة وإن كنت لا تدري فاقصر

ইবন উমার রা. বলেনতুমি যদি মুসাফির হও এবং ১৫ দিন অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ কর তাহলে সালাত পূর্ণ করবে। আর যদি তুমি না জান যে কতদিন থাকবে তাহলে সালাত সংক্ষেপ (কসর) করবে। 

নোট: তাহাবি ইবন আব্বাস ও ইবন উমার থেকে অনুরূপ মত সঙ্কলন করেছেন)। [মুহাম্মাদকিতাবুল আসারহাদীস-১৮৮]

 

হাদিস/আসার নং-০

عن مجاهد قال: كان ابن عمر رضي الله عنهما كان إذا أجمع على إقامة خمسة عشر يوماً أتم الصلاة

 তাবিয়ি মুজাহিদ বলেনইবন উমার রা. যখন ১৫ দিন অবস্থানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন তখন সালাত পূর্ণরূপে (চার রাকআত) আদায় করতেন। তাখরিজ: ফিকহুস সুনানহাদীস নং ৯৩৮

নোট: ইবন আবী শাইবা ও মুহাম্মাদ কিতাবুল হাজ্জ-এ। তাদের উভয়ের সনদ সহীহ। [মুসান্নাফ ইবন আবী শাইবাহাদীস-৮২১৭]

 

সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে প্রথম জায়গায় ৬ দিন অবস্থান, ৭০ কিলো. দূরে সেখানে মুকিম এর সালাম তথা পূর্ণ সালাম আদায় করতে হবে। আর দ্বিতীয়/তৃতীয় জায়গায় ৮০ কিলো. দূরে সেখানে কসর সালাত আদায় করতে হবে। সূত্র: শরহুল মুনয়াহ-৫৩৫  আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১


والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক