আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

আমল ও দুআ-৩৭২: কুরআনুল কারীমে বর্ণিত নবীদের দুআ-০৮

No Comments

 



✅পবিত্র কুরআনে আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম-এর দুআ পর্ব ৮ 


✅হযরত যাকারিয়া আ.-এর দুআ


🟢হযরত ঈসা আ.-এর মাতা হযরত মারইয়াম আলাইহিস সালাম কৈশোরকালে বাইতুল মুকাদ্দাসের একটি কুঠরিতে আল্লাহ পাকের ইবাদত বন্দেগী করতেন। তৎকালীন নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম ছিলেন হযরত মারইয়ামের খালু। তিনি যখন হযরত মারইয়ামের হুজরাতে প্রবেশ করতেন, তখনই তার নিকট বে-মওসুুম ফল দেখতে পেতেন। এতে তিনি বিস্মিত অভিভূত হন। একদিন জিজ্ঞাসা করলেন, হে মারইয়াম তোমার নিকট এসব ফল কোথা থেকে আসে? উত্তরে মারইয়াম বললেন, এগুলো আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে আসে। আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবিকা দিয়ে থাকেন।


হযরত যাকারিয়া আ. নিঃসন্তান ছিলেন। তখন তার বয়স সাতাত্তর বছর। এবং তার স্ত্রী বন্ধ্যা। তিনি সন্তান হওয়ার ব্যাপারে নিরাশ ছিলেন। কিন্তু হযরত মারইয়ামের নিকট অকালে ফল দেখে তার হৃদয়ে এ উদ্দীপনা সৃষ্টি হল যে, যে মহান সত্তা অকালে ফল পাঠাতে পারেন তিনি আমার প্রতিও দয়াপরবশ হয়ে আমাকে বার্ধক্যে সন্তান দান করতে পারেন। যে সন্তান আমার অবর্তমানে দ্বীনী দাওয়াতের খেদমত আঞ্জাম দেবে। তখন তিনি আল্লাহ পাকের নিকট সবিনয় নিবেদন করেন,


رَبِّ اِنِّیْ وَهَنَ الْعَظْمُ مِنِّیْ وَ اشْتَعَلَ الرَّاْسُ شَیْبًا وَّ لَمْ اَكُنْۢ بِدُعَآىِٕكَ رَبِّ شَقِیًّا وَ اِنِّیْ خِفْتُ الْمَوَالِیَ مِنْ وَّرَآءِیْ وَ كَانَتِ امْرَاَتِیْ عَاقِرًا فَهَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ وَلِیًّا یَّرِثُنِیْ وَ یَرِثُ مِنْ اٰلِ یَعْقُوْبَ وَ اجْعَلْهُ رَبِّ رَضِیًّا.


“হে আমার প্রতিপালক, আমার অস্থি দুর্বল হয়ে গেছে, বার্ধক্যে আমার মস্তক শুভ্রোজ্জ্বল হয়েছে। হে আমার প্রতিপালক, আপনাকে আহ্বান করে আমি কখনও ব্যর্থকাম হইনি। আমি আশঙ্কা করছি আমার পর আমার স্বগোত্রীয়দের সম্পর্কে; আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; সুতরাং আপনার নিকট থেকে আমাকে দান করুন উত্তরাধিকারী, যে আমার উত্তরাধিকারীত্ব করবে এবং উত্তরাধিকারীত্ব করবে ইয়াকুবের বংশের। হে আমার প্রতিপালক, তাকে করুন সন্তোষভাজন।” -সূরা মারইয়াম ৪-৬



🟢হযরত যাকারিয়ার নিকট সন্তানের দৌলত থেকে বঞ্চিত থাকা কোনো দুঃখের বা চিন্তার কারণ ছিল না; বরং তিনি নবুওয়াত ও দ্বীনী শিক্ষার উত্তরাধিকারীত্বের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এজন্য তিনি অতিশয় বিনয়াবনত হয়ে প্রার্থনা করেছেন,


رَبِّ لَا تَذَرْنِیْ فَرْدًا وَّ اَنْتَ خَیْرُ الْوٰرِثِیْنَۚ.


“হে আমার রব, আমাকে নিঃসন্তান রাখবেন না, আপনি তো চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী।”-সূরা আম্বিয়া ৮৯


🟢কখনও তার হৃদয়ের গহীন অতল কন্দর থেকে উথলে ওঠে করুণ আর্তি-


رَبِّ هَبْ لِیْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّیَّةً طَیِّبَةً ۚ اِنَّكَ سَمِیْعُ الدُّعَآءِ


“হে আমার প্রতিপালক, আমাকে আপনার নিকট থেকে সৎ বংশধর দান করুন। আপনিই প্রার্থনা শ্রবণকারী।” -সূরা আলে ইমরান ৩৮


আল্লাহ পাকের মনোনীত একজন নবীর সকাতর প্রার্থনা, প্রার্থনাও নিজের জন্য নয়; বরং সমাজ ও জাতির পথ প্রদর্শন ও কল্যাণচিন্তায়, সঙ্গে সঙ্গে কবুল হল। হযরত যাকারিয়া আ. ইবাদতে মশগুল ছিলেন। এমন সময় ফেরেশতার আবির্ভাব ঘটল। ফেরেশতা সুসংবাদ দিলেন, আপনার একজন পুত্রসন্তান জন্মলাভ করবে, আপনি তার নাম ইয়াহইয়া রাখবেন। একথা শুনে হযরত যাকারিয়া আ. সীমাহীন আনন্দিত হন।


৬. কাসাসুল কুরআন ১/৪৯০-৪৯১; ৭. আলজামিউস সহীহ লিলবুখারী, (কিতাবুল আম্বিয়া) ১/৪৮৭; তাফসীরে ইবনে কাসীর 


🟢আগত সন্তানদের জন্য দুআ বা নিঃসন্তান মায়েদের জন্য দুআর পর্বে এ দুআগুলোর কিছু এসেছিলো। কখনো সময় পেলে নবী রাসূল দের জীবনাচরণ নিয়ে সিরিজ করব। কুরআন এর তাফসির এর সিরিজ এর সাথে। তাহলে বেশ ভালো একটা কাজ হতে পারে। জানার গভীরতা ও কুরআন অনুধাবন সহজ হবে ইন শা আল্লাহ। শীঘ্রই হবে আশা করি, রামাদানের আগেই।