✅নবজাতককে কেন্দ্র করে যে সব ভুলভ্রান্তি ঘটে থাকে: পর্ব ৬
🟢মেয়ের নাম বাবার সাথে এবং ছেলের নাম মায়ের সাথে মিলিয়ে রাখা
অনেকের নাম নির্বাচনের সময় প্রধান শর্ত থাকে মেয়ের নাম বাবার নামের প্রথম অক্ষরের সাথে মিল করে রাখা। আর ছেলের নাম মায়ের নামের প্রথম অক্ষরের সাথে মিল করে রাখা, অথচ এটি নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে নূন্যতম ভ্রুক্ষেপ যোগ্য নয়। নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওই সব বিষয়ই লক্ষণীয় যা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে।
🟢আরবী শব্দে বা কুরআন-হাদীসে ব্যবহৃত শব্দে নাম রাখা
অনেকে মনে করে নামটি আরবী হলেই চলে। অর্থ যাই হোক না কেন। আর ওই শব্দ যদি কুরআন-হাদীসের হয়ে থাকে তবে তো আর প্রশ্নই নেই। নাম রাখার জন্য বড় দলিল হয়ে যায়। অথচ শরীয়তে নাম রাখার জন্য যে সকল নীতি দিয়েছে সেখানে স্পষ্ট রয়েছে যে, নামটি ভালো অর্থের হতে হবে। শুধু আরবী বা শুধু কুরআনের শব্দ বলেই তা নাম হিসাবে চয়ন করা যাবে না। অর্থের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কুরআন মজীদে জাহান্নাম, শয়তান, ফেরআউন ইত্যাদি শব্দও রয়েছে। তাই বলে কি এ সকল শব্দ দ্বারা নাম রাখা যাবে? কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কোনো কোনো মুসলমান সন্তানের নাম শুধু শব্দটি কুরআনে আছে বলেই রেখে দেওয়া হয়। যেমন ‘কাফিরুন’ (কাফের এর বহু বচন) ‘ঝাফীর’ (জাহান্নামীদের আর্ত চিৎকার) ‘রিবা’ (সুদ) ‘নবীউল্লাহ’ (আল্লাহর নবী) ‘মুরসালীন’ (রসূলগণ) ‘আম্বিয়া’ (নবীগণ) ‘মাহীন’ (তুচ্ছ) ইত্যাদি নাম রাখতে দেখা যায়। আম্বিয়া সাধারণত মহিলাদের নাম রাখা হয়। এর অর্থ নবীগণ। কী আশ্চর্য? কোনো নবী নারী ছিলেন না। অথচ একজন মহিলার নাম রাখা হচ্ছে নবীগণ! পুরুষ হলেও নবী নয় এমন ব্যক্তির নাম কীভাবে নবী রাখা হয়? আর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পরে তো কোন নবী হওয়ার অবকাশই নেই। এ ভুলের মূল কারণ শরীয়ত ও আরবীর নূন্যতম জ্ঞান না থাকা।
🟢আনকমন নাম রাখা
আজকাল কেউ নাম চাইলেই বলে, হুজুর নামটা আনকমন হতে হবে। বলার ভঙ্গিতে মনে হয় ৪০-৫০ বছরে কারও নাম হিসাবে শোনেনি এমন নাম চাচ্ছেন। কিন্তু শরীয়তের নীতিমালা অনুসরণে এত বিরল নাম পাওয়া যাবে কীভাবে? শরীয়তের দৃষ্টিতে উত্তম নাম রাখলে তো নবী-রাসূল ও পুণ্যবান লোকদের নামই রাখতে হয়। কিন্তু এগুলো তো আনকমন নয়। বাধ্য হয়ে তখন খারাপ অর্থের আরবী শব্দ নাম রাখে, যা আদৌ ঠিক নয়।
🟢মুহাম্মাদ ও মুসাম্মাৎ সংযোজন
ছেলেদের নামের শুরুতে মুহাম্মাদ সংযোজনকে জরুরি মনে করা হয়। এটি জরুরি নয়। আর মেয়েদের নামের শুরুতে মুসাম্মাৎ সংযোজন করা হয়। এর অর্থ নাম্মী। তাহলে মুসাম্মাৎ শরীফা অর্থ দাড়াবে শরীফা নাম্মী। আচ্ছা বলুনতো নাম্মী শব্দটি কি নামের অংশ হতে পারে?