আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

প্রচলিত ভুল-০৪: নবজাতককে কেন্দ্র করে যে সব ভুলভ্রান্তি ঘটে থাকে: পর্ব ৩

No Comments

 



✅নবজাতককে কেন্দ্র করে যে সব ভুলভ্রান্তি ঘটে থাকে: পর্ব ৩


🔹আযান-ইকামতে ছেলে-মেয়ের মধ্যে পার্থক্য করা

ছেলের বেলায় আযান-ইকামত দেওয়া, মেয়ে হলে না দেওয়া বা ছেলের ডান কানে আযান বাম কানে ইকামত, আর কন্যা সন্তানের বেলায় এর উল্টো করা অথবা ছেলে হলে বাড়ির বাইরে গিয়ে উচ্চ স্বরে আযান দেওয়া আর মেয়ে হলে আযান-ইকামত কিছুই না দেওয়া। এসব কিছুই ভুল। নবজাতক ছেলে হোক বা মেয়ে, কানে আযান-ইকামত দেওয়ার বিধানে কোনো ভিন্নতা নেই। কিবলামুখী হয়ে উভয়েরই ডান কানে আযান, বাম কানে ইকামত দেওয়া সুন্নত। মেয়ের ক্ষেত্রে না দেওয়া কিংবা ছেলের বেলায় বাড়ির বাইরে উচ্চ স্বরে দেওয়া শরয়ী নিয়ম নয়; বরং উভয়ের বেলায় আযান-ইকামত হালকা আওয়াজে দিবে। -ইলাউস সুনান ১৭/১২৩; আমালুল ইয়াওমি ওয়াললাইল ৫১৮; আউনুল মাবুদ ১৪/৭; মারাকিল ফালাহ ১০৭


🔹আযান দেওয়ার জন্য পুরুষ কিংবা হুজুর জরুরি মনে করা


নবজাতকের কানে আযান দেওয়ার জন্য আলেম হওয়া জরুরি নয়। যে কোনো মুসলমান ব্যক্তিই আযান জানা থাকলে আযান দিতে পারে। এমনকি মহিলারাও এ আযান দিতে পারে। তবে অন্য পুরুষের শ্রুতিগোচর না হয় এমন আওয়াজে দিতে হবে। উল্লেখ্য, পুরুষ উপস্থিত থাকলে পুরুষেরই আযান দেওয়া উত্তম। -হাশিয়াতুশ শিরওয়ানী আলা তুহফাতিল মুহতাজ ২/৮১


🔹কানে আযান দেওয়া নিয়ে অবহেলা


আজকাল শহুরে পরিবেশে অধিকাংশ বাচ্চার জন্ম ক্লিনিক ও হাসপাতালে হয়ে থাকে। কিন্তু খুব কম সন্তানের কানেই আযান দিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে অত্যন্ত উদাসীনতা ও অবহেলা লক্ষ করা যায়। অথচ এটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একাধিক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। সাহাবা তাবেয়ীনদের মধ্যেও এ স্ন্নুতের উপর আমল হত। মুহাদ্দিসগণ এর বিভিন্ন উপকারিতা বর্ণনা করেছেন। যেমন ভেজালের দুনিয়াতে পদার্পণ করার পরই সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআলার বড়ত্বের ধ্বনি বাচ্চার মন-মস্তিস্কে গ্রথিত করা, শয়তানকে আযানের ধ্বনি দিয়ে নবজাতক থেকে বিতাড়িত করা ইত্যাদি। এ ছাড়া এর আরও উপকারিতা রয়েছে। তাই সুন্নতের উপর আমলের নিয়তে করলে এর সকল কল্যাণ হাসিল হবে ইনশাল্লাহ।


🔹কন্যা সন্তানের জননীকে অপয়া মনে করা


যে মহিলার প্রথম কন্যা সন্তান হয় কিংবা একাধিক কন্যা সন্তান হয়, তাকে হতভাগা মনে করা হয়। এটা জাহেলী যুগের ধারণা। ইসলামের সাথে এর কোনো সর্ম্পক নেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন


وَ اِذَا بُشِّرَ اَحَدُهُمْ بِالْاُنْثٰی ظَلَّ وَجْهُهٗ مُسْوَدًّا وَّ هُوَ كَظِیْمٌۚ یَتَوَارٰی مِنَ الْقَوْمِ مِنْ سُوْٓءِ مَا بُشِّرَ بِهٖ ؕ اَیُمْسِكُهٗ عَلٰی هُوْنٍ اَمْ یَدُسُّهٗ فِی التُّرَابِ ؕ اَلَا سَآءَ مَا یَحْكُمُوْنَ.


যখন তাদের কাউকে কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের  থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। শুনে রাখ, তাদের এই অবস্থা নিতান্তই মন্দ। -সূরা নাহল ৫৮-৫৯


এ ছাড়া হাদীস শরীফে একাধিক কন্যা সন্তানের পিতা-মাতার জন্য জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। -সহীহ বুখারী হাদীস ১৪১৮; সহীহ মুসলিম হাদীস ২৬৩১, ২৬২৯; তুহফা ৩৩-৩৫