আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।
No Comments

 


প্রশ্ন-১। উল্লিখিত نبؤا শব্দটি কি বহুবচন? 


উত্তর- না, শব্দটির বহুবচন হলো, أَنْبَاءٌ। 

উল্লেখ্য যে, শব্দের শেষে ون (ওয়াও/ ইয়া নূন) যোগ করে جَمْعٌ مُذَكَّرٌ سَالِمٌ তৈরী করা হয়। আর এই প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র ذَوِيْ العَقْلِ বা পুরুষ ব্যক্তিবাচক শব্দের ক্ষেত্রে বহুবচন তৈরী করা হয়ে থাকে। যেমন- مُسْلِمُوْنَ، كاَفِرُوْنَ 

সুতরাং مُضاَفٌ হওয়ার কারণে নূন পড়ে যায়নি। সত্তাগতভাবেই শব্দটি একবচন হিসবে এরূপ আকৃতিতেই ছলো।


প্রশ্ন- ২। অনেক সময় আমরা বহুবচনের শেষে আলিফ দেখতে পাই। এটা কি সেই আলিফ নয়? 


 

উত্তর: বহুবচন প্রকাশার্থে শব্দের শেষে অতিরিক্ত আলিফ ও ইয়া যুক্ত হয়। তবে সেটা ইসম বা নামবাচক বিষেশ্যের শেষে নয়। বরং তা ماَضِيْ বা অতীত অর্থবোধক ক্রিয়ার সাথে যুক্ত হয়। যেমন: সূরা আসরের তিন নাম্বার আয়াতে- آمَنُوْا وَعَمِلُوْا 

মূল আয়াতটি হলো- 

{ إِلَّا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ وَعَمِلُوا۟ ٱلصَّـٰلِحَـٰتِ وَتَوَاصَوۡا۟ بِٱلۡحَقِّ وَتَوَاصَوۡا۟ بِٱلصَّبۡرِ }

√ অনুরূপভাবে فِعْلُ الأَمْرِ বা আদেশবাচক ক্রিয়ার বহুবচনের ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত আলিফ যুক্ত হয়। যেমন সূরা হজ্জের ৭৭ নম্বর আয়াতে একইসাথে ৪বার ব্যবহার হয়েছে: ارْكَعوْا واسْجُدُوْا واعْبُدُوْا..وافْعَلُوْا 

পূর্ণাঙ্গ আয়াতটি হলো-

{ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱرۡكَعُوا۟ وَٱسۡجُدُوا۟ وَٱعۡبُدُوا۟ رَبَّكُمۡ وَٱفۡعَلُوا۟ ٱلۡخَیۡرَ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ 


√ অনুরূপভাবে فِعْلٌ مُضَارِعٌ এর শেষে نُوْنُ الجَمْعِ বিলুপ্ত হয়ে গেলে অতিরিক্ত আলিফ যুক্ত হয়। যেমন সূরা কুরাইশের ৩ নম্বর আয়াতে - فالْيَعْبُدُوْا 

পূর্ণাঙ্গ আয়াতটি হলো- 

 فَلۡیَعۡبُدُوا۟ رَبَّ هَـٰذَا ٱلۡبَیۡتِ 



সুতরাং বুঝা গেলো, শুধুমাত্র ক্রিয়ার ক্ষেত্রেই বহুবচন হলে ক্ষেত্রবিশেষে অতিরিক্ত আলিফ যুক্ত হয়। ইসমের ক্ষেত্রে যুক্ত হয়না। যেহেতু نَبَؤ শব্দটি ইসম বা নামবাচক বিশেষ্য, তাই তার শেষেও বহুবচনবাচক ওয়াও আলিফ যুক্ত হতে পারেনা। 

উল্লেখ্য, نَبَؤٌ শব্দটি যে একবচন, অতিরিক্ত ওয়াও-নুন সহকারে বহুবচন নয়, এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ পাওয়া যাবে সূরা সাদ এর ৬৭ নম্বর আয়াতে। সেখানে مضاف ব্যতিরেকে তানবীনযুক্ত অবস্থায় ব্যবহার হয়েছ।

{ قُلۡ هُوَ نَبَؤٌا۟ عَظِیمٌ }




প্রশ্ন- ৩। তাহলে শব্দটির শেষে যুক্ত এটা কিসের আলিফ?

উত্তর- এটা হলো কুরআনের স্বতন্ত্র 'রসমি খত" বা লিখনশৈলী। সুতরাং বলা যেতে পারে এটা হলো, আলিফে যায়েদা বা অতিরিক্ত আলিফ। পবিত্র কুরআনের অসংখ্য যায়গায় এজাতীয় লিখনশৈলীর উদাহরণ রয়েছে। 

খত্তে উসমানে বা হযরত উসমান (রাযি.) এর লিখনশৈলীতে এর পরিমাণ বেশী হওয়ার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে ডক্টর সাইয়েদ মুহাম্মাদ রিযা স্বীয় প্রবন্ধে আবূ উমার আদ-দানী'র উদ্বৃতি টেনে বলেন, 

رسمت الهمزة بعد الواو في هذه المواضع تقوية للهمزة لخفائها ( الحروف المستزادة في خط عثمان طه; مواضعها واسبابها في القرآن الكريم - ٨)


অর্থাৎ, এসকল জায়গায় ওয়াও এর পর অতিরিক্ত একটা হামযা সংযোজন করার উদ্দেশ্য হলো হামযাকে সুস্পষ্টভাবে উচ্চারণ করা। কারণ এখানে তা ওয়াও ধ্বনির আড়ালে তার উচ্চারণ খানিক ঢাকা পড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। (আল-কুরআনে উচ্চারিত বর্ণের চাইতেও অতিরিক্ত বর্ণ সংযোজনের স্থানসমূহ এবং এর যৌক্তিক কারণ সমূহ- ৮)