✅নবজাতককে কেন্দ্র করে যে সব ভুলভ্রান্তি ঘটে থাকে: পর্ব ৪
🟢বাচ্চার কপালে টিপ দেওয়া
অনেকে বদনযর থেকে হেফাযতের উদ্দেশ্যে শিশুর কপালে টিপ দিয়ে থাকে। এটি বদনযরকে রোধ করে না শিশুকে নানাবিধ অনিষ্ট থেকে বাঁচানোর জন্য হাদীসে শেখানো যিকির ও দুআগুলোই কার্যকরী ও যথেষ্ট।
🟢ছেলে শিশুর কান ফোঁড়ানো
যে মহিলার একাধিক সন্তান মারা যায় তার পরবর্তী সন্তানকে মৃত্যুর ছোবল থেকে রক্ষার জন্য কান ফোঁড়ানো হয় এবং তাতে স্বর্ণের ছোট অলঙ্ককারও পরিধান করানো হয়। তাদের ধারণা, কান ফুঁড়িয়ে সন্তানকে ত্রট্টটিযুক্ত করে দিলে আল্লাহ একে আর নিবেন না। ফলে তার মৃত্যুও হবে না। এ ক্ষেত্রে আরও কিছু রেওয়াজ রয়েছে। যেমন বিভিন্ন মন্দ শব্দে এদের নাম রাখা, যথা বন্যা, পঁচা, আগুন, ধ্বসা, মরা ইত্যাদি। ধারণা করা হয়, এতে নাকি তারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়।
এই বিশ্বাস শরীয়ত পরিপন্থী কুসংস্কার। প্রত্যেক প্রাণীর মৃত্যুর ক্ষণ নির্ধারিত। এসব পদ্ধতি অবলম্বন কারও মৃত্যুকে বিলম্বিত করতে পারে না। এছাড়া উপরোক্ত ব্যবস্থাগুলো এমনিতেই নাজায়েয ও হারাম। ছেলেদের কান ফোঁড়ানো এবং তাতে অলঙ্কার পরানো নাজায়েয। এতে মহিলাদের সাদৃশ্য হয়। আজকাল এটি বিজাতীয় রীতিরও অন্তর্ভুক্ত। হাদীস শরীফে এধরনের সাদৃশ্য অবলম্বনকারীর প্রতি অভিশম্পাত করা হয়েছে। তাছাড়া ছেলেদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার করা হারাম। শিশু বাচ্চাদেরকে কান ফোঁড়ালে এবং স্বর্ণ পরিধান করালে এর গুনাহ মা-বাবার হবে। সন্তানের নাম রাখার ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা হচ্ছে, অন্তত ভাল অর্থবোধক নাম রাখা। খারাপ নাম রাখলে শরীয়তের এই সুস্পষ্ট নির্দেশ অমান্য করা হয়। তদুপরি এর ভিত্তি হল কুসংস্কার। সুতরাং এ প্রচলনটি অবশ্যই বর্জনীয়। -সহীহ বুখারী ২/৮৭৪; সুনানে আবুদাউদ ২/২৫৫৯, ২/৬৭৬; তুহফা ৯৯
🟢জন্ম দিবস পালন করা
যে তারিখে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করেছে প্রতি বছর ওই দিনটিতে জন্মদিবস পালন করা বিজাতীয় সংস্কৃতি। শরীয়তে এ ধরনের অনর্থক কাজের কোনো বৈধতা নেই। এতে শরীয়ত বিরোধী অন্য কোনো কিছু না থাকলেও শুধু অনর্থক কাজ হওয়ার কারণে কিংবা বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ হওয়ার কারণেই তা নাজায়েয। -আহসানুল ফাতাওয়া ৮/১৫৪
🟢আকিকা ছাড়া নাম রাখা
সন্তানের নাম রাখার জন্য আকিকা করাকে পূর্বশর্ত মনে করা হয় এবং ভাবা হয় আকিকা না করলে সন্তানের নাম স্থিতিশীল হয় না। এজন্য কেউ কেউ আকিকার পূর্বে বাচ্চাকে “বাবু” বা এরকম অন্য কোনো শব্দ বলে ডাকে। আকিকার পর থেকে আসল নামে ডাকে। অথচ নাম রাখা আকিকার সাথে শর্তযুক্ত নয়। আকিকা না করলেও সন্ত-ানের নাম রাখা জায়েয। সাত দিনের পূর্বেও নাম রাখা স্বয়ং রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল দ্বারা প্রমাণিত। -সহীহ বুখারী ২/৮২৯; তুহফা ৯৩-৯৪; ইলাউস সুনান ১৭/১২২
🟢নাম পরিবর্তন করলে আবার আকিকা করা
কোনো কারণে পূর্বের নাম পরিবর্তন করতে হলে আবার আকিকা করাকে জরুরি মনে করা হয়। এটি ভুল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক সাহাবীর নাম পরিবর্তন করেছেন কিন্তু এ জন্য পুনরায় আকিকা করতে বলেননি। তারাও কেউ করেননি। -সহীহ বুখারী ৬১৯২; সহীহ মুসলীম হাদীস ২১৪৯; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা হাদীস ৫৯৫০; তুহফা হাদীস ১১১-১১২
🔴বদনজর বা রুকাইয়াহ সিরিজ করলে বাচ্চাদের নিয়ে আরো কিছু জিনিস লিখব ইন শা আল্লাহ।