*আল্লাহ পাকের রহমতের একটি আশ্চর্যজনক ঘটনা*
হযরত থানবী (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, এক মূর্খ মহিলা ইন্তিকালের সময় মুখে কিছু শব্দ উচ্চারণ করছিলো। ঐ মহিলার পরিবারের মূর্খ লোকেরা তার সে শব্দগুলোর কোন অর্থই বুঝতে পারলো না। তাই তারা একজন আলেমকে ডেকে আনলো এবং বললো, এর কথা আমরা তো কিছুই বুঝতে পারছি না। সুতরাং আপনি একটু শুনে দেখুন তো কিছু বুঝতে পারেন কিনা। আলেম ব্যক্তি তখন ঐ মহিলার কাছাকাছি গিয়ে কান লাগিয়ে শুনলেন যে, সে মহিলা আরবী ভাষায় বলছে-
ان هذين الرجلين يقولان ادخل الجنة
অর্থাত, এই দুই ব্যক্তি আমাকে বলছেন যে, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর।
এ কথা শুনে ঐ আলেম সাহেব খুব হয়রান হয়ে গেলেন। তিনি পরিবারের মূর্খ লোকদের লক্ষ্য করে বললেন, তাকে তো বেহেশতের সুসংবাদ দেয়া হচ্ছে। সে এমন কি আমল করতো যার কারণে সে এই সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পারলো? লোকেরা জবাব দিলো, এ মহিলার তো কোন নেক আমল ছিলোই না। বরং সে ছিলো একজন বদ আমল মহিলা। মাওলানা সাহেব সকলকে লক্ষ্য করে আবার বললেন, আপনারা একটু গভীরভাবে ভেবে দেখুন নিশ্চয়ই তার কোন নেক আমল ছিলো যা আল্লাহ পাকের দরবারে কবুল হয়ে গেছে, সে নেক আমলটি কি?
অনেক চিন্তা-ভাবনার পর লোকেরা জানালো যে, এ মহিলার একটি বিশেষ অভ্যাস ছিলো এই যে, যখনই আযান হতো তখন সে অন্য সব কাজ বন্ধ করে দিতো এবং খুব গুরুত্ব সহকারে আযান শুনতো। অন্য কাউকেও তখন সে কোন কথা বলতে দিতো না। মাওলানা সাহেব তখন বললেন, মহান আল্লাহ পাকের নামের প্রতি এ সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টিই হয়তো আজ তার কাজে লেগে গেছে, যে ভাল কাজটি অন্য সকল মন্দ কাজকে ধুয়ে সাফ করে দিয়েছে।
মহান আল্লাহ পাকের ব্যাপক দয়া-অনুগ্রহ ও রহমতের এ ঘটনাটি বর্ণনা করার পর হযরত থানবী (রহঃ) বলেন, মহান আল্লাহ পাকের রহমতের ব্যাপারে ইনশার নিম্নোক্ত শেরটি আমার কাছে খুবই পসন্দনীয়। শেরটি হলো-
تصدق اپنے خدا کے جاؤں کہ مجھ کو آتا ہے پیار انشاء
ادھر سے ایسے گناہ پیہم ادھر سے یہ دمبدم عنایت
অর্থাত, আমি নিজের জন্য আমার প্রভুর তরে উৎসর্গ ও কুরবান হয়ে যাওয়াই পসন্দ করি। আমার মনে শুধু তারই প্রেম উথলে উঠে। একদিকে আমার তো রয়েছে হাজারো গুনাহ আর অপরাধ আর অপরদিকে মহান আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ।
অধম সংকলক বলছে যে, উপরোক্ত ঘটনা থেকে এ কথাও বুঝে আসে যে, ইন্তিকালের পর আলমে বরযখে এমনিতেই সকলের ভাষা আরবী হয়ে যাবে। কেননা আরবীই হলো মানুষের আসল দেশ অর্থাত জান্নাতের ভাষা। এ ভাষাতেই মহান আল্লাহ তার সকল কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। অতঃপর নবী (আঃ) গণ তাকে নিজ নিজ ভাষায় অনুবাদ করে উম্মতকে শুনিয়েছেন।
(আল-ইতকান, আল্লামা সুয়ূতী (রহঃ)
📖মাজালিসে হাকীমুল উম্মত |||৷ পৃষ্ঠাঃ১৪০