জিজ্ঞাসা-১২৪০১:
আসসালামুয়ালাইকুম ভাই আমরা জানি বড় মসজিদ বা খোলা মাঠ হলে নামাজি ব্যাক্তির দুই কাতার সামনে দিয়ে যাওয়া যাবে কিন্তূ অনেক ভাই বলেন সেজদার স্হানের বাহিরে দিয়ে যাতায়াত করা যাবে ।এর কি কোন নস বা কোন আহলে ইলমের মতামত কি আছে ? তারিখ: ২৭/১২/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আখতারুজ্জামান, রংপুর থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, নামাজি ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রম মারাত্মক গুনাহের কাজ। যেমন পবিত্র হাদিসে এসেছে,
لو يَعْلَمُ المَارُّ بيْنَ يَدَيِ المُصَلِّي مَاذَا عليه، لَكانَ أنْ يَقِفَ أرْبَعِينَ خَيْرًا له مِن أنْ يَمُرَّ بيْنَ يَدَيْهِ. قالَ أبو النَّضْرِ: لا أدْرِي أقالَ: أرْبَعِينَ يَوْمًا، أوْ شَهْرًا، أوْ سَنَةً
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, নামাজি-ব্যক্তির সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী যদি জানত এতে কীরূপ শাস্তি-ভোগের আশংকা রয়েছে, তবে চল্লিশ পর্যন্ত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকাও ভালো মনে করতো।
বর্ণনাকারী আবুন নাযর বলেন, আমার জানা নেই, হাদীসে চল্লিশের কী অর্থ, চল্লিশ দিন, চল্লিশ মাস, নাকি চল্লিশ বছর! তাখরিজ: বুখারি- ৫১০ ; মুসলিম-৫০৭
দ্বিতীয় কথা হলো, নামাজি ব্যক্তির কতদূর সামনে দিয়ে যেতে পারবে, এ বিষয়ে সরাসরি কোন হাদিস নেই। এটি একটি কিয়াসি মাসয়ালা।
فإذا كان المصلي يصلي إلى سترة جاز المرور من ورائها، وإذا كان يصلي إلى غير سترة جاز المرور بعيدا منه، وضابط البعد والقرب هو العرف على الراجح، كما في الفتوى رقم:
অর্থাৎ যখন নামাজির সামনে সুতরা থাকবে, তখন নামাজির সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েজ। আর যদি সুতরা না থাকে, তাহলে দূর দিয়ে যাওয়া জায়েজ এবং নিকট দিয়ে যাওয়া জায়েজ নেই। সূত্র: আহকামুল মুরুরি বাইনা ইয়াদিল মুসল্লি ফাতওয়া নং-১২৯২৯
তৃতীয় কথা হলো, দূরের বা بيْنَ يَدَيِ المُصَلِّي মুসল্লির সামনে দিয়ে এর পরিমাপ কি? ফুকাহায়ে কেরামগণ এর ব্যাখ্যা করেছেন,
মুসল্লির দৃষ্টি সেজদার স্থানে থাকলে সাধারণত যে স্থান পর্যন্ত নজরে আসে, যার পরিমাণ মোটামুটি মুসল্লির কাতারসহ সামনের আরোও দুই কাতার হয়, তবে ততটুকু জায়গার বাইরে দিয়ে অতিক্রম করা যাবে। সূত্র: আদ দুররুল মুখতার ১/৬৩৬ হেদায়া ১/১১৮
এ বিষয়ে ইমাম বাজ (রহ.) কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন,
أما إذا كان بعيد فوق الثلاثة أذرع، فهذا لا حرج فيه؛ لأن رده يشق لبعده، ولأنه لا يعد بين يديه في الحقيقة.
والأصل في هذا أنه ﷺ لما صلى في الكعبة جعل بينه وبين الجدار الغربي ثلاثة أذرع، فهذا يدل على أن محل السترة بهذه المثابة فأقل، والأولى أن يبعد أكثر عن المصلي خروجًا من الخلاف، أما إذا كان له سترة فلا يمر بينه وبينها، ولكن يمر من ورائها، نعم.
المقدم
অর্থাৎ তিন গজের বেশি দূরে হলে তাতে দোষের কিছু নেই। কারণ তার প্রতিক্রিয়া তার দূরত্বের জন্য কঠিন, এবং কারণ সে আসলে তার হাতে নেই।
এর মূল বা কিয়াস হিসেবে এ হাদিস বলা যায়, রাসূল (ﷺ) যখন কাবাতে সালাত আদায় করতেন, তখন তিনি এর এবং পশ্চিম দেয়ালের মাঝখানে তিন গজ দূরে করেছিলেন। সূত্র: তাতলিকু মাওসুআতুল ফাতওয়াল বাজিয়া
সারকথা হলো, নামাজির নিজের কাতার ব্যতিত সামনে আরও দুটি কাতার এর পর অতিক্রম করা যাবে। এটি بيْنَ يَدَيِ المُصَلِّي এবং هذا أنه ﷺ لما صلى في الكعبة جعل بينه وبين الجدار الغربي ثلاثة أذرع হাদিস দুটির কিয়াস করে ফুকাহায়ে উম্মত এ ফয়সালা দিয়েছেন। সুতরাং নিজের ফয়সালার চেয়ে ফুকাহায়ে উম্মতের সিদ্ধান্ত নিরাপদ।
যেমন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম তিরমিজি (রহ.) বলেন, الفقهاء و هم اعلم يعني الحديث অর্থাৎ ফুকাহায়ে কেরাম হাদিসের অর্থ বিষয়ে অধিক জ্ঞাত। সূত্রঃ জামে তিরমিজি-৩/৩১৫পৃ.
والله اعلم بالصواب