✅সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ নিয়ামতগুলোর একটি হলো তাওফিক। যিকর একটি সহজ ইবাদত হওয়ার পরও খুব কম মানুষই এই ইবাদতটি করার তাওফিক (সক্ষমতা-সৌভাগ্য) লাভ করে। তাওফিকের সৌভাগ্য সবার হয় না।
ইমাম ইবনু আলান (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘তাওফিক বিষয়টি খুবই বিরল। এজন্যই তা কুরআনে মাত্র একবার উল্লেখ করা হয়েছে।’ [দালিলুল ফালিহিন: ১/২১]
তাওফিকের বিষয়টি শুধু সুরা হুদে এসেছে—
وَمَا تَوۡفِیۡقِیۡۤ اِلَّا بِاللّٰهِ ؕعَلَیۡهِ تَوَکَّلۡتُ وَ اِلَیۡهِ اُنِیۡبُ
.
‘‘আর, আল্লাহ ব্যতীত আমার (কোনোকিছু করার) তাওফিক (সক্ষমতা) নেই। আমি তাঁর উপরই ভরসা করি এবং তাঁর দিকেই আমি প্রত্যাবর্তন করবো।’’ [সুরা হুদ, আয়াত: ৮৮]
একজন বিদ্বান বলেছেন, ‘আসমান থেকে তাওফিকের চাইতে দামি কোনো কিছু নেমে আসে না। আর জমিন থেকে ইখলাসের চেয়ে মূল্যবান কোনো কিছু উপরে ওঠে না।’ [আত-তাহবির শারহুত তাহরির, পৃষ্ঠা: ৬২]
ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন, ‘আল্লাহ যাকে ভালবাসেন, তাকে তিনি সেসব কাজ করার তাওফিক দেন, যা তিনি ভালবাসেন।’
তাই, আমরা আল্লাহর কাছে সবসময় নেক আমলের তাওফিক চাবো। কারণ আল্লাহ তাওফিক না দিলে কোনো কিছু করার সাধ্য কারও নেই।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা উচ্চারণে সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী এবং আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলো—
سُبْحَانَ اللّٰهِ وبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللّٰهِ الْعَظِيمِ
(সুব‘হা-নাল্লা-হি ওয়া বি‘হামদিহি সুব‘হা-নাল্লা-হিল আযি-ম)
অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, প্রশংসা কেবল তাঁরই; মহান আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত, পুতঃপবিত্র। [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ৭৫৬৩]
এটি এটি সহজ আমল, আমরা অনেকেই জানিও। কিন্তু পালন করি কতজন? এই যে আমরা জানার পরও আমল করছি না, এর মানে হলো, আল্লাহ কর্তৃক তাওফিকপ্রাপ্ত হচ্ছি না। তবে, আল্লাহর দিকে ধাবিত হলে, আল্লাহ কাউকে বঞ্চিত করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যে তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে তিনি সঠিক পথপ্রদর্শন করেন।’’ [সুরা আশ-শুরা, আয়াত: ১৩]
এজন্য সবসময় নেক আমলের বাসনা এবং বদ আমলের প্রতি ঘৃণার বিষয়ে আল্লাহর তাওফিক কামনা করতে হবে। পাশাপাশি যেকোনো গুনাহ হয়ে গেলে দ্রুতই তাওবাহ করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। কারণ গুনাহই মূলত তাওফিকলাভের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা যদি তাঁর কোনো বান্দার কল্যাণ করার ইচ্ছা করেন, তাহলে তাকে কাজ করার তাওফিক প্রদান করেন।’’ প্রশ্ন করা হলো, ‘হে আল্লাহ্র রাসুল! তিনি কিভাবে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন?’ তিনি বললেন, ‘‘তিনি সেই বান্দাকে মারা যাওয়ার আগে নেক আমলের সুযোগ দান করেন।’’ [ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান: ২১৪২; হাদিসটি সহিহ]