আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৩০৭: খাদ্য গুদামজাত সম্পর্কে ইসলামি নীতিমালা কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৩০৭

আসসালামু আলাইকুম।

বাধাই মাল যেমন পাটপিয়াজ ইত্যাদির ব্যাবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার। কতদিন তা রাখা যায়?  তারিখ১৫/১০/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


 মাওলানা  রফিকুল ইসলাম সাভার থেকে-----


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, সাধারণত গ্রাম-গঞ্জের মানুষ যখন নতুন ফসল কাটা হয়, তখন ফসলের দাম কম থাকেতাই কম দামে ক্রয় করে গুদামজাত করে রাখে আর যখন বাজারে বেশি দাম হয় তখন বিক্রি করে  খাদ্যদ্রব্য-পণ্য সামগ্রীর গুদামজাতকরণ এ পদ্ধতি কি জায়েজ?

এর জবাব হলোঅধিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে খাদ্য-শস্য বা সাধারণ মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্য অধিক পরিমাণে আটকে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা শরীয়তে নিষিদ্ধ। দলিল:


  مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ

الراوي : معمر بن أبي معمر |المصدر : صحيح الترغيب | الصفحة أو الرقم : 1781 | خلاصة حكم المحدث : صحيح | التخريج : أخرجه مسلم (1605)

 অর্থরাসূল () বলেছেনযে ব্যক্তি (প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী) আটকে রাখে সে গুনাহগার। তাখরিজ মুসলিম-১৬০৫সহিহ তারগিব-১৭৮১

 

আর যদি খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী জমা করে রাখার বিষয়টি স্বাভাবিক পর্যায়ের হয়মানুষের ক্ষতি ও অনটনের আশঙ্কা না থাকে এবং বাজারে ঐ পণ্যের সঙ্কট দেখা না দেয় তাহলে এ জাতীয় সাধারণ গুদামজাত করা নাজায়েয নয়। যেমন ফকিহদের মতামত-


ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,اَلْحُكْرَةُ فِي كُلِّ شَيْءٍ فِي السُّوقِ مِنَ الطَّعَامِ وَالْكَتَّانِ وَالزَّيْتِ وَجَمِيعِ الْأَشْيَاءِ وَالصُّوفِ وَكُلِّ مَا يَضُرُّ بِالسُّوقِ... فَلَا بَأْسَ بِذَلِكَ إذَا كَانَ لَا يَضُرُّ بِالسُّوقِ.

অর্থাৎ বাজারে প্রত্যেকটা জিনিসে মজুদদারী হয়। যেমন খাদ্যদ্রব্যলিনেন বস্ত্রতেলপশম এবং অন্য সকল জিনিসেযার মজুদ বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ... তবে বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত না করলে এতে কোন সমস্যা নেই সূত্র আল-মুদাওয়ানাহ ৩/৩১৩


ইমাম আবু ইউসুফ (রহঃ) বলেন,كُلُّ مَا أَضَرَّ بِالْعَامَّةِ حَبْسُهُ فَهُوَ احْتِكَارٌ وَإِنْ كَانَ ذَهَبًا أَوْ فِضَّةً أَوْ ثَوْبًاযে কোন জিনিস মজুদ করলে যদি জনসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়তবে সেটাই মজুদদারী হিসাবে গণ্য হবে। যদিও মজুদকৃত বস্ত্ত স্বর্ণরৌপ্য বা কাপড় হয় সূত্রআল-হেদায়া  ৪ খণ্ড৪৭০পৃ.


সারকথা হলো,   মজুদদারী নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ যেহেতু মুসলমানদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করাসেহেতু তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হলে মজুদদারী হারাম হবে না। সুতরাং আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত পাটপিয়াজ ইত্যাদি খাদ্যদ্রব্য  মূল্য বেশি হলে বিক্রয় করলে ( ৪-৬ মাস বা তার বেশি গুদামজাত করে রাখলে) আমাদের বর্তমান  স্বাভাবিক বাজারে  নাজায়েজ হবে না।  সূত্র নায়লুল আওতার ৩/৬০৪, ‘মজুদদারী’ অনুচ্ছেদআলজামেউস সাগীর পৃ.৪৮১

 

 والله اعلم بالصواب