জিজ্ঞাসা-১৩১০০:
আসসালামু আলাইকুম। নাপাক (হায়েজ/নেফাস, গোসল) অবস্থায় আয়াতুল কুরসি, সূরা ফালাক, নাস পাঠ করা যাবে
তারিখ:১৯/১০/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
প্রশ্নটি পাঠিয়েছেন, উম্মে আহমাদ বগুড়া থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, জমহুর ওলামায়ে কেরামের মতে নাপাক অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করা জায়েজ নেই। যেমন ইমাম নববী রহ. বলেন,
يقول الإمام النووي رحمه الله: "مذهبنا أنه يَحْرُمُ على الجنب والحائض قراءة القرآن، قليلها وكثيرها، حتى بعض آية، وبهذا قال أكثر العلماء" "المجموع" (2/ 182).
অর্থাৎ আমাদের মাযহাব হল নাপাক ও হায়েজ অবস্থায় কুরআনুল কারীমের আয়াত বা আয়াতের কোন অংশ অল্প হোক বেশি হোক তেলাওয়াত করা হারাম। আর এটা অধিকাংশ আলেমদের মতামত। সূত্র: আল মাজমু-২/১৮২
দ্বিতীয় কথা হলো, কুরআনুল কারিমের যে সকল আয়াত দোয়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তা তেলাওয়াত এর নিয়ত ব্যতীত দোয়া হিসেবে পাঠ করা জায়েজ আছে। দলিল-
أما قراءة الجنب والحائض لأذكار القرآن الكريم مثل: آداب الركوب: (سُبحان الذي سخَّر لنا هذا وما كُنّا له مُقْرِنين...) الزخرف/31، وعند المصيبة: (إنّا للهِ وإنّا إليهِ راجعون) البقرة/156، ونحوها؛ فهذا ذِكْرٌ جائز إذا كان بِنِيّة الذِّكْر، وليس بنية القرآن. يقول الخطيب الشربيني رحمه الله: "يحلُّ ما لم يقصد به تلاوة القرآن الكريم؛ لأنه لا يكون قرآناً إلا بالقصد وعقد النية" "الإقناع في حلِّ ألفاظ أبي شجاع" (1/ 236-237). والله أعلم
অর্থাৎ আল কুরআনে যিকর সম্বলিত কিছু আয়াত রয়েছে। যেমন- পরিবহনে আরোহণকালে সুবহানাল্লাযী সাখখারা লানা হাযা ওয়া মা কুন্না লাহু মুকরিনীন (সূরা যুখরুফ - ৩১) পড়তে হয়। অনুরূপভাবে,
বিপদের সম্মুখীন হলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ( সূরা বাক্বারা-১৫৬) পড়তে হয়, ইত্যাদি।
গোসল ফরজ হয়েছে এমন ব্যক্তি কিংবা ঋতুবতী নারী এই আয়াতগুলো যিকরের নিয়্যাতে পাঠ করতে পারবে। তবে কুরআনের আয়াত মনে করে তিলাওয়াত করা যাবেনা।
আল্লামা খতীব শিবরানী ( রাহি.) বলেন, "কুরআন তিলাওয়াতের নিয়্যাত না করলে অপবিত্র অবস্থায়ও যে কোন ব্যক্তি যিকর সম্বলিত আয়াতসমূহ পাঠ করতে পারবে। কারণ নিয়্যাতের উপস্থিতি সাপেক্ষেই সেই বাক্যগুলো কুরআনের আয়াত হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। অন্যথায় তা স্বাভাবিক যিকর ও দোয়া হিসেবেই পরিগণিত হয়ে থাকে। ( আল-ইকনা' ফী হাল্লি লাফযি আবী শুজা" ( ১/২৩৬-২৩৭)
সারকথা হলো,
ومن المصلحة والحاجة الأوراد مثل آية الكرسي، وسورة الإخلاص، وسورة الفلق، وسورة الناس، فتقرؤها.
ওই সময়ে দোয়ার অর্থবহ আয়াত বা সুরা দোয়ার নিয়তে পড়া জায়েজ। যেমন দোয়ার নিয়তে আয়াতুল কুরসি বা সুরায়ে নাস ও ফালাক ইত্যাদি পড়া জায়েজ হবে। (ফাতহুল কাদির : ১/১৬৮, রদ্দুল মুহতার : ১/১৭২, আহসানুল ফাতাওয়া : ২/৭১)
والله اعلم بالصواب