জিজ্ঞাসা-১৩০৯০:
আসসালামু আলাইকুম। আশা করি হযরত ভালো আছেন।
গত রমজানের আগে আমি প্রায় দেড় লক্ষ্য টাকার মালিক হই। অর্থাৎ আমার প্রয়োজনীয় ব্যয় শেষে আমি দেড় লক্ষ টাকার মালিক । এই দেড় লক্ষ টাকা রমজান মাসের শুরু কিংবা মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তিনজন ব্যক্তি আমার কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নেন এবং টাকাগুলো এখনো উনাদের কাছেই রয়েছে।
সাদাকাতুল ফিতরের সময় সাদাকাতুল ফিতর আদায় করিনি৷ কোরবানির সময় আমার নিজের নামে অর্থাৎ আমার পক্ষ থেকে কোরবানির এক নামে শরিক হয়েছি এই নিয়তে যে যদি আমার উপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায় তাহলে যেন আদায় হয়ে যায় । ( কারণ আমি সন্ধিহান ছিলাম আমার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে কিনা)
আমার উপর কি সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয়েছিলো ?
আমার এই টাকার জাকাত আদায় করতে হবে? কখন আদায় করতে হবে? আমার কোরবানির বিধান কী?
দয়া করে জানালে কৃতজ্ঞ থাকব ।
তারিখ:০৮/১০/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি
মো রেদওয়ান হোসেন জকিগঞ্জ, সিলেট।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, কারও নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, ওই সম্পদ ধার বা করজ দেওয়া থাকে; তাহলে ওই সম্পদের উপর যাকাত, কোরবানি, সদকাতুল ফিতর সবকিছুই ওয়াজিব হবে।
তবে ঋণ উসুল হওয়ার আগে ঐ টাকার যাকাত আদায় করা জরুরি নয়। পাওনা হস্তগত হওয়ার পর যাকাত আদায় করলেই চলবে। তবে কোনো যাকাতবর্ষ পার হয়ে যাওয়ার পর হস্তগত হলে অনাদায়ী বছরেরও যাকাত আদায় করতে হবে। দলিল-
عبد الرزاق [٧١١٢] عن الثوري عن موسى بن عبيدة عن عبد الله بن دينار عن ابن عمر مثل ذلك، أي إذا كان دينك في ثقة فزكه وإن كنت تخاف عليه التلف فلا تزكه حتى تقبضه. ابن أبي شيبة [١٠٣٥١] حدثنا وكيع عن موسى بن عبيدة عن نافع عن ابن عمر قال: زكاة أموالكم حول إلى حول، فما كان من دين ثقة فزكوه، وما كان من دين ظنون فلا زكاة فيه، حتى يقضيه صاحبه. ابن زنجويه [١٣٥٠] أخبرنا عبيد الله بن موسى عن موسى بن عبيدة عن عبد الله بن دينار عن ابن عمر أنه كان يقول: أخرجوا زكاة أموالكم من حول إلى حول فما كان لكم من دين فاجعلوه بمنزلة ما في أيديكم من أموالكم وما كان لكم من دين ظنون فليس فيه زكاة حتى تقبضوه. البيهقي [٧٨٧٤] من طريق عبد الله العدني حدثنا سفيان عن موسى بن عبيدة عن عبد الله بن دينار عن ابن عمر قال: زكوا ما كان في أيديكم، وما كان من دين في ثقة فهو بمنزلة ما في أيديكم وما كان من دين ظنون فلا زكاة فيه حتى يقبضه.
অর্থাৎ অন্যকে যে টাকা কর্জ হিসেবে দেওয়া হয়েছে বা ব্যবসায়ী কোনো পণ্য বাকিতে বিক্রয় করেছে এই পাওনা টাকা পৃথকভাবে বা অন্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে মিলিতভাবে নিসাব পূর্ণ করলে তারও যাকাত দিতে হবে। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭১১১-৭১১৩,৭১২১,৭১২৩,৭১২৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৪৮৪-৪৮৬
সারকথা হলো, হ্যাঁ, আপনার উপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয়েছিল। আপনার এই টাকার যাকাত আদায় করতে হবে।
যেদিন আপনি টাকার মালিক হয়েছেন, সেদিন থেকে চন্দ্র এক বছর পরে যাকাত আদায় করা ওয়াজিব, এটাকেই যাকাত বর্ষ বলে। পাওনা টাকা হস্তগত হওয়ার আগে যাকাত আদায় করা ওয়াজিব নয়, তবে আগে করলে আদায় হয়ে যাবে অসুবিধা নেই।
হস্তগত হওয়ার পর যাকাত বর্ষের পুরোটাই যাকাত আদায় করতে হবে।
والله اعلم بالصواب