আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩০৮৮: জুমুআর আরবি খুতবার আগে বাংলায় যে আলোচনা করা হয়, এটা কি বিদআত?

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৮৮: 

আসসালামু আলাইকুম।  জুমআর আরবি খুতবার আগে বাংলায় যে আলোচনা করা হয় এর পক্ষে শরঈ দলীলগুলো পেশ করার অনুরোধ করছি।

তারিখ:০৬/১০/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা  আব্দুল্লাহ আল কাফী ঝিনাইদহ থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, বিদআত বলা ঐ জিনিসকে যা অস্তিত্ব পবিত্র কুরআন, হাদীস, অনুসরণীয় তিন যুগে পাওয়া যায় না। জুমআর মূল খুতবার আগে বয়ান করা সাহাবায়ে কেরাম রা. থেকে প্রমাণিত। আমরা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ এর অনুসরণে তা করে থাকি।

দলিল- 


হাদিস/আসার-০১

عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَقُومُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَى جَانِبِ الْمِنْبَرِ فَيَطْرَحُ أَعْقَابَ نَعْلَيْهِ فِي ذِرَاعَيْهِ ثُمَّ يَقْبِضُ عَلَى رُمَّانَةِ الْمِنْبَرِ، يَقُولُ: قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، ثُمَّ يَقُولُ فِي بَعْضِ ذَلِكَ: وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فَإِذَا سَمِعَ حَرَكَةَ بَابِ الْمَقْصُورَةِ بِخُرُوجِ الْإِمَامِ جَلَسَ. هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ عَلَى شَرْطِ الشَّيْخَيْنِ

অর্থ : আসেম (রহ.) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, জুমু’আর দিন হযরত আবু হুরায়রা (রা.) জুতা খুলে মিম্বরের পাশে দাঁড়িয়ে মিম্বর ধরে বলতেন, আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম.) বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সাদেক মাসদুক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ধ্বংস আরবদের জন্য, ওই ফিতনার কারণে, যা নিকটবর্তী…। এরপর যখন ইমাম সাহেবের বের হবার আওয়াজ শুনতেন, তখন তিনি বসে যেতেন। তাখরিজ: মুসতাদরাকে হাকেম, ১/১৯০, হাদীস-৩৩৮


হাদিস/আসার-০২

عَنْ أَبِي الزَّاهِرِيَّةِ، قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا مَعَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُسْرٍ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَمَا زَالَ يُحَدِّثُنَا حَتَّى خَرَجَ الْإِمَامُ

হযরত আবদুল্লাহ বিন বুছর (রা.) জুমু’আর দিন প্রথমে ওয়াজ করতেন। যখন খতীব খুতবার জন্য আগমন করতেন, তখন তিনি ওয়াজ বন্ধ করতেন। তাখরিজ: মুসতাদরাকে হাকেম, ১/২৮৮, হাদীস-১০১২

قال ابن العربي رحمه الله: " وإنما نهى عنه يوم الجمعة لأنهم ينبغي لهم أن يكونوا صفوفا يستقبلون الإمام في الخطبة ويعتدلون خلفه للصلاة ".انتهى من "عارضة الأحوذي" (2/119).

ইবনুল আ'রাবী ( রহ.) বলেন: জুমুআর দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণ হলো, সেই সময়ে কর্তব্য হলো, খুতবা চলাকালীন সময়ে সারিবদ্ধভাবে ইমামের দিকে অভিমুখী হয়ে মনোযোগের সাথে খুতবা শ্রবণ করা। এবং খুতবা সমাপান্তে ইমামের পিছনে ধীরস্থিরতার সাথে সালাত আদায় করা।( আরেযাতুল আহওয়াযি-২/১১৯)

قال الطّحاوي: النهي عن (التَّحلّق) في المسجد قبل الصلاة -الجمعة- إذا عمّ المسجد وغلبه فهو مكروه، وغير ذلك لا بأس به.

আল্লামা ত্বহাবী বলেন: মসজিদে জুমার সালাতের আগে হালাকা কায়েমের উদ্দেশ্যে বৃত্তাকার হয়ে বসতে নিষেধাজ্ঞার বিধানটি তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন সমগ্র মসজিদজুড়ে ব্যাপক আকারে এজাতীয় কর্মতৎপরতার প্রসার ঘটবে। তখনই তা মাকরূহ বা অপছন্দনীয় হবে। এমন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে তাতে কোন সমস্যা নেই।

দ্বিতীয় কথা হলো,জুমআর দিন জুমআর খুৎবার পূর্বে  বয়ানটি খুৎবার মিম্বারে না করে আলাদা চেয়ারে করা উত্তম। 



সারকথা হলো,  জুমআর মূল খুতবার আগে বাংলায় যে বয়ান করা হয়, তা বিদআত নয়। নিষিদ্ধ নয়। আর সেটি খুতবাও নয়। যদি কেউ আলাদা খুতবা মনে করে, তাহলেই কেবল তা বিদআত হবে। অথচ এমনটি কেউ মনে করে না।



  والله اعلم بالصواب