আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩০৯৮: অজানা হক্কুল ইবাদ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী

No Comments

 


জিজ্ঞাসা-১৩০৯৮: 

আসসালামু আলাইকুম। ধরুন এমন মানুষের হক নষ্ট হয়েছে, তার সম্পর্কে জানা নেই বা খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। এখন এই গুনাহ  থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

তারিখ:১৮/১০/২৪ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 জনাব মিল্লাত হোসেন ঢাকা ইব্রাহিমপুর  থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, বান্দার হকও দুই প্রকার। প্রথম প্রকার আর্থিক হক। যেমন—কেউ কারো কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেনি। বা কোনো চুক্তি বা লেনদেনের কারণে কারো কোনো অর্থসম্পদ তার দায়িত্বে ছিল, যা সে পরিশোধ করেনি। বা কারো সম্পদ অবৈধভাবে ছিনিয়ে নিয়েছে, আত্মসাৎ করেছে বা কারো থেকে ঘুষ নিয়েছে। এজাতীয় সব হকের তালিকা তৈরি করে সব পরিশোধ করবে। একসঙ্গে সব পরিশোধ করতে আরম্ভ করবে। এসব হকের পাওনাদার যারা, তারা জীবিত থাকলে এবং তাদের ঠিকানা জানা থাকলে এগুলো পরিশোধ করা সহজ। তারা মারা গেলে তাদের ওয়ারিশদের খুঁজে তাদের অধিকার আদায় করতে হবে। খোঁজ করা সত্ত্বেও তাদের ঠিকানা জানা না গেলে তাদের প্রাপ্য পরিমাণ অর্থ তাদের তরফ থেকে দান করে দেবে।

আর যদি আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলার কাছে খাস দিলে তওবা করবে, ইনশাআল্লাহ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা মীমাংসা করে দিবেন।


বান্দার হকের দ্বিতীয় প্রকার শারীরিক হক। যেমন—কাউকে হাত বা জিহ্বা দ্বারা শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া কষ্ট দেওয়া, কাউকে গালি দেওয়া, পরনিন্দা করা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে বান্দার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া জরুরি। কাউকে মারপিট করে থাকলে তাকে বদলা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে বলতে হবে তোমার ইচ্ছা, আমাকে মেরে প্রতিশোধ নিতে পারো বা মাফও করে দিতে পারো।

তবে ওলামা বলেছেন এমন গীবত যা যার গীবত করা হয়েছে তার কানে পৌঁছে নাই, তার জন্য ওই ব্যক্তি কাছে ক্ষমা চায়তে হবে, শুধু আল্লাহ তাআলার কাছে মাফ চায়লেই যথেষ্ট। দলিল- 



وأما الحقوق المادية فلا تكفي التوبة بينه وبين ربه ولا يكفي معها الدعاء له ، بل يجب إرجاع هذه الحقوق المادية لأصحابها ، فإن لم يجدهم ردها لورثتهم .

فإن عجز عن إرجاعها لعدم معرفته بصاحب هذه الحقوق فليتصدق بها عنه ، وإن كان عجزه لفقرٍ فيُرجى إن كانت توبته صادقة أن يؤدي الله تعالى ، ويرضي صاحب الحق ، وإن شاء الله ذلك لم يعاقبه لا في القبر ولا في الآخرة .

বস্তুগত অধিকারের জন্য, তার এবং তার পালনকর্তার মধ্যে অনুতাপ যথেষ্ট নয় এবং তার জন্য প্রার্থনাও যথেষ্ট নয়, বরং এই বস্তুগত অধিকারগুলি তাদের মালিকদের কাছে ফেরত দিতে হবে এবং যদি সে সেগুলি না পায় তবে তাদের উত্তরাধিকারীদের কাছে ফিরিয়ে দেবে।


যদি সে এসব অধিকারের মালিক না জানার কারণে তা ফেরত দিতে অক্ষম হয়, তবে তার পক্ষ থেকে তা সদকা করে দিতে হবে এবং যদি তার অক্ষমতা দারিদ্র্যের কারণে হয়, তবে আশা করা যায় যে, যদি তার তাওবা আন্তরিক হয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহকে পূর্ণ করবে এবং হকের মালিককে খুশি করবে এবং আল্লাহ চাইলে তাকে কবরে বা পরকালে শাস্তি দেবেন না।


جاء في "روضة الطالبين" (11/247,246) :

وأما الغيبة إذا لم تبلغ المغتاب : فرأيت في فتاوى الحناطي أنه يكفيه الندم والاستغفار ، وإن بلغته … فالطريق أن يأتي المغتاب ويستحل منه ، فإن تعذر لموته أو تعسر لغيبته البعيدة : استغفر الله تعالى ، ولا اعتبار بتحليل الورثة ، هكذا ذكره الحناطي " انتهى .

গীবত যদি গীবতকারীর কাছে না পৌঁছায়: আমি আল-হানাতির ফতোয়ায় দেখেছি যে তার জন্য অনুশোচনা করা এবং ক্ষমা চাওয়াই যথেষ্ট, এবং যদি তা তার কাছে পৌঁছায় ... তবে গীবতকারীর জন্য উপায় যদি তার মৃত্যুর কারণে কঠিন হয় বা তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তার কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়: সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং উত্তরাধিকারীদের অনুমতির জন্য কোন বিবেচনা করা হয় না, এভাবেই আল- হানতি শেষ উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন। সূত্র: আলইসলামু সুওয়াল ও জওয়াব-৫৭০৬২

 

সারকথা হলো,  হক্কুল ইবাদ  ঐ ব্যক্তির থেকে মাফের ব্যবস্থা করতে হবে।  যদি ওই ব্যক্তিকে খুঁজে না পাওয়া যায় বা অজানা থাকে; তাহলে অর্থনৈতিক বিষয় হলে ওই পরিমাণ টাকা তার জন্য সদকা করতে হবে আর মানবিক তথা আচার-আচরণ বিষয় হলে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে এবং আল্লাহ তাআলার কাছেও ক্ষমা চায়তে হবে। আশা করা যায় এ কারণে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন আর ধরবেন না।



  والله اعلم بالصواب