*সুধারণার সুযোগ* (আত্মপক্ষ সমর্থন)
জ্ঞানী-বিজ্ঞ কতিপয় ধর্ম শিক্ষক প্রায় আমার কাছে অভিযোগ করেন, এতো সহজ -সরল প্রশ্ন করে কেন, আপনি তাদের অলস বানিয়ে দিচ্ছেন। প্রশ্নকারীর প্রতিও যে সুধারণা করার সুযোগ রয়েছে। নিম্নে কয়েকটি পয়েন্ট তুলে ধরছি:
০১। অধিকাংশ মাসয়ালার হুকুম/সারাংশ/মূলকথা সহজ । যেমন, এটা জায়েজ কি নাজায়েজ, হালাল না হারাম ইত্যাদি। এটা অধিকাংশই জানে কিন্তু রেফারেন্সটা এত সহজ নয়।
০২। অনেক সময় অফিসাররা অনেক বিষয় জানতে চাই। সাধারণত ওনাদেরকে শুধু হুকুম বললে সন্তুষ্ট হন না রেফারেন্স ছাড়া। তাই আল বুরহানে জিজ্ঞেস করে।
০৩। অনেক সময় মাসয়ালাটি জানা থাকে, এতমিনানের ( প্রশান্তি বা যাচাই করার জন্য) জন্য গ্রুপে প্রশ্ন করা হয়। আর এটা উচিত আমি যেটা জানি সেটা সঠিক কিনা। সেটা যাচাই করা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
০৪। অনেক ভাই সত্য জিনিসকে অপরকে জানানোর জন্য প্রশ্নের অবতারণা করেন। যেমন হাদিসে জিবরীল থেকে আমরা শিক্ষা পাই।
০৫। অনেক ভাইয়ের মিশনে নেটের প্রবলেম। whatsapp, imo তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়া গুগল ইউজ করতে পারেন না। তাই বাধ্য হয়ে সহজ প্রশ্ন গ্রুপে/আমাকে করেন।
তাছাড়া অনেক সময় এমন এমবি (নেট) কিনে শুধু সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় অন্য জায়গায় ব্যবহার করা যায় না। তাই নিজের সার্চ দিয়ে বের করার সুযোগ থাকে না। তাই গ্রুপে করেন।
০৬। অনেক ভাই সহজ সহজ মোটিভেশন ক্লাসের লেসন প্ল্যান চায়, এর মানে এ নয় যে, তিনি জানেন না বা তার কাছে কোন তথ্য নেই। হয়তো তার কাছে ৫ টি পয়েন্ট আছে, অপর ভাইয়ের কাছ থেকে আরও ৫টি পয়েন্ট পেলে, লেসন প্ল্যানটি আরও তথ্য সমৃদ্ধ হলো। তথ্য সমৃদ্ধ সকলের কাম্য।
০৭। প্রতিটি ধর্ম শিক্ষক তার নিজ জায়গায় দ্বীনের রাহবার। তাই লোকজন তাকে দ্বীন-ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। নির্ভুল সমাধান দিতে আলবুরহানে জানতে চায়। এটা তার তাকওয়ার পরিচয় ফুটে ওঠে।
সহজ বিষয়ও যাচাই-বাছাই করে বলা প্রশংসনীয়।
০৮। সবচেয়ে বড় কথা হলো, বর্তমানে আলবুরহানের সদস্য সংখ্যা ২৯৩ জন। সবাই কমবেশি দ্বীনের জ্ঞান রাখেন। আমার জানামতে, তার মধ্যে ৫-৬ মুফতি, ৫০ জনের মত দাওরা হাদিস, ১০০ বেশি সংখ্যক বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে, ২ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারী ধর্ম শিক্ষক রয়েছেন।
আমার মতে, আলবুরহানে কোন সমাধান আরটি জগতের ইজমা তুল্য। ( শরয়ি ইজমা নয়) কেননা ভুল/ অসঙ্গতি/শরীয়ত বিরোধী কোন মাসআলা প্রকাশ করলে সংশোধন/প্রতিবাদ করার মত বহুত আর্টি বিদ্যমান রয়েছে।
০৯। অনেকে অভিযোগ করেন যে, তারা প্রশ্ন করে কেন, একটু নিজে খোঁজাখুঁজি করলেই তো হয়। তাদেরকে বলবো আল বুরহানে জিজ্ঞেস করার পর যে সমাধান দেয়া হয়, সেটা যদি সে পড়ে। তাহলে কি জ্ঞান অর্জন করা হলো না?
কথিত আছে, হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজালি রহ. কে জিজ্ঞেস করা হলো। আপনি এত জ্ঞান কিভাবে অর্জন করেছেন। তিনি বলেলেন, জিজ্ঞাসার মাধ্যমে।
১০। আলবুরহানের নীতিমালা অনুসারে যা চেয়েছেন, কেবল তারই উত্তর দিব। তাই ডানে- বামে, অপ্রাসঙ্গিক জবাব না দিয়ে এবং প্রশ্নকারীকে তাচ্ছিল্য, অপমান-ছোট হয় এমন কথা, কটাক্ষ না করার জন্য বিনীত আরজ করছি।
শেষ কথা,
উপরোক্ত কথাগুলি আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে।
কেউ কেউ একমত নাও হতে পারেন, তাই আফওয়ান, ইয়া আখিয়াল কারিম।
নিবেদক,
ধর্ম শিক্ষক, মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক বগুড়া, প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আলবুরহান।