অতি সারগর্ভ ও তাৎপর্যপূর্ণ দু‘আ।
اَللّٰهُمَّ إِنِّيْۤ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ. اَللّٰهُمَّ إِنِّيْۤ أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ، وَأَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ كُلَّ قَضَآءٍ تَقْضِيْهِ لِيْ خَيْرًا، وَأَسْأَلُكَ مَا قَضَيْتَ لِيْ مِنْ أَمْرٍ أَنْ تَجْعَلَ عَاقِبَتَهٗ رُشْدًا.
ইয়া আল্লাহ! আপনার কাছে ঐ কল্যাণ চাই, যা আপনার বান্দা ও নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনার কাছে প্রার্থনা করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনার কাছে জান্নাত চাই। আর চাই ঐ সকল কথা ও কাজের তাওফীক, যা তার কাছে নিয়ে যায়। আর প্রার্থনা করি, আপনার সকল ফয়সালা আমার জন্য কল্যাণকর করুন এবং প্রার্থনা করি, আমার বিষয়ে আপনার যা কিছু ফয়সালা তার পরিণাম শুভ করুন।
মুসতাদরাক, ইবনে মাজা
বিস্তারিত:
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، أَخْبَرَنِي جَبْرُ بْنُ حَبِيبٍ، عَنْ أُمِّ كُلْثُومٍ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ عَلَّمَهَا هَذَا الدُّعَاءَ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنَ الْخَيْرِ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّرِّ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَاذَ بِهِ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ كُلَّ قَضَاءٍ قَضَيْتَهُ لِي خَيْرًا "
আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ তাঁকে এই দু'আ শিখিয়েছেন। اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنَ الْخَيْرِ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الشَّرِّ كُلِّهِ عَاجِلِهِ وَآجِلِهِ مَا عَلِمْتُ مِنْهُ وَمَا لَمْ أَعْلَمْ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا عَاذَ بِهِ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ النَّارِ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا مِنْ قَوْلٍ أَوْ عَمَلٍ وَأَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ كُلَّ قَضَاءٍ قَضَيْتَهُ لِي خَيْرًا হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি ইহকাল ও পরকালের জানা অজানা যাবতীয় কল্যাণ প্রার্থনা করছি। এবং আপনার কাছে আমি পানাহ চাই ইহকাল ও পরকালের জানা অজানা যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে, হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে সেই কল্যাণের প্রার্থনা করি, যা আপনার বান্দা ও নবী প্রার্থনা করেছেন, এবং আমি আপনার নিকট পানাহ চাই সে সকল নিকৃষ্টতম বিষয় থেকে, যা থেকে আপনার বান্দা ও নবী আপনার কাছে পানাহ চেয়েছেন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে জান্নাত প্রার্থনা করি এবং এমন কথা ও কাজের তাওফীক প্রার্থনা করি, যা জান্নাতের নিকটবর্তী করে। এবং আপনার কাছে জাহান্নাম থেকে পানাহ চাই এবং এমন কথা ও কাজ থেকে পানাহ চাই, যা জাহান্নামের নিকটবর্তী করে। এবং আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি যে, আমার ব্যাপারে কৃত প্রতিটি ফয়সালাকে আমার জন্য কল্যাণকর করবে না।
—সুনানে ইবনে মাজা', হাদীস নং ৩৮৪৬ (আন্তর্জাতিক নং ৩৮৪৬)
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
বর্ণনাকারী: উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) (মৃত্যু ৫৭/৫৮ হিজরী)
ফায়দা:
مَا سَأَلَكَ عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ
(যা আপনার বান্দা ও নবী আপনার কাছে প্রার্থনা করেছেন)। তিনিই তো ছিলেন শ্রেষ্ঠ রুচির অধিকারী। সুতরাং তিনি যা কিছু আপন পরওয়ারদেগারের কাছে প্রার্থনা করেছেন, তা-ই সর্বোত্তম প্রার্থনীয় বিষয়। আর এ-ই তো সঠিক অর্থ নবীপ্রেমের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)।
أَسْأَلُكَ الْجَنَّةَ وَمَا قَرَّبَ إِلَيْهَا
(জান্নাত চাই আর চাই ঐ সকল কথা ও কাজের তাওফীক, যা তার কাছে নিয়ে যায়)। জান্নাত তো এমন বিষয়, যার প্রার্থনা স্বয়ং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছেন। শুধু জান্নাতেরই নয়, ঐ সকল কথা ও কাজ, উপায় ও পন্থারও প্রার্থনা, যা জান্নাত পর্যন্ত নিয়ে যায়। এ কত শিক্ষণীয় বাস্তবতা ঐ সকল অজ্ঞ-অচেতনের জন্য, যারা ইশকে রাসূলের দাবিতে জান্নাত থেকেও বেপরোয়া!
تَجْعَلَ كُلَّ قَضَآءٍ لِىْ خَيْرًا
(আপনার সকল ফয়সালা আমার জন্য কল্যাণকর করুন)। ‘ফয়সালা’ বলতে জাগতিক বিধানসমূহ বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ জীবন ও জগতে যত অবস্থার মুখোমুখি আমি হই, যার উপর আমার কোনো হাত নেই, ঐসব বিষয়ে আমার জন্য কল্যাণের ফয়সালা করুন।
أَنْ تَجْعَلَ عَاقِبَتَهٗ رُشْدًا
(আমার জন্য আপনার যা কিছু ফয়সালা, তার পরিণাম শুভ করুন)। অর্থাৎ যে অবস্থাতেই আমি থাকি, তার পরিণাম যেন হয় শুভ ও সুন্দর, কল্যাণপ্রসূ ও কল্যাণকর।