আমল ও দুআ-৭৭: হে আল্লাহ! আমাকে মৃত দিন, যখন আপনার জ্ঞানে মৃত্যু আমার জন্য উত্তম।
اَللّٰهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ، أَحْيِنِيْ مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِّيْ، وَتَوَفَّنِيْ إِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِّيْ، وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِيْ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ، وَأَسْأَ لُكَ كَلِمَةَ الْإِخْلَاصِ فِيْ الرِّضٰى وَالْغَضَبِ، وَأَسْأَ لُكَ نَعِيْمًا لَّا يَنْفَدُ، وَ قُرَّةَ عَيْنٍ لَّا تَنْقَطِـعُ، وَأَسْأَ لُكَ الرِّضَا بَعْدَ الْقَضَآءِ، وَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ، ولَذَّةَ النَّظَرِ إِلٰى وَجْهِكَ، وَالشَّوْقَ إِلٰى لِقَآئِكَ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ ضَرَّآءَ مُضِرَّةٍ وَّ فِتْنَةٍ مُّضِلَّةٍ. اَللّٰهُمَّ زَيِّنَّا بِزِيْنَةِ الْإِيْمَانِ، وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُّهْتَدِيْنَ.
ইয়া আল্লাহ! আপনি যে আলিমুল গাইব, আপনি যে সৃষ্টির উপর ক্ষমতাবান, এ অসিলায় প্রার্থনা করি, আপনি আমাকে জীবিত রাখুন যতদিন আপনার জ্ঞানে জীবন আমার জন্য কল্যাণকর আর আমাকে উঠিয়ে নিন যখন আপনার জ্ঞানে মৃত্যু আমার জন্য উত্তম।
আপনার কাছে প্রার্থনা, আপনাকে যেন ভয় করি গোপনে ও প্রকাশ্যে এবং ইখলাসের কথা বলি ক্রোধে ও আনন্দে (কারণ, এ দুই সময় হচ্ছে আবেগের তাড়নায় ভেসে যাওয়ার সময়)।
প্রার্থনা করছি ঐ নেয়ামত, যা নিঃশেষ হবে না এবং ঐ আনন্দ, যার সমাপ্তি ঘটবে না।
আপনার কাছে প্রার্থনা, যেন আপনার ফয়সালায় রাজি থাকি এবং মৃত্যুর পর শান্তির জীবন লাভ করি আর লাভ করি আপনার দর্শন-আনন্দ এবং আপনার সাক্ষাতের ব্যাকুলতা।
আপনার কাছে আশ্রয় নিই কষ্টদায়ক বিপদ থেকে ও ভ্রষ্টকারী ফিতনা থেকে। ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে করুন ঈমানের শোভায় সুশোভিত এবং সুপথপ্রাপ্ত, পথের দিশারী (যেন নিজেরাও সুপথে থাকি, অন্যদেরও সুপথ প্রদর্শন করি)। মুসতাদরাক
বিস্তারিত:
أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبِ بْنِ عَرَبِيٍّ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، قَالَ حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ صَلَّى بِنَا عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ صَلاَةً فَأَوْجَزَ فِيهَا فَقَالَ لَهُ بَعْضُ الْقَوْمِ لَقَدْ خَفَّفْتَ أَوْ أَوْجَزْتَ الصَّلاَةَ . فَقَالَ أَمَّا عَلَى ذَلِكَ فَقَدْ دَعَوْتُ فِيهَا بِدَعَوَاتٍ سَمِعْتُهُنَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا قَامَ تَبِعَهُ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ هُوَ أَبِي غَيْرَ أَنَّهُ كَنَى عَنْ نَفْسِهِ فَسَأَلَهُ عَنِ الدُّعَاءِ ثُمَّ جَاءَ فَأَخْبَرَ بِهِ الْقَوْمَ " اللَّهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ أَحْيِنِي مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِي اللَّهُمَّ وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ وَأَسْأَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالْغَضَبِ وَأَسْأَلُكَ الْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى وَأَسْأَلُكَ نَعِيمًا لاَ يَنْفَدُ وَأَسْأَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لاَ تَنْقَطِعُ وَأَسْأَلُكَ الرِّضَاءَ بَعْدَ الْقَضَاءِ وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ وَأَسْأَلُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ إِلَى وَجْهِكَ وَالشَّوْقَ إِلَى لِقَائِكَ فِي غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ وَلاَ فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ اللَّهُمَّ زَيِّنَّا بِزِينَةِ الإِيمَانِ وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُهْتَدِينَ " .
আতা ইবনে সায়িব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাযিঃ) একবার আমাদের সাথে নামায আদায় করলেন এবং নামায সংক্ষিপ্ত করে ফেললেন। তখন কেউ কেউ তাঁকে বললেন, আপনি নামায সংক্ষিপ্ত করে ফেলেছেন। তিনি বললেন, কিন্তু এতদসত্তেও তো আমি ঐ সমস্ত দু'আ পাঠ করে ফেলেছি যা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি। তারপর যখন তিনি (চলে যাওয়ার জন্য) উঠে দাঁড়ালেন, লোকদের মধ্য হতে একজন তার অনুসরণ করতে লাগলেন। [আতা বলেন] তিনি ছিলেন আমার পিতা কিন্তু তিনি তাঁর নাম বলেননি। তিনি তাঁকে ঐ দু'আ সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন এবং এসে সবাইকে ঐ দু'আর সংবাদ দিলেন। সেই দু'আটি ছিলঃ
اللَّهُمَّ بِعِلْمِكَ الْغَيْبَ وَقُدْرَتِكَ عَلَى الْخَلْقِ أَحْيِنِي مَا عَلِمْتَ الْحَيَاةَ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا عَلِمْتَ الْوَفَاةَ خَيْرًا لِي اللَّهُمَّ وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِي الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ وَأَسْأَلُكَ كَلِمَةَ الْحَقِّ فِي الرِّضَا وَالْغَضَبِ وَأَسْأَلُكَ الْقَصْدَ فِي الْفَقْرِ وَالْغِنَى وَأَسْأَلُكَ نَعِيمًا لاَ يَنْفَدُ وَأَسْأَلُكَ قُرَّةَ عَيْنٍ لاَ تَنْقَطِعُ وَأَسْأَلُكَ الرِّضَاءَ بَعْدَ الْقَضَاءِ وَأَسْأَلُكَ بَرْدَ الْعَيْشِ بَعْدَ الْمَوْتِ وَأَسْأَلُكَ لَذَّةَ النَّظَرِ إِلَى وَجْهِكَ وَالشَّوْقَ إِلَى لِقَائِكَ فِي غَيْرِ ضَرَّاءَ مُضِرَّةٍ وَلاَ فِتْنَةٍ مُضِلَّةٍ اللَّهُمَّ زَيِّنَّا بِزِينَةِ الإِيمَانِ وَاجْعَلْنَا هُدَاةً مُهْتَدِينَ
—সুনানে নাসায়ী, আন্তর্জাতিক নং ১৩০৫
ফায়দা:
জীবন যেন কাটে রহমতের ছায়ায় আর মরণ যেন নিয়ে যায় রহমতেরই কোলে। অসহায় বান্দা সকল অবস্থায় শান্তিরই ভিখারী। এ জগতেও এবং সে জগতেও।
كَلِمَةَ الْاِخْلَاصِ فِىْ الرِّضَى وَالْغَضَبِ
(ইখলাসের কথা বলি ক্রোধে ও আনন্দে) এ দুই অবস্থায় যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, তার জীবন তো তাকওয়ায় পূর্ণ হয়ে গেল।
وَأَسْأَلُكَ خَشْيَتَكَ فِى الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ
(আপনাকে যেন ভয় করি গোপনে ও প্রকাশ্যে)। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় যেন খোদাভীতি অটুট থাকে। কর্মের ফল দৃশ্যমান থাকুক বা অদৃশ্য।
وَ الشَّوْقَ إِلٰى لِقَآئِكَ ولَذَّةَ النَّظَرِ إِلٰى وَجْهِكَ
(আপনার দর্শন-আনন্দ ও সাক্ষাতের প্রত্যাশা)। জান্নাতী মুমিনদের খোদার দর্শন লাভ ও তাঁর সাথে সাক্ষাতের সৌভাগ্য আহলে সুন্নতের এক স্বীকৃত আকীদা। জান্নাতবাসীর জন্য এই দীদার হবে সবচেয়ে বড় নেয়ামত।
نَعِيْمًا لَّا يَنْفَدُ
(ঐ নেয়ামত, যা শেষ হবে না, ঐ আনন্দ যার...)। অর্থাৎ যে শান্তি ও সমৃদ্ধি আমাকে দান করবেন, তা যেন স্থায়ী হয়। এমন যেন না হয় যে, সকল দান
ক্ষণস্থায়ী সাব্যস্ত হল!
زَيِّنَّا بِزِيْنَةِ الْإِيْمَانِ
(আমাদেরকে ঈমানের শোভায় সুশোভিত করুন)। শুধু ঈমান থাকা বা ঈমানের সাধারণ পর্যায় নয়, ঈমানের প্রকৃত স্বাদ তো তখনই পাওয়া যাবে, যখন ঈমানের সুষমা ও সৌন্দর্য এবং ঈমানের উঁচু বৈশিষ্ট্যগুলোও বিদ্যমান থাকবে।