জিজ্ঞাসা-১২৭৮৯:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারাম মুফতি সাহেব, জানার বিষয় হলো, ইমাম সাহেব ৪ রাকআত বিশিষ্ট নামাজে ২য় রাকাতে না বসে দাড়িয়ে যাচ্ছেন, সম্পুর্ন দাড়াননি লোকমা শুনার পরে বসে গিয়েছেন কিন্তু সাহু সিজদা দেননি এতে নামাজ সহিহ হবে কিনা?
তারিখ: ০৪/১০/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন কুমিল্লা থেকে।
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ইমামের দাঁড়ানোটা বসার কাছাকাছি হয়, তাহলে সাহু সিজদা লাগবে না। আর যদি দাঁড়ানোর কাছাকাছি হয় অর্থাৎ সম্পূর্ণ হাঁটু সোজা হয়ে যায়, তাহলে এ আর তিনি না বসে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। দলিল:
ومن سها عن القعدة الأولى ثم تذكر وهو إلى حال القعود أقرب عاد فجلس وتشهد، وإن كان إلى حال القيام أقرب لم يعد، ويسجد للسهو،
অর্থাৎ, কেউ যদি প্রথম বৈঠকের কথা ভুলে গিয়ে দণ্ডায়মান হতে উদ্যত হয়, ঠিক সেই মুহূর্তে যদি সে নিজের ভুল বুঝতে পারে, তাহলে সে বসার কাছাকাছি অবস্থায় থাকলে উপবিষ্ট হয়ে যাবে এবং তাশাহহুদ পাঠ করবে ( সাহু সিজদা লাগবে না)। পক্ষান্তরে সে যদি দণ্ডায়মান হওয়ার কাছাকাছি চলে যায়, তাহলে সে আর প্রথম বৈঠকে ফেরত আসবেনা। বরং দাঁড়িয়ে যাবে এবং যথারীতি সালাত আদায় করে শেষ বৈঠকে গিয়ে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নিবে। ( আল লুবাব-১/৯৭)
إن كان نهوضه إلى الجلوس اقرب لا يسجد للسهو، لأنه قليل، وإن كان إلى القيام أقرب يسجد للسهو، وهذا حسٌن، ولو ذكر بعد اعتداله قائمًا لم يجز له العود، ويسجد للسهو، فإن عاد نُظِر، فإن كان جاهلًا لم تبطل صلاته، وإن كان عالمًا بأن ذلك لا يجوز بطلت صلاته كما لو تكلم في الصلاة.
অর্থাৎ, তার দণ্ডায়মান হওয়ার অবস্থাটা যদি উপবিষ্ট হওয়ার নিকটবর্তী হয়, তাহলে সে সিজদায়ে সাহু দিবেনা। কারণ এখানে পরবর্তী ওয়াজিব আদায়ে সামান্য কালক্ষেপন হয়েছে। (যা সিজদায়ে সাহু আবশ্যক করেনা।) তবে যদি সে দণ্ডায়মান হওয়ার কাছকাছি গিয়ে উপনীত হয়, তাহলে শেষ বৈঠকে গিয়ে সে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নিবে। এই মতটিই অধিকতর গ্রহণযোগ্য।
পক্ষান্তরে সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর নিজের ভুলের কথা স্মরণে এলে প্রথম বৈঠকে ফেরত আসা জায়েজ নেই। তবে ভুলবশত প্রথম বৈঠক ত্যাগের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নিবে। তা সত্ত্বেও যদি সে ফেরত আসে, তাহলে বিষয়টি ব্যাখ্যাসাপেক্ষ- সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর পুনরায় ফেরত আসলে যে নামাজ ভেঙে যায়- একথা সালাত আদায়কারী না জেনে করলে নামাজ ভাঙবেনা। পক্ষান্তরে জেনেশুনে এমন কাজ করলে তার নামাজ ভেঙে যাবে। সূত্র: বাহরুল মাযহাব- ২/৬১
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক বুঝা যায়, নামাজ আদায় হয়ে গেছে, সাহু সিজদার প্রয়োজন নেই।
و الله اعلم بالصواب