আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৩০৬: পান্জেগানা মসজিদে কোন ওয়াক্তে আজান ছাড়া নামাজ আদায় করলে কি নামাজ আদায়ে কোন সমস্যা হবে?

No Comments

 












জিজ্ঞাসা-১২৩০

আসসালামু আলাইকুম।

পান্জেগানা মসজিদে যেখানে নির্ধারিত মুয়াজ্জিন নাইসেখানে কোন ওয়াক্তে আজান ছাড়া নামাজ আদায় করলে কি নামাজ আদায়ে কোন সমস্যা হবে। উল্লেখ্যএই পান্জেগানা মসজিদে পার্শ্ববর্তী জামে মসজিদের আজান এসে পৌঁছায়। তারিখ: ১৫/১০/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি


মাওলানা আব্দুর রহমান সাভার থেকে-----


জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, 

اتفق الفقهاء على أن الأذان من خصائص الإسلام وشعائره الظاهرة . ولكنهم اختلفوا في حكمه ،

অর্থাৎ হজরতে ফোকাহায়ে কেরামগণ! এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, নিশ্চয় আজান হলো, ইসলামের বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি এবং প্রকাশ্য নিদর্শন। তবে হুকুমের ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যেমন,

 

اتَّفقَ الأئمَّةُ الثَّلاثةُ علَى أنَّ الأذانَ سنَّةٌ مؤكَّدةٌ، مَا عدَا الحنابلةُ، وكذلكَ الظَّاهريَّةُ، وأهلُ الحديثِ، فإنَّهمْ قالُوا: إنَّهُ فرضُ كفايةٍ

অর্থাৎ সম্মানিত তিন ইমাম ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, আজান হলো সুন্নাতে মুয়াক্কাদা, তবে ইমাম আহমদ (রহ.) ভিন্নমত পোষণ করেছেন। এরকমভাবে আহলে জাহের, আহলে হাদিসদের মতে আজান দেওয়া ফরজে কিফায়া।   

 

প্রশ্ন:   ক। পান্জেগানা মসজিদে  কোন ওয়াক্তে আজান ছাড়া নামাজ আদায় করলে কি নামাজ আদায়ে কোন সমস্যা হবে?

উত্তর: ক।  ফিকহে হানাফির মতে,:

 

وَيُكْرَهُ أَدَاءُ الْمَكْتُوبَةِ بِالْجَمَاعَةِ فِي الْمَسْجِدِ بِغَيْرِ أَذَانٍ وَإِقَامَةٍ. كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الباب الثانى فى الاذان-1/54

পান্জেগানা মসজিদে  কোন ওয়াক্তে আজান ছাড়া নামাজ আদায় করলে  মাকরুহ হবে। সূত্র: ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৫৪

 

একই রকম মতামত দিয়েছেন হাম্বলি মাজহবের অনুসারি ইমাম ইবনে বায (রহ.)-

 

ا

ذا كنا نصلي في مسجد صغير ونسمع أذان مسجد كبير فهل السنة أن يؤذن في هذا المسجد الصغير أم نكتفي بالأذان الذي سمعناه بالمسجد الكبير؟

 

الجواب

الحمد لله.

"ما دام المسجد يُصلى فيه ، فالسنة أن يكون فيه أذان ويكون فيه إقامة ، ولو سمعتم أذان المسجد الآخر ، فإن المسافة بعيدة في الغالب ولا سيما مع هذه المكبرات فيسمع من خلالها بعضهم بعضاً ، والسنة أن كل مسجد يؤذن فيه ويقام فيه ، ومن سمع الأذان في أي مسجد أجابه

لمصدر: سماحة الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله - "فتاوى نور على الدرب"(2/685)

অর্থাৎ তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, বড় মসজিদের আজান দ্বারা ছোট মসজিদের আজান যথেষ্ট হবে কি না আলাদা দিতে হবে? তিনি বললেন, যেখানে নিয়মিত নামাজ সেখানে আলাদা আজান ও ইকামত দিতে হবে। সূত্র:  ফাতওয়ায়ে নূরুন আলাল দারব-২/৬৮৫, শায়েখ আব্দুল আজিজ ইবনে বায (রহ.)

 

প্রশ্ন:  খ। আজান-ইকামত  ছাড়া নামাজ সহিহ হবে কি?

উত্তর: খ। এ ব্যাপারে, تصحُّ الصلاةُ بغير أذانٍ ولا إقامةٍ، وهذا باتِّفاقِ المذاهبِ الفقهيَّة الأربعة: الحنفيَّة، والمالكيَّة، والشافعيَّة، والحنابلة

অর্থাৎ ইমাম আবু হানিফা, শাফেয়ি, মালেক ও আহমদ (রহ.) এর ঐক্যমতে আজান ও ইকামত ছাড়া নামাজ সহিহ হবে। দলিল:

أَتَيْنَا عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ فِي دَارِه، فَقَالَ: أَصَلّى هؤُلَاءِ خَلْفَكُمْ؟ فَقُلنَا: لَا، قَالَ: فَقُومُوا فَصَلّوا، فَلَمْ يَأمُرْنَا بِأَذَانٍ وَلَا إِقَامَةٍ.

অর্থ: হযরত আসওয়াদ ও আলকামা রাহ. থেকে বর্ণিত তাঁরা বলেন-

আমরা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর ঘরে এলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেনতোমাদের পেছনের লোকেরা কি নামায পড়েছেআমরা বললামনা। তিনি বললেন, (তাহলে) তোমরা দাঁড়াওনামায পড়। তখন তিনি আমাদের আযান ও ইকামতের নির্দেশ দেননি। তাখরিজ:  মুসলিম-৫৩৪

 

সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নে উল্লেখিত পাঞ্জেগানা মসজিদে আজান ও ইকমাত দিয়ে নামাজ আদায় করতে হবে।  ভুলে না দিলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছাকৃত ত্যাগ করলে মাকরুহ হবে।

 

عبد والله اعلم بالصواب