আমল ও দুআ-৬৭: আমাদের উপর এমন কাউকে আরোপ কোরেন না, যে আমাদের প্রতি রহমদিল নয়।
اَللّٰهُمَّ اقْسِمْ لَنَا مِنْ خَشْيَتِكَ مَا تَحُوْلُ بِه بَيْنَنَا وَبَيْنَ مَعَاصِيْكَ، وَمِنْ طَاعَتِكَ مَا تُبَلِّغُنَا بِه جَنَّتَكَ، وَمِنَ الْيَقِيْنِ مَا تُهَوِّنُ بِه عَلَيْنَا مَصَآئِبَ الدُّنْيَا، وَمَتِّعْنَا بِأَسْمَاعِنَا وَأَبْصَارِنَا وَقُوَّتِنَا مَاۤ أَحْيَيْتَنَا، وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنَّا، وَاجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلٰى مَنْ ظَلَمَنَا، وَانْصُرْنَا عَلٰى مَنْ عَادَانَا، وَلَا تَجْعَلْ مُصِيْبَتَنَا فِيْ دِيْنِنَا، وَلَا تَجْعَلِ الدُّنْيَاۤ أَ كْبَرَ هَمِّنَا وَلَا مَبْلَغَ عِلْمِنَا وَلَا غَايَةَ رَغْبَتِنَا، وَلَا تُسَلِّطْ عَلَيْنَا مَنْ لَّا يَرْحَمُنَا.
ইয়া আল্লাহ! আমাদের দিন আপনার এ পরিমাণ ভয়, যা দ্বারা আপনি আমাদের নাফরমানি থেকে বিরত রাখবেন এবং এ পরিমাণ আনুগত্য, যা দ্বারা আপনি আমাদের জান্নাতে দাখিল করবেন এবং এ পরিমাণ বিশ্বাস, যা দ্বারা দুনিয়ার বিপদাপদ আমাদের জন্য সহজ করে দিবেন। আর ততদিন আমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও সকল সক্ষমতা অটুট রাখেন, যতদিন আমাদের জীবিত রাখেন এবং এর কল্যাণ আমাদের পরেও জারি রাখবেন। যে আমাদের উপর জুলুম করে, তার উপর আমাদের পক্ষ হতে প্রতিশোধ নিন এবং যে আমাদের সাথে দুশমনি করে, তার বিরুদ্ধে আমাদের জয়যুক্ত করুন। দ্বীনের বিষয়ে আমাদের বিপদগ্রস্ত কোরেন না, দুনিয়াকে বানাবেন না আমাদের প্রধান মাকসুদ এবং না জ্ঞানের শেষ সীমা ও না চূড়ান্ত আগ্রহের বিষয় আর আমাদের উপর এমন কাউকে আরোপ কোরেন না, যে আমাদের প্রতি রহমদিল নয়। (কোনো জালিম শাসক বা অন্য কিছু)। তাখরিজ: তিরমিযী-৩৫০৩; নাসায়ী
ব্যাখ্যা: হাদীসের সকল দু‘আই অত্যুচ্চ। তন্মধ্যে এ দু‘আটি আরো বিশিষ্টতার অধিকারী। এ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উচ্চ প্রজ্ঞার এক বিশ্বস্ত সাক্ষী।
اقْسِمْ لَنَا
খোদাভীতির পুরো হক কে আদায় করতে পারে? কার আছে সেই ইচ্ছাশক্তি ও কর্মশক্তি? যথেষ্ট পরিমাণ আনুগতও শুধু এ অর্থে, যা বান্দাকে জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছে দেয়।
وَمِنَ الْيَقِيْنِ
(এ পরিমাণ বিশ্বাস, যা দ্বারা দুনিয়ার বিপদাপদ আমাদের জন্য সহজ করে দিবেন)। ঈমান ও ইয়াকীনের ঐ স্তরই যথেষ্ট, যার মাধ্যমে বিপদাপদ সহজ হয়ে যায়।
وَمَتِّعْنَا
(যতদিন আমাদের জীবিত রাখবেন আমাদের শ্রবণশক্তি...) সামান্য চিন্তা করলেই বোঝা যাবে, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক সক্ষমতা জীবনের কত বড় প্রয়োজন।
وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ
(এবং এর কল্যাণ আমাদের পরেও জারি রাখবেন)। অর্থাৎ এ সকল শক্তির উত্তম নিদর্শন আমাদের মৃত্যুর পরও বিদ্যমান রাখবেন।
وَلَا تَجْعَلْ مُصِيْبَتَنَا
(দ্বীনের বিষয়ে আমাদের বিপদগ্রস্ত কোরেন না)। কোনো বিপদই কাম্য নয়। তবে যে বিপদ দ্বীনদারীর উপর আসে, তা অতি ভয়াবহ। তাই এ থেকে নিরাপদ থাকার প্রার্থনাও আলাদাভাবে করানো হয়েছে।
وَلَا تَجْعَلِ الدُّنْيَا
(দুনিয়াকে বানাবেন না আমাদের প্রধান মাকসুদ...)। দু‘আর এ অংশটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজো আমরা যে অসংখ্য বিপদের শিকার, তা তো এ বিষয়েই অবহেলার ফল। হায়! আমরা যদি উপলব্ধি করতাম যে, দুনিয়া না আমাদের মূল মাকসাদ, না আমাদের আগ্রহের চূড়ান্ত সীমা! দুনিয়া তো আমাদের দীর্ঘ জীবনযাত্রায় এক বিরতিমাত্র।
مَعَاصِيْكَ (তোমার অবাধ্যতা)। তোমার আদেশের অবাধ্যতা।