জিজ্ঞাসা-১২৮০৭:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম,সালাতুল কাজা বিষয়ের উপর দালিলিক আলোচনা চাই,অনেক মুসল্লী ফরজের আগেপরের সুন্নত বাদ দিয়ে ওমরী কাজা আদায় করে,কেউকেউ ফজরের আগেপরে আবার আসরের আগেপরে কাজা আদায়ে মনযোগী হন,বিষয়টি পরিস্কার করবেন,জাযাকাল্লাহ খাইর।
তারিখ: ১৭/১০/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আবুসুমাইয়া মুহাঃ শাহজাহান শেখ, কুমিল্লা থেকে।
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
إذا كانت الصلوات فاتت عن نوم أو نسيان، فيجب صلاتها عند الذكر أو الاستيقاظ باتفاق العلماء.
অর্থাৎ ঘুম অথবা ভুলে যাওয়ার কারণে সালাত নষ্ট হয়, তাহলে স্মরণ হওয়া অথবা ঘুম থেকে জাগ্রত হয়েই কাজা আদায় করা সমস্ত আলেমদের মতে ওয়াজি। এ বিষয়ে কোন মতভেদ নেই।
أما إذا كانت الصلوات فاتت في غير نوم ولا نسيان، فقد اختلف العلماء في وجوب قضائها عليه، فمذهب الفقهاء الأربعة أنه يجب قضاؤها.
ومنهم شيخ الإسلام ابن تيمية وابن حزم وابن القيم والشيخ الألباني، إلى عدم وجوبها، ولكن تجب التوبة من ذلك، والإكثار من الاستغفار والنوافل. وعليه أن يندم على ما فات، ويحرص على الانتظام في الصلاة.
কিন্তু ঘুম বা ভুলে ব্যতিত নামায ছুটে গেলে তার কাযা আদায় করতে হবে কিনা সে বিষয়ে আলেমগণের মতভেদ রয়েছে।
সম্মানিত চার ইমামের মতে ওয়াজিব অপর পক্ষে তাদের মধ্যে শাইখ আল-ইসলাম ইবনে তাইমিয়া, ইবনে হাজম, ইবনে আল-কাইয়্যিম, শেখ আল-আলবানী এবং আহলে হাদিসের বলেছেন যে এটি ওয়াজিব নয়, তবে তা থেকে তওবা করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা আবশ্যক। অনেক স্বেচ্ছায় নামাজ আদায় করুন। তিনি যা ছেড়ে দিয়েছেন তার জন্য অনুশোচনা করতে হবে এবং নিয়মিত সালাত আদায় করতে সতর্ক থাকতে হবে। সূত্র: ফিকহুল ইবাদাত; কাজাউল ফাওয়ায়িত-৫৩১৩৫ (ফতোয়া নং)
প্রশ্ন ক। চার ইমামের দলিল কী?
উত্তর: ক। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফি, ইমাম মালেক এবং ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. মতে যেভাবেই নামাজ ছুটে যাক তা কাজা আদায় করা ওয়াজিব। দলিল:
কুরআন থেকে:
আয়াত নং -০১
إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। সূরা ত্বহা-১৪
তাফসির:
وقال القرطبي في تفسيره عند قوله تعالى: وأقم الصلاة لذكري {طه: 14}. فأما من ترك الصلاة متعمدا فالجمهور أيضا على وجوب القضاء عليه، وإن كان عاصيا. قال: والفرق بين المتعمد والناسي والنائم حط المأثم، فالمتعمد مأثوم، والجميع قاضون، والحجة للجمهور قوله تعالى: "وأقيموا الصلاة" ولم يفرق بين أن يكون في وقتها أو بعدها، وهو أمر يقتضي الوجوب، وأيضا فقد ثبت الأمر بقضاء النائم والناسي مع أنهما غير مأثومين، فالعامد أولى. انتهى. وللفائدة
অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমরা আমার স্মরণে সালাত কায়েম করো। (সূরা ত্বহা-১৪)
প্রখ্যাত তাফসীকারক আল্লামা কুরতুবী এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, "যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত তরক করলো, সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমগণের মতে, অনাদায়ী সালাতগুলো তাকে আবশ্যিকভাবে কাযা করে নিতে হবে, সেইসাথে যথাসময়ে সালাত আদায় না করার কারণে সে গোনাহগারও হবে। সুতরাং বুঝা গেল, ইচ্ছাকৃতভাবে যে ব্যক্তি সালাত ত্যাগ করেছে, তার মাঝে এবং অনিচ্ছায় কিংবা নিদ্রাজনিত কারণে যার সালাত ছুটে গিয়েছে, উভয়ের মাঝে পার্থক্য হলো, গুনাহ হওয়া কিংবা না হওয়ার বিবেচনায়; ইচ্ছাকৃত সালাত ছাড়লে গুনাহ হবে, অনিচ্ছায় ছুটে গেলে মার্জনা লাভ করবে। কিন্তু সালাতের কাযা উভয় প্রকার ব্যক্তিকেই অপরিহার্যভাবে আদায় করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেমগণ আল্লাহ তায়ালার এই বাণীটির মাধ্যমে নিজ মতামতের স্বপক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করেন - " তোমরা সালাত কায়েম করো।" (সূরা বাক্বারা -৪৩)
দলীল উপস্থাপনের প্রক্রিয়া হলো, আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সালাত আদায়ের নির্দেশনা নিঃশর্তভাবে দিয়েছেন। সময়মতো হলেই আদায় করতে হবে, সময় পেরিয়ে গেলে আদায় করা লাগবেনা- এমন কোন বিভাজন করেননি।আর শব্দের এই জাতীয় আদেশবাচক প্রয়োগশৈলী আদিষ্ট কর্মটিকে আবশ্যকীয়ভাবে পালনের অর্থই নির্দেশ করে।
তাছাড়া যুক্তির দাবীও একথা বলে যে, ইচ্ছায় সালাত তরককারীকে অনাদায়ী নামাজগুলোর কাজা করে নিতে হবে। কারণ গুনাহগার না হওয়া সত্ত্বেও নিদ্রারত কিংবা অনিচ্ছায় নামাজ ছুটে যাওয়া ব্যাক্তিকে যেখানে নামাজ কাযা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, সেখানে ইচ্ছায় নামাজ তরককারী ব্যক্তির কাজা আদায়ের আবশ্যকীয়তা আরো অধিকভাবে প্রযোজ্য। সূত্র: তাফসিরে কুরতুবি-১৮/৯৭
আয়াত নং -০২
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
ব্যাখ্যা: এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা তওবা করতে আদেশ দিয়েছেন, ইচ্ছা করে নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ এর অন্তর্ভুক্ত। আর ছুটে যাওয়া নামাজ পরবর্তীতে আদায় করা তওবার শামিল। এ বিষয়ে 'ঘ' নং প্রশ্নের জবাবে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
হাদিস থেকে দলিল:
হাদিস নং -০১
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا رَقَدَ أَحَدُكُمْ عَنِ الصَّلاَةِ أَوْ غَفَلَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ يَقُولُ أَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِى
হজরত আনাস রা. হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামায ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়ে, বা নামায থেকে গাফেল হয়ে যায়, তাহলে তার যখন বোধোদয় হবে তখন সে যেন তা আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-আমাকে স্মরণ হলে নামায আদায় কর। তাখরিজ: সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬০১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১২৯৩২; সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪১৮২
হাদিস নং -০২
598 - حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى القَطَّانُ، أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: " جَعَلَ عُمَرُ يَوْمَ الخَنْدَقِ يَسُبُّ كُفَّارَهُمْ، وَقَالَ: مَا كِدْتُ أُصَلِّي العَصْرَ حَتَّى غَرَبَتْ، قَالَ: فَنَزَلْنَا بُطْحَانَ، فَصَلَّى بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى المَغْرِبَ "
জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধকালে এক সময় উমর (রাযিঃ) কুরাইশ কাফিরদের ভর্ৎসনা করতে লাগলেন এবং বললেন, সূর্যাস্তের পূর্বে আমি আসরের নামায আদায় করতে পরিনি, (জাবির (রাযিঃ) বলেন) তারপর আমরা বুতহান উপত্যকায় উপস্থিত হলাম। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের পর সে নামায আদায় করলেন, তারপরে মাগরিবের নামায আদায় করলেন। সহীহ বুখারী, হাদীস নং আন্তর্জাতিক নং ৫৯৮
হাদিস নং -০৩
حدثنا ابو مصعب، احمد بن ابي بكر المديني وسويد بن سعيد قالا حدثنا عبد الرحمن بن زيد بن اسلم، عن ابيه، عن عطاء بن يسار، عن ابي سعيد، قال قال رسول الله ـ صلى الله عليه وسلم ـ “ من نام عن الوتر او نسيه فليصل اذا اصبح او ذكره ”
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিতর সালাত না পড়ে ঘুমিয়ে গেলো বা তা পড়তে ভুলে গেলো, সে যেন ভোরবেলা অথবা যখন তার স্মরণ হয় তখন তা পড়ে নেয়। তাখরিজ: ইবনে মাজাহ-হা/১১৮৮; মিশকাত-হা/১২৭৯; বুলুগুল মারাম-হা/৩৮৮; আবূ দাঊদ-হা/১৪৩১
ইজমা:
ইমাম ইবনে আব্দুল বার র. বিনা ওযরে কাযাকৃত (ছেড়ে দেয়া) নামায আদায় করা অপরিহার্য হওয়ার স্বপক্ষে শরয়ী প্রমাণাদি উল্লেখ করতে গিয়ে বলেন:
ومن الدليل على أن الصلاة تصلي وتقضى بعد خروج وقتها كالصائم سواء وإن كان إجماع الأمة الذين أمر من شذ منهم بالرجوع إليهم وترك الخروج عن سبيلهم يغني عن الدليل في ذلك قوله عليه السلام. . . الاستذكار ۱/٣۰۲–٣۰٣
“ফরয রোযার মত ফরয নামাযও সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে কাযা করতে হয়। এ ব্যাপারে যদিও উম্মতের ইজমাই যথেষ্ট দলীল, যার অনুসরণ করা ঐ সব বিচ্ছিন্ন মতের প্রবক্তাদের জন্যও অপরিহার্য ছিল: তারপরও কিছু দলিল উল্লেখ করা হল। যথা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী…..। উপরের উল্লেখিত হাদিস গুলো। সূত্র: আল ইসতিযকার-১/৩০২, ৩০৩
প্রশ্ন: খ। শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ এবং আহলে হাদিসের দলিল কী?
উত্তর: খ। শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ, তার ছাত্র, আলবানি রহ. এবং বর্তমান যুগে তার অনুসারী দাবিদার আহলে হাদিসের মতে, কাজা প্রয়োজন নেই, শুধু তওবা করলেই যথেষ্ট। দলিল:
আয়াত নং -০১
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
বলুন, হে আমার বান্দাগণ যারা নিজেদের উপর যুলুম করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা যুমার-৫৩
হাদিস নং -০১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الرَّقَاشِيُّ، حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ : " التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ كَمَنْ لاَ ذَنْبَ لَهُ " .
আবু উবায়দা ইবন আব্দুল্লাহ (রাহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেনঃ গুনাহ থেকে তাওবাকারীর উপমা হচ্ছে সেই ব্যক্তির মত, যার কোন গুনাহ নেই। সুনানে ইবনে মাজা' আন্তর্জাতিক নং ৪২৫০
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)
ফকিহদের মতামত:
হানাফি মাযহাবের সুপ্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা ইমাম ইবনে নুজাইম র. লেখেন,
أما الثاني فهو لزوم قضاء الفائتة فالأصل فيه أن كل صلاة فاتت عن الوقت بعد ثبوت وجوبها فيه فإنه يلزم قضاؤها سواء تركها عمدا أو سهوا أو بسبب نوم وسواء كانت الفوائت كثيرة أو قليلة
ওয়াজিব হওয়ার পর থেকে যখনই কোনো নামাজ ছুটে যায় সেটা কাযা করা জরুরি। চাই সেটা ভুলে হোক, ঘুমে হোক কিংবা ‘ইচ্ছাকৃত’ভাবে হোক। পরিমাণ কম হোক কিংবা বেশি হোক। সূত্র: বাহরুর রায়েক-২/৮৬
ইমাম মালেক রহ. বলেন,
حتى يأتي علي جميع ما نفسي او ترك
অর্থাৎ যে ব্যক্তির অনেক কাজা নামাজ রয়েছে, সে তার সকল কাজা নামাজ পড়বে। এমনকি সে তার ভুলক্রমে বা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়া সকল নামাজই কাজা করবে। সূত্র: আল মুদাউওয়ানাতুল কুবরা -১/২১৫
ইমাম শাফি রহ. বলেন,
مكتوبة فاكثر ما فإنه بعذر او غيره (من فاتته)
যে ব্যক্তির এক বা একাধিক ফরজ নামাজ ছুটে গিয়েছে, তার জন্য তারা ছুটে যায় নামাজগুলো আদায় করে নেওয়া জরুরি। কোন ওজরের কারণে ছুটে থাকুক বা বিনা ওজরে ছুটুক। সূত্র: ফাতহুল জাওওয়াদ-১/২২৩
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. একান্ত বিশ্বস্ত বর্ণনাকারী আল্লামা মরদাবী রহ. কাজা নামাজ সম্পর্কে হাম্বলী মাজহাবের ভাষ্যকে এভাবে লিখেন।
و من فاتته صلوات لزمه قضاؤها علي الفور
অর্থাৎ যার অনেক নামাজ ছুটে গেছে তার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে এসব নামাজ কাজা করা ওয়াজিব। সূত্র: আল ইনসাফ -১/৪৪২
প্রশ্ন: গ। শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ এবং আহলে হাদিসদের মতে খণ্ডন কিভাবে?
উত্তর: গ। শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহ, তার ছাত্র, আলবানি রহ এবং বর্তমান যুগে তার অনুসারী দাবিদার আহলে হাদিসদের প্রধান দলিল (উপরে উল্লেখ করা হয়েছে) হলো, তওবা করলেই যথেষ্ট, কাজা লাগবে না।
তাদের এ কথা সঠিক নয়। কেননা কাজা নামাজ আদায় করাও তওবার অন্তর্ভুক্ত। দলিল:
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ نَسِيَ صَلاَةً أَوْ نَامَ عَنْهَا فَكَفَّارَتُهَا أَنْ يُصَلِّيَهَا إِذَا ذَكَرَهَا " .
আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি নামাযের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পড়ে, তবে এর কাফফারা হলো স্মরণ হওয়ামাত্র তা আদায় করে নেয়া। সহীহ মুসলিম, আন্তর্জাতিক নং ৬৮৪-৩
আর দ্বিতীয় কথা,
এ বিষয়টি সর্বজন স্বীকৃত যে, হুকূকুল ইবাদ বা বান্দার হক বিনষ্ট করা হলে শুধু অনুতপ্ত হওয়া ও ইসতিগফার করাই তাওবার জন্য যথেষ্ট নয়; বরং হকদারের প্রাপ্য আদায় করাও তাওবার অপরিহার্য অংশ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক সহীহ হাদীসে ‘আল্লাহর হক্ব’কে বান্দার হক্বের সাথে তুলনা করে বলেন: دين الله احق بالوفاء ‘আল্লাহর হক্ব বিনষ্ট হলে তা আদায় করা (বান্দার হক্বের চেয়ে) অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।’
দলিল:
1953 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيمِ، حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُسْلِمٍ البَطِينِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ شَهْرٍ، أَفَأَقْضِيهِ عَنْهَا؟ قَالَ: " نَعَمْ، قَالَ: فَدَيْنُ اللَّهِ أَحَقُّ أَنْ يُقْضَى "، قَالَ سُلَيْمَانُ: فَقَالَ الحَكَمُ، وَسَلَمَةُ، - وَنَحْنُ جَمِيعًا جُلُوسٌ حِينَ حَدَّثَ مُسْلِمٌ بِهَذَا الحَدِيثِ - قَالاَ: سَمِعْنَا مُجَاهِدًا، يَذْكُرُ هَذَا، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي خَالِدٍ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنِ [ص:36] الحَكَمِ، وَمُسْلِمٍ البَطِينِ، وَسَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، وَعَطَاءٍ، وَمُجَاهِدٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أُخْتِي مَاتَتْ، وَقَالَ يَحْيَى، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ: حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ مُسْلِمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ، وَقَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ: عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، عَنِ الحَكَمِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا صَوْمُ نَذْرٍ، وَقَالَ أَبُو حَرِيزٍ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ، عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ: قَالَتِ امْرَأَةٌ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَاتَتْ أُمِّي وَعَلَيْهَا صَوْمُ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার মা এক মাসের রোযা যিম্মায় রেখে মারা গেছেন, আমি কি তার পক্ষ থেকে রোযা কাযা করতে পারি? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আল্লাহর ঋণ পরিশোধ করাই হল অধিক যোগ্য।
আবু খালিদ আহমার (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন মহিলা নবী (ﷺ) কে বলল, আমার বোন মারা গেছে। ইয়াহয়া (রাহঃ) ও আবু মআবিয়া (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী (ﷺ) কে বলল, আমার মা মারা গেছেন। উবাইদুল্লাহ (রাহঃ)......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী (ﷺ) কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় মানতের রোযা রয়েছে। আবু হারীয (রাহঃ) ......... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, এক মহিলা নবী (ﷺ) কে বলল, আমার মা মারা গেছে, অথচ তার যিম্মায় পনের দিনের রোযা রয়ে গেছে। তাখরিজ: বুখারী, হাদীস আন্তর্জাতিক নং ১৯৫৩
অতএব আলোচ্য মাসআলাতে নামাযের কাযা আদায় করা ‘তাওবা’রই অংশ। কৃতকর্মের উপর অনুতপ্ত হওয়া, আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা , আগামীতে এ কাজ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প
হওয়া এবং ছুটে যাওয়া নামাযসমূহ আদায় করা: এসব মিলেই ব্যাক্তির তাওবা পূর্ণ হবে। অতএব তাওবাই যথেষ্ট কথাটি ঠিক, কিন্তু মনে রাখতে হবে তওবার মধ্যে কাযা হয়ে যাওয়া নামাযসমূহ আদায় করাও অন্তর্ভুক্ত । শরীয়তের দলীলসমূহ থেকে তাই প্রমাণ হয় এবং এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমাও হয়েছে।
প্রশ্ন: ঘ। ফজরের সময় এবং আসরের পর কাজা নামাজ আদায় করা যাবে কি?
উত্তর: ঘ। ফজরের ওয়াক্ত হতে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এবং আসরের পরে মাগরিব পর্যন্ত নফল নামাজ পড়া জায়েজ নেই। দলিল:
হাদিস নং-০১
وَحَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ زَيْدِ بْنِ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا، يُحَدِّثُ عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ حَفْصَةَ، قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ لاَ يُصَلِّي إِلاَّ رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ .
হাফসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ফজরের সময় হলে সংক্ষিপ্ত দু’রাক’আত ছাড়া অন্য কোন নামায আদায় করতেন না।
সহীহ মুসলিম, আন্তর্জাতিক নং ৭২৩-৩
হাদিস নং -০২
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -ﷺ- نَهَى عَنِ الصَّلاَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ
রাসূল ﷺ আসরের পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। সহিহ মুসলিম ১৯৫৭
তবে এ উভয় সময়ে কাজা নামাজ ও তেলাওয়াতে সেজদা করতে পারবে। দলিল:
ويكره أن يتنفل بعد الفجر حتى تطلع الشمس وبعد العصر حتى تغرب، ولا بأس بأن يصلى فى هذين الوقتين الفوائت (هداية-1/86)
ফজরের ওয়াক্ত হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এবং আসরের পর মাগরিব পর্যন্ত নফল নামাজ পড়া মাকরূহ তাহরিমি। তবে এই দুই সময় ছুটে যাওয়া তথা কাজা নামাজ পড়তে কোন বাধা নেই। সূত্র: হিদায়া -১/৮৬
ومنع عن الصلاة …… بعد صلاة العصر والفجر، لا عن قضاء فائتة وسجدة تلاوة (مجمع الانهر-1/110، البحر الرائق-1/249
আসর এবং ফজরের পরে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ, তবে ছুটে যাওয়া নামাজ কাজা আদায় করা এবং তেলাওয়াতের সেজদা করা নিষেধ নয়। সূত্র: মাজমাউল আনওয়ার -১/১১০; আলবাহরুর রায়েক -১/২৪৯
প্রশ্ন: ঙ। কাযা নামাজ আদায় করার জন্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়া জায়েয আছে?
উত্তর: ঙ। কাজা নামাজ আদায়ের জন্য লাগাতার সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নেই। কারণ, সুন্নত মুয়াক্কাদা আদায় করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তাই ধারাবাহিকভাবে এমন করলে এর কারণে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়ার গুনাহ হবে। এজন্য ফরজ নামাজের কাজা আদায়ের জন্য সুন্নত নামাজ ছাড়া উচিত নয়। -(দুররুল মুহতার, ২/৭২, দারুল কুতুব আল ইলমিইয়্যাহ, ৪৪৭)
তবে শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ এর ফাতওয়াও তাই-
المسارعة الى قضاء الفوائت الحثيرة اولى من الأشتغال بالنوافل، واما مع قلة الفوائت فقضاء السنن معها احسن،
যদি কাযা নামাযের পরিমাণ অনেক বেশি হয়,ম তবে সুন্নাত নামাযে লিপ্ত হওয়ার চেয়ে ফরয নামাযসমূহ আদায় করাই উত্তম। আর যদি কাযা নামাযের পরিমাণ কম হয়,তবে ফরযের সাথে সুন্নাত নামায আদায় করলে তা একটি উত্তম কাজ হবে। সূত্র: ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-২২/১০৪
সারকথা হলো, উমরী কাযা ভিত্তিহীন, কাযা আদায় না করে শুধু তাওবাই যথেষ্ট-প্রশ্নের এসব কথা সহীহ নয়। তদ্রূপ একথাও সহীহ নয় যে, উমরী কাযায় সময় ব্যয় না করে নফল ও তাহাজ্জুদ আদায় করা উচিত। এর স্বপক্ষে যে দলীল পেশ করা হয়েছে তাও ঠিক নয়। কারণ সুনানে আবু দাউদে প্রশ্নোক্ত হাদীসটির মূল পাঠ হল-
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ حَكِيمٍ الضَّبِّيِّ، قَالَ خَافَ مِنْ زِيَادٍ أَوِ ابْنِ زِيَادٍ فَأَتَى الْمَدِينَةَ فَلَقِيَ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ فَنَسَبَنِي فَانْتَسَبْتُ لَهُ فَقَالَ يَا فَتَى أَلاَ أُحَدِّثُكَ حَدِيثًا قَالَ قُلْتُ بَلَى رَحِمَكَ اللَّهُ . قَالَ يُونُسُ أَحْسِبُهُ ذَكَرَهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ النَّاسُ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ أَعْمَالِهِمُ الصَّلاَةُ قَالَ يَقُولُ رَبُّنَا جَلَّ وَعَزَّ لِمَلاَئِكَتِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ انْظُرُوا فِي صَلاَةِ عَبْدِي أَتَمَّهَا أَمْ نَقَصَهَا فَإِنْ كَانَتْ تَامَّةً كُتِبَتْ لَهُ تَامَّةً وَإِنْ كَانَ انْتَقَصَ مِنْهَا شَيْئًا قَالَ انْظُرُوا هَلْ لِعَبْدِي مِنْ تَطَوُّعٍ فَإِنْ كَانَ لَهُ تَطَوُّعٌ قَالَ أَتِمُّوا لِعَبْدِي فَرِيضَتَهُ مِنْ تَطَوُّعِهِ ثُمَّ تُؤْخَذُ الأَعْمَالُ عَلَى ذَاكُمْ " .
আনাস ইবনে হাকীম আদ-দাব্বী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিনি যিয়াদ অথবা ইবনে যিয়াদের ভয়ে মদীনায় চলে আসেন এবং আবু হুরায়রা (রাযিঃ) এর সাথে সাক্ষাত করেন। আবু হুরায়রা (রাযিঃ) আমাকে তাঁর বংশ-পরিচয় প্রদান করেন এবং আমি আমার পরিচয় প্রদান করি। তিনি আমাকে বলেনঃ হে যুবক! আমি কি তোমার নিকট হাদীস বর্ণনা করব না? জবাবে আমি বলিঃ হ্যাঁ, আল্লাহ্ আপনার উপর রহম করুন। রাবী ইউনুস বলেনঃ আমি মনে করি তিনি এই হাদীসটি সরাসরি নবী (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন। নবী (ﷺ) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন লোকদের আমলসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম তাদের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের মহান রব ফিরিশতাদের বান্দার নামায সম্পর্কে স্বয়ং জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও জিজ্ঞাসা করবেন, দেখতো সে তা পূর্ণ রূপে আদায় করেছে না তাতে কোন ক্রটি আছে? অতঃপর বান্দার নামায পরিপূর্ণ হলে তা তদ্রূপই লিখিত হবে। অপর পক্ষে যদি তাতে কোন ক্রটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয় তবে তিনি (রব) ফিরিশতাদের বলবেনঃ দেখতো আমার বান্দার কোন নফল নামায আছে কি? যদি থাকে তবে তিনি বলবেন, তোমরা তার নফল নামায দ্বারা তার ফরয নামাযের ক্রটি দূর কর। অতঃপর এইরূপে সমস্ত ফরয আমলের ক্রটি নফল দ্বারা দূরীভূত করা হবে। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৮৬৪ (আন্তর্জাতিক নং ৮৬৪)
উক্ত হাদীসে ‘কারো ফরয নামায কম পড়ে গেলে নফল দ্বারা তা পূর্ণ করা হবে’-যেমনটি প্রশ্নে উল্লেখ হয়েছে-এ কথা নেই; রবং এতে রয়েছে, আদায়কৃত নামাযে ত্রুটির বিষয়।
والله اعلم بالصواب