আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-২৩৩: একসাথে তিন তালাক দিলে কয় তালাক কার্যকর হবে?

No Comments

 












জিজ্ঞাসা-২৩৩:  একত্রে তিন তালাক দিলেও যে এক তালাক পতিত হয়জনৈক ব্যক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাচ্ছিলেনঅর্থাৎ সে মোবাইলে তার স্ত্রী কে এভাবে বলেছে, "তোকে এক তালাকদুই তালাকতিন তালাক" এখন তার স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক কেমন হবেএকেবারে বিচ্ছিন্ন নাকি (তারিখ-২০/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি)

মাওলানা মোহাম্মাদ আব্দুর রহমান বগুড়া থেকে


জবাব:  ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ ও বারাকাতুহ। এটি একটি বহুল আলোচিত মাসয়লাযা জমহুর ওলামা-ফোকাহার বিপরীতে বিচ্ছিন্ন একটি মত। বর্তমান নেট জগতে প্রচারের কারণে অনেকে মনে করা শুরু করেছে এটাই মনে হয় সঠিক। যাইহোক আপনার প্রশ্নকে সহজভাবে বুঝার জন্য কয়েকভাগে করছি।

 গত দুইদিন  আগে এর সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়েছি। এখন বিস্তারিত লেখার ইচ্ছা রাখি। 

ونسأل الله التوفيق وهو الموفق والمعين

 প্রশ্ন:        ক।   একসাথে তিন তালাক দিলে, তাহলে কয় তালাক পতিত হবেএব্যাপারে কয়টি মতামত আছে/পাওয়া যায়।

 উত্তর:       ক।    কেউ যদি তার স্ত্রীকে এক মাজলিসে বা একসাথে তিন তালাক দেয় তাহলে কয় তালাক পতিত হবেএ ব্যাপারে তিনটি মতামত পাওয়া যায় যথা-

প্রথম মত:

শিআদের শাখা জাফরীদের মতামত হলো: এর দ্বারা কোনো তালাক হবে না। যেহেতু সালাফে সালেহীনের কারো থেকে এ ধরনের উক্তি বর্ণিত হয়নিতাই এ মাযহাব বাতিল। এ নিয়ে কোনো আলোচনার প্রয়োজন নেই। সূত্রতাকমিলায়ে ফাতহুল মলহীম: ১/১১১ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়াহ: ১৭/৯


দ্বিতীয় মত:

ইবনে তাইমিয়াহ রহ. ও ইবনুল কাইয়্যিম রহ. এবং বর্তমানে তাদের অনুসারি আহলে হাদিস এর মতে: এর দ্বারা এক তালাক হবেযদিও তালাক দাতা তিন তালাকের নিয়ত করে থাকে। সূত্রতাকমিলায়ে ফাতহুল মলহীম: ১/১১৫


তৃতীয় মত:

ফকিহ সাহাবি, (যেমনহযরত উমরআলীউসমানইবনে মাসউদইবনে উমরইবনে আমরউবাদাহ বিন সামিতআবূ হুরাইরাইবনে আব্বাসইবনে যুবায়েরআসেম বিন উমর ও হযরত আয়িশা রা. আয়িম্মায়ে আরবা (ইমাম আবূ হানীফাইমাম মালেকইমাম শাফিঈইমাম আহমাদইমাম বুখারী রহ.-সহ অধিকাংশ তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈদের মতামত হলো: এক মাজলিসে বা একসাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক হয়ে যাবে এবং অন্যত্র বিবাহের পর দ্বিতীয় স্বামীর সাথে মেলামেশা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম স্বামীর জন্য উক্ত স্ত্রী হালাল হবে না।

প্রশ্ন:  খ।   তৃতীয় মতামত/মাযহাবের দলীল কি?

উত্তরখ।  তৃতীয় মতামত/মাযহাবের দলীল নিম্নরুপ:


কুরআন থেকে দলীল:

আয়াত নং-০১

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠]

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবেতার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কতৃ নির্ধারিত সীমাযারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। সূরা বাকারা-২৩০

আয়াত নং-০২

یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَطَلِّقُوۡهُنَّ لِعِدَّتِهِنَّ وَ اَحۡصُوا الۡعِدَّۃَ ۚ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ رَبَّکُمۡ ۚ لَا تُخۡرِجُوۡهُنَّ مِنۡۢ بُیُوۡتِهِنَّ وَ لَا یَخۡرُجۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ یَّاۡتِیۡنَ بِفَاحِشَۃٍ مُّبَیِّنَۃٍ ؕ وَ تِلۡکَ حُدُوۡدُ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَعَدَّ حُدُوۡدَ اللّٰهِ فَقَدۡ ظَلَمَ نَفۡسَهٗ ؕ لَا تَدۡرِیۡ لَعَلَّ اللّٰهَ یُحۡدِثُ بَعۡدَ ذٰلِکَ اَمۡرًا-------

 অর্থ:  হে নবী! বলে দিনযখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ইচ্ছা করোতখন তাদের ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তালাক দিও যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করেআল্লাহ তার জন্য পথ বের করে দিবেন সূরা তালাক: ১-২

এ আয়াত প্রমাণ করে যেইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য না রেখে তালাক দিলেও তালাক হয়ে যাবে। কেননা যদি তালাক না হয়তাহলে সে নিজের উপর জুলুমকারীও হবে না এবং স্ত্রীকে ফেরত নেয়ার পথও বন্ধ হবে নাযেদিকে এ আয়াত ইশারা করছেযে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করেআল্লাহ তার জন্য পথ বের করে দিবেন


হাদিস থেকে দলীল:

হাদিস নং-০১


وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে এক সাথে তিন তালাক দিলে ‎তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজুকরা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। ‎কারণ,রাসুলুল্লাহ () আমাকে এরকম অবস্থায় রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। ‎যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবেসে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। তাখরিজসহীহ বুখারী-২/৭৯২২/৮০৩

হাদিস নং-০২

نا علي بن محمد بن عبيد الحافظ نا محمد بن شاذان الجوهري نا معلى بن منصور نا شعيب بن رزيق أن عطاء الخراساني حدثهم عن الحسن قال نا عبد الله بن عمر أنه طلق امرأته تطليقة وهي حائض ثم أراد أن يتبعها بتطليقتين أخراوين عندgoog_302898722القرئين فبلغ ذلك رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال : يا بن عمر ما هكذا أمرك الله إنك قد أخطأت السنة والسنة أن تستقبل الطهر فيطلق لكل قروء قال فأمرني رسول الله صلى الله عليه و سلم فراجعتها ثم قال إذا هي طهرت فطلق عند ذلك أو أمسك فقلت يا رسول الله رأيت لو أني طلقتها ثلاثا أكان يحل لي أن أراجعها قال لا كانت تبين منك وتكون معصية

অর্থ: হযরত হাসান রাঃ বলেন,হযরত ইবনে উমর রাঃ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে,তিনি আপন স্ত্রীকে হায়য অবস্থায় এক তালাক দিয়েছিলেনঅতঃপর ইচ্ছা করলেন যে,  দুই তুহুরে [হায়য থেকে পবিত্র অবস্থায়] অবশিষ্ট দুই তালাক দিয়ে দিবেন। হুজুর () এই বিষয়ে অবগত হওয়ার পর বলেন-ইবনে ওমর! এভাবে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে হুকুম ‎‎দেননি। তুমি সুন্নাতের বিপরীত কাজ করেছ [হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছ]

তালাকের শরিয়ত সমর্থিত পদ্ধতি হল,তুহুর পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। প্রত্যেক তুহুরে এক তালাক দেয়া। তার পর রাসুলুল্লাহ (রুজু করার নির্দেশ দিলেন। এ জন্য আমি রুজু করে নিয়েছি। অতঃপর তিনি বললেন,সে পবিত্র হওয়ার পর ‎‎তোমার এখতিয়ার থাকবে। চাইলে তুমি তালাকও দিতে পারবে,বা তাকে নিজের কাছে রাখতে পারবে।

হযরত ইবনে উমর রাঃ বলেন-তারপর আমি রসূল ()কে জিজ্ঞাসা করলাম-ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যদি তিন তালাক দেই তখনও কি রুজু করার অধিকার থাকবেহুজুর () বলেন- না। তখন স্ত্রী ‎‎তোমার কাছ থেকে পৃথক হয়ে যাবে। এবং তোমার এই কাজ (এক সাথে তিন তালাক ‎‎দেয়া) গুনাহের কাজ সাব্যস্ত হবে। তাখরিজসুনানে দারা কুতনী-৮৪যাদুল মাআদ-২/২৫৭সুনানে বায়হাকী কুবরা-১৪৭৩২

 

হাদিস নং-০৩

হযরত আয়িশা রা. থেকে বর্ণিতএকব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলো। অতঃপর ঐ মহিলা অন্যজনকে বিবাহ করলে সেও তাকে তালাক দিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ ()-এর কাছে জিজ্ঞাসা করা হলোসেকি প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হয়েছেউত্তরে তিনি বললেননা। যতোক্ষণ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্বামী প্রথমজনের মতো ঐ মহিলার মধু আস্বাদন না করবেঅর্থাৎ যতোক্ষণ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্বামী তার সাথে সহবাস না করবেততোক্ষণ পর্যন্ত সে প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না। (সহীহ বুখারী: ৫২৬১)

 

বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেনএটা রিফাআ বিন ওয়াহাবের ঘটনা- যে তার স্ত্রীকে একসাথে তিন তালাক দিয়েছিলোএটাই স্পষ্ট। রিফাআ আল কুরাযীর ঘটনা নয়যে তার স্ত্রীকে সর্বশেষ তালাক দিয়েছিলো। যে ব্যক্তি উক্ত দুজনকে এক মনে করেছেসে ভুল করেছে। ভুলের উৎস হলোতালাকপ্রাপ্তা উভয় মহিলাকেই আব্দুর রহমান বিন জাবীর রা. বিবাহ করেছিলেন। ফাতহুল বারী: ৯/৫৮১

 

হাদিস নং-০৪

 হযরত উয়াইমির রা. লিআনের পর বলেনহে আল্লাহর রাসূল! আমি যদি আমার স্ত্রীকে রাখি তাহলে তার উপর মিথ্যারোপ করেছি একথা বলে তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দিলেন। বুখারী: ৫২৫৯

আল্লামা যাহেদ কাউসারী রহ. বলেনকোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় না যেরাসূলুল্লাহ () তার এ কাজকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখান থেকে উম্মত এটাই বুঝেছে যেএকসাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই হয়ে যায়যদি উম্মতের এ বুঝ সহীহ না হতো তাহলে সঠিকটা রাসূলুল্লাহ () অবশ্যই বলে দিতেন। সূত্রতাকমিলায়ে ফাতহুল মলহীম: ১/১১২লাউস সুনান: ৭/৭০৬


হাদিস নং-০৫

মাহমূদ বিন লাবীদ রা. হতে বর্ণিতএকব্যক্তি তার স্ত্রীকে একসাথে তিন তালাক দিলে রাসূল () রাগান্বিত হয়ে যান। তাখরিজ নাসাঈ-৩৪৩১


 এখানে রাসূল ()-এর রাগান্বিত হওয়াই তিন তালাক হয়ে যাওয়ার প্রমাণ। কেননাএকসাথে তিন তালাক দেয়া গুনাহের কাজ। এ গুনাহের উপর রাসূলুল্লাহ () নারাজ হয়েছিলেন।

 

আসার নং-০১

عن مجاهد قال كنت عند ابن عباس فجاء رجل فقال إنه طلق امرأته ثلاثاقال فسكت حتى ظننت أنه رادها إليه ثم قال ينطلق أحدكم فيركب الحموقة ثم يقول يا ابن عباس يا ابن عباس وإن الله قال (وَمَنْ يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَلْ لَهُ مَخْرَجًاوإنك لم تتق الله فلم أجد لك مخرجا عصيت ربك وبانت منك امرأتك

অর্থ: হযরত মুজাহিদ রহঃ. বলেন,আমি ইবনে আব্বাস রাঃ-এর পাশে ছিলাম। সে সময় এক ব্যক্তি ‎এসে বলেন-সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ চুপ করে রইলেন। আমি ‎মনে মনে ভাবছিলাম-হয়ত তিনি তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার কথা বলবেন (রুজু করার হুকুম দিবেন)। কিছুক্ষণ ‎পর ইবনে আব্বাস রা. বলেন,তোমাদের অনেকে নির্বোধের মত কাজ কর;[তিন তালাক দিয়ে দাও!] তারপর ইবনে ‎আব্বাস! ইবনে আব্বাস! বলে চিৎকার করতে থাক। শুনে রাখ আল্লাহ তায়ালা বাণী-যে ‎ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য পথকে খুলে দেন। তুমিতো স্বীয় রবের নাফরমানী করেছো [তিন তালাক দিয়ে]। এ কারণে তোমার স্ত্রী তোমার থেকে পৃথক হয়ে গেছে। তাখরিজসুনানে আবু দাউদ-২১৯৯সুনানে বায়হাকী কুবরা-১৪৭২০সুনানে দারা কুতনী-১৪৩

 

আসার নং-০২

عن مالك أنه بلغه أن رجلا قال لعبد الله بن عباس إني طلقت امرأتي مائة تطليقة فماذا ترى علي فقال له ابن عباس طلقت منك لثلاث وسبع وتسعون اتخذت بها آيات الله هزوا

অর্থ: হযরত ইমাম মালেক রহঃ এর কাছে এ বর্ণনা পৌঁছেছে যেএক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ এর ‎কাছে জিজ্ঞাসা করল-আমি আমার স্ত্রীকে একশত তালাক দিয়েছি,এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কিতখন ইবনে আব্বাস রা. বলেনতুমি যা দিয়েছ তা থেকে তিন তালাক তোমার স্ত্রীর উপর ‎পতিত হয়েছে,আর সাতানব্বই তালাকের মাধ্যমে তুমি আল্লাহ তায়ালার সাথে উপহাস ‎করেছ। তাখরিজমুয়াত্তা মালেক;১৯৯হাদীস নং-২০২১


আসার নং-০৩

عن مالك أنه بلغه أن رجلا جاء إلى عبد الله بن مسعود فقال إني طلقت امرأتي ثماني تطليقات فقال ابن مسعود فماذا قيل لك قال قيل لي إنها قد بانت مني فقال ابن مسعود صدقوا

অর্থ: হযরত ইমাম মালেক রহঃ এর কাছে এ বর্ণনা পৌঁছেছে যেএক ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‎মাসউদ রাঃ এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বলেনআমি আমার স্ত্রীকে আট তালাক দিয়েছি। ‎হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন,লোকেরা তোমাকে কি বলেছেসে উত্তর দিল,তারা বলল ‎‘‘তোমার স্ত্রী বায়ানা’ তালাক প্রাপ্ত হয়ে গেছে’’ তখন হযরত ইবনে মাসউদ রাঃ বলেন,তারা  সত্য বলেছে। অর্থাৎ তিন তালাক পতিত হয়েছে। তাখরিজমুয়াত্তা মালিক-২০২২


আসার-০৪

 হযরত হাসান বিন আলী রা. তার স্ত্রী আয়িশা বিনতে ফযলকে একসাথে তিন তালাক দিলেন। অতঃপর তার স্ত্রীর আবেগময় কথা শুনে কেঁদে ফেলেন এবং বলেনযদি আমি নানাকে (অন্য বর্ণনায় তার পিতার বরাত দিয়ে বলেন) একথা বলতে না শুনতামকোনোব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেয়তবে ঐ স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ না বসা পর্যন্ত তার জন্য হালাল হবে নাতাহলে অবশ্যই তাকে ফেরত নিতাম  সুনানে বাইহাকী-১৪৯৭১


আসার নং-০৫

ওয়াকে বিন সাহবান রা. বলেন যেইমরান বিন হাসীন রা.কে একব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলোযে তার স্ত্রীকে এক মাজলিসে তিন তালাক দিয়েছে। ইমরান রা. উত্তর দিলেনসে তার প্রতিপালকের নাফরমানি করেছে এবং তার জন্য তার স্ত্রী হারাম হয়ে গেছে। তাখরিজমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-১৮০৮৮


আসার নং-০৬

হযরত উমর রা.-এর কাছে এক ব্যক্তিকে আনা হলোযে তার স্ত্রীকে একহাজার তালাক দিয়েছেআর সে বলছেএর দ্বারা আমি খেল-তামাশা করেছি। হযরত উমর রা. তাকে বেত্রাঘাত করে বললেনএকহাজার থেকে তোমার জন্য তিনটিই যথেষ্ট হয়ে গেছে। তাখরিজমুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক হা. নং ১১৩৪০সুনানে বাইহাকী-১৪৯৫৭

 

ফকিহদের মতামত:

হাফেজ ইবনে রজব রহ. বলেনজেনে রাখো! কোনো সাহাবাকোনো তাবেঈ ও সালফে সালেহীনের মধ্যে যাদের কথা হালাল-হারাম ও ফাতাওয়ার ব্যাপারে গ্রহণযোগ্য হয়তাদের কারো থেকে এ ধরনের সুস্পষ্ট কথা বর্ণিত হয়নি যেস্বামী তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়ার পর একসাথে তিন তালাক দিলে এক তালাক ধরা হবে লাউস সুনান: ৭/৭১০


প্রশ্ন:   গ।   একসাথে তিন তালাক দিলেতিন তালাকই পতিত হবে এ বিষয়ে ইজমা হয়েছে কি?


উত্তর:  গ।  হ্যাঁএ বিষয়ে সাহাবি-আয়িম্মায়ে মুজতাহিদগণের ইজমা হয়েছে যেএকসাথে তিন তালাক দিলেতিন তালাকই পতিত হবে। যেমন, হাফেজ ইবনুল হুমাম ফাতহুল ক্বদীরেইবনে হাজার ফাতহুল বারীতেইমাম তহাবী শরহু মাআনিল আসারেআবূ বকর জাসসাস আহকামুল কুরআনেআবূল ওয়ালীদ বাজী আল-মুনতাকাতেইবনুল হাদী সিয়ারুল হাসসি ফী ইলমিত তালাকেআল্লামা যুরকানী শরহে মুআত্তায়ইবনুততীন শরহে বুখারীতেইবনে হাযাম জহেরী মুহাল্লাতেআল্লামা খত্তাবী শরহে সুনানে আবূ দাউদেহাফেয ইবনে আব্দুল বার তামহীদ ও ইস্তিযকারে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যেহযরত উমর রা.-এর যুগে একই মাজলিসে তিন তালাকে তিন তালাক হওয়ার উপর সাহাবায়ে কিরামের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর হাফেজ ইবনে হাজার রহ. বলেনসাহাবীগণের ইজমা দলীল হওয়ার বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের মধ্যে মতৈক্য কায়েম হয়েছে। ফতহুল বারী: ১৩/২৬৬

 

প্রশ্ন:    ঘ। এ বিষয়ে যে ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা ইবনে তাইমিয়া কোন সমর্থন আছে কি?

উত্তর:   ঘ।  হ্যাঁতার কথা দ্বারাই প্রমাণিত হয়যেএই মাসয়ালা ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

 

Ø ইবনে তাইমিয়া রহ. (যিনি এক তালাক হওয়ার প্রবক্তা) বলেনএকসাথে তিন তালাক দিলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে এবং তিন তালাকপ্রাপ্তা হয়ে যাবে। এটা ইমাম মালেকইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আহমাদের শেষ উক্তি এবং অধিকাংশ সাহাবা ও তাবেঈ থেকে বর্ণিত। ফাতাওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়াহ: ১৭/৮

 

Ø ইবনুল কাইয়্যিম রহ. (তিনিও এক তালাকের প্রবক্তা) বলেনএক সাথে তিন তালাক দিয়ে দিলে তালাক হওয়ার ব্যাপারে চারটি মাযহাব আছে। (ক) তিন তালাকই হয়ে যাবেএটা চার ইমামঅধিকাংশ তাবেঈ ও সাহাবার মাযহাব সূত্রলাজনাতুত দায়িমাহ-এর উদ্ধৃতিতে আহসানুল ফাতাওয়া: ৫/৩৬৬


ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেনমাশায়েখ ও ইমামগণের মধ্যে কোনো বিষয়ে ইজমা কায়েম হলে তা অকাট্য দলীল হিসেবে বিবেচিত হবে সূত্রউমদাতুল আসাস: পৃ. ৪২

 

প্রশ্ন:     ঙ।  বর্তমান সময়ে সৌদি আরবে ফুকাহা/উলামা/ইফতা বোর্ডের সিদ্ধান্ত কি? 

 

উত্তর:  ঙ।  আহলে হাদিস ভাইয়েরা সৌদি আলেমদের ফতওয়া নিজেদের দলিল হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে পেশ করে।  বড় আফসোসের বিষয় হলোসৌদি আরবের সর্বোচ্চ বোর্ডের গবেষণালদ্ব ফতওয়া তারা মানেন না।  ফাতওয়াটি নিম্নরূপ:


بعد الاطلاع على البحث المقدم من الأمانة العامة لهيئة كبار العلماء والمعد من قبل اللجنة الدائمة للبحوث والإفتاء في موضوع الطلاق الثلاث بلفظ واحد ) .

وبعد دراسة المسألة ، وتداول الرأي ، واستعراض الأقوال التي قيلت فيها ، ومناقشة ما على كل قول من إيراد – توصل المجلس بأكثريته إلى اختيار القول بوقوع الطلاق الثلاث بلفظ واحد ثلاثا ___الخ (مجلة البحوث الإسلامية، المجلة الأول، العدد الثالث، سنة 1397 ه)

অর্থ: লাজনাতুত দায়িমা লিল বুহুস ওয়াল ইফতা পরিষদ সৌদী আরব কর্তৃক নির্বাচিত এক শব্দে তিন তালাক’ বিষয়ে গবেষণা কর্মে দায়িত্বরত শীর্ষ ওলামাদের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত গবেষণাপত্র ও ‎এ বিষয়ে গভীর অধ্যয়ন,প্রতিটি উক্তির বাছ বিচার ও তার পক্ষে-বিপক্ষে উপস্থাপিত সকল ‎প্রশ্নের উত্তর উত্থাপিত হওয়ার পর অধিকাংশ ওলামায়ে কিরামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিষদ ‎এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয় যে,এক শব্দে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই পতিত হবে। ‎‎সূত্রমাজাল্লাতুল বুহুসিল ইসলামিয়্যাপ্রথম খন্ডতৃতীয় সংখ্যা১৩৯৭ হিজরী

 

প্রশ্ন:        চ।  আহলে হাদিসদের দলিল কি ও তার জবাব কি?


উত্তর:      চ।  তারা যে হাদিস দ্বারা দলিল দেয়,তাহলো

 

হাদিস নং-০১

 ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিতহযরত রুকানা রা. তার স্ত্রীকে এক মাজলিসে তিন তালাক দিলেন এবং পরে তিনি খুব মর্মাহত হলেন। রাসূলুল্লাহ () তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যেতুমি কীভাবে তালাক দিয়েছোতিনি বললেনআমি তিন তালাক দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ () জিজ্ঞাসা করলেনএক মাজলিসে দিয়েছোতিনি বললেনহ্যাঁ। নবীজি () বললেনএটা এক তালাকযদি চাও তাহলে তাকে ফিরিয়ে নাও। তাখরিজ: মুসনাদে আহমাদ: ২৩৯১

 

জবাব:

Ø এ ঘটনার বর্ণনায় ভিন্নতা পাওয়া যায়। এখানে আছে যেতিনি স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়েছেন। আর আবূ দাঊদ শরীফের বর্ণনায় আাছে যেবাত্তাহ শব্দ দ্বারা তালাক দিয়েছেন। এ দুই ধরনের বর্ণনার কারণে ইমাম বুখারী রহ. এ হাদীসকে মালূল বলেছেন। ইবনে আব্দুল বার রহ. এ হাদীসকে যঈফ বলেছেন। সূত্র: আত-তালখীসুল হাবীর: ১৬০৩

Ø ইমাম জাসসাস ও ইবনে হুমাম রহ. মুসনাদে আহমাদের বর্ণনাকে মুনকার বলেছেন। সূত্র: তাকমিলাহ: ১/১১৫

Ø ইবনে হাজার রহ. বলেনইমাম আবূ দাউদ রহ. বাত্তাহ শব্দ দ্বারা তালাক দেয়াকে রাজেহ বলেছেন। কোনো বর্ণনাকারী এটাকেই তিন তালাক বুঝে সেভাবে বর্ণনা করেছেন। এ কারণে ইবনে আব্বাস (রা)-এর পরবর্তী হাদীস দ্বারাও দলীল দেয়া যাবে না। সূত্র: ফাতহুল বারী: ৯/৪৫৪তাকমিলাহ: ১/১১৫

 

হাদিস নং-০২

ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ ()-এর যুগেআবূ বকর রা.-এর যুগে ও খিলাফতে উমর রা.-এর প্রথম দুই বছর (অন্য বর্ণনায় তিন বছর) তিন তালাক এক তালাক ছিলো। অতঃপর হযরত উমর রা. বলেনলোকেরা এমন বিষয়ে তাড়াহুড়া করছে, যে বিষয়ে তাদের অবকাশ ছিলো। হায়! যদি আমি তাদের উপর তা কার্যকর করতাম। অতঃপর তিনি তা কার্যকর করলেন। সূত্র: মুসলিম: ৩৬৫৪

 

জবাব:

Ø  হাফেজ আবূ যুরআহ রহ. বলেনএ হাদীসের অর্থ হলোবর্তমানে লোকদের একসাথে তিন তালাক দেয়ার যে প্রচলন দেখা যাচ্ছে তা রাসূল ()-এর যুগেআবূ বকর রা.-এর যুগে ও খিলাফতে উমর রা.-এর প্রথম দুই বছরে ছিলো না। তখন লোকেরা সুন্নাত তরীকায় তিন তুহুরে তিন তালাক দিতেন। সুনানে বাইহাকী: ১৪৯৮৪

 

Ø  আর যদি হাদীসের অর্থ এই হয় যেএকসাথে তিন তালাক দিলে বর্তমানে তিন তালাক ধরা হবেঅথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগেআবূ বকর রা.-এর যুগে ও খিলাফতে উমর রা.-এর প্রথম দুই বছর তা এক তালাক ধরা হতো। তাহলে এর উত্তর হলো: এ মাযহাবের দুটি হাদীসউভয়টি ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। অথচ তার ফাতাওয়া হলোএকসাথে বা এক মাজলিসে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই হয়ে যায়। যা দলীল নং ২ ও ১০-এ উল্লেখ করা হয়েছে। আর ইয়াহইয়া বিন মাঈনইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কত্তানআহমাদ বিন হাম্বল ও আলী ইবনুল মাদীনীর মতো বড় বড় মুহাদ্দিসীনের মাযহাব হলোযখন কোনো রাবী তার হাদীসের বিপরীত আমল করেন বা ফাতাওয়া দেনতখন তার বর্ণিত হাদীসটি আমলযোগ্য থাকে না। সুতরাং ইবনে আব্বাস রা.-এর হাদীসদ্বয়ও আমলের যোগ্য নয়বিভিন্ন আপত্তির কারণে তা অগ্রহণযোগ্য। সূত্র: লাউস সুনান : ৭/৭১৬

 

Ø  এ হাদীস একটি বিশেষ ক্ষেত্রেযেমন- যদি কোনোব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলতোতুমি তালাকতুমি তালাকতুমি তালাক এবং বিচারকের সামনে দাবী করতো যেদ্বিতীয় ও তৃতীয়বার বলে প্রথমটির তাকিদ করা আমার উদ্দেশ্য ছিলোভিন্ন তালাক উদ্দেশ্য ছিলো নাতাহলে কাযী তার দাবি কবূল করতেন এবং তার কথাকে বিশ্বাস করে এক তালাকের ফাতাওয়া দিতেন। কিন্তু হযরত উমর রা.-এর যুগে লোকজন বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের দীনদারী কমতে থাকেতখন হযরত উমর রা. বিচার ব্যবস্থায় এ ধরনের দাবি কবূল না করার আইন র্কাযকর করেন এবং ঐ শব্দ দ্বারা তার বাহ্যিক অর্থ উদ্দেশ্য নেনতথা তিন তালাক হওয়ার ফাতাওয়া কার্যকর করেন। সূত্র: তাকমিলাহ: ১/১১৪ফাতহুল বারী: ৯/৪৫৬

 

Ø  যদি তাই না হতো এবং উমর রা.-এর এ সিদ্ধান্ত শরীআতে মুহাম্মাদীর বিপরীত হতোতাহলে ইবনে আব্বাস রা.-সহ সকল সাহাবায়ে কিরাম কখনোই তা মেনে নিতেন না।

যেমন- উম্মে ওলাদকে বিক্রি করাএক দিনারকে দুই দিনারের মাধ্যমে বিক্রি করাএবং হজ্জে তামাত্তু-এর মাসআলায় হযরত ইবনে আব্বাস রা. স্পষ্ট-ভাষায় হযরত উমর রা.-এর বিরোধিতা করেছেন। সূত্র: আহসানুল ফাতাওয়া: ৫/৩৬৯

 

Ø  যদি কেউ বলে যেহযরত উমর রা.-এর ভয়ে সাহাবীরা তার প্রতিবাদ করেনি (নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক)তাহলে সাহাবায়ে কিরাম সম্পর্কে এরূপ ধারণা পুরা দীনকে ভিত্তিহীন করে দিবেযা কোনো অবস্থায়ই গ্রহণযোগ্য নয়। ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেনকারো জন্য এ ধারণা করা জায়েয নেই যেরাসূলুল্লাহ ()-এর ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কিরাম রাসূল ()-এর শরীআত পরিপন্থী কোনো বিষয়ের উপরে একমত হয়েছেন। (মাজমূআতুল ফাতাওয়া: ১৭/২২)

 

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত:  

ইবনুল কাইয়্যিম আল জাওযিয়া রহ. বলেনরাসূল ()-এর সুন্নাত ও সাহাবীগণের আমলের পর আর কারো কথা মেনে নেয়া হবে না। সূত্র: এগাসাতুল লাহফান: পৃ. ১৯২

 

Ø চার ইমামের মাযহাবের বিপরীত যা আছেতা ইজমায়ে উম্মতের পরিপন্থীযদিও তাতে অন্যদের দ্বিমত থাকে। সূত্র: আল-আশবাহ ওয়ান নাযায়ের : পৃ.১৬৯

 

উপরোক্ত পর্যালোচনা দ্বারা প্রমাণ হয়ে গেলো যেএক মাজলিসে বা একসাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই হবেএক তালাক নয়।

সারকথা:  

হজরতে সাহাবায়ে কেরাম,তাবেয়ীগণমুজতাহিদ ৪ ইমামগণ ও জমহুর ফোকাহা-ওলামা, এবং  সৌদি সরকার মক্কা-মদীনাসহ সে দেশের বড় বড় উলামাদের নিয়ে গঠিত কমিটিকে এ মাসআলার তাহকীক পেশ করার নির্দেশ দেয়। তারা দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনার পর এ সিদ্ধান্তে উপনীত হন যেএকসাথে বা এক মাজলিসে তিন তালাক দিলে তিন তালাকই পতিত হবে। এ বিষয়ে পূর্ণ ইসলামের ইতিহাসে কোন ‎গ্রহণযোগ্য আলেম দ্বিমত পোষণ করেননি। কেবল মাত্র আল্লামা ইবনে তাইমিয়্যা রহঃ ও ‎তার শিষ্য আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম রহঃ ব্যতিত। কিন্তু সকল উম্মতের বিপরীত এই দুই জনের বিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে ‎না।

তথ্যসহযোগিতায়, আওয়ার ইসলাম২৪.কম, আহলে হক মিডিয়া


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক