সুন্নতের হাদিস সম্পূর্ণ সহিহ-ড: খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ

(0682) সালাফি আলেম গন বলছেন কাবলাল জুমা বলে মুলত কিছু নেই ! বরং এ সংক্রান্ত হাদিস দুর্বল। ফরজের আগে দুই দুই রাকাত করে যত খুশী পড়া যাবে। এব্যাপারে সঠিক কি দলিলের আলোকে জানতে চাই ?
(0682) উত্তর: কবলাল জুমুআ অর্থই হলো জুমুআর ফরজের আগের নামায। যদি নাই থাকে তাহলে যত খুশি পড়া যায় কিভাবে? আসলে তারা বলতে চান আমাদের দেশে যে চার রাকআত পড়া হয়ে এই সংক্রান্ত হাদীস দুর্বল। তবে তাদের কথা ঠিক নয়। তার যাকে বেশী মানেন সেই শায়খ আলবানীর রহ. বলেছেন সহীহ। এই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তর ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রাহ.্এর তত্বাবধানে দিয়েছিলাম। সেই উত্তরটিই আপনার জন্য দিয়ে দিলাম।আশা করি আপনি তৃপ্ত হবেন।
রাসূলুল্লাহ সা. জুমুআর ফরজ সালাতের পূর্বে সুন্নাত সালাত আদায়ের জন্য বলেছেন। সহীহ বুখারীর এই হাদীসটি লক্ষ করুন:
ﻋَﻦْ ﺳَﻠْﻤَﺎﻥَ ﺍﻟْﻔَﺎﺭِﺳِﻲِّ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﻣَﻦِ ﺍﻏْﺘَﺴَﻞَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺗَﻄَﻬَّﺮَ ﺑِﻤَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﺎﻉَ ﻣِﻦْ ﻃُﻬْﺮٍ ﺛُﻢَّ ﺍﺩَّﻫَﻦَ ، ﺃَﻭْ ﻣَﺲَّ ﻣِﻦْ ﻃِﻴﺐٍ ﺛﻢَّ ﺭَﺍﺡَ ﻓَﻠَﻢْ ﻳُﻔَﺮِّﻕْ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﺛْﻨَﻴْﻦِ ﻓَﺼَﻠَّﻰ ﻣَﺎ ﻛُﺘِﺐَ ﻟَﻪُ ﺛُﻢَّ ﺇِﺫَﺍ ﺧَﺮَﺝَ ﺍﻹِﻣَﺎﻡُ ﺃَﻧْﺼَﺖَ ﻏُﻔِﺮَ ﻟَﻪُ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻨَﻪُ ﻭَﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﺍﻷُﺧْﺮَﻯ
সালমান ফারসী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমুআর দিন ভালভাবে গোসল করে তেল বা সুগন্ধি ব্যবহার করে (মসজিদে) গমন করবে অতঃপর (মসজিদে) কাউকে না ডিঙিয়ে সাধ্যানুযায়ী নামায পড়বে এবং যখন ইমাম খুতবা দেয়ার জন্য বের হবে তখন চুপ করে তা শুনবে, তার এক জুমুআ থেকে অপর জুমুআর মাঝের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।
সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৯১০।
এই হাদীসে রাকআত সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয় নি। আলেমগণ বলেছেন দুই রাকআত থেকে শুরু করে যত ইচ্ছা পড়বে, যত বেশী পড়বে সওয়াব ততো বেশী হবে।
রাকআত সংখ্যার ব্যাপারে বিভিন্ন সাহবী থেকে বিভিন্ন সংখ্যা বর্ণিত আছে। দুই রকআত. চার রাকআত ইত্যাদি।
চার রাকআতের বিষয়ে নিচের হাদীসটি লক্ষ্য করুন:
ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺯﺍﻕ ﻋﻦ ﺍﻟﺜﻮﺭﻱ ﻋﻦ ﻋﻄﺎﺀ ﺑﻦ ﺍﻟﺴﺎﺋﺐ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺴﻠﻤﻲ ﻗﺎﻝ ﻛﺎﻥ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﺄﻣﺮﻧﺎ ﺃﻥ ﻧﺼﻠﻲ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻭﺑﻌﺪﻫﺎ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﺣﺘﻰ ﺟﺎﺀﻧﺎ ﻋﻠﻲ ﻓﺄﻣﺮﻧﺎ ﺃﻥ ﻧﺼﻠﻲ ﺑﻌﺪﻫﺎ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﺛﻢ ﺍﺭﺑﻌﺎ .
অর্থ: ( তাবেঈ) আবু আব্দুর রহমান আস-সুলামী বলেন, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে জুমুআর পূর্বে চার রাকআত এবং পরে চার রাকআত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর আলী রা. আমাদেরকে জুমুআর পর প্রথমে দুই রাকআত এরপর চার রাকআত পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মুসান্নাফু আব্দুর রায্যাক, হাদীস নং ৫৫২৫।
এই হাদীসটির বিষয়ে শায়খ আলবানী রহ. বলেছেন,
ﻭﻫﺬﺍ ﺳﻨﺪ ﺻﺤﻴﺢ ﻻ ﻋﻠﺔ ﻓﻴﻪ
অর্থ: এটা সহীহ সনদ, তাতে কোন সমস্যা নেই। সিলসিলাতুয যয়ীফাহ, ১০১৬ নং হাদীসের আলোচনা।
উক্ত সহীহ হাদীসটি দ্বারা আমারা জানতে পারলাম যে, প্রখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. চার রাকআত ক্ববলাল জুমুয়া পড়ার আদেশ দিয়েছেন।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আমরা বুঝলাম যে, জুমুআর আগে নামায সুন্নাত, তবে রাসূলুল্লাহ সা. থেকে রাকআত সংখ্যা বিষয়ে কোন কিছু বর্ণিত হয়নি। সুতরাং যে যতটুকু ইচ্ছা করে ততোটুকু পড়তে পারে। একজন সাহবী থেকে চার রাকআত পড়ার নির্দেশ এসেছে তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় চার রাকআতও পড়া যায় এবং এটাও সুন্নাত।
জুমুআর পরে সুন্নত নামায সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমানিত। সুতরাং জুমুআর পরে নামায পড়া সুন্নাত। আমাদেরকে সুন্নাতের অনুস্বরণ করতে হবে।
assunnah trust.com থেকে নেওয়া