আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৬২৩: আসসালমুআলাইকুম, মুহতারাম আমার জানার বিষয় হলো, হাটু সতর কিনা? দলী

No Comments



জিজ্ঞাসা-১২৬২৩:

আসসালমুআলাইকুম, মুহতারাম আমার জানার বিষয় হলো, হাটু সতর কিনা? দলীল প্রমাণ সহ জানানোর অনুরোধ রইল।

তারিখ:  ১৩/০৬/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা  নুরুল ইসলাম, বরগুনা। থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো

يجِبُ على الرَّجُلِ سَترُ ما بين السُّرَّةِ والرُّكبةِ أمام الرِّجالِ، وذلك باتِّفاقِ المَذاهِبِ الفِقهيَّةِ الأربَعةِ: الحَنفيَّة، والمالكيَّة، والشَّافعيَّة، والحنابلةِ

অর্থাৎ একজন পুরুষকে অবশ্যই পুরুষদের সামনে নাভি এবং হাঁটুর মাঝখানে ঢেকে রাখতে হবে। এবং এটি চারটি আইনশাস্ত্রের সাথে একমত: হানাফী, এবং মালিকি, এবং শাফিঈগণ, এবং হাম্বলী রহ. । তাবয়িনুল হাকায়িক-১/৯৫; আল-বাহরুল রায়েক -১/২৮৩



দ্বিতীয় কথা হলো, হাঁটু কি সতের অন্তর্ভুক্ত না এ বিষয়ে ইমামদের মধ্যে রয়েছে। ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মতে হাঁটু সতরের অন্তর্ভুক্ত এবং বাকি তিন ইমামদের মতে হাটু অন্তর্ভুক্ত নয়।


প্রশ্ন: ক। ফুকাহায়ে আহনাফের দলিল কি?


উত্তর: ক। ফুকাহায়ে আহনাফের দলিল নিম্নরূপ:


হাদিস নং -০১

مُروا أبناءَكُم بالصَّلاةِ لسَبعِ سنينَ ، واضرِبوهم عليهَا لعَشرِ سِنينَ ، وفرِّقوا بينَهُم في المضاجِعِ ، وإذا أنكحَ أحدُكُم عبدَهُ أو أجيرَهُ ، فلا يَنظرنَّ إلى شيءٍ مِن عورتِهِ ، فإنَّما أسفلَ مِن سرَّتِهِ إلى رُكْبتيهِ من عورتِهِ

الراوي : [جد عمرو بن شعيب] | المحدث : أحمد شاكر | المصدر : تخريج المسند لشاكر

الصفحة أو الرقم: 11/36 | خلاصة حكم المحدث : إسناده صحيح

আমর বিন শুয়াইব তার সনদে বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- পুরুষের নাভির নিচ থেকে তার উভয় হাটু পর্যন্ত হল সতর। তাখরিজ: মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৭৫৬; সুনানে কুবরা বায়হাকি -৩২৩৫; সুনানে আবু দাউদ -৪৯৭; সুনানে দারে কুতনি -১/৩২০

নোট: সনদ সহীহ।


হাদিস নং -০২

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «عَوْرَةُ الرَّجُلِ مِنْ سُرَّتِهِ إِلَى رُكْبَتِهِ»

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত। তাখরিজ: মুসনাদুশ শামীন-১৪৩



হাদিস নং -০৩

عَوْرَةُ الرَّجُلِ مَا بَيْنَ سُرَّتِهِ إلَى رُكْبَتِه

অর্থাৎ পুরুষের সতর হলো নাভি এবং হাটু পর্যন্ত। সূত্র: সুনানে বাইহাকি; কিতাবুল বিনাইয়া শারহুল হিদায়া-২/১২১



প্রশ্ন: খ। তিন ইমামের দলিল কি?


উত্তর: খ। তিন ইমামের দলিল নিম্নরূপ:


- حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ حَائِطًا وَأَمَرَنِي بِحِفْظِ بَابِ الحَائِطِ، فَجَاءَ رَجُلٌ يَسْتَأْذِنُ [ص:14]، فَقَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» ، فَإِذَا أَبُو بَكْرٍ ثُمَّ جَاءَ آخَرُ يَسْتَأْذِنُ، فَقَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ» ، فَإِذَا عُمَرُ، ثُمَّ جَاءَ آخَرُ يَسْتَأْذِنُ فَسَكَتَ هُنَيْهَةً ثُمَّ قَالَ: «ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ عَلَى بَلْوَى سَتُصِيبُهُ» ، فَإِذَا عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ قَالَ حَمَّادٌ، وَحَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، وَعَلِيُّ بْنُ الحَكَمِ، سَمِعَا أَبَا عُثْمَانَ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي مُوسَى، بِنَحْوِهِ وَزَادَ فِيهِ عَاصِمٌ «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ قَاعِدًا فِي مَكَانٍ فِيهِ مَاءٌ، قَدِ انْكَشَفَ عَنْ رُكْبَتَيْهِ أَوْ رُكْبَتِهِ، فَلَمَّا دَخَلَ عُثْمَانُ غَطَّاهَا»


সুলাইমান ইবনে হারব (রাহঃ) ......... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) একটি বাগানে প্রবেশ করলেন এবং বাগানের দরজা পাহারা দেওয়ার জন্য আমাকে আদেশ করলেন। তখন এক ব্যক্তি এসে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। নবী (ﷺ) বললেন, তাকে আসতে দাও এবং তাঁকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আমি (দরজা খুলে) দেখলাম যে, তিনি আবু বকর (রাযিঃ)।


তারপর আর একজন এসে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, তাঁকে প্রবেশের অনুমতি দাও এবং জান্নাতের সু-সংবাদ জানিয়ে দাও। (দরজা খুলে) দেখতে পেলেন, তিনি উমর (রাযিঃ)। তারপর আর একজন এসে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। নবী (ﷺ) কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে পরে বললেন, তাঁকেও প্রবেশের অনুমতি দাও এবং অচিরেই তাঁর উপর বিপদ আসবে। একথাটির সাথে জান্নাতের সু-সংবাদ জানিয়ে দাও। (দরজা খুলে) দেখতে পেলাম যে, তিনি উসমান ইবনে আফফান (রাযিঃ)।


হাম্মাদ (রাহঃ) ......... আবু মুসা (রাযিঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে। আসিম (রাহঃ) (একজন রাবী) উক্ত বর্ণনায় আরো বলেন, নবী (ﷺ) বাগানের এমন এক জায়গায় বসাছিলেন যেখানে পানি ছিল এবং তাঁর হাঁটু অথবা এক হাঁটুর উপর অতিরিক্ত ছিলনা। যখন উসমান (রাযিঃ) আসলেন তখন হাঁটু কাপড় দিয়ে ঢেকে ফেললেন।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৪৩০ (আন্তর্জাতিক নং ৩৬৯৫)



প্রশ্ন: গ। প্রাধান্য মত কি?


উত্তর: গ। প্রিয় পাঠক। আমরা উপরে উভয় পক্ষের দলিল লক্ষ্য করেছি। হাঁটুসহ এর নস আছে আবার হাঁটুর ছাড়াও নস আছে। 


 সুতরাং সতর্কতামূলক হাঁটুসহ সতর ঢাকা এই মতটি প্রাধান্য পাবে।


সারকথা হলো, কোন একটি বিষয়ে জায়েজ এবং নাজায়েজ এর মতভেদ হলে, উসূলে ফিকহি নীতি অনুসারে নাজায়েজ মতটিই প্রাধান্য পাবে, এটাই সর্বজন স্বীকৃত উসূল। যেমন,


إذا اجتمع الحلال والحرام غلب الحرام،

অর্থাৎ যখন হালাল ও হারাম একত্রিত হবে, তখন হারাম প্রাধান্য পাবে। সূত্র: উসূলুল ফিকহি ওয়া কায়েদা, ইযাহু হাওলি কায়েদা -৮০২১৫


 والله اعلم بالصواب