আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৪৮২: হজ-ওমরার সময় পিরিয়ড শুরু হলে করণীয় কি?*

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৪৮২:

আসসালামু আলাইকুম।

আলহামদুলিল্লাহ এ বছর স্বস্ত্রী হজে যেতে ইচ্ছে করেছি, কিন্তু একটি বিষয় আমার জানা দরকার, তাহলো হজের কার্যাবলি চলাকালীন মহিলাদের পিরিয়ড শুরু হলে হজের কাজগুলো আদায় করা যাবে কি? দ্বিতীয় জানার বিষয় হলো, উক্ত সময়ে ওষুধ সেবন করে পিরিয়ড বন্ধ করা যাবে কি? কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সমাধান দিলে উপকৃত হতাম। তারিখ-০১/০৩/২৩ ঈসায়ি/ ইংরেজি

জনাব,  মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসেন,  গাইবান্ধা থেকে


   জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,হায়েজ (পিরিয়ড) অবস্থায় নারীরা শুধু তাওয়াফ ব্যতীত হজের অন্য সমস্ত আরকান পালন করতে পারবেন। হায়েজ শেষ হওয়ার পর গোসল করে তাওয়াফ করতে হবে। হায়েজের কারণে তাওয়াফ বিলম্বিত হলে কোনো গোনাহ হবে না। দলিল:

الجزء رقم :2، الصفحة رقم:159

1650 حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ ، عَنْ أَبِيهِ ، عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ : قَدِمْتُ مَكَّةَ وَأَنَا حَائِضٌ وَلَمْ أَطُفْ بِالْبَيْتِ وَلَا بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ، قَالَتْ : فَشَكَوْتُ ذَلِكَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ : " افْعَلِي كَمَا يَفْعَلُ الْحَاجُّ، غَيْرَ أَنْ لَا تَطُوفِي بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرِي ".


অর্থ:উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেন, আমি যখন মক্কায় পৌঁছলাম তখন আমার হায়েয চলছিল। আমি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করিনি এবং সাফা-মারওয়ার মাঝে সায়ী করিনি। তিনি বলেন, তখন আমি এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাজ্বী যে কাজগুলো করে তুমিও তা করতে থাক। শুধু বাইতুল্লাহর তাওয়াফ পবিত্র হওয়া পর্যন্ত করবে না। তাখরিজ: বুখারি-১৬৫০

الحيض لايمنع من الحج ، وعلى من تحرِم وهي حائض أن تأتي بأعمال الحج ، غير أنها لاتطوف بالبيت إلا إذا انقطع حيضها واغتسلت ، وهكذا النفساء ، فإذا جاءت بأركان الحج فحجها صحيح .

" فتاوى اللجنة الدائمة للبحوث العلمية والإفتاء " ( 11 / 172 ، 173 ) .


ঋতুস্রাব হজ্জে বাধা দেয় না, এবং যে ব্যক্তি ঋতুস্রাব থাকা অবস্থায় ইহরাম বাঁধে তাকে অবশ্যই হজের আচার-অনুষ্ঠান করতে হবে, তবে তার ঋতুস্রাব বন্ধ না হওয়া এবং সে গোসল না করা পর্যন্ত ঘরের প্রদক্ষিণ করবে না এবং প্রসবোত্তর মহিলাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

সূত্র:স্কলারলি রিসার্চ এবং জারি ফতোয়া সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির ফতোয়া (11/172, 173)


আর  আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হলো,   যদি শুরু থেকেই ওষুধ-বড়ি খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রেখে কেউ হজের সমস্ত কাজ করেন, তাতেও শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো আপত্তি নেই। তাখরিজ: মাহমুদিয়া ১৫/৪৯১, তাতার খানিয়া, ২/৪৭১ ফাতহুল কাদীর ২/৩৩৭ রহিমিয়া ৮/৮৭

এ বিষয়ে শায়েখ ইবনে বাজ রহ. কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বলেন,

سئل الشيخ عبد العزيز بن باز رحمه الله :

ما حكم استعمال المرأة لحبوب منع العادة الشهرية في أيام الحج ؟

فأجاب رحمه الله : " لا حرج في ذلك ؛ لأن فيها فائدة ومصلحة ؛ حتى تطوف مع الناس وحتى لا تعطل رفقتها " انتهى من " فتاوى إسلامية " (2/185) .

وللفائدة ينظر جواب السؤال رقم : (112271) ، وجواب السؤال رقم : (36600) .


অর্থাৎ হজের দিনগুলিতে ঋতুস্রাব রোধ করার জন্য মহিলার বড়ি ব্যবহার করার হুকুম কি?

 উত্তর দিলেন: এতে দোষের কিছু নেই, কারণ এতে সুবিধা এবং আগ্রহ রয়েছে, যাতে সে লোকেদের সাথে প্রদক্ষিণ করতে পারে এবং যাতে সে তার সাহচর্যে বাধা না দেয়। সূত্র: ইসলামী ফতোয়া -2/185

 প্রশ্ন:  ক। ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে পবিত্র হলে বা না হলে করণীয় কি?

উত্তর: ক। 

 ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে পবিত্র হয়ে গেলে অবশ্যই এর ভেতরে তাওয়াফ সেরে নিতে হবে। যদি ১২ তারিখ সূর্যাস্তের ভিতর পবিত্র না হয় তাহলে পবিত্র হওয়ামাত্র আদায় করবে। এক্ষেত্রে বিলম্বের কারণে কোনো জরিমানা আসবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/৫১৯


প্রশ্ন: খ।পবিত্র হওয়ার আগেই দেশে ফিরতে হলে করণীয় কি    


উত্তর: খ।   যদি কোনো মহিলা হায়েয বা নেফাস অবস্থায় থাকার কারণে তাওয়াফে যিয়ারত করতে না পারে, আর তার দেশে ফেরার সময় হয়ে যায়, কোনোভাবেই তা বাতিল করা বা বিলম্ব করা সম্ভব না হয় তবে এই অপারগতার কারণে সে এ অবস্থাতেই তাওয়াফ করবে। আর এজন্য একটি উট বা গরু জবাই করবে। সাথে আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফারও করবে। মোটকথা কোনো অবস্থাতেই তাওয়াফে যিয়ারত না করে দেশে যাবে না। অন্যথায় তাকে আবার মক্কায় এসে তাওয়াফ করতে হবে। যতদিন তাওয়াফ না করবে ততদিন স্বামীর সাথে থাকতে পারবে না। -রদ্দুল মুহতার ২/৫১৮-৫১৯; মাআরিফুস সুনান ৬/৩৫৭-৩৫৮



  1. والله اعلم بالصواب