আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩২৪৪: কাস্টমার নিয়ে যাওয়ার কারণে মালিকের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া জায়েজ হবে কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৪৪: 

আসসালামু আলাইকুম।

আমার একটা মাসআলা জানার ছিলো!

বর্তমান সময়ে দেখা যায় বিভিন্ন কন্ট্রাক্টররা সেনেটারি বা অন্য কোন দোকানের সাথে চুক্তি করে যে, সে কাস্টমার নিয়ে আসবে সেই কাস্টমার থেকে পন্য সাধারণ দামের চেয়ে কিছু দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে। অতিরিক্ত লাভটা কন্ট্রাক্টর পাবে। কিংবা সে কাস্টমার নিয়ে আসবে দোকানদার সাভাবিক দামেই বিক্রি করবে। এই বিক্রির লাভ থেকে একটা পার্সেন্টিস সেই কন্ট্রাক্টরকে দিবে। 

এভাবে বিক্রি করার কী হুকুম? এর আরো কোন জাযেয বা নাজায়েয সূরত থাকলে দলীল সহ বিস্তারিত জানতে চাচ্ছি।  জাযাকুমুল্লাহু

তারিখ:১৮/০৫/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 মাওলানা আব্দুর রহমান সাভার থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, সাধারণত মানুষ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিজ্ঞ লোকের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করেন। আপনার প্রশ্ন মোতাবেক বোঝা যায়, লোকজন তাদের কাছে পরামর্শ গ্রহণ করেছেন কোন দোকানে মাল কেনা যায় বা ভালো হয়। আর কেউ পরামর্শ চাইলে তাকে সঠিক পরামর্শ দেওয়া জরুরি। তাই এক্ষেত্রে মালিকের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া বৈধ নয়। দলিল-


مَن أشارَ على أخيه بأمرٍ يَعلمُ أنَّ الرُشْدَ في غَيرِهِ فَقَد خَانَه”

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

“যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইকে কোন পরামর্শ দিল, অথচ সে জানে তার জন্য অন্য কিছু বেশী কল্যাণকর, তো সে তার সাথে খেয়ানত করলো।”

-সুনানে আবু দাউদ: ৩৬৫৭


দ্বিতীয় কথা হলো, উপরোক্ত পদ্ধতি ব্যতীত তিনি যদি দালালি পেশা গ্রহণ করেন, তাহলে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করা জায়েজ হবে। 


ইসলামের দৃষ্টিতে দালাল হলো আজিরে মুশতারিক বা সময়মুক্ত শ্রমিক। অতএব অন্যান্য শ্রমিকের মতোই দালালি করে মজুরি নেয়া জায়েজ। তবে শর্ত হলো, কত টাকা মজুরি দিতে হবে তা আগেই নির্দিষ্ট করে নিতে হবে।

উদাহরণ স্বরূপ: তিনি ক্রেতা বা মালিকের সাথে চুক্তি বদ্ধ হবে, আমি আপনাকে অমুক জিনিস বাজার ধরে কিনে দেবো বা বিক্রি করে দিবো, তাহলে এত টাকা দিতে হবে। এই সুরত জায়েজ। দালালি পেশা জায়েজ। দলিল-


ولم ير ابن سيرين وعطاء وإبراهيم والحسن بأجر السمسار بأسا. وقال ابن عباس: لا بأس أن يقول: بع هذا الثوب فما زاد على كذا وكذا فهو لك. وقال ابن سيرين : إذا قال: بعه بكذا فما كان من ربح فهو لك، أو بيني وبينك، فلا بأس به. وقال النبي - صلى الله عليه وسلم - "المسلمون عند شروطهم"

ইমাম আল-বুখারী রহ - তাঁর "সহীহ" তে বলেছেন: "ইবন সিরিন, আতা', ইব্রাহিম এবং আল-হাসান দালালের মজুরিতে কোন ভুল দেখেননি এবং ইবনে আব্বাস বলেছেন: "এখানে আছে তার এ কথা বলায় কোন ক্ষতি নেই: এই পোশাকটি বিক্রি করে দাও, এবং অমুক-অমুকের বেশি যা তোমার, এবং ইবনে সিরীন বলেছেন: "যদি সে বলে: অমুক অমুককে বিক্রি করে দাও এবং তোমার বা তোমার এবং আমার মধ্যে যা লাভ হয়।" , এতে কোন সমস্যা নেই” এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মুসলিমরা তাদের শর্ত মেনে চলে। সূত্র: ফাতহুল বারী-৪/৫২৮


وجاء في "فتاوى اللجنة الدائمة": "يجوز للدلال "السمسار" أخذ أجرة بنسبة معلومة من الثمن الذي تستقر عليه السلعة مقابل الدلالة عليها، ويستحصلها من البائع أو المشتري، حسب الاتفاق، من غير إجحاف ولا ضرر"

স্থায়ী কমিটির ফতোয়াতে” বলা হয়েছে: “দালালের (দালাল) জন্য জায়েজ আছে যে পণ্যটি প্রদর্শনের বিনিময়ে যে মূল্যে স্থির করা হয় তার একটি পরিচিত শতাংশের ফি নেওয়া এবং তার কাছ থেকে তা আদায় করা। বিক্রেতা বা ক্রেতা, চুক্তি অনুসারে, অন্যায় বা ক্ষতি ছাড়াই”

সূত্র: আলমুগনি : ৮/৪২, ফাতাওয়াল লাজনাতিত দায়িমা : ১৩/১২৫, ফাতওয়া শায়খ ইবনে বাজ : ১৯/৩৫৮)


সারকথা হলো,  শুধু কাস্টমার পাঠিয়ে কমিশন নেওয়া জায়েজ হবে না। প্রচলিত দালালের মত ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে মধ্যস্থতা করে চুক্তিবদ্ধ ভাবে টাকা নেওয়া জায়েজ হবে।



  والله اعلم بالصواب