আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১২৪৭৭: বাস্তব আর ছবির হুকুম একি রকম কিনা,বাস্তবে দেখা আর ছবিতে দেখা একি রকম অপরাধ মোবাইলে আমরা নানা রকম ছবি দেখে থাকি,এগুলো দেখা কি ধরনের অপরাধ ,জানতে চাই।

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৪৭৭:

বাস্তব আর ছবির হুকুম একি রকম কিনাবাস্তবে দেখা আর ছবিতে দেখা একি রকম অপরাধ মোবাইলে আমরা নানা রকম ছবি দেখে থাকি,এগুলো দেখা কি ধরনের অপরাধ ,জানতে চাই। তারিখ:  ৫/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

 

মাওলানা আব্দুস সালাম সাভার, ঢাকা থেকে

                                                          

 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 

 

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো,  নজর হিফাজত করা। দলিল:

আয়াত নং-০১

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (30) وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ الخ

অর্থ: মুমিনদেরকে বলুনতারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। সূরা নূর-৩০,৩১

আয়াত নং-০২

إِنَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا

নিশ্চয় কানচক্ষু ও  অন্তঃকরণ এদর প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত  হবে। সূরা ইসরা: ৩৬

 

দ্বিতীয় কথা হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আধুনিক ছবি,ভিডিও ছিল না। হজরতে ফোকাহায়ে কেরাম পর্দার বিধানকে কিয়াস করে হুকুম দিয়েছেন যে, যাদের সঙ্গে পর্দা করা তথা দেখা জায়েজ নেই, তাদের ছবি/ভিডিও দেখাও জায়েজ নেই। দলিল:

أن ما لا يجوز النظر إليه، لا يجوز النظر إلى صورته، سواء في ذلك الأشخاص أو العورات. وأن النظر المحرم إنما منع منه خشية الفتنة والشهوة، وهذا موجود في النظر إلى الصور أيضا. وراجع في ذلك الفتوى رقم: 352300.

অর্থাৎ যে জিনিসের দিকে বা যাকে দেখা/তাকানো জায়েয নয়তার প্রতিচ্ছবি দেখাও জায়েয নয়তা সে মানুষ হোক বা গোপনাঙ্গে। আর যে নিষিদ্ধ তাকানো শুধুমাত্র ফিতনা ও লালসার ভয়ে তা থেকে বিরত থাকে এবং এটি ছবি দেখার ক্ষেত্রেও বিদ্যমান। সূত্র:  হুকমুন নজরি ইলা ছুরিল আওরাতফাতওয়া নং-৩৫২৩০০


আর তৃতীয় কথা হলো, অশ্লীল, (পরে্নাগ্রাফি) ছবি/ভিডিও দেখা হারাম। দলিল:


আয়াত নং-০১

Surah Al-Araf, Verse 33:

قُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالْإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُوا بِاللَّهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ

আপনি বলে দিন, আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহ। সূরা ইসরা -৩৩


আয়াত নং-০২

Surah Al-Isra, Verse 32:

وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا

আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। সূরা ইসরা -৩২  

এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে,  কোন জিনিস নিজস্বভাবে নিষিদ্ধ না হলেও তাতে যদি কোন নিষিদ্ধ বস্তুর কারণ বা মাধ্যম হওয়ার আশংকা থাকেতবে তাও নিষিদ্ধ হয়ে যায় সুতরাং যে কাজ/কর্ম/দেখা হারামের দিকে নিয়ে যাবে তা হারাম।

 

সারকথা হলো, সাধারণ অবস্থায় যাকে দেখা জায়েজ নেই (চৌদ্দ শ্রেণীর লোক ব্যতিত), তার ছবি/ভিডিও দেখা জায়েজ নেই। যাকে দেখা জায়েজ , তার ছবি/ভিডিও দেখাও জায়েজ।  বর্তমান নেটের জগতে খুবই সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা, অবাঞ্চিত, ভীননারী-পুরুষের ছবি/ভিডিও অনিচ্ছায় আসলে এড়িয়ে চলা কর্তব্য।   


 শেষ কথা হলো, যাদেরকে সাধারণ অবস্থায় দেখা জায়েজ নেই, তাদের ছবি/ভিডিও দেখা চোখের যিনার সমতুল্য। কেননা চোখের ব্যভিচার হলো দেখা। দলিল:

ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ مَا رَأَيْتُ شَيْئًا أَشْبَهَ بِاللَّمَمِ مِمَّا قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم "‏ إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا الْعَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانِ الْمَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِي، وَالْفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ وَيُكَذِّبُهُ ‏"‏‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেননবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা বানী আদমের জন্য যিনার একটা অংশ নির্ধারিত রেখেছেন। সে তাতে অবশ্যই জড়িত হবে। চোখের যিনা হলো দেখাজিহবার যিনা হলো কথা বলাকুপ্রবৃত্তি কামনা ও খাহেশ সৃষ্টি করা এবং যৌনাঙ্গ তা সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে। তাখরিজ: মুসলিম ৪৬/৫হাঃ ২৬৫৭আহমাদ ৮২২২; (আধুনিক  ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৬৯৬)

 

  1. والله اعلم بالصواب