আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা-১৩২৪৯: জিন জাতিরা কি আখেরাতে জান্নাত প্রাপ্ত হবে

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১৩২৪৯: 

আসসালামু আলাইকুম। জিন জাতিরা কি আখেরাতে জান্নাত প্রাপ্ত হবে 

তারিখ:২১/০৫/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

    থেকে।


 জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -

তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, এ বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো:


آكام المرجان في أحكام الجان (ص: 91):


"اتّفق الْعلمَاء على أَن كَافِر الْجِنّ معذب فِي الْآخِرَة كَمَا ذكر الله تَعَالَى فِي كِتَابه الْعَزِيز كَقَوْلِه تَعَالَى: {فَالنَّار مثوى لَهُم} وَقَوله تَعَالَى: {وَأما القاسطون فَكَانُوا لِجَهَنَّم حطبًا} وَالله أعلم ...


الْبَاب الرَّابِع وَالْعشْرُونَ فِي دُخُول مؤمنيهم الْجنَّة: اخْتلف الْعلمَاء فِي مؤمني الْجِنّ هَل يدْخلُونَ الْجنَّة على أَرْبَعَة أَقْوَال:


أحدها: أَنهم يدْخلُونَ الْجنَّة وَعَلِيهِ جُمْهُور الْعلمَاء، وَحَكَاهُ ابْن حزم فِي الْملَل عَن أبن أبي ليلى وَأبي يُوسُف وَجُمْهُور النَّاس، قَالَ: وَبِه نقُول ...


القَوْل الثَّانِي: أَنهم لَايدْخلُونَهَا بل يكونُونَ فِي ربضها، يراهم الْإِنْس من حَيْثُ لَايرونهم، وَهَذَا القَوْل مأثور عَن مَالك وَالشَّافِعِيّ وَأحمد وَأبي يُوسُف وَمُحَمّد، حَكَاهُ ابْن تَيْمِية فِي جَوَاب ابْن مري، وَهُوَ خلاف مَا حَكَاهُ ابْن حزم عَن أبي يُوسُف ...


القَوْل الثَّالِث: أَنهم على الْأَعْرَاف، وَفِيه حَدِيث مُسْند سَيَأْتِي ذكره إِن شَاءَ الله تَعَالَى.


القَوْل الرَّابِع: الْوَقْف".

تفسير ابن كثير ط العلمية (7/ 463):

"وهذه الآية عامة في الإنس والجن، فهي من أدلّ دليل على أن الجنّ يدخلون الجنة إذا آمنوا واتقوا، ولهذا امتنّ الله تعالى على الثقلين بهذا الجزاء فقال: {ولمن خاف مقام ربه جنتان فبأي آلاء ربكما تكذبان}".

"আকামুল মারজান ফি আহকামিল জান" (পৃষ্ঠা ৯১) থেকে:


অবিশ্বাসী জিনদের আখিরাতে শাস্তি দেওয়া হবে—এ বিষয়ে সব আলেম একমত।

আল্লাহ তা'আলা তাঁর পবিত্র কোরআনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, যেমন—

“অতএব আগুনই হবে তাদের আবাস।” এবং,

“আর যারা সীমালঙ্ঘন করেছে, তারা জাহান্নামের ইন্ধন হবে।” সূরা জিন-১৫

—আল্লাহ ভালো জানেন।


২৪তম অধ্যায়: "ঈমানদার জিনরা কি জান্নাতে প্রবেশ করবে?"


এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। মোট চারটি মত রয়েছে:


প্রথম মত:

ঈমানদার জিনরা জান্নাতে প্রবেশ করবে—এটাই অধিকাংশ আলেমদের মত।

ইবনু হাযম তাঁর “আল-মিলাল” নামক কিতাবে উল্লেখ করেছেন—

ইবনু আবি লাইলা, আবু ইউসুফ, এবং অধিকাংশ আলেমদের মতে জিনরা জান্নাতে যাবে।

ইবনু হাযম বলেন: আমরাও এই মত গ্রহণ করি।


দ্বিতীয় মত:

তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না, বরং জান্নাতের প্রান্তসীমায় থাকবে।

সেখানে মানুষ তাদের দেখতে পাবে, কিন্তু তারা মানুষকে দেখতে পাবে না।

এই মতটি ইমাম মালিক, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমাদ, আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ (রহ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে।

ইবনু তাইমিয়া “জাওয়াব ইবনে মুরি” তে এ মতটি উল্লেখ করেছেন।

(তবে এটি ইবনু হাযমের উল্লেখিত আবু ইউসুফের মতের সাথে বিরোধপূর্ণ।)


তৃতীয় মত:

তারা ‘আ’রাফ’-এ থাকবে (আ’রাফ হলো জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝে একটি উঁচু স্থান)।

এই মতের পক্ষে একটি মুসনাদ হাদীস রয়েছে, ইনশাআল্লাহ পরে তার উল্লেখ আসবে।


চতুর্থ মত:

এ বিষয়ে চূড়ান্ত মত দেওয়া থেকে বিরত থাকা (ওয়াকফ)—অর্থাৎ, বিষয়টি আল্লাহর উপর ছেড়ে দেওয়া।

তাফসির ইবন কাসীর (প্রকাশনা: দারুল আলিমিয়া, ৭/৪৬৩):


এই আয়াতটি (সূরা রহমান, আয়াত ৪৬) মানুষের মতো জিনদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

যা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়—যদি জিনরা ঈমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে, তবে তারাও জান্নাতে প্রবেশ করবে।

এই প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা জিন ও মানুষ উভয়ের প্রতি অনুগ্রহ প্রকাশ করে বলেন:

“যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় করল, তার জন্য রয়েছে দুটি জান্নাত।

তাহলে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?”


সারকথা হলো,  



  والله اعلم بالصواب