জিজ্ঞাসা-১২৪৭৯:
মোয়া'জ্জাজ, মোহতারামে সমীপে আমার একটি আবেদন হচ্ছে, - হজের ফরজ,ওয়াজিব, ছুন্নাতের মধ্যে তালবিয়া পড়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি, তাহলে তালবিয়া পড়ার বিধান সম্পর্কে জানার জন্য জনাব সমীপে নিবেদন পেশ করছি। তারিখ: ২৭/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
হাফেজ মাওলানা
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর কথা হলো, প্রথমে আপনাকে জাযাকাল্লাহ খায়ের। কেননা আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
দ্বিতীয় কথা হলো, - ‘লাব্বাইকা’। এই শব্দটি আরবি- ‘ইলবাব’ ও ‘তালবিয়াতুন’ হতে গৃহীত। তালবিয়াতুন-এর অর্থ হলো- হে আল্লাহ! আমি তোমারই সমীপে যথাযথভাবে একবারের পর আর একবার বারবার উপস্থিত হয়েছি। আর ইলবাব শব্দের অর্থ বিভিন্নভাবে করা হয়ে থাকে। যথা : (ক) ইলবাব অর্থ কোনো স্থানে দণ্ডায়মান হওয়া। (খ) এর অর্থ হে আল্লাহ! আমি তোমার আনুগত্য ও হুকুম পালনের কাজে একবারের পর আর একবার, বারবার দণ্ডায়মান হয়েছি, দাঁড়িয়েছি। (গ) এর অর্থ- হে আল্লাহ! আমি তোমার আহ্বানে একবারের পর একবার বারবার সাড়া দিয়েছি।
প্রশ্ন ক। তালবিয়া পাঠের হুকুম কি?
উত্তর: ক। তালবিয়া পাঠের ব্যাপারে সম্মানিত ইমামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যেমন,
حُكم التلبية:
اختلف العلماء في حكم التلبية:
فذهب الشافعي وأحمد إلى أنها سنَّة.
وحكى الخطَّابي عن مالك وأبي حنيفة الوجوب[9]، وهذا هو الراجح؛ لحديث السائب السابق، وفيه الأمر برفع الصوت بالتلبية.
المَطْلَبُ الثَّاني: حُكْمُ التَّلْبِيَة
التَّلْبِيَةُ سُنَّةٌ في الإحرامِ، وهذا مَذْهَبُ الشَّافِعِيَّة، والحَنابِلَة،مغني المحتاج)) للشربيني (1/481)، ويُنظر: ((الحاوي الكبير)) للماوردي (4/88).
قال ابن حزم: "وهو فرض، ولو مرة"[10].
অর্থাৎ তালবিয়া পাঠের ব্যাপারে ওলামা কেরাম মধ্যে মতভেদ রয়েছে,
ইমাম শাফি এবং হাম্বল রহ. এর মতে সুন্নত।
আর ইমাম আবু হানিফা এবং ইমাম মালেক রহ. এর মতে ওয়াজিব।
আর ইমাম ইবনে হাযম রহ. বলেন, তালবিয়া পাঠ করা ফরজ এবং যদিও তা একবার হয়। সূত্র: নায়লুল আওতার-৫/৫৩; আলমুহল্লি-৭/১০৪
প্রশ্ন: খ। ইমাম মালেক এবং ইমাম আবু হানিফার রহ. এর দলিল কি?
উত্তর: খ। ইমাম মালেক এবং ইমাম আবু হানিফার রহ. এর দলিল নিম্নের হাদিস শরিফ
حَدَّثَنَا الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ حَزْمٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ، عَنْ خَلاَّدِ بْنِ السَّائِبِ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَتَانِي جِبْرِيلُ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَنِي أَنْ آمُرَ أَصْحَابِي وَمَنْ مَعِي أَنْ يَرْفَعُوا أَصْوَاتَهُمْ بِالإِهْلاَلِ - أَوْ قَالَ - بِالتَّلْبِيَةِ " . يُرِيدُ أَحَدَهُمَا .
অর্থ: আল কা‘নবী (রাহঃ) ..... খাল্লাদ ইবনুস সায়িব আল আনসারী (রাযিঃ) থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমার নিকট এসে আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি যেন আমার সাথী ও সাহাবীদের নির্দেশ দেই, তারা যেন উচ্চস্বরে তালবিয়া পাঠ করে।
তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৮১৪, মুসনাদে আহমদ -৪/৫৫; তিরমিজি -৮২৯; ইবনে মাজাহ -২৯২২
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
প্রশ্ন: গ। হজ এবং ওমরাতে বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করার হুকুম কি?
উত্তর: গ। এ বিষয়ে
اتفق العلماء على أنه يستحب للمحرم بالحج أو العمرة أن يكثر من التلبية ( لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ ، لاَ شَرِيكَ لَكَ) ثم إذا فرغ منها صلى
হজ ও ওমরাতে বেশি বেশি তালবিয়া পাঠ করার ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষণ করেছেন। সূত্র: হুকমুদ দুআ বাদাত তালবিয়া ফিল হজ্জি ওয়াল ওমরাতি- ২২১১৩৫ (ফাতওয়া নাম্বার)
সারকথা হলো, মৌলিকভাবে হজের ওয়াজিব ছয়টি। তাছাড়া আরও কয়েকটি আনুসাঙ্গিক ওয়াজিব রয়েছে। যেমন, মীকাতের পূর্বে ইহরাম বাঁধা, তালবিয়া পাঠ করা, সায়ি সাফা পাহাড় থেকে শুরু করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
সুতরাং তালবিয়া পাঠের অংশ আলাদাভাবে জিজ্ঞাসা -১২৪৭৮ শিরোনামে মাসয়ালাটিতে আলোচনা আসেনি।
- والله اعلم بالصواب