জিজ্ঞাসা-১২৪৭৩:
আস সালামু আলাইকুম। অন লাইনে বিয়ে বিষয়ে শরীয়ত এর দৃষ্টি ভংগী জানালে কৃতজ্ঞ হব। তারিখ: ২১/০২/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজিমাওলানা মাহমুদুল করিম সাভার ঢাকা থেকে
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
لا يجوزُ عَقدُ النِّكاحِ عَبْرَ وسائِلِ الاتِّصالِ الحديثةِ، كالهاتِفِ ونحوِه، وهو قرارُ مَجمَعِ الفِقهِ الإسلاميِّ
যোগাযোগের আধুনিক মাধ্যম যেমন টেলিফোন ইত্যাদির মাধ্যমে বিবাহের চুক্তি করা জায়েয নয় এবং এটাই ইসলামী ফিকহ একাডেমির সিদ্ধান্ত। সূত্র: স্থায়ী কমিটির ফতোয়া - ১৮/১৯
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক বিবেকবান মুসলিম সাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রী প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রী তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। দলিল:
حَ رَنَا عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْهَمْدَانِيُّ مِنْ أَصْلِ كِتَابِهِ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الْأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا حفص بن غياث، عن بن جُرَيْجٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ مُوسَى، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: "لَا نِكَاحَ إِلَّا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ فَهُوَ بَاطِلٌ، فَإِنْ تَشَاجَرُوا، فَالسُّلْطَانُ وَلِيُّ مَنْ لَا وَلِيَّ لَهُ" ١. [٧٨:١]
আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। তাখরিজ: সহিহ ইবন হিব্বান-৪০৭৫
আল-লাজনাতুদ্দায়িমাহ লিল-ইফতা, সৌদি আরব-এর ফতোয়াও এটাই যে, টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ বৈধ হবে না। যেমন, সেখানে বলা হয়েছে,
نظرا إلى عناية الشريعة الإسلامية بحفظ الفروج والأعراض ، والاحتياط لذلك أكثر من الاحتياط لغيرها من عقود المعاملات – رأت اللجنة أنه ينبغي ألا يعتمد في عقود النكاح في الإيجاب والقبول والتوكيل على المحادثات التليفونية ؛ تحقيقا لمقاصد الشريعة ، ومزيد عناية في حفظ الفروج والأعراض حتى لا يعبث أهل الأهواء ومن تحدثهم أنفسهم بالغش والخداع
অর্থাৎ নারীর সম্ভ্রম ও ইজ্জতের হেফাজত, বিবাহের গুরুত্ব, ধোঁকা ও প্রতারণা থেকে নিরাপত্তা এবং ইসলামি শরিয়তের মাকাসিদের প্রতি লক্ষ্য করে ফাতওয়া বোর্ড এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বিবাহের ইজাব-কবুল ও প্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে ফোনের কথোপকথনের ওপর নির্ভর করা উচিত হবে না। সূত্র: ফাতওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাহ ১৮/৯০
আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে (হ্যাকিং, ক্লোনিং, ভয়েস চেঞ্জিং, এডিটিং ও অন্যান্য সমস্যার আশঙ্কা থাকার কারণে) টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই মোবাইলে বিবাহ করা জায়েয নয়। সূত্র: ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫
দ্বিতীয় কথা হলো,
فى خلاصة الفتاوى- إمراة وكلت رجلا بأن يزوجها من نفسه فقال الوكيل اشهدوا انى قد تزوجت فلانة من نفسى إن لم يعرف الشهود فلانة لا يجوز النكاح مالم يذكر إسمها وإسم ابيها وجدها، وإن عرف الشهود فلانة وعرفوا أنه اراد به تلك المرأة يجوز، (خلاصة الفتاوى-2/15
অর্থাৎ যদি বর ওকীল নিয়োগ দিয়ে থাকে, আর উক্ত ওকীলের সম্মতিতে বা নির্দেশে ও উপস্থিতিতে কনেকে দুইজন সাক্ষীর সামনে প্রস্তাব করার পর কনে কবুল করে থাকে, তাহলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে। সূত্র: খুলাসুল ফাতাওয়া-২য় খণ্ড,১৫ পৃ.
সারকথা হলো, সরাসরি মোবাইলে বা টেলিফোনে (অনলাইনে) প্রস্তাব ও কবুল করার দ্বারা বিবাহ সহীহ হবে না। তবে ছেলের পক্ষ থেকে ওয়াকিল নিয়োগ করলে হবে।
- والله اعلم بالصواب