জিজ্ঞাসা-১৩২৪৬:
আসসালামু আলাইকুম। মুহতারাম ভাই জানার বিষয় হলো " নেক আমল করা ও যাবতীয় পাপ থেকে বিরত থাকার উপায়।
তারিখ:১৯/০৫/২৫ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা জামাল টাঙ্গাইল থেকে।
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। নাহমাদুহু ওয়া নুসল্লি আলা রসূলিল কারিম। আম্মাবাদ -
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, তিন-চারটি কাজ করলে ইনশাআল্লাহ নেক আমল ও পাপাচার থেকে বিরত থাকা সম্ভব।
১। দৃঢ় হিম্মত ও চেষ্টা করা। দ্বীনের পথে চলার জন্য হিম্মতের চেয়ে বড় কোন জিনিস নেই। দৃঢ় সংকল্প ও চেষ্টা করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই সাহায্য করবে। দলিল-
৬৯ وَ الَّذِیۡنَ جَاهَدُوۡا فِیۡنَا لَنَهۡدِیَنَّهُمۡ سُبُلَنَا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ لَمَعَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۶۹﴾و الذین جاهدوا فینا لنهدینهم سبلنا و ان الله لمع المحسنین ﴿۶۹﴾
অর্থ:
যারা আমার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টা চালায়, আমি তাদেরকে অবশ্যই আমার পথে উপনীত করব। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন। সূরা আনকাবুত-৬৯
২। দুআ করা তথা আল্লাহ তাআলা কাছে তাওফিক কামনা। যেমন,
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ بْنِ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ الْمُقْرِئُ، حَدَّثَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، قَالَ : سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ مُسْلِمٍ، يَقُولُ : حَدَّثَنِي أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحُبُلِيُّ، عَنِ الصُّنَابِحِيِّ، عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخَذَ بِيَدِهِ وَقَالَ " يَا مُعَاذُ وَاللهِ إِنِّي لأُحِبُّكَ وَاللهِ إِنِّي لأُحِبُّكَ " . فَقَالَ " أُوصِيكَ يَا مُعَاذُ لَا تَدَعَنَّ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلَاةٍ تَقُولُ : اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ " . وَأَوْصَى بِذَلِكَ مُعَاذٌ الصُّنَابِحِيَّ، وَأَوْصَى بِهِ الصُّنَابِحِيُّ أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ
মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত ধরে বললেন, হে মু‘আয! আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে ভালবাসি। তিনি বললেন, হে মু‘আয! আমি তোমাকে ওয়াসিয়াত করছি, তুমি প্রত্যেক সালাতের পর এ দু‘আটি কখনো পরিহার করবে নাঃ
اللَّهُمَّ أَعِنَّي عَلَى ذِكْرِكَ، وَشُكْرِكَ، وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ
‘‘আল্লাহুম্মা আঈন্নী ‘আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ‘ইবাদাতিকা’’ (অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনার স্মরণে, আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এবং আপনার উত্তম ‘ইবাদাতে আমাকে সাহায্য করুন)।
অতঃপর মু‘আয (রাঃ) আস-সুনাবিহী (রহঃ)-কে এবং আস-সুনাবিহী আবু ‘আবদুর রহমানকে এরূপ দু‘আ করার ওয়াসিয়াত করেন। (আবু দাউদ ১৫২২)
৩। "লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ"বেশি বেশি পাঠ করা। যেমন,
حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى، مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ مَنْصُورَ بْنَ زَاذَانَ، يُحَدِّثُ عَنْ مَيْمُونِ بْنِ أَبِي شَبِيبٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، أَنَّ أَبَاهُ، دَفَعَهُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَخْدُمُهُ . قَالَ فَمَرَّ بِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ صَلَّيْتُ فَضَرَبَنِي بِرِجْلِهِ وَقَالَ " أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى بَابٍ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ " . قُلْتُ بَلَى . قَالَ " لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
৩৫৮১. আবু মুসা মুহাম্মাদ ইবনে মুছান্না (রাহঃ) ..... কায়স ইবনে সা’দ ইবনে উবাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাঁর পিতা (সা’দ ইবনে উবাদা) তাঁকে নবী (ﷺ) এর কাছে তাঁর খিদমতের জন্য সমর্পণ করেছিলেন। কায়স (রাযিঃ) বলেনঃ নবী (ﷺ) আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি তখন মাত্র নামায শেষ করেছি। তিনি আমাকে তাঁর কদম মুবারক দ্বারা আঘাত করলেন। বললেনঃ জান্নাতের দ্বারসমূহের একটি দ্বারের কথা আমি তোমাকে বলব কি? আমি বললামঃ অবশ্যই। তিনি বললেনঃ লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। (আল্লাহ ব্যতীত অনিষ্ট দূর করার এবং কল্যাণ লাভের কোনো শক্তি কারো নেই)।
Qais bin Sa`d bin `Ubadah narrated, :
that his father offered him to the Prophet (ﷺ) to serve him. He said: “So the Prophet (ﷺ) passed by me, and I had just performed Salat, so he poked me with his foot and said: ’Should I not direct you to a gate from the gates of Paradise?’ I said: ’Of course.’ He (ﷺ) said: ’There is no might or power except with Allah (Lā ḥawla wa lā quwwata illā billāh).’”
—জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৮১ (আন্তর্জাতিক নং ৩৫৮১)
ব্যাখ্যা: জান্নাত ওই ব্যক্তি লাভ করবে যিনি সকল পাপাচার থেকে মুক্ত এবং নেক আমল করতে পারবে।
সারকথা হলো, উপর তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করলে ইনশাল্লাহ দ্বীনের পথে চলা সহজ হবে। এছাড়া আরো অন্যান্য পদ্ধতি থাকতে পারে।
والله اعلم بالصواب