আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

ডেইলি আমল চার্ট

No Comments

 


নিজেকে ধাপে ধাপে পরিবর্তন করুন রাসুল (সাঃ) কে অনুসরণের মাধ্যমে


[একটু ধৈর্য নিয়ে পোস্টটি পড়ুন, শিখুন এবং আমল করুন, জীবন পাল্টে যাবে ইন শা আল্লাহ৷]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

▪️ ঘুম থেকে জেগে উঠার পর দোয়া৷ 


"‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ‏"‏‏


উচ্চারণঃ- আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বা‘দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলাইহিন্ নুশূর৷ 


অনুবাদঃ- সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি (নিদ্রারূপ) মৃত্যুর পর আমাদেরকে জীবিত করলেন, আর তারই নিকট সকলের পুনরুত্থান।

[বুখারীঃ ৬৩১৪, (ই-ফা) ৫৮৭৫]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

▪️ টয়লেটে প্রবেশের দোয়া৷ 


اَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ 


উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আ‘ঊযু বিকা মিনাল খুব্‌সি ওয়াল খাবা-ইস৷ 


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অপবিত্র নর জিন্ ও নারী জিন্ থেকে আশ্রয় চাই৷ 

[বুখারীঃ ১৪২, (ই-ফা) ১৪৪]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ টয়লেট থেকে বাহির হলে দোয়া৷ 


غُفْرَانَكَ 


উচ্চারণঃ- গুফরা-নাকা৷ 


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট ক্ষমা চাই৷ 

[আবু দাউদঃ ৩০, (ই-ফা) ৩০]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ ওজুর পূর্বে দোয়া৷ 


بِسْمِ اللّٰهِ 


উচ্চারণঃ- বিস্‌মিল্লাহ্৷ 


অনুবাদঃ- আল্লাহ্‌র নামে৷ 

[আবু দাউদঃ ১০১, (ই-ফা) ১০১]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ ওজুর শেষে দোয়া৷ 


أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ 

উচ্চারণঃ- আশ্‌হাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্‌দাহু লা- শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহূ ওয়া রাসূলুহ৷ 


অনুবাদঃ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল৷ 


ফজিলতঃ- রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যদি কেউ সুন্দরভাবে এবং পরিপূর্ণভাবে ওযূ করে কালেমা শাহাদাত পাঠ করে তাহলে জান্নাতের আটটি দরজাই তাঁর জন্য খুলে দেওয়া হবে, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

[মুসলিমঃ ২৩৪, (হা-এ) ৪৪১, ৪৪২, (ই-ফা) ৪৪৬, ৪৪৭]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ আজানের শুনলে তার জবাব৷ 


উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ 


মুওয়াযযিন যখন “আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার" বলে তখন তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার জবাবে বলেঃ "আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার"। 


যখন মুওয়াযযিন বলে "আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ" এর জবাবে সেও বলেঃ "আশহাদু আল লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ"। 


অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লা-হ" এর জবাবে সে বলেঃ "আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লা-হ”। 


অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ "হাইয়্যা আলাস সলা-হ" এর জবাবে সে বলেঃ “লা-হাওলা ওয়ালা- কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ"। 


অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ "হাইয়্যা 'আলাল ফালা-হ" এর জবাবে সে বলেঃ “লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ”। 


অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ "আল্লা-হু আকবার, আল্লাহু আকবার" এর জবাবে সে বলেঃ "আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার"। 


অতঃপর মুওয়াযযিন বলেঃ “লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ" এর জবাবে সে বলেঃ “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ"। 


ফজিলতঃ আন্তরিকতার সাথে আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে জান্নাতে যাবে। 


[মুসলিমঃ ৩৮৫, (হা-এ) ৭৩৬, (ই-ফা) ৭৩৬]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ আজানের পরে দোয়া পড়া৷ 


জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে দোআ করে, সে ক্বিয়ামাতের দিন আমার শাফা‘আত লাভের অধিকারী হবে। দোআটি হলঃ


"اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا 

الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ"


উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা রব্বা হাযিহি-দ্দা’ও ওয়াতি-ত্তাম্মাহ ওয়াছ-ছালা তিল কা-ইমাহ আ-তি মুহাম্মাদা-ল ওয়াসিয়লাতা ওয়াল ফাদ্বিলাহ ওয়াব আছহু মাক্কা-মাম মাহমুদা-ল্লাজি ওয়া আ’দতাহ৷ 


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ্ এই পরিপূর্ণ আহবান ও শাশ্বত নামাযের তুমিই প্রভু হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে দান কর বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান এবং সুমহান মর্যাদা, আর তাঁকে অধিষ্ঠিত কর শ্রেষ্ঠতম প্রশংসিত স্থানে যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাকে দিয়েছ৷ 


ফজিলতঃ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি আযান শুনে এই দু‘আ করে, সে ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন আমার শাফা‘আত লাভের অধিকারী হবে।

[সহিহ বুখারীঃ ৬১৪, (ই-ফা) ৫৮৭]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত৷ 


নিশ্চয় নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের উপর ফরজ । [সূরা নিসা, আয়াত ১০৩]


রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ তাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে আদায় করবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন৷ 

[সুনান আবু দাউদঃ ১৪২০]


তিনি (সাঃ) আরো বলেছেনঃ জান্নাতের সবচেয়ে নিকটবর্তী আমল হচ্ছে সঠিক ওয়াক্তে সালাত আদায় করা৷ [মুসলিমঃ ৮৫, (হা-এ) ১৫৪, (ই-ফা) ১৫৫]


▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ প্রতিদিন বারো রাকাত সুন্নাত সালাত আদায় করাঃ


ফজিলতঃ- উম্মে হাবিবা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেনঃ “কোন মুসলিম ব্যক্তি দিনে-রাতে ফরয ব্যতীত বার রাকাআত নফল (সুন্নাত) সালাত আদায় করবে তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করা হবে।” এ বার রাকাআত সালাত হলঃ যোহরের আগে চার এবং পরে দুই, মাগরিরের পরে দুই, এশার পরে দুই এবং ফজরের আগে দুই রাকাআত।”


[মুসলিমঃ ৭২৮, (হা-এ) ১৫৭৯, (ই-ফা) ১৫৬৭]

[তিরমিজীঃ ৪১৫, ৪১৪, ইবনে মাজাহঃ ১১৪১, ১১৪০]


▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ ফরজ সালাত শেষে রাসুল (সাঃ) যে আমল গুলো করতেন৷ 


●● ইস্তেগফারঃ


أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ. أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ. أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ


উচ্চারণঃ- আস্তাগফিরুল্লাহ [তিনবার]


অনুবাদঃ- আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা পার্থনা করছি৷ 


[সহিহ মুসলিমঃ ৫৯১, (হা-এ) ১২২১, (ই-ফা) ১২১২]


●● আল্লাহুম্মা আনতাস্ সালামঃ


اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ


উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা আনতাস্ সালাম ওয়া মিনকাস্ সালাম তাবারক্তা ইয়া যালজালালি ওয়াল ইকরাম 


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময় এবং আপনার থেকেই শান্তি। আপনি বরকতময় হে মহিমান্বিত ও সষ্মানিত।


[সহিহ মুসলিমঃ ৫৯১, (হা-এ) ১২২১, (ই-ফা) ১২১২]


●● আয়াতুল কুরসীঃ

 

ফজিলতঃ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয সালাতের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতে যেতে মৃত্যু ছাড়া কোন প্রতিবন্ধকতা নেই।

[বুলুগুল মারামঃ ৩২৬, সিলসিলা সহীহাহঃ ৯৭২, তাবরানীঃ ৭৫৩২, সহীহুল জামেঃ ৬৪৬৪]

(আয়াতটি দেখুনঃ সূরা বাকারাহ, আয়াত-২৫৫)


●● তাসবীহঃ


سُبْحَانَ اللّٰهِ


উচ্চারণঃ- সুবহানাল্লাহ [৩৩ বার]

অনুবাদঃ- আল্লাহ পবিত্র৷ 

الْحَمْدُ لِلّٰهِ


উচ্চারণঃ- আলহামদুলিল্লাহ [৩৩ বার], 

অনুবাদঃ- সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য।

اللّٰهُ أَكْبَرُ 

উচ্চারণঃ- আল্লাহু আকবার [৩৩ বার]

অনুবাদঃ- আল্লাহ সবচেয়ে বড়৷ 


لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ


উচ্চারণঃ- লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর৷ [এক বার]


অনুবাদঃ- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সকল প্রশংসা তাঁরই এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।


ফজিলতঃ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত সলাতের শেষে তাসবীহ সমুহ পাঠ করে, তার গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেয়া হয়।

[সহিহ মুসলিমঃ ৫৯৭, (হা-এ) ১২৩৯, (ই-ফা) ১২৩০] [সুনান আবু দাউদঃ ১৫০৪]


●● আল্লাহুম্মা আঈন্নী আলা যিকরিকাঃ


اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى ذِكْرِكَ وَشُكْرِكَ وَحُسْنِ عِبَادَتِكَ


উচ্চারণঃ- আল্লাহুম্মা আঈন্নী ‘আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ‘ইবাদাতিকা’’ 


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ! আপনার স্মরণে, আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এবং আপনার উত্তম ‘ইবাদাতে আমাকে সাহায্য করুন৷ 

[আবু দাউদঃ ১৫২২]


আসুন আমরা সবাই প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ সালাত শেষে এই গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো করি৷ 

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ ঘর থেকে বের হওয়ার সময়ের দোয়াঃ


بِسْمِ اللّٰهِ، تَوَكَّلْتُ عَلَى اللّٰهِ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰهِ 


উউচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি, তাওয়াককালতু ‘আলাল্লা-হি, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ৷


অনুবাদঃ- আল্লাহ্‌র নামে (বের হচ্ছি)। আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আর আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই৷ 

[সুনান আবূ দাউদঃ ৫০৯৫, (ই-ফা) ৫০০৭]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ ঘরে প্রবেশের দোয়াঃ

بِسْمِ اللّٰهِ 


উচ্চারণঃ- বিস্‌মিল্লাহ্৷ 


অনুবাদঃ- আল্লাহ্‌র নামে৷ 


ফজিলতঃ- রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশের সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করে, তখন শাইতান হতাশ হয়ে (তার সঙ্গীদের) বলে- তোমাদের (এখানে) রাত্রি যাপনও নেই, খাওয়াও নেই।

[মুসলিমঃ ২০১৮, (হা-এ) ৫১৫৭, (ই-ফা) ৫০৯১]

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ সকাল এবং সন্ধ্যায় আমল করা যায় এমন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মাসনুন দোয়া ও যিকির৷ 


●● আয়াতুল কুরসীঃ


রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসী পড়বে সে বিকাল হওয়া পর্যন্ত জ্বীন শয়*তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে, আর যে ব্যক্তি বিকালে তা পড়বে সে সকাল হওয়া পর্যন্ত জ্বীন শয়*তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে।


[হাকিম ১/৫৬২, সহিহ তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২৭৩]

[আয়াতটি হলঃ সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত ২৫৫]


●● সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব, সূরা নাসঃ 


রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় ‘সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস তিনবার করে বলবে, এতে সেই ব্যাক্তি যাবতীয় অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাবে।


[সুনান আবু দাউদঃ ৫০৮২, (ই-ফা) ৪৯৯৬]


●● সাইয়্যিদুল ইস্তিগফারঃ


নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  

যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দু‘আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে।


اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّه“ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ 


উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী ওয়া আনা ‘আব্দুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘উযু বিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবূউলাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউলাকা বিযাম্বী। ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা]


অনুবাদঃ- হে আল্লাহ! আপনি আমার রব্ব, আপনি ছাড়া আর কোনো হক্ব ইলাহ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আর আমি আমার সাধ্য মতো আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির উপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আপনি আমাকে আপনার যে নিয়ামত দিয়েছেন তা আমি স্বীকার করছি, আর আমি স্বীকার করছি আমার অপরাধ। অতএব আপনি আমাকে মাফ করুন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহসমূহ মাফ করে না।


[সহিহ বুখারীঃ ৬৩০৬, (ই-ফা) ৫৮৬৭ ]


●● সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহীঃ


যে ব্যক্তি সকালে একশত বার এবং বিকালে একশত বার বলবে, সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী৷ 

কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট কিছু কেউ নিয়ে আসতে পারবে না, তবে সে ব্যক্তি যে তার মত বলবে, বা তার চেয়ে বেশি আমল করবে।


سُبْحَانَ اللّٰهِ وَبِحَمْدِهِ 


উচ্চারণঃ- সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহী


অনুবাদঃ- আল্লাহ পবিত্র ও সমস্ত প্রশংসা তারই৷ 


[সহিহ মুসলিমঃ ২৬৯২, (হা-এ) ৬৭৩৬, (ই-ফা) ৬৫৯৯]


●● রদ্বীতু বিল্লাহি রব্বানঃ


যে ব্যক্তি এ দু'আ সকাল ও বিকাল তিনবার করে বলবে, আল্লাহর কাছে তার অধিকার হয়ে যায় তাকে কিয়ামতের দিন সন্তুষ্ট করা।


رَضِيْتُ بِاللّٰهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلاَمِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا 

উচ্চারণঃ- রদ্বীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়াবি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লা-হু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামা নাবিয়্যান


অনুবাদঃ- আল্লাহকে রব, ইসলামকে দীন ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নবীরূপে গ্রহণ করে আমি সন্তুষ্ট।


[সুনান তিরমিজীঃ ৩৩৮৯ যইফ]

[মুসনাদে আহমাদঃ ১৮৯৬৭]


●● দুরুদঃ


রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ সকাল বেলা আমার উপর দশবার দরুদ পাঠ করবে এবং বিকাল বেলা দশবার দরুদ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন আমার সুপারিশ দ্বারা সৌভাগ্যবান হবে। ছোট দুরুদঃ


اللّٰهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ 


উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা সাল্লি ওয়াসাল্লিম ‘আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ। 


অর্থঃ- হে আল্লাহ! আপনি সালাত ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর।


[মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ ১০/১২০]

[সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২৭৩]


●● গোলাম আযাদ করার সাওয়াবঃ


আবূ আয়্যাশ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এ দু'আ সকালে উপনীত হয়ে বলে, এটা তার জন্য ইসমাঈল (আঃ) বংশীয় একটি গোলাম আযাদ করার সমান হবে, তার দশটি পাপ মোচন করা হবে এবং তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে এবং শয়*তান থেকে নিরাপদ থাকবে যতক্ষণ না সন্ধ্যা হয়। আর যদি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে অনুরূপ বলে, তাহলে ভোর পর্যন্ত অনুরূপ ফাযীলাত পাবে। 


لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللّٰهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ،

 وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ 


উচ্চারণঃ- লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর। 


অর্থঃ- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

[সুনান আবু দাউদঃ ৫০৭৭, (ই-ফা) ৪৯৯৩]


আল্লাহ আমাদের সবাইকে সকাল এবং সন্ধ্যায়, এই গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো করার তৌফিক দান করুক৷

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ খানা খাওয়ার সুন্নাহ সমূহ৷


● উভয় হাত (কব্জি) পর্যন্ত ধোয়া। 

[আবু দাউদঃ ৩৭৬১]


● বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করা৷ 

[বুখারীঃ ৫৩৭৬, (ই-ফা) ৪৯৮৪]

[আবু দাউদঃ ৩৭৬৭, (ই-ফা) ৩৭২৫]


● খাওয়ার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর (খাওয়ার মাঝে) এই দু‘আ পড়াঃ


بِسْمِ اللهِ اَوَّلَهٗ وَاٰخِرَهٗ


উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহ৷ 


অনুবাদঃ- আল্লাহ্‌র নামে খাওয়া শুরু করছি- প্রথমে এবং শেষে।

[আবু দাউদঃ ৩৭৬৭, (ই-ফা) ৩৭২৫]


● দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া। 

[বুখারীঃ ৫৩৮৬]


● বাম হাতে না খাওয়া, কারন শয়*তান বাম হাতে খায়৷ 

[মুসলিমঃ ৫১৫৯, ২০১৯]


● ডান হাত দিয়ে খাওয়া। 

[বুখারীঃ ৫৩৭৬, মুসলিমঃ ৫১৬০, ২০২০]


● খাওয়ার মজলিসে বয়সের দিক দিয়ে যিনি বড় এবং বুযুর্গ, তাঁর দ্বারা খাওয়া শুরু করানো। 

[মুসলিমঃ ৫১৫৪, ২০১৭]


● খাদ্য এক ধরনের হলে নিজের সম্মুখ হতে খাওয়া।[বুখারীঃ ৫৩৭৬]


● খাদ্যের কোন অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে (প্রয়োজনে পরিষ্কার করে) খাওয়া।

[মুসলিমঃ ৫২০১, ২০৩৪]


● হেলান দিয়ে বসে না খাওয়া।

[বুখারীঃ ৫৩৯৮]

[আবু দাউদঃ ৩৭৬৯]


● খাদ্যের ত্রুটি বের না করা।

[বুখারীঃ ৫৪০৯]

[আবু দাউদঃ ৩৭৬৩]


● পাত্রের মাঝখান থেকে না খাওয়া, বরং তার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করা৷ 

[আবু দাউদঃ ৩৭৭২]


● তিন আঙ্গুলে খাবার খাওয়া৷ 

[মুসলিমঃ ২০৩২

[আবু দাউদঃ ৩৮৪৮]


● বিচ্ছিন্নভাবে না খেয়ে, একত্রে খাওয়া৷ 

[আবু দাউদঃ ৩৭৬৪]


● খাদিমকে একত্রে বসিয়ে খাবার খাওয়া৷ 

[তিরমিজীঃ ১৮৫৩]


● জুতা পরিহিত থাকলে জুতা খুলে খানা খাওয়া।[মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ৭১২৯]


● খানার সময় তিনভাবে বসা যায়।


ক. উভয় হাঁটু উঠিয়ে এবং পদ যুগলে ভর করে। [মুসলিমঃ ৫২২৬, ২০৪৪]


খ. এক হাঁটু উঠিয়ে এবং অপর হাঁটু বিছিয়ে। [শরহুস্‌ সুন্নাহঃ ৩৫৭৭]


গ. উভয় হাঁটু বিছিয়ে অর্থাৎ নামাযে বসার ন্যায় বসে সামান্য সম্মুখ পানে ঝুঁকে আহার করা। 

[আবু দাউদঃ ৩৭৭৩]


বিঃদ্রঃ- উযরের কারণে আসন দিয়ে বসারও অনুমতি আছে। [সূরা নূর, আয়াত-৬১,আল ইতহাফঃ ৫ : ৪৮০]


● আঙ্গুল ও বাসন চেটে খাওয়া৷ 

[মুসলিমঃ ৫১৯৫, ২০৩৩]


● খাওয়া শেষে উভয় হাত ধোয়া।

[আবু দাউদঃ ৩৮৫২, তিরমিজীঃ ১৮৬০]


● কুলি করে মুখ পরিষ্কার করা।

[বুখারীঃ ৫৪৫৫, ৫০৬০]


● খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ থাকা মাকরূহ। এজন্য খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভাল কথা আলোচনা করা। কিন্তু যে ধরনের কথা বা সংবাদে দুশ্চিন্তা বা ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে, তা খানার সময় বলা অনুচিত।

[বুখারীঃ ৫৩৭৬]


● খানা শেষে আগে দস্তরখানা উঠিয়ে তারপর নিজে উঠা। 

[ইবনে মাজাহঃ ৩২৯৫]


● খানা খাওয়ার শেষে দোয়া- ০১


اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنِيْ هٰذَا، وَ رَزَقَنِيْهِ، مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِّنِّيْ وَ لَا قُوَّةٍ 

 

🔹উচ্চারণঃ- আলহামদু লিল্লা-হিল্লাযী আত‘আমানী হা-যা ওয়া রযাক্বনীহ, মিন গইরি হাউলিম মিন্নী ওয়ালা কুওয়াহ৷ 


🔹অনুবাদঃ- সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, যিনি আমাকে এ আহার করালেন এবং এ রিযিক দিলেন যাতে ছিল না আমার পক্ষ থেকে কোনো উপায়, ছিল না কোনো শক্তি-সামর্থ্য।


📌ফজিলতঃ- রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ কেউ যদি খাওয়ার পর এই দূ'আ পাঠ করে তবে তার পূর্বের সব গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হবে।

[তিরমিজীঃ ৩৪৫৮, ইবনে মাজাহঃ ৩২৮৫]


● খানা খাওয়ার শেষে দোয়া- ০২


اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ اَطْعَمَنَا وَسَقَانَا وَجَعَلَنَا مُسْلِمِيْنَ.


‘সেই আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা যিনি আমাদেরকে খাওয়ালেন, পান করালেন এবং মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।

[আবু দাউদঃ ৩৮৫০(যঈফ)]


● খানা খাওয়ার শেষে দোয়া- ০৩


الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَ، وَسَقَى وَسَوَّغَهُ وَجَعَلَ لَهُ مَخْرَجًا


‘‘সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি খাওয়ালেন, পান করালেন, পেটে প্রবেশ করা সহজ করে দিলেন এবং এগুলো বের হওয়ারও ব্যবস্থা রাখলেন।’’

[আবু দাউদঃ ৩৮৫১]


● দস্তরখানা উঠানোর সময়ের দোয়াঃ


اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ حَمْدًا كَثِيْرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيْهِ غَيْرَ مَكْفِىٍّ وَلَا مُوَدَّعٍ وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا.


আল্লাহর জন্য অসংখ্য প্রশংসা, পবিত্রতা ও প্রাচুর্য অবিরভাবে। হে আমাদের রব! আমরা যেন আপনার দেয়া রিযিক থেকে মুখাপেক্ষিহীন না হই।

[বুখারীঃ ৫৪৫৮, আবু দাউদঃ ৩৮৪৯]


● মেহমান হয়ে খানা খেলে দোয়াঃ


"‏ اللَّهُمَّ أَطْعِمْ مَنْ أَطْعَمَنِي وَأَسْقِ مَنْ أَسْقَانِي ‏"‏ ‏

        

হে আল্লাহ! যে লোক আমার খাবারের ব্যবস্থা করে তুমি তার খাদ্যের ব্যবস্থা কর। আর যে আমাকে পান করায় তাকে তুমি পান করাও।

[মুসলিমঃ ৫২৫৭, ২০৫৫]


● কেউ খানা খাওয়ালে, খানা শেষে তার জন্য দোয়া করা৷ 

[আবু দাউদঃ ৩৮৫৪]


আল্লাহ আমাদের সবাইকে রাসুল (সাঃ) সুন্নাহ অনুসারে খাবার খাওয়ার তৌফিক দান করুক৷

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■ ■ দিনের যে কোন সময়ের মাসনুন দোয়া ও জিকির৷ 


●● প্রতিদিন ১০০ বার "সুবহান আল্লাহ" পাঠ করলে ১০০০ পুণ্য লিখিত হবে এবং ১০০০ পাপ মুছে দেয়া হবে। 

[মুসলিমঃ ২৬৯৮, (হা-এ) ৬৭৪৫, (ই-ফা) ৬৬০৭]


●● প্রতিদিন ১০০ বার "সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী" পাঠ করলে, তার সমস্ত পাপ মিটিয়ে দেয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়। 

[বুখারীঃ ৬৪০৫, (ই-ফা) ৫৯৬৩]

[মুসলিমঃ ২৬৯১, (হা-এ) ৬৭৩৫, (ই-ফা) ৬৫৯৮]


●● "আলহামদুলিল্লাহ" মীযানের পাল্লাকে ভারী করে দেয় এবং সর্বোত্তম দোআ’। 

[মুসলিমঃ ২২৩, (হা-এ) ৪২২, (ই-ফা)

[সুনান তিরমিজীঃ ৩৫১৭, ৩৩৮৩]


●● প্রতিদিন ১০০ বার "লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলাকুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর।"পাঠ করলে দশজন গোলাম মুক্ত করার পুণ্য অর্জন হয়, তার (আমালনামায়) একশ’ নেকী লেখা হয় এবং তার হতে একশ’ পাপ মিটিয়ে দেয়া হয়। আর তা ঐ দিন বিকাল পর্যন্ত শয়*তানের (কুমন্ত্রণা) হতে তার জন্যে রক্ষাকারী হয়ে যায়। সেদিন সে যা পুণ্য অর্জন করেছে তার চেয়ে বেশি পুণ্যবান কেউ হবে না। তবে কেউ তার চাইতে বেশি ‘আমল করলে তার কথা আলাদা।

[বুখারীঃ ৬৪০৩, (ই-ফা) ৫৯৬১]

[মুসলিমঃ ২৬৯১, (হা-এ) ৬৭৩৫, (ই-ফা) ৬৫৯৮]


▪যে ব্যক্তি ১০ বার পাঠ করবে সে যেন ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) এর বংশের চারজন গোলামকে মুক্তি দান করল।

[বুখারীঃ ৬৪০৪, (ই-ফা) ৫৯৬২]

[মুসলিমঃ ২৬৯৩, (হা-এ) ৬৭৩৭, (ই-ফা) ৬৬০০]


●● "সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়ালাইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্ল-হু আকবার"। নবী (সাঃ) বলেন, এই কালিমাগুলি পড়া আমার নিকট বেশি প্রিয়-সে সব বিষয়ের চেয়ে, যার উপর সূর্য উদিত হয়। 

[মুসলিমঃ ২৬৯৫, (হা-এ) ৬৭৪০, (ই-ফা) ৬৬০২]


●● "সুবহানাল্লাহি ওয়াবি হামদিহী সুবহানাল্লিল আযীম" এই কালীমাগুলি জিহ্বায় উচ্চারনে সহজ , মীযানের পাল্লায় ভারী ,দয়াময় আল্লাহর নিকট প্রিয় । 

[বুখারীঃ ৭৫৬৩, (ই-ফা) ৭০৫৩]

[মুসলিমঃ ২৬৯৪, (হা-এ) ৬৭৩৯, (ই-ফা) ৬৬০১]


●● "লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ" হচ্ছে জান্নাতের গুপ্তধন সমুহের মধ্যে একটি গুপ্তধন। 

[বুখারীঃ ৬৪০৯, (ই-ফা) ৫৯৬৭]

[মুসলিমঃ ২৭০৪, (হা-এ) ৬৭৫৫, (ই-ফা) ৬৬১৬]


●● যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়াবি হামদিহী’ পাঠ করবে প্রতিবারে তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুর গাছ লাগানো হয়।

[সুনান তিরমিজীঃ ৩৪৬৪]


●● সর্বোত্তম জিকির "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ"৷ 

[তিরমিজীঃ ৩৩৮৩, ইবনে মাজাহঃ ৩৮০০]


●● যে ব্যাক্তি "সূরা ইখলাস" ১০ বার পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর বানানো হবে৷ 

[সহিহ আল-জামি আস-সগীরঃ ৬৪৭২]


●● ইস্তেগফারঃ


أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ


উচ্চারণঃ আস্তাগফিরুল্লা-হ ওয়া আতূবু ইলাইহি।


অনুবাদঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তাঁর

নিকট তাওবাহ করছি।


রাসুল (সাঃ) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবাহ ও ইস্তেগফার করতেন। 

[সহিহ বুখারীঃ ৬৩০৭, (ই-ফা) ৫৭৫৪]


রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ আমার অন্তরে কখনো কখনো অলসতা দেখা দেয়, তাই আমি দৈনিক ১০০ বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকি। 

[মুসলিমঃ ২৭০২, (হা-এ) ৬৭৫১, (ই-ফা) ৬৬১২]


আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই গুরুত্বপূর্ণ আমল গুলো করার তৌফিক দান করুক৷ 

▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂

■■ ঘুমানোর পূর্বে রাসূল (সাঃ) যে আমলগুলো 

করতেন৷ 


●● ওযু করা৷ 

 [বুখারীঃ ৬৩১১, মুসলিমঃ ২৭১০, ৬৭৭৫]


●● ঘরের দরজা আল্লাহর নামে বন্ধ করা৷ 

[বুখারীঃ ৩২৮০]


●● বিছানা ভালোভাবে ঝেড়ে নেয়া৷ 

[বুখারীঃ ৬৩২০]


●● আয়াতুল কুরসীঃ


যে ব্যক্তি শোয়ার সময় আয়াতুল কুরসী পড়বে এতে আল্লাহর তরফ হতে তার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত থাকবে এবং ভোর পর্যন্ত তার নিকট কোন শয়তান আসতে পারবে না।

[বুখারীঃ ২৩১১, (ইফা) ২১৬২]


●● সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াতঃ


রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত (আ-মানার রাসূলু) তেলাওয়াত করবে এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে৷ 

[বুখারীঃ ৪০০৮, (ইফা) ৩৭১৮]


●● সূরা মুলকঃ


রাসূল (সাঃ) বলেনঃ যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সুরাহ মূলক) পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন৷ 

[তিরমিজী ২৮৯০]


●● সূরা কাফিরুনঃ


নবী (সাঃ) বলেছেন, রাতে "কুল ইয়া আইয়্যু হাল কা-ফিরুন" (অর্থাৎ সূরা কা-ফিরুন) পাঠ করা শির্ক থেকে মুক্তি পেতে উপকারী। 

[আবু দাউদ ৫০৫৫, (ইফা) ৪৯৭১, তিরমিজী ৩৪০৩]


●● সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাসঃ


আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, প্রতি রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পাঠ করে দু’হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে আরম্ভ করে তাঁর দেহের সম্মুখ ভাগের উপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন। 

[বুখারী]

আল বুরহান এর  সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ