জিজ্ঞাসা-১২৭৩৯:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারম মুফতী সাহেবের কাছে জিজ্ঞাসা:- বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর বাসর/মিলন হয়নি এবং স্ত্রীকে কোন খরপোস ও দেওয়া হয়নি এমনকি ৪/৫ বছর যাবত কোন যোগাযোগ নেই। এমতাবস্থায় মেয়ে পক্ষের অনুরোধে স্বামী তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অভিভাবকদের সম্মুখে বলেছে আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।এতে করে বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হবে কি?
অগ্রিম শুকরিয়া জানাচ্ছি।
তারিখ: ২৯/০৮/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মোঃ আবুল কাশেম, সুনামগঞ্জ। থেকে।
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক "আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।"
বাক্যটি ফিকহি হানাফির মতে, তালাকে কিনায়ার অন্তর্ভুক্ত। তালাকে কিনায়ার হুকুম ব্যক্তির নিয়তের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ যে কয় তালাকের নিয়ত করবে, সেই কয়টি তালাক পতিত হবে।
দলিল:
আয়াত নং-০১
{ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِيُّ قُل لِّأَزۡوَٰجِكَ إِن كُنتُنَّ تُرِدۡنَ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا فَتَعَالَيۡنَ أُمَتِّعۡكُنَّ وَأُسَرِّحۡكُنَّ سَرَاحٗا جَمِيلٗا }
হে নবী! আপনি আপানার স্ত্রীদেরকে বলুন, 'তোমারা যদি দুনিয়ার জীবন ও এর চাকচিক্য কামনা কর তবে আস, আমি তোমাদের ভোগ - সমগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই এবং সৌজন্যের সাথে তোমাদেরকে বিদায় দেই । সূরা আহযাব -২৮
আয়াত নং-০২
ٱلطَّلَٰقُ مَرَّتَانِۖ فَإِمۡسَاكُۢ بِمَعۡرُوفٍ أَوۡ تَسۡرِيحُۢ بِإِحۡسَٰنٖۗ
তালাক দু’বার। অতঃপর (স্ত্রীকে) হয় বিধিমত রেখে দেওয়া, নতুবা সদয়ভাবে মুক্ত করে দেওয়া। সূরা বাকারা-২২৯
নোট: এই আয়াতদ্বয় থেকে ফোকাহায়ে কেরাম তালাকে কিনায়া নামকরণ ও সাব্যস্ত করেছেন।
وَلَا شَيْءَ مِنْ الْكِنَايَةِ يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ بِلَا نِيَّةٍ أَوْ دَلَالَةِ الْحَالِ (رد المحتار-زكريا-4\530، كرتاشى-3/299)
অর্থাৎ, কিনায়াহ (উপমাজ্ঞাপক ইঙ্গিতার্থক) শব্দাবলী প্রয়োগ করলে তখনই তালাক সংঘটিত হবে, যখন শব্দগুলো উচ্চারণকালে মনে তালাকের নিয়ত বিদ্যমান থাকবে কিংবা তালাকের প্রাসঙ্গিক আলোচনা চলমান থাকবে। সূত্র: রদ্দুল মুহতার- যাকারিয়া বুক ডিপো ৫৩০/৪ , করাচী ৩/২৯৯
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নে বর্ণিত ব্যক্তি "আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম" যে কয়টি তালাকে নিয়ত করেছেন, সেই কয়টি তালাক কার্যকর হবে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
সহযোগিতায়, মুফতি আসাদুল ইসলাম তানয়িম