আল-বুরহান ( দলিল-প্রমাণ)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ! আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। একটু নিচে দেখুন> বিষয় ভিক্তিক সাজানো রয়েছে, আপনার পছন্দ অনুযায়ী পাঠ করুন এবং পোষ্টগুলো ভালো লাগলে শেয়ার করুন আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে এই নাম্বারে- ০১৬৮৭-১১৩৮৮০ হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দিন । জাযাকাল্লাহু খাইর।

জিজ্ঞাসা -১২৭১৬: টিকটিকি মারা/হত্যা করা কি জায়েয?কি

No Comments

 



জিজ্ঞাসা-১২৭১৬:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। 

ইসলামী শরিয়তে টিকটিকি মারার বিধান জানিয়ে কৃতার্থ করবেন। 

যাঝাকুমুল্লাহু খাইরান 

তারিখ:  ১১/০৮/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি                       

মাওলানা  মোহাম্মদ মাইনউদ্দীন, চাঁদপুর থেকে।


 জবাব:  وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

 نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم 


তাসলিম ও হামদ-সানার পর  প্রথম কথা হলো, হ্যাঁ, জায়েয আছে। কেননা টিকটিকি একটি কষ্টদায়ক প্রাণী। তা থেকে যথেষ্ট ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। টিকটিকি কখনো খাদ্যসামগ্রীর ওপর চলাচল করতে পারে। তখন খাবারে লালাও ফেলতে পারে, এতে মানুষের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।

কেননা টিকটিকির লালায় বিষক্রিয়া থাকে। এই বিষ মানুষের পেটে প্রবেশ করলে তার মৃত্যুও হতে পারে।

দলিল:

হাদিস নং-০১

3306 - حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ: حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لِلْوَزَغِ الفُوَيْسِقُ» وَلَمْ أَسْمَعْهُ أَمَرَ بِقَتْلِهِ وَزَعَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَ بِقَتْلِهِ

সাঈদ ইবনে উফায়র (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) গিরগিট বা রক্তচোষা টিকটিকিকে নিকৃষ্টতম ফাসিক বলে অভিহিত করেছেন। আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)- কে একে হত্যা করার আদেশ দিতে শুনিনি। আর সা‘দ ইবনে আবু ওয়াক্কাস (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) একে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।

—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৭৪ (আন্তর্জাতিক নং ৩৩০৬)


হাদিস নং-০২

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ جَرِيرِ بْنِ حَازِمٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سَائِبَةَ، - مَوْلاَةِ الْفَاكِهِ بْنِ الْمُغِيرَةِ - أَنَّهَا دَخَلَتْ عَلَى عَائِشَةَ فَرَأَتْ فِي بَيْتِهَا رُمْحًا مَوْضُوعًا فَقَالَتْ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ مَا تَصْنَعِينَ بِهَذَا قَالَتْ نَقْتُلُ بِهِ هَذِهِ الأَوْزَاغَ فَإِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَخْبَرَنَا أَنَّ إِبْرَاهِيمَ لَمَّا أُلْقِيَ فِي النَّارِ لَمْ تَكُنْ فِي الأَرْضِ دَابَّةٌ إِلاَّ أَطْفَأَتِ النَّارَ غَيْرَ الْوَزَغِ فَإِنَّهَا كَانَتْ تَنْفُخُ عَلَيْهِ فَأَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ بِقَتْلِهِ ‏.‏

৩২৩১। আবু বাকর ইবন আবু শাইবা (রাহঃ)...... ফাকিহ ইবন মুগীরার মুক্তদাসী সাইবা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়েশা (রাযিঃ)-র নিকট প্রবেশ করে তাঁর ঘরে একটি রক্ষিত বর্শা দেখতে পেলেন। তিনি জিজ্ঞাস করেন, হে উম্মুল মু'মিনীন! আপনার এটা দিয়ে কি করেন? তিনি বললেনঃ আমরা এই বর্শা দিয়ে এসব গিরগিটি হত্যা করি। কারণ আল্লাহর নবী (ﷺ) আমাদের অবহিত করেছেন যে, ইবরাহীম (আ)-কে যখন অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করা হলো, তখন পৃথিবীর বুকে এমন কোন প্রাণী ছিল না, যা আগুন নিভাতে চেষ্টা করেনি, গিরগিটি ব্যতীত। সে বরং আগুন ফুঁদিচ্ছিল। তাই রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) তা হত্যার নির্দেশ দেন।

—সুনানে ইবনে মাজা', হাদীস নং ৩২৩১ (আন্তর্জাতিক নং ৩২৩১)


হাদিস নং-০৩

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَتَلَ وَزَغَةً فِي أَوَّلِ ضَرْبَةٍ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، وَمَنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّانِيَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، لِدُونِ الْأُولَى، وَإِنْ قَتَلَهَا فِي الضَّرْبَةِ الثَّالِثَةِ فَلَهُ كَذَا وَكَذَا حَسَنَةً، لِدُونِ الثَّانِيَةِ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রথম আঘাতে যে ব্যক্তি কাকলাস [টিকটিকি] মেরে ফেলবে, তার জন্য রয়েছে এত এত পরিমাণ সাওয়াব। আর যে ব্যক্তি দুই আঘাতে তাকে মেরে ফেলবে, তার জন্য এত এত পরিমান সাওয়াব, প্রথমবারের চাইতে কম। আর যদি তৃতীয় আঘাতে মেরে ফেলে, তা হলে তার জন্য এত এত পরিমাণ সাওয়াব তবে দ্বিতীয়বারের চাইতে কম। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ইফাবা-৫৬৫১]


সারকথা হলো, টিকটিকি ক্ষতিকর প্রাণী বিধায় তাকে হত্যা করা জায়েয।


 والله اعلم بالصواب

উত্তর প্রদানে মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক