জিজ্ঞাসা-১২৭০৮:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। হতাশা ও দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপনের উপায় বিষয়ে লেসনপ্লান প্রয়োজন
তারিখ: ০২/০৮/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা আর্শ্বাদ উল্লাহ, ভোলা থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, হতাশা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য ইসলামী কয়েকটি মূলনীতি পেশ করছি। و ما توفيق إلا بالله عليه توكلت و إليه انيب
০১. আল্লাহর নাফরমানি থেকে বেঁচে থাকা: আমার ওস্তাদে মুহতারাম মুফতি রফিকুল ইসলাম রহ. বলতেন,
রাস্তা দিয়ে একটি পুলিশের ওসি/এসপি, মন্ত্রীর গাড়ি যাচ্ছে কোন ব্যক্তি তাকে ঢিল ছোরলো, এখন বলুন ওই ব্যক্তি কি সুখে আরামে থাকতে পারবে। ঠিক তদ্রূপ যে ব্যক্তি আল্লাহর নাফরমানি করে সে কখনো শান্তিতে থাকে না হাজারো টেনশন পেরেশানি তাকে ঘিরে ধরে। হাই পবিত্র কোরআন আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
Surah Taha, Verse 124:
وَمَنْ أَعْرَضَ عَن ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنكًا وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَىٰ
এবং যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে (আমার নাফরমানি করবে), তার জীবিকা সংকীর্ণ (কঠিন, বিষাক্ত) হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। সূরা তহা-১২৪
০২. আল্লাহ তাআলার তাওয়াক্কুল করতে হবে: আমার শায়েখ আরিফ বিল্লাহ শাহ আব্দুল মতিন বিন হুসাইন দামাত বারকাতুহু বলেন, ছোট বাচ্চাকে যদি কেউ কিছু বলে বা আঘাত করে। তখন সেটা পিতা মাতার কাছে অভিযোগ করে। পিতা মাতার কাছে অভিযোগ করে সে শান্ত থাকে। এই মনে করে যে, পিতা-মাতা তার ব্যবস্থা নেবেন।
ঠিক তেমনি একজন মুমিন আল্লাহকে সব কিছু বলে, একথা বিশ্বাস করবে যে, তিনি তার সবকিছু ব্যবস্থা করবেন। আল্লাহর উপর আস্থা রাখবেন।
وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا
অর্থ: যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। সূরা তালাক -০৩
০৩. নামাজে যত্নবান হওয়া: যেকোনো বিপদ মুসিবত পেরেশানের সময় নামাজের মাধ্যমে প্রকৃত প্রশান্তি লাভ করা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তখনি জায়নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন।
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন। সূরা বাকারা-১৫৩
1319 - حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أخبرنا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ نَافِعٍ
عَنْ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - قَالَ: "صَلَاةُ اللَّيْلِ مَثْنَى مَثْنَى" (3).
মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা (রাহঃ) .... হুযাইফা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন নবী করীম (ﷺ) কোন কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাযে মশগুল হয়ে যেতেন।
—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩১৯ (আন্তর্জাতিক নং ১৩১৯)
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)
০৪.বেশি বেশি তওবা-এস্তেগফার পাঠ করা:
তওবা-ইস্তেগফার হলো সফলতার পথ এবং সমস্ত পেরেশানি থেকে মুক্তি অন্যতম রাস্তা। যেমন পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের বর্ণিত হয়েছে।
وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“হে মুমিনগণ তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর কাছে তওবা কর। আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হতে পারবে।” সূরা নূর-৩১
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- :« مَنْ لَزِمَ الاِسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا ، وَمِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ ».
অর্থ: হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন- যে ব্যক্তি সর্বদা ক্ষমা চায় (ক্ষমা চাওয়া নিজের প্রতি আবশ্যক করে) আল্লাহ তাআলা তার জন্য প্রত্যেক সংকীর্ণতা হতে একটি পথ বের করে দেন এবং প্রত্যেক চিন্তা হতে তাকে মুক্তি দেন. আর তাকে রিযিক দান করেন যেখানে হত সে কখন ও ভাবেনি। মুসনাদে আহমদ-২২৩৪; সুনানে আবু দাউদ-১৫১৮, কিতাবুস সালাত; ইবনে মাজাহ-৩৮১৯
০৫. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা: হতাশা এবং চিন্তা থেকে মুক্তির মহাওষুধ হলো প্রিয় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ শরীফ পাঠ করা। দলিল:
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنِ الطُّفَيْلِ بْنِ أُبَىِّ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ " يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ " . قَالَ أُبَىٌّ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُكْثِرُ الصَّلاَةَ عَلَيْكَ فَكَمْ أَجْعَلُ لَكَ مِنْ صَلاَتِي فَقَالَ " مَا شِئْتَ " . قَالَ قُلْتُ الرُّبُعَ . قَالَ " مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . قُلْتُ النِّصْفَ . قَالَ " مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . قَالَ قُلْتُ فَالثُّلُثَيْنِ . قَالَ " مَا شِئْتَ فَإِنْ زِدْتَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكَ " . قُلْتُ أَجْعَلُ لَكَ صَلاَتِي كُلَّهَا . قَالَ " إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
হান্নাদ (রাহঃ) ..... তুফায়ল ইবনে উবাই ইবনে কা‘ব তার পিতা উবাই ইবনে কা‘ব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাত্রির দুই তৃতীয়াংশ অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উঠে দাঁড়াতেন। বলতেনঃ হে লোক সকল, তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর, তোমরা আল্লাহকে স্মরণ কর, প্রথম শিংগা ধ্বনির সময় আসছে তাকে অনুসরণ করবে পরবর্তী শিংগা ধ্বনি। মৃত্যু তার সব ভয়াবহতা নিয়ে সমাগত, মৃত্যু তার সব কিছু নিয়ে সমাগত। উবাই (রাযিঃ) বললেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি আপনার উপর অধিক হারে দরূদ পাঠ করে থাকি। আমার সময়ের কতটুকু আপনার প্রতি দরূদ পাঠে ব্যয় করব?
তিনি বললেনঃ তোমার যতটুকু ইচ্ছা।
আমি বললামঃ এক চতুর্থাংশ সময়?
তিনি বললেনঃ তোমার ইচ্ছা। কিন্তু যদি আরো বাড়াও তবে ভাল।
আমি বললামঃ অর্ধেক সময়?
তিনি বললেনঃ তোমার যা ইচ্ছা; তবে আরো বৃদ্ধি করলে তা-ও ভাল।
আমি বললামঃ দুই তৃতীয়াংশ সময়?
তিনি বললেণঃ তোমার ইচ্ছা; তবে আরো বাড়ালে তাও ভাল।
আমি বললামঃ আমার সবটুকু সময় আপনার উপর দরূদ পাঠে লাগাব?
তিনি বললেনঃ তাহলে তো তোমার চিন্তামুক্তির জন্য তা যথেষ্ট হয়ে যাবে আর তোমার গুনাহ মাফ করা হবে। তাখরিজ: তিরমিজি -২৪৫৭
নোট:আবু ঈসা ইমাম তিরমিজি রহ বলেন এ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
০৬. তাকওয়ার পথে চলা, আমলে সালেহ করা: তাকওয়ার পথে চললে আল্লাহ তাআলা সব কাজ সহজ করে দিবেন আর তখনই আপনি চিন্তা মুক্ত হয়ে যাবেন। দলিল:
আয়াত নং-০১
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا
অর্থ: যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন। সূরা তালাক-০৪
আয়াত নং -০২
Surah An-Nahl, Verse 97:
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরষ্কার দেব যা তারা করত। সূরা নাহল -৯৭
০৭. কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত মাসনুন দুআগুলো পাঠ করা:
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، رضي الله عنه، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ: ((مَنْ قَالَ فِي كُلِّ يَوْمٍ حِينَ يُصْبِحُ وَحِينَ يُمْسِي: حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ، وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، سَبْعَ مَرَّاتٍ، كَفَاهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ هَمَّهُ مِنْ أَمْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ)).
হযরত আবু দারদা (রাযিঃ) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল বিকাল সাতবারঃ
"حَسْبِيَ اللهُ لا إله إلا هو عَليه تَوَكّلْتُ وهو رَبُّ الْعَرشِ العَظِيْمِ"
সত্য দিলে (অর্থাৎ আখিরাতের প্রতি একিন রাখিয়া) বলিবে, অথবা ফজিলতের প্রতি একিন ছাড়া এমনিই বলিবে, আল্লাহ্ তায়ালা তাহাকে (দুনিয়া আখিরাতের) সমস্ত চিন্তা হইতে হেফাজত করিবেন।
অর্থঃ ’আমার জন্য আল্লাহ্ তায়ালাই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত কোন মা’বুদ নাই, তাহারই উপর আমি ভরসা করিলাম, তিনিই আরশে আজীমের মালিক’। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ -৫০৮৩
হজরত আবু দারদা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি (পেরেশানি ও উৎকণ্ঠায়) এ দোয়াটি সকাল-সন্ধ্যায় সাত বার পড়বে, ওই ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও পরকালের সব পেরেশানি থেকে হেফাজত করবেন।' (সুনানে আবু দাউদ: ৫০৮৩, কানজুল উম্মাল: ৫০১১)
চিন্তা ও পেরেশানির সময় রাসুল (স.) আরেকটি দোয়া পড়তেন বিশেষভাবে। দোয়াটি হলো- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَالعَجزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخلِ وَالجُبنِ، وَضَلَعِ الدَّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়াল আজঝি ওয়াল কাসালি ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দ্বালা’য়িদ্দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।’ অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (স.) চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় এই দোয়া পড়তেন। (বুখারি: ২৮৯৩)
এছাড়াও দুঃখ, হতাশায় মানসিক প্রশান্তির জন্য কোরআন তেলাওয়াত অন্যতম একটি আমল। রাসুল (স.) কোরআন পাঠের মাধ্যমে প্রশান্তি অনুভব করতেন। কোরআনকে হৃদয়ের বসন্ত করে দেওয়ার জন্য তিনি আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করতেন—اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ أَنْ تَجْعَلَ القُرْآنَ رَبِيعَ قَلْبِي، وَنُورَ صَدْرِي، وَجَلاَءَ حُزْنِي، وَذَهَابَ هَمِّي ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা আন তাজ-আলাল কুরআ-না রাবিআ ক্বালবি, ওয়া নূরা সদরি, ওয়া জালা-আ হুযনি ওয়া যাহা-বা হাম্মি।’ অর্থ: হে আল্লাহ, তোমার কাছে চাই, যেন তুমি কোরআনকে করে দাও আমার হৃদয়ের বসন্ত (আগ্রহ-ভালোবাসা); আমার বক্ষের জন্য আলো; আমার দুশ্চিন্তার নির্বাসন এবং আমার পেরেশানি দূরকারী। (মুসনাদ আহমদ: ৩৭১২; সিলসিলা সহিহাহ: ১৯৯)
বিপদাপদের জন্য দোয়া ইউনুস পাঠ করতে বলেছেন নবীজি (স.)। তিনি বলেন, আমি এমন একটি দোয়া সম্পর্কে অবগত আছি, কোনো বিপদগ্রস্ত লোক তা পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা তার সেই বিপদ দূর করে দেন। সেটি হচ্ছে আমার ভাই ইউনুস (আ.)-এর দোয়া। দোয়াটি হলো- ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বলিমিন।’ অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি: ৩৫০৫)
যারা নামাজে মনোযোগী তাদের ওপরও দুঃখ হতাশা ভর করতে পারে না। তাই নামাজে মনোযোগী হতে হবে। রাসুল (স.) বলতেন, ‘হে বিলাল, (আজানের মাধ্যমে) নামাজ কায়েম করো। আমরা নামাজের মাধ্যমে প্রশান্তি লাভ করো।’ (আবু দাউদ: ৪৯৮৫-৪৯৮৬)
০৮. আল্লাহ তাআলার নামের জিকির করা:
আল্লাহর জিকির সকল দুশ্চিন্তার একটি মহৌষধ। আল্লাহর জিকিরে মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি নেমে আসে। দলিল:
Surah Ar-Rad, Verse 28:
الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللَّهِ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। সূরা রাদ -২৮
নোট: হাতাশা ও চিন্তার মুক্তির উপায় গুলো লেখা চলমান
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক