জিজ্ঞাসা-১২৭৯০:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। মুহতারমের কাছে জানার বিষয় হলো- ইমাম ভুলবশ প্রথম বৈঠুকে নাবসে দাঁড়িয়েগেল, মুক্তা দিরা লুকমাদিল, তারা বসেআছে। ইমাম দাড়ানোথেকে ফিরেএসে তাশাহুদ পাঠশেষে দাড়িয়ে যথানিয়মে সাহোসিজদারসাথে বাকী নামাজ আদায় করলেন। এহেন অবস্থায় শরিয়াতের বিধান কি? উল্লেখ্য যে, লোকমা গ্রহণ না করলে, ফিতনার আশঙ্কা রয়েছে।
তারিখ: ০৪/১০/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মাহবুব, পিরোজপুরী থেকে।
জবাব:
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته حمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, ইমাম প্রথম বৈঠকে ভুলে সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে গেলে, স্মরণ হলে বা মুক্তাদিরা লোকমা দিলে ফিরে আসা জায়েজ নেই। নামাজ শেষে সাহু সিজদা দিবে। দলিল:
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنِ الْمَسْعُودِيِّ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، قَالَ صَلَّى بِنَا الْمُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فَلَمَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَامَ وَلَمْ يَجْلِسْ فَسَبَّحَ بِهِ مَنْ خَلْفَهُ فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنْ قُومُوا فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلاَتِهِ سَلَّمَ وَسَجَدَ سَجْدَتَىِ السَّهْوِ وَسَلَّمَ وَقَالَ هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ عَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দির রহমান (রাহঃ) .... যিয়াদ ইবনে ইলাকা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ মুগীরা ইবনে শু’বা (রাযিঃ) একদিন আমাদের নিয়ে নামায আদায় করলেন। দুই রাকআতের পর তিনি না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। পিছনে যারা ছিলেন তারা (তাকে সতর্ক করার জন্য) সুবহানাল্লাহ পাঠ করলেন। তিনি তাদেরকে দাঁড়াতে ইশারা করলেন। নামায শেষে তিনি সালাম ফিরিয়ে সিজদা সাহু করলেন এবং পরে যথারীতি সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ রাসূল (ﷺ)-ও এরূপ করেছিলেন। জামে' তিরমিযী, হাদীস নং ৩৬৫ (আন্তর্জাতিক নং ৩৬৫)
নোট:
ইমাম আবু ঈসা তিরমিযী (রাহঃ) বলেনঃ এই হাদীসটি হাসান-সহীহ। এই হাদীসটি মুগীরা ইবনে শু’বা রাদিয়াল্লাহু আনহ নবী (ﷺ) থেকে একাধিক সূত্রে বর্ণিত আছে।
দ্বিতীয় কথা হলো, ইমাম মুসল্লিদের লুকমার কারণে বসে রায়, তাহলে কোনো কোনো আলেমের মতে, নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ তিন বা চার রাকাতের নামাজে পুরোপুরি দাঁড়িয়ে যাওয়ার পরে বৈঠকে ফিরে আসা যায় না। বরং সেই মুহূর্তে তাঁর করণীয় হলো, ধারাবাহিকতা নষ্ট না করে বাকি নামাজ শেষ করে সাহু সিজদা দেওয়া। তবে ইবনুল হুমাম (রহ.)-সহ অনেক ফকিহর মতে, ফিরে গেলেও শেষে সাহু সিজদা দিলে নামাজ শুদ্ধ হয়ে যাবে। দলিল:
، ولو ذكر بعد اعتداله قائمًا لم يجز له العو ويسجد للسهو، فإن عاد نُظِر، فإن كان جاهلًا لم تبطل صلاته، وإن كان عالمًا بأن ذلك لا يجوز بطلت صلاته كما لو تكلم في الصلاة.
অর্থাৎ, সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর নিজের ভুলের কথা স্মরণে এলে প্রথম বৈঠকে ফেরত আসা জায়েজ নেই। তবে ভুলবশত প্রথম বৈঠক ত্যাগের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিয়ে নিবে। তা সত্ত্বেও যদি সে ফেরত আসে, তাহলে বিষয়টি ব্যাখ্যাসাপেক্ষ- সম্পূর্ণ দাঁড়িয়ে যাওয়ার পর পুনরায় ফেরত আসলে যে নামাজ ভেঙে যায়- একথা সালাত আদায়কারী না জেনে করলে নামাজ ভাঙবেনা। পক্ষান্তরে জেনেশুনে এমন কাজ করলে তার নামাজ ভেঙে যাবে। সূত্র: বাহরুল মাযহাব- ২/৬১
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের বর্ণনা মোতাবেক, উম্মাহর সহজতরের জন্য ইবনে হুমাম রহ. মতের উপর ফতোয়া অর্থাৎ নামাজ সহিহ হয়েছে। তবে ইচ্ছাপূর্বক হলে গুনাহগার হবে বলে অনেক ইমাম মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য যে, উক্ত বিষয়টি জামাতে নামায পড়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু যদি একাকী নামায পড়ার সময় এমন হয়। তাহলে নামায পুনরায় পড়তে হবে।
والله اعلم بالصواب